গল্পের সময়ঃ বাংলা সাহিত্যের দুনিয়া হারাল এক অরণ্যপ্রেমিক,প্রকৃতি ও নারীর প্রেমগাঁথার রূপকারকে। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর প্রায় এক মাসের চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে করে ফিরেছিলেন বাড়ি।কিন্তু এই অগাস্টেই ফের শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে ভর্তি হন হাসপাতাসলে।আর ফেরা হল না ‘মাধুকরী’র কথাকারের।
১৯৩৬ সালের ২৯ জুন কলকাতায় জন্ম বুদ্ধদেব গুহর। সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের এই প্রাক্তণীর পেশাদার জীবন শুরু হয়েছিল চার্টার্ড অ্যাউন্ট্যান্ট হিসাবে। তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘জঙ্গলমহল’। ‘বাবলি’, ‘মাধুকরী’, ‘কোজাগর’, ‘হলুদ বসন্ত’, ‘একটু উষ্ণতার জন্য’ সহ তাঁর অসংখ্য উপন্যাস বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে। স্বনামধন্য এই সাহিত্যিক ১৯৭৭ সালে আনন্দ পুরস্কারে সম্মানিত হন।অরণ্য ও প্রকৃতির কাছাকাছি থাকা এই মানুষটি বাংলা মূলধারার সাহিত্যের সঙ্গে নিজেকে যেন সচেতনভাবেই মেলাতে চান নি।
বলা হয় তিনি ছিলেন এক অন্য আরণ্যকের রচয়িতা।তবে তাঁর জঙ্গল ও প্রকৃতি দর্শন ছিল বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে আলাদা। তিনি অরণ্যকে দেখেছিলেন প্রেমিকার মহিমায়।তাঁর ভাবনার জগতের সেই প্রেম একই সঙ্গে প্রকৃতি ও নারীর বন্দনায় অন্য রূপ পেয়েছে।একের পর এক কালজয়ী উপন্যাসে সমৃদ্ধ করেছেন বাংলা সাহিত্যকে।লিখেছেন শিকার কাহিনিও। তাঁর বিখ্যাত ঋজুদা সিরিজের বই ‘ঋজুদার সঙ্গে জঙ্গলে’ প্রকাশিত হয় ১৯৭৩ সালে।
গল্প,উপন্যাসের পাশাপাশি বুদ্ধদেব গুহ ছবি এঁকেছেন, ছড়া লিখেছেন, গানও গেয়েছেন নিষ্ঠাভরে।পুরাতনী গানে স্বনামখ্যাত এই সাহিত্যিক ছিলেন চার্টাড অ্যাকাউন্ট্যান্ট।পশ্চিমবঙ্গের আয়কর বিভাগের উপদেষ্টা বোর্ডের সদস্য হিসেবেও কাজ করেছেন। আকাশবাণী কলকাতার অডিশন বোর্ডের সদস্যও ছিলেন তিনি। লেখা থেকে গান, গান থেকে ছবি – সব ক্ষেত্রেই ছিল তাঁর অবাধ যাতায়াত।
Tags: আনন্দ পুরস্কার, চার্টার্ড অ্যাউন্ট্যান্ট, প্রয়াত বুদ্ধদেব গুহ, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, বুদ্ধদেব গুহ
email:galpersamay@gmail.com
মতামত
আপনার মন্তব্য লিখুন
আপনার ইমেল গোপনীয় থাকবে।