অণুগল্প
-
নিছক গল্পকথা
‘ মধু, এতো তাড়া করছো কেন, বোসো ? আজ রবিবার, এই তো এলে ! এসো, একত্রে চা পান করতে করতে প্যারাডাইজ লস্ট পড়া যাক !’ গৌরদাস আলমারী হইতে একটি চামড়ার বাঁধাই ক্ষুদ্র বহি বাহির করিতে করিতে কহিলেন ! যাহাকে বলা হইলো, তিনি শ্যামবর্ণ, অতি উজ্জ্বল চক্ষুবিশিষ্ট, ইউরোপিয়ান পোশাকে সুসজ্জিত এক বয়োত্তীর্ণ কিশোর, গুচ্ছ গুচ্ছ ঘনকেশ তাহার মস্তকের উপর হইতে […]
-
ঘা
তোমার জিভের দুপাশে ঘা ঘা ভরে গেছে শান্তাপমা। এসো আরো নিকটস্থ দেখি উহ তোমার শ্লেষা ধারালো দ্বিপাক্ষিয় ।। আমরা বরং ফেবিকুইক এনে আমাদের জিভ গুলো জুড়ে ফেলি ।।। এখন আমাদের জিভেদের জুড়ে গেছে । শান্তাপমা আর আমি তাজমহল মাঝে মাঝেই দুপাশ সংক্রান্ত হাঁটছি। আমাদের মধ্যে দিয়ে বিধানসভা রাষ্ট্রীয়শোক সংবিধানসভা পেরিয়ে যাচ্ছেন সুরঞ্জিত ।। শান্তাপমা এই […]
-
কাগজের নৌকো
মাঝে মাঝে লক্-আউট , লে অফ্ , সাসপেনশন অফ ওয়ার্ক – এইসব নিয়েই এখানে বেশিরভাগ চটকল চলে অথবা চলেনা । দেখলেই বোঝা যায় । শ্রমিকদের কোয়ার্টারগুলো নোনাধরা , দেয়ালে কোথাও কোথাও ইঁট বেরিয়ে গেছে । এখানেই শ্রমিক ইউনিয়নের অফিস । তার অদূরে লম্বা ড্রেনটা পেরোলেই একটা বিরাট বটগাছ । তার একদিকে মুদির দোকান আর অন্যদিকে […]
-
অণুগল্প সংখ্যা
করোনাভাইরাসের হানা মানবসভ্যতাকে এক বিশাল সঙ্কটের মধ্যে ফেলেছে। গোটা পৃথিবী জুড়ে এমন সঙ্কট এর আগে আসে নি। ভারত সহ অধিকাংশ দেশেই আজ লকডাউন। ভবিষ্যৎ পৃথিবীর ছবিটা কেমন হবে তার দিশা পাওয়াটাও সহজ হচ্ছে না আজ। এমন এক অন্ধকার সময়ে আগামীদিনে ঝড় থেমে যাবে এমন আশা বুকে বেঁধে রেখেই ঘরবন্দি আমরা। মৃত্যু আর ধারাবাহিক আতঙ্কের বিবরণ […]
-
মেরুদন্ড ও অন্য গল্প
মেরুদন্ড গান্ধীজীকে অসম্ভব শ্রদ্ধা করতেন আমার দাদু ! আমাকে বললেন, ‘দ্যাখ, সেই পরাধীন যুগে, অত্যাচারী ব্রিটিশের সামনে আমাদের সকলকে, সব ভারতবাসীকে, মেরুদন্ড সোজা করে চলতে শিখিয়েছেন !’ আমার দুষ্টুবুদ্ধির বয়েস ! তর্কের গলায় বললাম , ‘কোথায় দাদু, ছবিতে দেখেছি, হাতে লম্বা লাঠি নিয়ে সামনে একটু ঝুঁকে হাঁটছেন ! বরং পেছনের লাইনের লোকগুলো ঘাড় মাথা সোজা করে ফলো করছে !’ বিচলিত না হয়ে দাদু উত্তর দিলেন, ‘ওঃ, ওই […]
