01 Jul

খন্ডস্মৃতির আলো-অন্ধকার

লিখেছেন:প্রবুদ্ধ বাগচী


স্মৃতি আসলে ঠিক কী ? কেমন তার চেনা অবয়ব ? কীভাবেই বা দূর অতীত থেকে সে পৌঁছে যায় এই আজকের একটা সকালে বা সন্ধ্যেয় ? কোন পথ দিয়ে সে আসে ? আর কোন পথে কেমনভাবেই তা হারিয়ে যায় ? শুনতে পাই স্মৃতিহারা মানুষের কাছে ক্রমশ ঝাপসা  হয়ে আসে কাছের স্মৃতি অথচ জীবনের দূরপ্রান্তে কোনো তুচ্ছ ঘটনাও তখন তার কাছে বাড়তিভাবে জীবন্ত । হয়তো কবে কোন খেলার সময় আঘাত লেগেছিল হাঁটুতে সেই ব্যথা তখন ঘনিয়ে ওঠে হঠাৎ, অথবা ছেলেবেলার কোন বান্ধবীর সঙ্গে সামান্য মন কষাকষি — সেই তেতো অভিজ্ঞতা অকস্মাৎ বিষণ্ণ করে তোলে দুপুর-বিকেল। অথবা হয়তো কোনো ভয় —- ইতিহাসের ধূসর পৃষ্ঠা থেকে আচমকা লাফিয়ে পড়ে তার অভিঘাত। একটা পাকিয়ে ওঠা ধোঁয়া, লোকজন হইহই, আগুন আগুন চিৎকার —– কোথায়? কোথায় ঘটেছিল এইসব ? ছিন্নমূল মানুষের মনের খুব ভিতরে তার বসত। দাঙ্গায় ঘরছাড়া সঙ্গীদলের কথা মনে পড়ে খুব, যার হয়তো বা অনেকটাই আজ আর মনে নেই। একরত্তি এক কিশোরী বেরোতে পারে না সেই স্মৃতি থেকে যা তাকে চিনিয়েছিল নিজের শরীরের ভিন্ন এক অর্থ অথবা কোনো গোপন আগ্রাসন , যা কেবল ঘটে যেতে পারে চেনা খুব মানুষের আড়াল ধরেই। সবটাই থরে থরে সাজানো, হয়তো বা কিঞ্চিৎ এলোমেলো, পারম্পর্যরহিত। তবু তাও একরকম স্মৃতি। সেই স্মৃতি কখনো তাকে তছনছ করে —- কীভাবে করে তা এক গভীর রহস্যপ্রদেশের আলো অন্ধকার। স্মৃতিরা আসলে বাহিনী হয়ে ঘিরে থাকে একটা মানুষের জীবন। কখনো তারা ঘাই মেরে ওঠে ডুবজলে। উড়ন্ত শুশুকের মতো চকিত দেখা দিয়ে আবার মিলিয়ে যায় গহিন অতলে। শোক বেদনা ক্রোধ বা ভয় – তখন যেমন খুশি নাম দেওয়া যায় তার।

প্রায় ছত্রিশ বছর আগে হুগলী জেলার এক মফস্বল জনপদ থেকে যখন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙিনায় এসে পড়ি সে ছিল এক চৌবাচ্চার তেলাপিয়ার সমুদ্রযাত্রা। সহপাঠী ও সহপাঠিনীরা সব নামজাদা স্কুলের পড়ুয়া, যেসব স্কুলের নাম আমরা জানতাম এবিটিএ টেস্ট পেপারের সূত্রে। সবথেকে বড় সমস্যা হল তাদের  ভৌগোলিক অভিজ্ঞতার সীমাবদ্ধতায় তারা আসলে বুঝতেই পারত না, আসলে আমার বাড়িটা ঠিক কোথায়। অনেক পরে বুঝেছি, কলকাতার সাবেক এনলাইটেন্ড ও এলিট সমাজ আসলে টালা থেকে টালিগঞ্জের মধ্যেই পায়চারি করতে পছন্দ করে, বাকি বিশ্বভুবন নিয়ে তাদের তেমন মাথাব্যথা নেই। কিন্তু আমার মফস্বলী আড়ষ্টতাই ছিল তাদের সঙ্গে আমার মেলামেশার প্রধান অন্তরায়। বাধ্য হয়েই ক্লাসে কিছুটা মুখচোরা হয়ে থাকতাম বলেই হয়তো কোনো কোনো অতিরিক্ত স্মার্ট সহপাঠী আমায় ভাবত আমি বুঝি শান্তিনেকতনের সুশীল শান্ত ছাত্র। দক্ষিণ শহরতলির সোনারপুর, মল্লিকপুর বা বারুইপুরের কোনো কোনো সহপাঠীর সঙ্গে স্বাভাবিক সখ্য তৈরি হয়েছিল সে যেন খানিকটা প্রান্তীয় অবস্থানেরই কারণে। কিন্তু এ তো শুধু মিশ খেতে পারা না-পারার কথা, এর মধ্যে আর যাই হোক ভয় নেই। কিন্তু ভয় ওঁত পেতে ছিল অন্য জায়গায়।

ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রদের তো বটেই, যাদবপুরের অন্যান্য শাখাতেও নবীন ছাত্রদের মধ্যে একটা চোরা আশঙ্কা ছিল জুনিয়রদের নিয়ে সিনিয়রদের ‘মজা করা’ কে কেন্দ্র করে। না বললেও  চলে, এই ভয়ের বাড়তি চাপের সংক্রমণ  ছিল তুলনায় প্রান্তীয় ছাত্রছাত্রীদের মধ্যেই বেশি। সংবাদপত্রের ভাষায় র‍্যাগিং, পড়ুয়াদের লব্জে ‘বোর করা’। বিষয়টা নিয়ে আজকের মতো সচেতনতা ও ফৌজদারি অপরাধের সংস্থান তখন স্বপ্নের অতীত। খবরের কাগজে পড়া যেত, উচু ক্লাসের ছাত্রদের র‍্যাগিং-এ জলপাইগুড়ির কোন ছাত্র নাকি গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে, মেডিক্যাল কলেজে হোস্টেলে এমন র‍্যাগিং যাতে নাকি অপমানিত ছাত্রটি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি। এগুলো পড়তে পড়তে যে ভয় করত না তা কিন্তু নয়। মনে হত, যদি আমাদের ক্লাসেও এমন ঘটে ! যারা একেবারে গোড়া থেকেই হোস্টেলে থাকত তাদের মুখে রাতের হোস্টেলের টুকিটাকি ঘটনা যে কানে আসছিল না, তা নয়। শুনেছি, থানার লকআপেও বন্দিদের নির্যাতন করা হয় রাতের দিকে। তারপর রাত্রি এসে দিনের পারাবারে মেশে।

তাই যেসব দিনে রুটিনের ক্লাস হঠাৎ অফ হয়ে যেত সেই দিনগুলোয় ছেয়ে আসত একরকম শঙ্কা । যদিও বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে বামপন্থী ছাত্ররাজনীতির জমজমাট ঋতু, সকলেই কোনো না কোনো গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ত — তবু এইসবের মাঝখানেই থাকে একটা ধূসর বিষুবঅঞ্চল। র‍্যাগিং অভিলাষীরা ভিড় করে থাকে ওই জায়গাটাতেই। প্রথম মাসটা কেটে যাচ্ছিল এইরকমই কেঁপে কেঁপে ওঠা ভয়ের ভিতর, আজ যাকে বলা হবে ট্রমা। একে স্বভাবজ আড়ষ্টতা, তার ওপর যদি সম্মানহানি ঘটে অন্য সহপাঠীদের সামনে !

সেদিন সকাল থেকেই হালকা খবর ভাসছিল, তিনটের পরে আর ক্লাস হবে না। ঘটলও তাই। আগাম ক্লাসশেষের খুশিতে আর সবাই যখন গল্পগুজবে মেতে আছে আমার ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় কেন জানি না কু ডাকছিল। টয়লেটে যাওয়ার মুখে দেখলাম বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে ওরা তিনজন। নামগুলো আজও মনে আছে, এই সাড়ে তিন দশক পেরিয়েও। একটুও আড়াল করতে চাইব না তাদের —- সুব্রত, শারদ্বত ও সুস্মিতা। প্রথম দুজন থার্ড ইয়ার, বাকিজন সেকেন্ড ইয়ার। শুনেছিলাম এরাই সেই থ্রি মাস্কেটিয়ার্স ওরফে ত্রয়ী শয়তান । বুকটা ধড়াস করে উঠল। তবে কি… । সময় নষ্ট না করে ক্লাসে ফিরলাম। দুজন তখন ক্লাসে ঢুকে পড়েছে, ক্লাস থেকে বেরোনোর দুটো দরজার একটা আটকে রেখেছে তাদেরই একজন। মুহূর্তের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিলাম, আমায় পালাতে হবে। সুস্মিতা এসে অন্য দরজাটা আটকে ধরার আগেই কোনোক্রমে ব্যাগ কাঁধে করে ক্ষিপ্র শশকের মতো ছিটকে বেরিয়ে এলাম বারান্দায়। পেছনে তখন নারীকন্ঠ : কোথায় যাচ্ছিস? দাঁড়া ! দাঁড়া ! বলছি …

