কলেজের পত্রিকা-বিভাগে কান পাতলে শোনা যায়,’এই সংখ্যায় রবিনের কবিতাটা দেখেছ? just অসাধারণ!! প্রেমের যে এরকম একটা dimension হতে পারে ভাবাই যায় না… আচ্ছা,ওটা নাকি সুজাতাকে উদ্দেশ্য করে লেখা?…ওই যে, psychology-র সুজাতা আছে না… ‘
খেলার মাঠ বলে, ‘ না, কথা রেখেছে বটে ক্যাপ্টেন মৈনাক !! এবারও trophy দিয়েছে কলেজকে! winning stroke-টা কী মারল extra-cover দিয়ে ! পুরো copybook inside-out ! … কিন্তু গ্যালারির কার দিকে ইশারা করেছিল ম্যাচের পরে?… সুজাতার দিকে?’
Boys’ common room-এর ফেলুদা-ব্যোমকেশদের ash-tray থেকে ঊর্ধ্বগামী ধোঁওয়াও চিন্তিত, ‘ উঁহু, কেসটা ঠিক বোঝা যাচ্ছে না! একটু দেখতে হবে !!’ Girls’ mess -এর জানালাগুলোয় সারাটা দিন রোদে শুকোয় একটা প্রশ্ন,’সুজাতা কাকে ভালোবাসে রে ?? …… এই, তোকে ও কিছু বলেছে?’
কখনও ‘সাহিত্যসভা’ বানচাল করে দেয় intra-college ক্রিকেট ম্যাচ, আবার কখনও প্রিন্সিপালের অফিসে জমা পড়ে এমন কিছু স্মারকলিপি যাদের মোটের ওপর মর্মার্থ হল— খেলার পিছনে কলেজ যে অনর্থক খরচ করে চলেছে সেটা বন্ধ হওয়া উচিত অবিলম্বে, সেই টাকায় অন্য কর্মসূচি নেওয়া যেতেই পারে, যেমন কলাবিভাগের লাইব্রেরির মানোন্নয়ন ইত্যাদি। ব্যাপারটা বোঝে সবাই, বিষয়টা বোঝে অনেকে। দিন ফুরাতে থাকে টিফিনবেলার ঝালমুড়ির মতো।
বসন্তের এক দিনে কলেজে ছড়িয়ে গেল একটা গুজব –‘ সুজাতা নাকি বার্থডে পার্টি দিচ্ছে ?? ওই তো, নিখিল বলল কার্ড পেয়েছে … নিখিল, অর্থাৎ কলেজের ‘জি এস’। এর নামটা ব্যাপারটার সত্যতা বোঝাতে কাফি। কয়েকজন অবশ্য সন্দেহ করেছে তাও… ধুর, নিখিল বললেই হল? ও কে রে ?
এই বসন্তেও বৃষ্টি হল। সেই নাছোড়-বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে গিয়ে এক অটোতে সহযাত্রী মৈনাক ও রবিন। নামবার একটু আগে রবিন দ্বিধাভরে আলগা একটা প্রশ্ন ছুঁড়েছে— ‘… তা হ্যাঁরে , সুজাতার নিমন্ত্রন পেয়েছিস তো?’
Sportsman মৈনাক বলেছে নিমেষে, ‘sure, সে তো পেয়েছি-ই!’
–‘কি বার পড়েছে যেন?’
একটু ভেবে মৈনাক বলেছে,’ জানি না, আসলে কার্ডটা খোলার সময় হয় নি। বাড়ি গিয়ে দেখতে হবে! তা…তোর মনে নেই?’
–‘না…মানে আমারও ঠিকভাবে দেখা হয়নি। আজ দেখে নেব।‘
তারপরে আর কোনও কথা হয়নি ওদের মধ্যে। সেইদিন থেকে আজ অবধি।
এর পরের ঘটনা একটু কেমন যেন! মৈনাকের লাইব্রেরি-কার্ডে এক-এক করে ইস্যু হতে থাকে শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ‘পদ্যসমগ্র’-র সব ক’টি খণ্ড, আর রবিন নাকি এখন দেখছে Big Bash T-20 League। দু-একজন তো মাঠে তাকে বিকটভাবে ক্রিকেট খেলার অপচেষ্টা করতেও দেখেছে ইদানীং। বিজ্ঞমাত্রই জানেন এবং বোঝেন যে এ’ হল নিছক উলুখাগড়া-সংবাদ। মূল রাজনৈতিক খবরটা হল, psychology-র নতুন প্রফেসার অভিনব হাজরার (ছাত্রদের ‘অভিদা’) সাথে ‘Rose Day’-র অনুষ্ঠানে সুজাতার Romantic Duet নাকি জমে পুরো ক্ষীর !!
কোনও নদীকে দেখে কেউ কোনও চোখ আঁকতেই পারে। ওতে কিছুমাত্র ভুল নেই। কিন্তু নদী সেটা জানে কি? জানলে বোধহয় মাটির নীচ দিয়েই কোনও-না-কোনও সাগরের দিকে ঠিক বয়ে যেত।
Tags: পুষণ
email:galpersamay@gmail.com
মতামত
আপনার মন্তব্য লিখুন
আপনার ইমেল গোপনীয় থাকবে।