-
বানপ্রস্থ
অবসর মুহূর্তে অরিত্র ভাবে জীবনটা অন্য খাতে বইত কি? কৈশোরের চৌকাঠ পেরিয়ে যৌবনে ভাবতো কাকে জীবন সঙ্গিনী হিসেবে বেছে নেবে? স্নাতকোত্তর পর্বে অরিত্রর চারজন সুন্দরীকে দুই অক্ষরী নাম ও ব্যাবহারের জন্য পছন্দ। তাদের নিয়েই কল্পনা ভবিষ্যতে জীবন কাটাবার … নিভা, প্রিয়া, প্রীতি, নাকি লিপি। নিভার বিয়েতে গায়ে গতরে খেটেও ছিল ওর বাবার অনুরোধে। গায়েহলুদের আগের […]
-
দুটি অণু গল্প
পোড়ামুখ দোলের দিনে শ্যামসুন্দর-শ্রীরাধিকাকে ফাগ মাখাতে আজ সকলের সাথে চন্দ্রিমাও হাজির হয়েছে দোলমন্দিরে। চাতরার দোলমন্দির পাঁচশত বছরের পুরানো। ভগবান শ্রীচৈতন্যদেবের পবিত্র পাদস্পর্শ পড়েছিল ওই দোলমন্দিরে। নবদ্বীপ থেকে পুরিতে যাওয়ার পথে চাতরার দোলমন্দিরে এক রাত কাটিয়ে গিয়েছিলেন। সেই থেকে ভক্তরা দোলউৎসবের দিনে শ্যামসুন্দরের সঙ্গে রঙের খেলায় মাতোয়ারা হন। শ্যামসুন্দর তাঁর শ্রীরাধিকা সনে ভক্তদের নিয়ে সকাল থেকে […]
-
সাগর মেলার কিশোর ও অন্য গল্প
সাগর মেলার কিশোর সাগর মেলায় লক্ষ মানুষের ভীড়।বেশীর ভাগেরই উদ্দেশ্য পূণ্যস্নান, কপিল মুনির মন্দিরে পুজো দেওয়া।তার মধ্যে বহু মানুষ হাজির রোজগারের তাড়নায়।দোকানী, ফেরিওয়ালা, মালিশ ওয়ালা, জ্যোতিষী, টোটকা ওষুধ বিক্রেতা, আরও কত পেশার মানুষ হাজির মেলাপ্রাঙ্গনে কিছু রোজগারের আশায়।ভিখারীরাও সার দিয়ে বসে থাকে প্রাপ্তির আশায়।মানুষ পূণ্য সঞ্চয় করে সাগরে স্নান ক’রে, মন্দিরে পুজো দিয়ে, ভিখারীকে ভিক্ষে […]
-
ঘরে ফেরা
বুড়ো বাড়িতে অশান্তি করে রাস্তায় বেরিয়ে পড়লেন এই প্রতিজ্ঞা করে যে তিনি আর ঘরে ফিরবেন না।হাঁটছেন তো হাঁটছেন। মাথার উপর খর সূর্য। চেনা রাস্তা শেষ হল। সঙ্গে আনা শুকনো চিড়ে শেষ হল। সূর্য পশ্চিমে ঢলে ঘরে ফেরার বার্তা দিল। পশ্চিমের লাল অনুরাগ গায় মেখে পাখিরা কলকাকলিতে দিনকে বিদায় দিয়ে নীড়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিল। জলাশয়ে তাদের […]
-
চিলেকোঠা
চিলেকোঠার এই ঘরটা পুকাইয়ের সাম্রাজ্য ৷ এখানে সে এলোমেলো থাকার স্বাধীনতা পায় ৷ তা নইলে নীচের তিনখানা ঘরই যা সাজানো গোছানো, তাতে পান থেকে চুন খসবার জো নেই ৷ এই চিলেকোঠার ঘরে এলে পুকাই যেন নতুন করে অক্সিজেন পায় ৷ ঘরে মেসির বিরাট বড়ো পোষ্টার ৷ জানালা খুলে দিলেই সামনের রাস্তা দিয়ে লোকেদের চলাচল নজরে […]