কে শোনে কার কথা ? আমি তখন ওদের নাগাল ছাড়িয়ে আপ্রাণ ছুটে চলেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস পেরিয়ে বাসরাস্তার দিকে। ছুট ছুট ছুট … কী আশ্চর্য কোনো অপরাধ নেই, তবু এক সদ্য তরুণ শিক্ষার্থীকে ছুটে পালাতে হচ্ছে তার প্রিয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে। সে এক দুঃসহ স্মৃতি। তবু পালিয়ে বেঁচেছিলাম সেইদিন। পরের দিন ক্লাসে গিয়ে আরো বিশদে বুঝেছিলাম সেই কথা। আর সেইদিন থেকেই বিশ্বাস করে এসেছি, র‍্যাগিং মানে এক স্পষ্ট সন্ত্রাস, নির্বিচার হিংসা, আধিপত্য কামী নির্যাতন। এবং সম্ভাব্য নির্যাতিতের ওপর তৈরি করা হাড় হিম করা ভয়। পরে বুঝেছি, এই ভয় পাওয়ানোটা ভবিষ্যতে লাগে রাষ্ট্রের প্রয়োজনে। নাগরিকের মধ্যে যে অসামাজিক পশুটা আছে তাকে ছোটবেলা থেকে মাঝে মাঝে দুধ-কলা দিয়ে পুষতে হয় যে — নারী পুরুষ নির্বিশেষে ।  খন্ডস্মৃতি থেকে এক বোধের কিনারে পৌছে যাওয়া এইরকম । স্মৃতি বাহিনীর এও এক অংশ।

 

প্রায় বত্রিশ বছর আগে বেঙ্গালুরু শহরের এক নামী হাসপাতালে আমার বাবা প্রয়াত হন। সরকারি কাজে তিনি তখন ওই শহরে ছিলেন। তার অসুস্থতার খবর পেয়ে আমি সেখানে ছুটে যাই। চিকিৎসাকেন্দ্রে দিনদশেক সমস্ত ধরনের চেষ্টার পর এক মধ্যরাতে তার জীবনাবসান হয়। আমার বয়স তখন একুশ ছুই ছুই। যে বয়সের পর নীললোহিতের আর বয়স বাড়ে না। বিদেশ বিভূঁইয়ে এই আকস্মিক দুর্ঘটনার ধাক্কা সামলানোর থেকেও বড় প্রশ্নচিহ্ন ছিল বাবার দেহ নিয়ে কীভাবে পৌছানো যাবে কলকাতায় ? সেই সুবিশাল হাসপাতালের ওয়েটিং লাউঞ্জে কোণের একটা চেয়ারে বসে শোকে আর সংশয়ে থরথর করে কেঁপে উঠছিলাম আমি। অফিসের সহকর্মীদের অসামান্য সহযোগিতায় ও আন্তরিক উদ্যোগে বিকেলের বিমানে মরদেহ নিয়ে আমার কলকাতা যাওয়ার ব্যবস্থা হল। তবে একটানা বিমান পাওয়া গেল না । বেঙ্গালুরু থেকে প্রথমে চেন্নাই ( তখন অবশ্য মাদ্রাজ নামটাই ছিল), সেখান থেকে অন্য আরেকটা বিমানে কলকাতা । সংকটের সঙ্গে যুক্ত হল নতুন এক আশঙ্কা। বিমান বদলের সময় কফিনবন্দি দেহ যদি কলকাতাগামী বিমানে না ওঠে ! এই ব্যাপারে পই পই করে সতর্ক করে দিয়েছিলেন অফিসের সহকর্মীরাই। আর সেই আমি প্রথম জানলাম, মৃত্যুর পর মানুষ আসলে কার্গো হয়ে যায় ! বাবাও তাই হল।

বেঙ্গালুরু থেকে চেন্নাই স্বল্পকালীন বিমানযাত্রায় প্রস্তরীভূত শোকের পাশে পাশে আমায় ঘিরে থাকল এই এক গভীর উদ্বেগ। অথচ বিমানযাত্রায় একেবারেই অনভ্যস্ত আমি এই উদ্বেগ জানাব কাকে ? বত্রিশ বছর আগে খুব কম মানুষই বিমানে চড়ার মহার্ঘ সুযোগ নিতে পারতেন , যারা চড়তেন তারা দামী মানুষ। ফলে আমার মতো মুহ্যমান, উদ্বিগ্ন ও বিপর্যস্ত তরুণের পাশের সহযাত্রীর দৃষ্টি নিবদ্ধ থাকবে হাতেধরা ইংরিজি ম্যাগাজিনের পাতায়, এটাই স্বাভাবিক। আর সেদিনই আমি বুঝতে পারলাম শোক বিষয়টা আসলে অত্যন্ত ব্যক্তিগত একটা বিষয় —- বিমানের সহযাত্রী থেকে পরিবারের স্বজন কেউই আসলে তার নাগাল পায় না। বিমান ওড়ার পর অনুভব করলাম এই শোক আর উদ্বেগ আসলে আমার বয়স বাড়িয়ে দিচ্ছে আস্তে আস্তে।

