ফ্ল্যাশব্যাক
ইনটলারেবল! এভাবে আর থাকা যায় না।
আস্তে!
কেন, আস্তে কেন! সবাই জানুক। তোমার গুণধর বোনের কথা!
কেন, কী হয়েছে!
আচ্ছা, আমি কী দোষ করেছি বল তো! সবের মধ্যেই দোষ ধরে আমার। হ্যাঁ, দোষের মধ্যে বিয়ে করেছি তোমায়।
আস্তে।
সেদিন বাড়িতে ঢোকামাত্র জেরা! এত দেরি কেন? কোথায় গেছিলে? ওকে কৈফিয়ত দিতে যাবো কেন!
চুপচাপ দুজনেই। দম নিয়ে আবার …
ওর সাথে তোমার মা-ও তাল দেন। অসম্ভব। আর থাকা যায় না।
আস্তে।
আচ্ছা বলতো, ওর সাথে কী শত্রুতা আমার ?
আস্তে, আস্তে!
না, না, তোমাকে বলতেই হবে। আর চুপ করে থাকবে না তুমি।
মানে?
শোন, ও ফেনিয়ে ফেনিয়ে তোমাকে অনেক কথা বলবে। তোমার কানে বিষ ঢালবে।
আস্তে!! প্লিজ!
উপরের কথোপকথন একটা ভীড় মেট্রো কমপার্টমেন্টে। সদ্য বিবাহিত যুবক-যুবতী কথা বলছে। ওরা দাঁড়িয়ে। সামনে সিটে বসা পক্ককেশবিশিষ্ট এক বয়স্ক ভদ্রলোক চোখ বুজে বসেছিলেন। হঠাৎ চোখ খুললেন। ওদের দিকে তাকালেন একবার। তারপর ছেলেটির দিকে চেয়ে রইলেন একভাবে। তাঁর চোখ ছলছল করে উঠল। আবার চোখ বুজলেন।
সংখ্যাভিত্তিক জীবন
দূর থেকে চিনতে অসুবিধা হচ্ছিল, একটু কাছে আসতেই বললাম, ‘আর কত রোগা হবেন? এরপর তো চেনা যাবে না!’
হাঁটা না থামিয়েই উনি বললেন, ‘এখনও কমেনি।‘
আমিও ওনার সাথে চলা শুরু করলাম। বললাম, ‘কী কমেনি ?’
ভদ্রলোক বললেন, ‘এখনও ৭৫, ৬৫ করতে হবে। ডাক্তার বলেছে।‘
ভদ্রলোকের এখন ৭৫ কেজি ওজন।
উনি বলে চললেন, ‘সুগারও ধরে গেছে। তবে পিপি ১৫০, জাস্ট মার্জিনাল। ডাক্তার বলেছে, মিষ্টি বাদ।
আমি হেঁটে চলেছি আর শুনে যাচ্ছি।
‘প্রেসার হাই, উপরেরটা ১৬০, তলারটা ৯০, তাও ওষুধ খেয়ে।‘
আমি বললাম, ‘হ্যাঁ, তা বেশিই বটে !’
‘ডাক্তার বলেছে বাঁধাকপি ফুলকপি বাদ, ঢ্যাঁড়শ বাদ, প্রোটিনও কম করে। ইউরিক অ্যাসিড ৮.৫ । তবে ওটা ওঠানামা করে। কোলেষ্টরল সামান্য বেশি তবে চিন্তার কিছু নেই। কিন্তু সবের মূলে হচ্ছে ওজন। সকালে ওটস খাওয়া সবথেকে ভালো। ৬৫ করতেই হবে। একজনের ৬২, জানেন! এখানেই থাকেন। দারুণ না? আপনি ভালো তো?’
উত্তরের অপেক্ষা না করেই চলে গেলেন ভদ্রলোক। আর দাঁড়ালেন না।
Tags: অণুগল্প সংখ্যা, তপন রায়চৌধুরী, ফ্ল্যাশব্যাক ও অন্যান্য গল্প
email:galpersamay@gmail.com
Samarendra Biswas on April 19, 2020
ভালো লাগলো।
Samarendra Biswas on April 24, 2020
তপন রায়চৌধুরীর- ফ্লাশব্যাক ও সংখ্যাভিত্তিক জীবন- দুটো অনুগল্পই ভালো লাগলো।
মতামত
আপনার মন্তব্য লিখুন
আপনার ইমেল গোপনীয় থাকবে।