-
স্টাইল
কি হল পেলে? – স্ত্রীর উত্তেজিত কন্ঠের প্রশ্নের উত্তরে নীরব রইলেন ধূর্জটিবাবু। ” না”,বলছে- “অল দি রুট্স ইন দিস লাইনস আর বিজি,প্লিজ ডায়াল আফটার সামটাইমস।” ইস্- এই এক ঢং এর কথা – কত মানুষ নিরুপায় হয়ে আর একটা মানুষকে খোঁজে, সেটা একদলের কোন হুঁশ থাকলে হয়।- স্ত্রীর অকাট্য যুক্তি আর ধীরাজকে না পাওয়ার উত্তেজনা এবং […]
-
ফ্ল্যাশব্যাক ও অন্যান্য গল্প
ফ্ল্যাশব্যাক ইনটলারেবল! এভাবে আর থাকা যায় না। আস্তে! কেন, আস্তে কেন! সবাই জানুক। তোমার গুণধর বোনের কথা! কেন, কী হয়েছে! আচ্ছা, আমি কী দোষ করেছি বল তো! সবের মধ্যেই দোষ ধরে আমার। হ্যাঁ, দোষের মধ্যে বিয়ে করেছি তোমায়। আস্তে। সেদিন বাড়িতে ঢোকামাত্র জেরা! এত দেরি কেন? কোথায় গেছিলে? ওকে কৈফিয়ত দিতে যাবো কেন! চুপচাপ […]
-
লকডাউনের গল্প
লকডাউনের গল্প – এক করোনার জন্য লকডাউনে ঘরের অনেকগুলো পড়ে থাকা কাজ সামলে নিচ্ছে অনুমিতা। আজ রান্নাঘরের র্যাকগুলো ঝেড়েমুছে পরিস্কার করে নেওয়ার দিন। তাকের ময়লা কাগজগুলো ফেলে দিয়ে নতুন কাগজ পাততে গিয়ে হঠাতই ওর হাতে উঠে এল সেই কাগজটা। গত ফেব্রুয়ারি মাসে কলকাতা থেকে প্রকাশিত খবরের কাগজে বের হয়েছিল চিনের এক অসহায় বাবা ও তাঁর […]
-
কয়েকটি গল্প
হাত শরীর মানেই কি আড়াল-আবডাল? শরীর মানেই কি অন্ধকার গলি-ঘুঁজি? শরীর মানেই কি ঘরের জানলায় ফুটো? শরীর মানেই কি কাপড়ের ফাঁক-ফোকর? পুকুরে ডুব দিতে গিয়ে বাসন্তী পুকুরের জলে নিজের শরীর দেখে। শরীর তো নয়, যেন একটা ভাঙা নৌকো। তবুও দেখে। পুকুরের পাড়ে দাঁড়িয়ে দেখে। বাসন্তী আজ আর নিজেকে আড়াল করে রাখে না। না, লজ্জা হয় […]
-
অসভ্য
তিনদিন হলো তনিমারা এ পাড়ায় ভাড়া এসেছে । বেশ ভালো এলাকাটা, কোনো ঝুট ঝামেলা নেই । কিন্তু উল্টো দিকের ফ্ল্যাটের ওই ছেলেটা এমন ড্যাব ড্যাব করে তাকায় বিরক্ত লাগে!! এতো ছিঁচকে যে রাগী চোখে তনিমা ওর দিকে তাকিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করলেও অসভ্যের মতো আরো বেশি করে যেন দেখে ..বোধহয় মিচকি হাসিটাও সংগে থাকে । এতটা […]
-