চেন্নাই পৌঁছাবার অল্প আগে খানিকটা নিরুপায় হয়েই এক বিমানসেবিকার কাছে খুলে বললাম বিষয়টা। কী আশ্চর্য, পেশাদারি মুখোশ সরিয়ে রেখে বিজাতীয় সেই যুবতীটি অদ্ভুত এক সমানুভূতির দৃষ্টি নিয়ে তাকালেন আমার দিকে। সেই ভরসা দেওয়া চাহনি আজও আমার ভিতর বুকভরা প্রশ্বাসের মতো জাগরূক। দেবদেবীতে আমার তেমন ভরসা নেই, তবু সেই মুহূর্তে মনে হয়েছিল সেই চাহনিতে যেন কোনো দেবীর বরাভয়, যিনি মনের গভীরে ঢুকে ছুঁতে চাইছেন আমার অসহায়তার প্রান্তটুকু !

চেন্নাই বিমানবন্দরে নেমে বিমান পরিবর্তনের জন্য অপেক্ষা করছি। সঙ্গে এক চোরা উদ্বেগ । বিশাল বিমানবন্দর, আলোয় ছেয়ে থাকা ওয়েটিং লাউঞ্জ, ব্যস্ত মানুষের ঢল। সবাই চলেছে যে যার কাজে, কেউ কাউকে চেনে না, আমিও চিনি না কাউকে। এক কোণে বসে ভাবছি, সত্যিই বাবার দেহ এই বিমান থেকে অন্য বিমানে উঠবে তো? কেমন ভাবে জানতে পারব আমি? সেই কথা  কাকেই বা জিজ্ঞাসা করব এই প্রকান্ড বিমানবন্দরে? যদি ঠিক ঠিক না ঘটে ব্যাপারটা ? একরাশ দুর্ভাবনা  তখন ছাপিয়ে উঠেছে যাবতীয় শোক আর যন্ত্রণার ওপর দিয়ে। মানুষ বোধহয় এই রকম সময়েই ঈশ্বরের স্মরণ নেয়। একটা সোফায় প্রায় দমবন্ধ করে বসে আছি। চল্লিশ মিনিটের মধ্যেই কলকাতা বিমানে উঠতে হবে। তারপর কী হবে? এদিক ওদিক তাকাই প্রায় কোনো উদ্দেশ্য ছাড়াই। জানি কোনো মানুষই এখানে আমায় সাহায্য করতে প্রস্তুত নয়। ঠিক এমন সময় চোখে পড়ল, ডিউটি শেষ করে ফিরে আসছেন সেই বিমান সেবিকা। আমায় বসে থাকতে দেখে এগিয়ে এলেন কাছে। ইংরিজিতে বললেন, চিন্তা কোরো না, সব ব্যবস্থা করে দিয়েছি। তারপর আমার হাতে হাত রেখে নিবিড় সমবেদনা জানালেন। বললেন, শোক ভুলে যাও। এবার খেয়াল করলাম তাঁর গলায় ক্রুশচিহ্নবাহী লকেট। আমার সামনে কিছুক্ষণ দাঁড়ালেন তারপর। আবার বললেন, আমি যাই, তুমি ভাল থেকো। কত মানুষ কথা দিয়ে ভুলে যান। কিন্তু তিনি কথা রেখেছিলেন। তাঁর সঙ্গে আমার আর কোনোদিন দেখা হয়নি, হওয়ার কথাও নয়। তবু সেই ঈশ্বরীর মুখ আজও আমার স্মৃতিতে । অতিদূর একখন্ড স্মৃতির হীরকদর্পণে আজও তাঁকে দেখতে পাই। স্মৃতি বাহিনীতে তাঁর জায়গাটা আজও অম্লান।

Tags: , ,

 

 

 




  • খোঁজ করুন




  • আমাদের ফেসবুক পেজ

  • মতামত

    আপনার মন্তব্য লিখুন

    আপনার ইমেল গোপনীয় থাকবে।




    Notify me when new comments are added.

    যোগাযোগ


    email:galpersamay@gmail.com

    Your message has been sent. Thank you!

    গল্পের সময় পরিবার
    সমীর
    অগ্নীশ্বর
    দেবাশিস
    চিন্ময়
    পার্থ
    মিতালি
    জাগরণ
    দেবব্রত

    © 2016 - 2024 গল্পের সময়। ডিজাইন করেছেন অগ্নীশ্বর। নামাঙ্কন করেছেন পার্থ