(এটা তো গল্পই নয় । সেই অর্থে আমার লেখাও নয় । ইতিহাসের লেখা । যারা নিয়মিত অসাধারণ খবরের খোঁজ রাখেন তাঁদের মনেও পড়তে পারে । আগে যাঁরা এ নিয়ে লিখেছেন এই সুযোগে তাঁদের স্বীকৃতিও জানাই ।)
২০২০ আমাদের সামাজিক দূরত্ব শেখালো – এ কথাটা একদমই সত্যি নয়।
সামাজিক দূরত্বের বীজ আমাদের রক্তে । আমরা মানে তুমি, আমি, ওই সিংহটা, হরিণ, পায়রা, টিয়া আর বিষাক্ত সাপটাও – অর্থাৎ সব প্রাণীই ।
আমাদের ঘিরে থাকে তিনটি বৃত্ত । বাইরের বড় বৃত্তটি নিরাপত্তার বলয় । এই বৃত্তের বাইরে থাকলে হরিণ সিংহকে ভয় পায়না । পায়রা নিশ্চিন্তে ডিম পাড়ে । এখানে কিছুই ঘটেনা, তাই গল্পহীন এই বৃত্ত একা একা পড়ে থাকে সবার নজরের বাইরে ।
মাঝখানের দ্বিতীয় বলয় দেয় সতর্কতার সংকেত । এখানে হরিণ তৈরী থাকে যে কোনো মুহূর্তে পালানোর জন্য । পায়রাটা সাবধানে নজর রেখে দানা খোঁটে । কেউটে ফণা তুলে ভয় দেখায় ।আবার এই বৃত্তটিই প্রত্যাশার ধাত্রীভূমি । মনের মানুষ এখানেই প্রথম দেখা দেয় । বাণিজ্য, বন্ধুত্ব আর প্রেমের প্রথম বীজ এখানেই প্রোথিত হয় ।
সব থেকে কাছের তৃতীয় বলয়টি আত্মরক্ষার । আবার আত্মসমর্পনেরও । এই বৃত্তে ঢুকে পড়লে সাপ ছোবল মারবে । বিড়ালে আঁচড় দেবে । আবার এই বৃত্তেই প্রেমের পূর্ণতা -এখানেই বন্ধুত্বের আলিঙ্গন । এই তৃতীয় বৃত্ত ভেঙেই মানুষ সমাজ তৈরী করেছে । পৃথিবীর সব গল্পই এই তৃতীয় বৃত্ত ঘিরে লেখা । আমাদের এই কাহিনীও তাই । এটি এক অপরাজিতার গল্প, যিনি আন্দামানের উত্তর সেন্টিনিল দ্বীপের তৃতীয় বৃত্তভেদের নায়িকা ।
নীলজলে ঘেরা সবুজপাহাড়ি অরণ্য। শ্বেতশুভ্র সৈকত। অপরূপা আন্দামান দ্বীপমালা যেন বঙ্গোপসাগরের রানী । অনেক ইতিহাসের সাক্ষীও । এখানের দ্বীপগুলোর মধ্যে উত্তর সেন্টেলিন একটু অনন্য । তাকে ঘিরে তিন কিলোমিটারের সরকারি সামাজিক দূরত্ব । এবং সেটি যথাযথ ।
সামাজিক ঘনিষ্টতা জারোয়াদের ক্ষতি করেছে । সভ্যতার সংস্পর্শে এসে দু দুবার মহামারী হয়েছে । সেই ভুলটা আমরা সেন্টিলিজদের ক্ষেত্রে করতে চাইনা । আর ওরাও চেয়েছে একান্তে থাকতে । ষাট হাজার বছর ধরে !
