-
লেখা আসে নিঃসঙ্গতার গর্ভ থেকে – মনোজ দাস
[ ভারতীয় সাহিত্যের বিশিষ্ট ছোটোগল্পকার, ঔপন্যাসিক ও প্রাবন্ধিক মনোজ দাস। মনোজ দাস ওড়িয়া ও ইংরাজি মিলিয়ে আশিটির ওপর বই লিখেছেন। সাহিত্য পুরস্কার প্রাপ্তির তালিকাও দীর্ঘ। ঝুলিতে রয়েছে সাহিত্য আকাদেমি, সরস্বতী সম্মান, উৎকলরত্ন, ডি.লিট, শ্রীঅরবিন্দ পুরস্কার। সাহিত্য আকাদেমি তাদের সর্বোচ্চ সম্মান ‘ফেলো অব দি আকাদেমি’ অর্পণ করেছেন মনোজ দাসকে। অশীতিপর এই সাহিত্যিকের এই সাক্ষাৎকারটি গৃহীত […]
-
ছোটোবেলায় রবীন্দ্রনাথ ছিল অবশ্যপাঠ্য : গৌতম ঘোষ
[বিশিষ্ট চলচিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ ১৯৯৫ সালে ‘গল্পের সময়’ পরিবারের অন্যতম সদস্য দেবাশিস মজুমদারের সঙ্গে দীপাবলির এক দ্বিপ্রাহরিক আড্ডায় নিজের বেড়ে ওঠা নিয়ে এক দীর্ঘ সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন অধুনালুপ্ত একটি বহুল প্রচারিত বাংলা সংবাদপত্রের জন্য। কিন্তু তৎকালীন সাংবাদিক দেবাশিসবাবু পেশাগত কারণে অন্য পত্রিকাগোষ্ঠীতে যোগদান করায় অপ্রকাশিত অবস্থায় পড়ে ছিল সাক্ষাৎকারটি। ‘গল্পের সময়’ সেই দীর্ঘ আলাপচারিতাটির […]
-
উপযুক্ত সম্মান নেই অলংকরণ শিল্পীর : যুধাজিৎ সেনগুপ্ত
[দীর্ঘ সময় ধরে বাংলা প্রকাশনা জগতে অলংকরণ বা ইলাস্ট্রেটর হিসেবে যুক্ত যুধাজিৎ সেনগুপ্ত। ৬০-এর দশকে বসুমতী, সপ্তাহ পত্রিকা থেকে শুরু করে হাল আমলের ‘জাগো বাংলা’র পুজো সংখ্যা সবেতেই সমানতালে এঁকে চলেছেন তিনি। একজন ইলাস্ট্রেটর হিসেবে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করার নানা অভিজ্ঞতার কথা আমাদের শুনিয়েছেন যুধাজিৎবাবু। বসন্তের এক সকালে তাঁর বাড়িতে বসে শিল্পীর কর্মজীবনের নানা প্রাপ্তি নানা অভিযোগের […]
-
তু…চ্ছ
‘গেহ্রায়ি কিতনা হোগা …’ ‘করিব, হাজার ফিট তো হোগা …’ ‘আগার গিরতা তো …’ ‘কিমা বন যাতা …’ হেডলাইটের হলুদ সমান্তরাল দুটো রেখা সামনের সরলবর্গীয় জঙ্গল ভেদ করবার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে এখনও। অরণ্যরাজির দেওয়ালে পৌঁছানোর আগেই জড়িয়ে গেছে কুয়াশার মরণ-জালে। আমাদের সামনে খাদের গা বেয়ে উঠে আসা সুউচ্চ দেবদারু, ওক, বার্চ, ম্যাপ্লের জঙ্গলের ভগ্নাংশ। পিছনে […]
-
রানওয়ে
এল. এ এয়ারপোর্টের ফ্লোরিস্ট সিলভিয়া মিষ্টি হেসে অভ্যাসবশত জিজ্ঞেস করল, “হলুদ গোলাপ তো”? উত্তর না দিয়ে গোলাপের তোড়া টা নিয়ে দাম মিটিয়ে অ্যারাইভ্যাল এর দিকে এগিয়ে চলে মুরশেদ। আগমনের অপেক্ষারত মানুষদের দাঁড়াবার জায়গাটার মুখেই যে ক্যাফে টা সেখানকার ছোকরা কর্মচারি মেক্সিকান মারিও হিস্পানিক টোনে বলল “তুদে ফ্লাইত অন রাইত তাইম?” হ্যাঁ, না বা হতেও পারে […]
