বলাকা বলেছিল “বন্ধুর বিয়ে, অনেকটা দূর। পৌঁছে দেবে? ফেরার সময় আসতে হবে না, বন্ধুদের সঙ্গে চলে আসব।“ সুমন ‘হ্যাঁ’ ‘না’ কিছু বলেনি। কারণ বলাকা জানত এর উত্তর ‘না’ হয় না।
রিকশা থেকে নেমে বলাকা উজ্জ্বল পোশাকে আলোকিত তোরণ দিয়ে বিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করলো। একটু গিয়ে পিছন ফিরে দেখলো, সুমন তখনও দাঁড়িয়ে, টিমটিমে ল্যাম্প পোস্টের আলোয়, আটপৌরে পোশাকে। কী ভেবে সে ফিরে এলো, বললো “ফেরার সময়ও এস না। আসবে? রিকশা পাব কিনা জানিনা।“ সুমন ‘হ্যাঁ’বা ‘না’ কিছুই বলেনি। বলেছিল,”আজ মাঝ রাতে শহরের বুক চিড়ে হাঁটব, তোমার হাত ধরে। কটায় আসবো?” মোবাইল ফোন তখনও ভ্রূণ, বিজ্ঞানীদের মস্তিস্কে। বলাকার মুখের রেখায় একটা হাসি ঢেউ খেলে গিয়েছিল।
সেদিন সুমন প্রথম বলাকার হাত ছুঁয়েছিল। হাত ধরে হেঁটেছিল শহরের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে। মাঝরাতে চেনা শহরটাকে অন্যরকম মনে হয়েছিল। মনে হয়েছিল শহরের রাজপথ গলিপথে কত রূপকথা লুকিয়ে আছে। ওদের হাত আন্দোলিত হচ্ছিল, প্রতিবার ফেরার সময়ে বাহুতে একটা কোমল স্পর্শ অনুভব করছিলো সুমন।
এখন মাঝরাত। পৃথুল বলাকা রাত পোশাকে বিছানায়, নিদ্রিতা। নীলাভ রাত-আলোয় সেদিকে তাকিয়ে সুমন ভাবে সেদিনের সেই আশ্চর্য রাত কি সত্যিই তার জীবনে এসেছিল? সেই প্রথম হাত ছোঁয়ার শিহরণ, সেই কোমল পরশ। নাকি সেটা ছিল মায়া কি স্বপনছায়া? নাকি এ এটা তার ইচ্ছাপূরণের গল্প?
email:galpersamay@gmail.com
মতামত
আপনার মন্তব্য লিখুন
আপনার ইমেল গোপনীয় থাকবে।