সেন্টিলিজ প্রজাতি হয়তো প্রাচীনতম ভারতীয় সমাজ । মহেঞ্জাদারো তো মাত্র সাড়ে চার হাজার বছর আগের কথা, মহাভারত আরও নবীন ।
দূরত্ব রহস্য বাড়ায় । দেশি বিদেশি অনেকেই স্থানীয় নাইয়াদের পয়সা দিয়ে দূর থেকে দেখে এসেছে এই সুন্দর দ্বীপ । দ্বীপের কাছে এলেই কিন্তু নজরে এসেছে তীর ধনুক হাতে স্থানীয় প্রতিরক্ষা । নাবিকরাও দ্বীপ পর্যন্ত যায়না । ওদের দুই ঘুমন্ত সঙ্গীর নৌকা একরাতে ভেসে ভেসে ওই দ্বীপে পৌঁছে আর ফেরেনি ।
২০১৮সালে এখানেই বিশ্ব জোড়া গল্প হয়ে গেলো – জন এলেন চাউ । ২৬ বছরের মার্কিন যুবক জন ছিল এক দুঃসাহসিক অভিযাত্রী । অনেক রোমহর্ষক কাহিনীর নায়ক সে।জেদি বিষাক্ত সাপের (rattle snake) এর দংশন থেকে বেঁচে ফিরেছে জন । ট্রেক করতে গিয়ে রাস্তা হারিয়ে ফেলে জমে যাওয়া গ্লেসিয়ার বেয়ে নীচে নামার অভিজ্ঞতা আছে তার । সুন্দর স্বাস্থ্যের এই যুবককে কাছ থেকে দেখে অনেকেই ভালোবেসেছে ।
জনের কিন্তু আরো গভীর আবেগ যীশু খ্রিস্টকে ঘিরে। ধর্মে খ্রিস্টান জন গভীর ভাবে বিশ্বাস করে যে যীশু তাঁর রক্ত দিয়ে মর্ত্যবাসীর পাপের ঋণ শোধ করেছেন । যীশুপ্রেম তাঁকে অল নেশণ্স (All Nations) নামের একটি সংগঠনের কাছাকাছি নিয়ে আসে যাদের ব্রত যীশুর নাম বিশ্ব জুড়ে প্রচার করা ।
স্কুলে থাকতেই জন সেন্টেলিজদের কথা শুনেছিলো । সে শুনেছে যে ওদের দ্বীপে চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই । জনসংখ্যা ক্রমেই কমে আসছে । আরও শুনেছে যে এমন একটি সুন্দর দ্বীপে ঈশ্বরের উপাসনা হয়না । জনের মনে সন্দেহ – তাহলে কি এই দ্বীপটিই শয়তানের শেষ দুর্গ?
ওদের চিকিৎসার প্রয়োজন । ধর্মে দীক্ষাও জরুরী । তার মনে স্থির বিশ্বাস জাগলো সেন্টিলিজদের উদ্ধারের দায়িত্ব এখন তারই । অভিযানপ্রিয়তা আর গভীর যীশুপ্রেম । এ দুটির সঙ্গম যে জনকে সেন্টেনিল দ্বীপে নিয়ে আসবে সেতো সোজা অংকের হিসেব ।
তাই হলো । ২০১৮ র নভেম্বরের এক রাতে জন সমুদ্র প্রহরীদের নজর এড়িয়ে স্থানীয় জেলেদের সাহায্যে দ্বীপের খুব কাছে এসে নোঙ্গর ফেললো । আর সকালে সূর্য ওঠার সাথে সে একাই একটি কায়াক নিয়ে দ্বীপের দিকে রওনা দিলো । জনের পরনে শুধু অন্তর্বাস কারণ সেন্টালিজরা বস্ত্রহীন থাকে ।
এই সকালে সে সরাসরি দ্বীপের মাটি না ছুঁয়ে সমুদ্রতট ধরে এগিয়ে দূর থেকে একটি আদিবাসী কুটিরের ওপর তার নজর রাখলো । জনের উপস্থিতি বুঝতে পেরে পাঁচজন দ্বীপবাসী বেরিয়ে আসে। তাঁদের কণ্ঠে উঁচুস্বরের আপত্তি । হাতে তাদের ধনুক আর বর্শা ।