-
শুভ পরিণয়
নব বিবাহিত দম্পতিকে নিয়ে সাজানো গাড়িটা রোড থেকে ষ্ট্রিটে ঢুকতেই সীমন্তিনীর চোখে পড়ল – “Men At Work” এর বোর্ডটা। সামনে তাকাতেই দেখা গেল কালো ধোঁয়া পাকিয়ে পাকিয়ে উঠছে আর তার সঙ্গে বিরক্তিকর ঘড়র ঘড়র আওয়াজ – রাস্তায় পিচ হচ্ছে। বোশেখের এই আগুনঝরা দুপুরে কতগুলি ভগবানের দূত দুইপায়ে এবং মাথায় মোটা চট বেঁধে কর্তব্যে রত। নিবেদিত […]
-
দুই অকিঞ্চিতের গল্প
………… হরিপদদা হরিপদদাদার কথা বলতে গেলে মানসিক ভারসাম্যহীনতার অনেক দৃশ্য আর তার পরেই আমার কিশোর বয়সের অনেক টুকরো টুকরো ঘটনা চোখের সামনে ভেসে আসে – আর তখনই চৈতালির কথা মনে পড়বেই, আর চৈতালির কথা মনে পরার অর্থই হল একরাশ মনখারাপের মেঘ মনের মধ্যে থম মেরে থাকা, রজত জয়ন্তী অতিক্রম করা বউ’এর সঙ্গে অহেতুক দ্বন্দ্বে […]
-
হিসেবনিকেশ
আমাদের ইস্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাই ছিলেন বিজন বাবু । আমরা আড়ালে ওঁকে বলতাম মিসটেক । জ্যামিতি ক্লাসে বোর্ডে উপপাদ্য পড়াতে গিয়ে বইয়ের কথা ওঁর খেয়াল থাকতো না । ফলে প্রায়শই উনি যেটা প্রমাণ করবার কথা তার পরিবর্তে অন্য আর একটা কিছু প্রমাণ করে বসতেন । পরে বইটা দেখে নিয়ে বলতেন “ এতক্ষণ যেটা করলাম সেটা ভুল […]
-
মেটামরফোসিস
ফুটফুটে মেয়ের নাম মঞ্জু । যে পড়শী পরিবারে সে মানুষ হল তাদের পদবীই বসেছে তার নামের শেষে। সে মেয়ে এখন মঞ্জু তামাং। তবে মঞ্জু তা মানতে নারাজ। সে বলে আমি মঞ্জু চুডৈল। নেপালী ভাষায় চুডৈল এর অর্থ ডাইনি। কালে কালে বাড়তে থাকল সে। সেই মেয়ে যখন বছর পাঁচেকের পাহাড়ি ঝোরার সামনে দাঁড়িয়ে কলকল করে সে […]
-
সুজাতা
কলেজের পত্রিকা-বিভাগে কান পাতলে শোনা যায়,’এই সংখ্যায় রবিনের কবিতাটা দেখেছ? just অসাধারণ!! প্রেমের যে এরকম একটা dimension হতে পারে ভাবাই যায় না… আচ্ছা,ওটা নাকি সুজাতাকে উদ্দেশ্য করে লেখা?…ওই যে, psychology-র সুজাতা আছে না… ‘ খেলার মাঠ বলে, ‘ না, কথা রেখেছে বটে ক্যাপ্টেন মৈনাক !! এবারও trophy দিয়েছে কলেজকে! winning stroke-টা কী মারল extra-cover দিয়ে […]
-
পেনে প্রীতি
আমরা এখন টুরে ফিরিতেছি ; অর্থাৎ ঘুরে বেড়াইতেছি, বেদিয়া জাতির জীবন যাপন করিতেছি। আজ কোনো এক গ্রামপ্রান্তের বৃক্ষ ছায়া সঙ্কুল নিস্তব্ধ বিজন ক্ষেত্রস্থল আমাদিগের বস্ত্রাবাস মন্ডলী এবং সিপাই সান্ত্রী ভৃত্যাদিবর্গে পরিবৃত হইয়া জাগ্রত যমালয় হইয়া উঠিল, সেখানে আবেদন পত্রধারী গ্রাম্যলোকের দলে দলে সমাগম চলিল ; শুষ্ক বিবর্ণ চিন্তা–পীড়িত আসামী নীরব বেদনায়, ফরিয়াদীর ক্রোধ ও ঈর্ষাজনিত […]