মনের ডায়েরি ও অন্য গল্প
মনের ডায়েরি মনের কথা প্রকাশ করার দুটো জায়গা ছিল তিন্নির।মা আর ডায়েরি।মাকে মুখে বলতে হতো না।মনখারাপে হাসি মুখে থাকলেও জাদুবলে ঠিক ধরা পড়তো অভিনয়। আর ডায়েরি লেখাটাও মার থেকেই পাওয়া। আজ তিন্নিও মা। মায়ের মৃত্যুর পর মায়ের ডায়েরিটা পড়ে কতবার কেঁদেছেও। কত কষ্ট করেছে মা সংসারে সবাইকে ভালো রাখতে গিয়ে।হাসিমুখে নিজের সব ইচ্ছা জলাঞ্জলি দিয়েছে, […]
-
শর্ট-সার্কিট
চি চি চি। লোডশেডিং না শর্ট সার্কিট ? এমন অন্ধকার হয়ে গেল কেন? আগেও একদিন হয়েছিল। কিন্তু আজকের অন্ধকারটা খুব অন্যরকম। পাখিগুলো অমন চিৎকার করেই বা উঠল কেন? গত চারমাস ধ’রে ঝকঝকে ফ্ল্যাটের সুন্দর জানালাটা দিয়ে ঈশান সবসময় পাখির বাসাটাকে দেখে। ইলেকট্রিক তারে ছোট্ট পাখির নিপুন চঞ্চুতে বোনা বাসা। দিন পনেরো হল আরও দুটো ক্ষুদে […]
-
নো এন্ট্রি
নো এন্ট্রি – ১ “তাই বলছিলাম, মানুষের ভালোবাসায় আমাদের দল চলে, কর্পোরেট এর টাকায় নয়,আজকের এই সমাবেশে জনগণের উপস্থিতি সেকথা প্রমাণ করছে, সবসময় আপনারা এভাবেই আমাদের পাশে থাকবেন, আপনারাই পারেন আগামী নির্বাচনে আমাদের দলের মতামতকে সারা দেশের মানুষের সামনে তুলে ধরতে, —–, তাই আজকের মত আগমী নির্বাচন এর দিনগুলিতে এভাবেই উপস্থিত থেকে ভোট বাক্সে […]
-
প্রাক্তন
বৃষ্টিটা নামবার আগেই কোন একটা শেডের নীচে আশ্রয় নেবার চেষ্টায় দ্রুত পা চালিয়েও লাভ হলো না। হুড়মুড় করে আচমকা বৃষ্টি নেমে গেল। ভোকাট্টা ঘুড়ির মত গোত্তা খেয়ে একটা দোকানে ঢুকে পড়লাম। দোকানে আশ্রয় নেয়া মানুষের জটলাটা আমাকে ঢুকতে দেখে যে যতটুকু পারলো সরে গেল দ্রুত। না, আমাকে জায়গা করে দেবার আন্তরিকতায় নয়। বরং আমার ভিজে […]
-
হাঁটি হাঁটি পা পা ও অনান্য গল্প
হাঁটি হাঁটি পা পা হাঁটি হাঁটি পা পা। এইতো হয়েছে- এবার এই পা টা, এবার ওই পা। বিমলা মেয়ের হাতটা ছেড়ে দিয়ে দুহাত বাড়িয়ে কোলে নেবার ভঙ্গী করে। দিশা খিল খিল করে হেসে নিজে নিজেই একটা দুটো পা ফেলে ঝাঁপিয়ে পড়ে মায়ের কোলে। বিমলা প্রবাসী স্বামীকে চিঠি লেখে –জানো, দিশা আজ হেঁটেছে, নিজে নিজে। … […]
-
আত্মীয়স্বজন ও অনান্য গল্প