জন দূর থেকে জানালো যে সে শত্রু না – যীশুর আর ভগবানের ভালোবাসা নিয়ে এসেছে সে । দ্বীপবাসীরা জনের ভাষা জানে না । তাদের হাত ধনুকে পৌঁছে গেল । ব্যর্থ মনোরথ জন কায়াক ঘুরিয়ে দ্রুতগতিতে নৌকায় ফিরে এলো ।
অভিযাত্রীরা ভয়ে পালায় না । ধর্ম প্রচারকরাও তাই । জনের মন বললো যে অবিশ্বাসের কুয়াশা কাটিয়ে সে সেন্টালিজদের কাছে ঠিক পৌঁছে যাবে। সেই বিকেলেই সে ফিরে এলো সেন্টিলিন দ্বীপের মাটিতে – দ্বীপবাসীদের থেকে একটু দূরত্ব রেখে ।
দ্বিতীয় বৃত্তের ওপার থেকে দ্বীপবাসীরা উঁচুস্বরে আপত্তি জানালো আবার । জনের মনে কিন্তু এখন অগাধ আস্থা । আর তার মনে হলো যে ওদের ভাষায় কথা বললে দূরত্বের বরফ গলবে, তাই সে ওদের কথা অনুকরণের চেষ্টা করলো । তার ভাষাজ্ঞানের দুর্বলতায় রাগী দ্বীপবাসীদের মুখেও হাসি এসে গেলো।
জন তখন প্রার্থনা করছেন । কয়েক মিনিট যেন একটু শান্তির পরিবেশ । আপত্তির তীব্রতা কম। মনে আশার আলো। হঠাৎই একটি তীর ছুটে এসে জনের বাইবেলের প্লাস্টিকে বিঁধলো । আর পেছন ফিরে জন দেখে তার কায়াকটাও নেই। সেন্টিলিজরা জনকে কিন্তু প্রাণে মারেনি। সে সাঁতার কেটে নৌকায় ফিরলো ।
রাতের গভীর । জন নিজের সাথে একা। তার সাহস, তার বিশ্বাস তাকে বললো যে এখন একটাই পথ । আর সেটা সামনের দিকে ।
সকালে জন আবার সেন্টেনিল দ্বীপে। এবার লক্ষ্য তৃতীয় বৃত্ত।
সেদিন বিকেলে দূর থেকে জেলেরা দেখেছিলো শান্ত সমুদ্র সৈকত খুঁড়ে কার যেন শেষ শয্যার প্রস্তুতি হচ্ছে । মৃত ব্যক্তির চেহারার সাথে জনের মিল ছিল । তৃতীয় বৃত্ত অধরাই থেকে গেল জনের ।
দু হাজার কিলোমিটার দূরে দিল্লিতে ড. মধুমালা চ্যাটার্জি দুঃখের সাথে বললেন,
– ‘যারা সমুদ্র, সূর্য আর প্রকৃতিকে নিজের করে নিয়েছে, তাদের নতুন করে ভগবান দেওয়ার স্পর্ধা করে কেন মানুষ ?’
এ কথা বলার অধিকার অর্জন করেছেন মধুমালা । আন্দামানী আদিবাসীদের তাঁর থেকে ভালো কেউ চেনেনা । তাঁর লেখা বই আর গবেষণা পত্র পৃথিবীর সব নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রামাণ্য তথ্যের মর্যাদা পায় । আর তিন দশক আগে তাঁরই উপস্থিতিতে সেন্টিলিজরা বাইরের জগতের সাথে প্রথম হাত মিলিয়েছিল ।
এ গল্পের শুরু আরও একটু আগে।
বারো বছরের মধুমালা তখন শিবপুরে থাকে । একদিন সকালে Telegraph পত্রিকার একটা ছোট খবর তার নজরে এলো । আন্দামানের এক দ্বীপে বিলুপ্ত প্রায় অঞ্জে উপজাতিতে এক নতুন শিশুর আবির্ভাব হয়েছে । উৎসবে নাচছে দ্বীপ । জগৎজননীর আশীর্বাদে বিশ্ব জুড়ে প্রাণের লীলা । আজ এক কিশোরীর হৃদয়ের তারে বেজে উঠলো বিশ্বমাতার সেই স্নেহের অনুরণন । হাজার মাইল দূরে এক ছায়াঘেরা দ্বীপ । সেইখানে কোনো এক প্রাচীন বৃক্ষের নিচে ছোট কুটিরে এক নবজাত শিশুর জন্য আবেগে উদ্বেল মধুমালা । যেতেই হবে তাকে ওই শিশুটির কাছে ।