-
জেনি
[ফরাসি সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদ, এবং মানবাধিকার কর্মী ভিক্টর হুগোর জন্ম ২৬ ফেব্রুয়ারি ১৮০২ । তাঁকে উনিশ শতকের সবচেয়ে প্রভাববিস্তারকারী রোমান্টিক লেখক বলা হয়ে থাকে । নিজের রচনায় আবেগ, বাগ্মীতা এবং পরিনত মনস্কতার কারণে অল্প বয়সেই সাফল্য এবং খ্যাতি অর্জন করেন লা মিজারেবলস –এর এই লেখক। হুগোর প্রথম কবিতা সংকলন ১৮২২ সালে প্রকাশিত হয়, যখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ২০। […]
-
ওঁ জয়দুর্গা
[রবীন্দ্রনাথের চিঠিপত্র সিরিজের নবম খন্ডের অন্তর্গত বিচিত্র বিষয়ের চিঠিগুলির (২৬৪ টি) প্রাপক হেমন্তবালা দেবী, কিছু রবীন্দ্র অনুরাগীর পরিচিত হলেও সাধারণ বাঙালি পাঠকের কাছে অপরিচিতই। ১৯৩১ সাল থেকে ১৯৪১ সাল পর্যন্ত কবির শেষ জীবনের অধ্যায়ে তিনি পত্রলেখার মাধ্যমে তাঁর স্নেহ সান্নিধ্য লাভ করেছিলেন। বহুবার তাঁদের সাক্ষাৎ হয়েছে। হেমন্তবালা দেবী সম্পর্কে তাই আজও কৌতূহল রয়েছে বিদগ্ধ সমাজে। […]
-
শিল্প, বৈদগ্ধ্য ও গল্প – কমলকুমারের রচনায়
শুরু ও শেষ দুইই কাম্য – প্রকৃত অর্থে শিল্পে এ দুই বোধের সমঞ্জসতা কাম্য। কমলকুমার মজুমদারের গল্প – ধরা যাক ‘খেলার বিচার’ – আরম্ভে আছে ‘মাধবায় নমঃ তারা ব্রম্ভময়ী মাগো, জয় রামকৃষ্ণ ! ঠাকুর করুন, যাহাতে আমরা অতীব গ্রাম্য – আমাদের নিজস্ব জীবনের ঘটনা সরলভাবে লিখিয়া ব্যক্ত করিতে পারি…।’ রামকৃষ্ণ যেমন রূপক বলতেন এবং […]
-
ঘরভাঙা ঘর
ঘরে ফিরতে কবিরুলের পা জড়িয়ে আসছিলো। কবিরুল চাকরি করে একটা বেসরকারি ব্যাংকে। মতিঝিলে অফিস। বেতন ভালো। বেতন ভালো বলে এখনো সে নিজের জন্য ভালো একটা বাসা ভাড়া নেয়নি। দেশে বাড়িঘরের চেহারা আগে পাল্টাতে হবে। বাড়ির ছেলে পাস করে চাকরি পাওয়ার সাথে সাথে গ্রামের মানুষ আগে তাদের ঘরখানার জৌলুস দেখতে চায়। এটা বাদ রেখে আর কোনো […]
-
আদর্শ বাংলা বানানঃ একটি প্রস্তাবনা
[বহু দিনের জমানো বিপুল পরিমাণ পুরনো কাগজপত্র ফেলে দেবার উদ্দেশ্যে ঘাঁটাঘাঁটি করতে গিয়ে বাংলা ভাষায় বানানের সমস্যা নিয়ে ১৯৯৯ সালে তৈরি করা এই মুসাবিদাটি হঠাৎ করে সেদিন আমার চোখে পড়ল এবং হাতে এল। তখন আমি ব্রেকথ্রু সায়েন্স সোসাইটির সক্রিয় কর্মী হিসাবে তার বাংলা প্রকাশনার ক্ষেত্রে বানান সমস্যার সমাধানে একটা সাধারণ নির্দেশিকা হিসাবে এটা লিখেছিলাম। […]