সেদিন আমি আর সুতপা সিনেমা দেখে ফিরছি, হঠাৎ রবির সঙ্গে দেখা। রবি আমার পিসতুতো ভাই। বাগুইআটিতে বড়সড় ফ্ল্যাট কিনেছে। ছোটোবেলায় আমরা একে অপরকে ছাড়া চলতেই পারতাম না। ও ছিল আমার ডাংগুলি, গুলি, গুলতি খেলার সঙ্গী। প্রতি মাসে একবার করে হয় পিসিরা আসত আমাদের বাড়ি, না হলে আমি-বাবা-মা-বোন সবাই মিলে যেতাম পিসির বাড়িতে। বাবা ছিল সকলের […]
-
লেপ
বউ ব্যাপক সুন্দরী; যাকে বলে ছম্মকছল্লু সুন্দরী। শ্বশুরমশাই মালদার; দিয়েছে থুয়েছে অনেক। মোটা ক্যাশ, ভারি গয়না, দেদার আসবাবপত্র। ফুলশয্যার রাতে বরের মনে তবুও একটা খিঁচখিঁচ – কী একটা নেই, কীসের একটা অভাব। পালঙ্ক এসেছে পালিশ করা। নরম ফেনার মতো গদি মাথার বালিশ, কোল বালিশ। বাজারের সেরা ব্র্যান্ডের টিভি, সোফা। সবই তো আছে। তবু কেন বরের […]
-
অণু গল্প পাঠ
দুটি গল্প লিখেছেন: সিদ্ধার্থ সান্যাল গুরুগ্রামের গ্রেগর সামসা সকালে রোজকার প্রথামতো গুরুগ্রামের সেক্টর ৫৬-এর নির্জন রাস্তায় দুজনে হাঁটছি….বেশ ফুরফুরে হাওয়া দিচ্ছে…. মেজাজটাও বেশ মানানসই…..সপ্তাহান্তটা কিভাবে সুভালাভালি কাটানো যায় তাই নিয়ে দুজনের মধ্যে একটা মতান্তর প্রায় পেকে উঠেছে……এমন সময় হঠাৎ রাস্তার পাশের রাধাচূড়া গাছ থেকে আমাদের পূর্বপুরুষদের একজন খ্যাঁচম্যাচ মুখভঙ্গি করে নেমে এসে আমার বাঁহাত ধরে ঝুলে […]
-
স্বাদ
চতুর্দিকে গড়াগড় উঁচু হয়ে আছে পাঁচিল, শুধু পুবপানে সূর্য ওঠার জায়গাটা শূন্য করে দিতে অল্প ইরেজারের কাজ একদম কাঁটায় মাপা। ওই ফাঁক দিয়ে সে বাইরে যায় না কখনো, কুকুর এক্তিয়ার মানে। প্রায় এক বর্গমাইল তার সাম্রাজ্য। চৌকো জমিখানার ঠিক মধ্যে তার বাংলো। যার পাথরের মেঝে, কাচের জানালা, মসৃণ ছাদে ঝুলছে ঝাড়বাতি। জন্মাবধি সে এখানেই। তার […]
-
দুটি গল্প
সময় আমার বাবার একটা পুরোনো রঙচটা বাক্স ছিল। সারা গায়ের জংগুলোতে – পৃথিবীর মানচিত্র। বাবার জীবিতকালে ও বাক্স খোলার অনুমতি ছিল না কারো। বাবা মাঝে মাঝে বাক্সটি আমাদের আড়াল করে খুলতেন আর ম্যাজিসিয়ানের মত অন্যদিকে তাকিয়ে হাত দিয়ে ভেতরের জিনিষগুলো স্পর্শ করতেন। মুখে থাকত অদ্ভূত এক সন্তুষ্টি – আবেশে তাঁর চোখ বুজে আসতো। বাক্সটা রাখাও […]
-
দুটি অণু গল্প