– ‘চলো না বাবা আন্দামানে যাই ।’ বাবা সস্নেহে বোঝালেন আন্দামানের আদিবাসীদের কাছে পৌঁছনো অত সহজ নয়। সময় লাগে ।অনুমতি লাগে । প্রস্তুতি লাগে ।
সেই প্রস্তুতি শুরু হলো মধুমালার ।
স্কুল শেষ করে মধুমালা মানববিজ্ঞানে (এনথ্রোপোলজি) স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরে সসম্মানে উত্তীর্ণ হলেন আর এনথ্রোপোলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (Anthropological Survey of India) তে গবেষক হওয়ার আবেদন করলেন – আন্দামানের আদিবাসীদের ওপরে কাজ করার জন্য।
এমন যোগ্য এবং স্পষ্ট দৃষ্টির মেয়েকে না বলে কার এমন সাধ্য ।
ছয় বছরের এই গবেষণার সময়টিতে আদিবাসীদের নিজের লোক হয়ে উঠেছিলেন মধুমালা । জারোয়ারা তাঁকে নিজেদের মেয়ে মানতো আর অনজেরা আদর করে ডাক্তার বলতো তাঁকে । তিনি আদিবাসীদের নিয়ে কাজ করার আমন্ত্রণ পেয়েছেন বিদেশে থেকেও – যেটা পারিবারিক কারণে নেওয়া হয়ে ওঠেনি ।
জারোয়ারা , অনজেরা সামাজিক সম্পর্কের গন্ডীর মধ্যে এলেও সেন্টেলিজরা কিন্তু তখনও দ্বিতীয় বৃত্তের ওপারে অনড় । তাদের কাছে যাওয়ার বেশ কয়েকটি সরকারী প্রয়াস ব্যর্থ হয়েছে ।
এটা জানা ছিল যে সেন্টেলিজরা কলা আর নারকেল পছন্দ করে । সমুদ্রতটে চুপিসারে কলা বা নারকেল রেখে আসলে ওরা সাগ্রহে সংগ্রহ করে । কিন্তু কাছে যেতে গেলেই তীর আর বর্শার তীব্র প্রতিরোধ ।
১৯৯১ এর জানুয়ারিতে সরকারের তরফে এক নতুন প্রয়াস হলো । নতুনত্বটি হলো মধুমালার অন্তর্ভুক্তি ।
মধুমালা ততদিনে আন্দামানের আদিবাসীদের নিয়ে ভালো কাজ করেছেন। বিভিন্ন স্থানীয় ভাষাও শিখে নিয়েছেন । তাঁর অন্তর্ভুক্তিতে অন্য একটি অংকের হিসেবও ছিল । তিনি নারী । দলের মধ্যে তাঁর উপস্থিতিতে হয়তো সেন্টেলিজদের এই বাণী দেবে যে আক্রমণ বা ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে এরা আসেনি ।
মধুমালাদের জাহাজ থামলো দ্বীপ থেকে দূরে । একটি নৌকোয় তাদের দল দ্বীপের উদ্দেশ্যে রওনা দিল অনেক নারকেল আর আকাশ ছোঁয়া প্রত্যাশা নিয়ে । দ্বীপের কাছে পৌঁছলো নৌকো । মধুমালা দেখছেন গাছের আড়ালে আদিবাসী মানুষেরা । হাতে ধনুক ।দলনেতার নির্দেশে নৌকো থেকে অগভীর জলে কয়েকটি নারকেল ফেলা হলো । মধুমালা ওদের ভাষা জানেন না কিন্তু শুনেছেন অঞ্জেদের সাথে মিল আছে । সেই ভাষাতেই তাঁদের ডাকলেন দূর থেকে – ‘এসো । নারকেল নিয়ে যাও ।’
