-
শব্দ-হরিণ
অন্ধচোখে জল, বালি, আকাশ – কোনো কিছুকেই আলাদা করে বোঝা যায় না। অথচ স্পর্শে জল অথবা বালি – সবটাই আলাদা করে বুঝে নিতে অসুবিধা হয় না দৃষ্টিহীনের। এমনকি যদি বৃষ্টিও নামে, সেই আকাশজল ছুঁতে-ছুঁতে কী এক অলীক শিহর, মাথায়, গায়ে, ঠোঁটে – সর্বত্র জলেরই ছিটে। স্বাদ। বর্ধমান থেকে গো-গাড়িতে বীরভূম আসতে গেলে অজয় পেরোতে হয়। […]
-
কুশল সংবাদ
কিছুদিন আগে আমার স্ত্রী বাড়ির সামনে রাস্তার ওপর হোঁচট খেয়ে পড়ে গিয়েছিলেন। পরের দিন পাড়ার মোড়ে হারুবাবুর সঙ্গে দেখা হতেই জিজ্ঞেস করলেন। শুনলাম আপনার স্ত্রী নাকি পড়ে গিয়েছেন ? আজ্ঞে হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন। ওঃ কি সাংঘাতিক। আমার ভায়েরাভাইকে চেনেন তো ? ঐ যে জেমস ফিন্লের বড়বাবু, রির্টায়ার করতে এখনো বছর দশেক। আগে এদিকেই থাকতেন। এখন […]
-
বোড়কি
না। বোড়কিকে কোথাও খুঁজে পাওয়া গেল না। ছলছল চোখে শিবকুমার এ কথা বলতেই কান্নায় ভেঙে পড়ল তার বউ। আর তার কান্না শুনে বইপত্র ফেলে পাশের ঘর থেকে ছুটে এসে মায়ের কাছ ঘেঁষে দাঁড়াল তাদের বাকি দুই ছেলেমেয়ে— মেজকি আর ছোটকা। কান্না জড়ানো গলাতেই শিবকুমারের বউ বলল, তা হলে ও বোধহয় আবার পালিয়েছে। যাও, থানায় যাও। […]
-
গাছতলা
মাঠের মাঝখানে খানিকটা ঘাস জমি। জমিটায় একটা ডোবা কেটে ডাঙাটাকে উঁচু করা হয়েছে। একটা ছোট্ট মন্দির। জমিটায় ঝাউ,শিরীষ,পাকুড় আর তালগাছের ছায়া। জায়গাটা ঝাউতলা আশ্রম নামে পরিচিত। মন্দিরের মধ্যে দুটো কালো পাথর। একটি পাথর হল মা। অন্যটি বাবা। যে যার ভক্ত সে তার ইষ্ট অনুযায়ী পাথরে ফুল-জল দেয়। মাঝে মাঝে গ্রামের লোকেরা ঢাক ঢোল বাজিয়ে পুজো […]
-
যখন দিগন্তে ফুটে ওঠে রামধনু রং
এই শহরে আমি নতুন এসেছি। চাকরিতে বদলি হয়ে। আমার থাকবার একটা জায়গা চাই। কিন্তু পছন্দমত থাকার জায়গা আর পাচ্ছি না। আমি অবিবাহিত পুরুষ। একা পুরুষকে কেউ সহজে ঘর ভাড়া দিতে চায় না। আর আমিই বা এত তাড়াতাড়ি এক থেকে দুই হই কী করে? যতদিন না এক থেকে দুই হই ততদিন কি আমি ঘর ভাড়া […]
-
আত্মীয়স্বজন ও অনান্য গল্প
সেদিন আমি আর সুতপা সিনেমা দেখে ফিরছি, হঠাৎ রবির সঙ্গে দেখা। রবি আমার পিসতুতো ভাই। বাগুইআটিতে বড়সড় ফ্ল্যাট কিনেছে। ছোটোবেলায় আমরা একে অপরকে ছাড়া চলতেই পারতাম না। ও ছিল আমার ডাংগুলি, গুলি, গুলতি খেলার সঙ্গী। প্রতি মাসে একবার করে হয় পিসিরা আসত আমাদের বাড়ি, না হলে আমি-বাবা-মা-বোন সবাই মিলে যেতাম পিসির বাড়িতে। বাবা ছিল সকলের […]