খবর রাত ন’টার ‘দেশের খবর’ পড়ে নিউজ ফ্লোর থেকে চিফ অ্যাংকার হন্তদন্ত হয়ে সোজা চলে গেলেন নিউজ এডিটরের রুমে। হাতে ধরা এক তাড়া প্রিন্টেড নিউজ স্ক্রিপ্ট। সেগুলো কিছুটা ক্ষোভের সঙ্গে টেবিলে আওয়াজ করে রেখে দিয়ে বললেন – সেই একই খবর রোজ রোজ। খুন – শ্লীলতাহানি – ধর্ষন আর অনার কিলিং। একটাও ভাল নিউজ নেই ? […]
-
মা
মাটিতে হাত দিয়ে খেতে নেই, খেতে বসে হাঁচলে মাটি থেকে একটা ভাত কুড়িয়ে খেতে হয়। কাউকে যাবার সময় পেছু ডাকতে নেই।খেয়ে উঠে আঁচিয়ে গোড়ালি ভিজিয়ে পা ধুতে হয়।তখন বড় হচ্ছি, সব কিছুতেই ‘কেন’ বলাটা যেন বাহাদুরি। মা বলত অত কেন বলতে নেই। বারণ করছি শোন। দুধ মুড়ির বাটিতে কলা ছাড়িয়ে দেবার সময় মা কলাটা ভেঙে […]
-
বনফুলের কয়েকটি গল্প
বেচারামবাবু হরিশ মুদী সন্ধ্যাবেলা হিসাব বুঝাইয়া গেল যে গত মাসের পাওনা, ২৭’৭০ পাইয়াছে এবং তাহা অবিলম্বে মিটাইয়া দেওয়া দরকার। সদ্য-অফিস-প্রত্যাগত বেচারামবাবু বলিলেন—‘আচ্ছা মাইনেটা পেলেই—!’ অতঃপর কাপড়-চােপড় ছাড়িয়া বেচারাম বাহিরের রোয়াকটিতে বসিয়া হাঁক দিলেন—‘ওরে চা আন—।’ চা আসিল। চা আসিবার সঙ্গে সঙ্গে পাড়ার হরিবাবু, নবীন রায়, বিধু ক্লার্ক প্রভৃতি চার পাঁচজন ভদ্রলোকও সমাগত হইলেন এবং […]
-
সাদাত হাসান মান্টোর গল্প
[সাদাত হাসান মান্টো উর্দু সাহিত্যের ব্যতিক্রমী লেখক অথচ অবশ্যম্ভাবী উপস্থিতি। মৃত্যুর এত বছর পরেও অমরত্বের দাবিদার হতে পারেন স্রেফ দৃষ্টিভঙ্গির জন্য। জীবনের কিছু সময় কাটিয়েছেন ভারতে আর বাকিটা পাকিস্তানে। দেশ বিভাগের জ্বালা সাহিত্যের ভাষায় মুক্ত করছেন। আর জীবন যন্ত্রণার জ্বালাকে মুক্তি দিয়েছেন কলমের শক্তিতে। জীবনের তাপকে সমাজ থেকে নিয়েছেন নিজের জীবনকে বাজি রেখে। ছিন্নভিন্ন হয়ে […]
-
দুটি গল্প
গুরুগ্রামের গ্রেগর সামসা সকালে রোজকার প্রথামতো গুরুগ্রামের সেক্টর ৫৬-এর নির্জন রাস্তায় দুজনে হাঁটছি….বেশ ফুরফুরে হাওয়া দিচ্ছে…. মেজাজটাও বেশ মানানসই…..সপ্তাহান্তটা কিভাবে সুভালাভালি কাটানো যায় তাই নিয়ে দুজনের মধ্যে একটা মতান্তর প্রায় পেকে উঠেছে……এমন সময় হঠাৎ রাস্তার পাশের রাধাচূড়া গাছ থেকে আমাদের পূর্বপুরুষদের একজন খ্যাঁচম্যাচ মুখভঙ্গি করে নেমে এসে আমার বাঁহাত ধরে ঝুলে পড়লো…..হঠাৎ একিরে বাবা !! […]