ষাট হাজার বছরের দূরত্বের পাঁচিল ভালোবাসার ছোঁয়ায় যেন কাঁপলো একটু । দ্বিতীয় বলয়ের দুই পাড়ে তখন মানুষের দুই ভিন্ন সভ্যতা দাঁড়িয়ে । সেন্টেলিজদের মনে দ্বিধা । একদিকে এক স্নেহময় নারীর বন্ধুত্বের আহবান আর অন্যদিকে দূরত্বের অতি প্রাচীন প্রথা ।
সরকারি দলে আশার অপেক্ষা – এবার হয়তো বরফ গলবে ।
অনেক অনেক সময়ের পরে, সেন্টেলিজদের মধ্যে গতিবিধি নজরে এল । একে একে জলে নেমে নারকেল তুলে নিতে শুরু করলো তারা । ইতিহাসে এই প্রথম সেন্টেলিজদের স্বেচ্ছায় দ্বিতীয় বলয় অতিক্রম । নৌকোয় সাফল্যের খুশি ।
চার ঘন্টা ধরে মানব সমাজের দুই ভিন্ন প্রতিনিধির মধ্যে এই স্নেহের দেওয়া নেওয়ার খেলা চলেছিল । একসময় নৌকোর নারকেল শেষ। দ্বীপবাসীরা আশাহত । তাঁদের আরও চাই যে । সরকারি দলটি ফিরে গেলো জাহাজে, আরও নারকেল নিয়ে আসতে ।
বিকেলে আবার শুরু সেই খেলা । সময়ের সাথে তখন সংকোচের দূরত্ব দ্রুত কমে যাচ্ছে । দু একজন আদিবাসী এসে নৌকোটিকে ছুঁয়েও গেলো ।
কিন্তু একটু মোচড় না থাকলে তো যে কোনো গল্পই বিস্বাদ । হঠাৎই মধুমালার নজরে এলো দ্বীপে দাঁড়িয়ে থাকা এক যুবকের হাতে ধনুক তৈরী । সে এক অসাধারণ মুহূর্ত । মধুমালার স্নেহের দৃষ্টিতে তাকে কাছে আসার আহ্বান আর যুবকের ত্রুদ্ধ অবস্থানে দূরে যাওয়ার আদেশ । কেউই চোখ নামায না । অবশেষে সেই যুবকের ধনুক থেকে তীর ছুটে এলো । সে তীর কিন্তু মধুমালাকে ছোঁয়নি । যুবকের পাশে দাঁড়ানো এক মহিলা তাকে ধাক্কা দিয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট করে দেয় শেষ মুহূর্তে । অন্য সবার সাথে সেই অনুতপ্ত যুবকও বুঝলো যে এই আনন্দের মেলায় সে একাই বিরোধিতা করছে । মৈত্রীর শেষের কাঁটাটাও যেন বিদায় নিলো ।
এবার তো সরকারি দলের এগিয়ে যাওয়ার পালা ।আরও কয়েকজনের সাথে মধুমালাও নেমে পড়লেন জলে । এখন কেউ দূরত্ব মানবেনা আর । হাতে হাতেই নারকেলের দেওয়া নেওয়া ।
সমুদ্রতটের অগভীর জলে এক অপরাজিতা তখন হাসছেন । ষাট হাজার বছরের দূরত্বের পাঁচিল পেরিয়ে তৃতীয় বৃত্তে মিলন হলো মানুষের দুই ভিন্ন প্রজাতির । আর বারো বছরের শিবপুরের মেয়েটি যে মাতৃত্বের অনুভবে আবিষ্ট হয়েছিল আজকের এই অনন্য মুহূর্ত তাকে যেন সেই অনুভবের পূর্ণতা এনে দিল ।
(ড. মধুমালা চ্যাটার্জী দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সরকারের মিনিস্ট্রি অফ সোসাল জাস্টিস এণ্ড এমপাওয়ারমেন্ট -এর সঙ্গে যুক্ত আছেন )
Tags: গল্পের সময় ব্লগ, তৃতীয় বৃত্তে অপরাজিতা, দীপংকর মুখোপাধ্যায়
email:galpersamay@gmail.com
মতামত
আপনার মন্তব্য লিখুন
আপনার ইমেল গোপনীয় থাকবে।