ছোটোগল্পে সাধারণত কোন ভূমিকা থাকেনা, এই গল্পে একটু ভূমিকা আছে। ছোটোগল্পে উৎসর্গও খুব একটা থাকেনা, কিন্তু এই গল্পটি উৎসর্গ করলাম অর্ক ও নাবহানকে। অর্ক আমার বন্ধু আরজুর ছেলে, শুনেছি ছোটকাল থেকেই তার টিকটিকি খুব পছন্দ। আর নাবহান আমার ছেলে, চার মাস বয়সেই আমি যখন জিজ্ঞেস করতাম, কয়টা বাজে বাবা? সে দেওয়াল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে হাসে। বস্তুত এই গল্পের লাল রঙের স্কুলের ছবিওয়ালা ঘড়িটার দিকে তাকিয়েই হাসে!
না, আজ গল্পটা লিখে ফেলতেই হবে- এভাবে অপমানিত হওয়ার ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি জাবেদের জীবনে। কয়েক বছর ধরেই ভাবছিল একটা দুইটা গল্প লিখবে। কিন্তু কি নিয়ে লিখবে? খুঁজে-ফিরেও এমন কোন প্লট আসছিল না মাথায়। হ্যাঁ, সবার মতো তার জীবনেও অনেক স্মৃতি আছে, দুঃখ আছে, টুকটাক ভালোবাসাও আছে। কিন্তু এইসব সাধারণ ভালোবাসা, দুঃখবোধ নিয়েতো গল্প লেখার কিছু নেই। খেয়াল করে দেখলো তার জীবনে গভীর কোন ভালোবাসা নেই, মহত্তর কোন দুঃখবোধ নেই এমনকি গভীর কোন অপমানবোধ ও নেই। যা নিয়ে লেখা যাবে কোন গল্প। একেবারে ছোট করে দুই একটা গল্প লিখতে চেয়েছিলো তাও হয়নি।
গল্প হয়তো আর লেখাই হবেনা কোনদিন, এমন ভাবনা প্রায়ই আচ্ছন্ন করতো তাকে। অবশ্য তাতে খুব একটা ক্ষতিও নেই, এমনতো নয় যে গল্প না লিখলে তার পেট চলবে না। যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলো, শেক্সপীয়রের নাটক পড়ে পড়ে ভাবতো, আচ্ছা শেক্সপীয়র কিভাবে এতো সুন্দর সুন্দর চরিত্র সৃষ্টি করে? তার যাপিত জীবন কি খুব বেশী বর্নাঢ্য, তাঁর জীবন কি সব মহত্তর দুঃখবোধ, প্রেম আর গভীর হতাশায় ঠাসা? সম্ভবত তা নয়, তাহলে? আচ্ছা ভালো কথা, অন্যের জীবনের কাহিনীও তো হতে পারে গল্পের উপজীব্য, সাথে একটু কল্পনা শক্তিকে কাজে লাগাতে পারলে অনায়াসে লেখা যায় দু’চারটা ছোটগল্প। কিন্তু আশে-পাশের কোন ঘটনাও তাকে তেমন নাড়া দেয়নি, ফলে পৃথিবী কিংবা বাংলা সাহিত্য অথবা নিদেনপক্ষে তার বন্ধুরা কয়েকটি সম্ভাব্য ছোটগল্প থেকে বঞ্চিত হলো।
কিন্তু হঠাৎ-ইতর জীবনে ঘটল এক অদ্ভুত ঘটনা। ঘটনা না বলে বলা ভালো, এক ধরণের অনুভূতি। সেই বিশেষ অনুভূতি নিয়েই এই গল্প, অদ্ভুত অপমান।
মায়ের ডাকে সম্বিত ফিরে পায় জাবেদ।
‘কিরে আজ খাওয়া-দাওয়া করবিনা নাকি?’ বেশ খানিকটা চড়া গলায় ডাক দেয় মা।
আঁতকে উঠে জাবেদ ঘড়ির দিকে তাকায় তিনটা বেজে দশ মিনিট। ঘড়ির ভিতরে লাল রংয়ের একটা স্কুলের ছবি, স্কুলের মূল ভবনের প্রবেশ পথের বেশ খানিকটা উপরে বড় একটা ঘড়ি লাগানো সেখানে দশটা বেজে দশ। হঠাৎ খেয়াল হলো একঘন্টার উপরে চুপচাপ খাটে বসেছিল সে, কিছু সময়ের জন্য স্কুলের ঘড়িটার মতো সময় আটকে গিয়েছিলো তার জীবনে। স্কুলের ঘড়িটা অবশ্য কয়েক বছর ধরে নিশ্চল, নিশ্চুপ দশটা বেজে দশ। আব্রাহাম লিঙ্কন, জন এফ কেনেডি আর মার্টিন লুথার কিং তিনজনই হঠাৎ হাজির হয় মানসপটে। যদিও এই মিথ এর সাথে সত্যের কোন যোগ নেই, তবে দশটা দশ এই সময়টা ঘড়িকে বেশ মানায়। মনে হয় কি সুন্দর হাসছে ঘড়িটা!
‘তাড়াতাড়ি আয়, সেই কখন থ্যাইকা ব্যাঙের মতন ঘাপটি মাইরা বইসা আছস!’ গলার স্বরে বেশ তাড়া আর একটা অজানা আশংকা। কয়েকদিন ধরেই ছেলের মন-মেজাজ ভালো ঠেকছেনা, কি এতো ভাবে বসে বসে?
ব্যাঙের উপমা শুনেই জাবেদ আরো খানিকটা কেঁপে উঠলো। কয়েকদিন ধরেই ব্যাপারটা বেশ ভাবাচ্ছে।
খাওয়ার টেবিলে একটা বড় পাত্রে ভাত রাখা আছে, মা একটা প্লেট নিয়ে ভাত বেড়ে দিতে দিতে বললো- ‘কিরে কি হইছে তোর?’
জাবেদ চুপচাপ, মায়ের প্রশ্ন শুনতে পেলো কিনা ঠিক বোঝা গেলো না।
‘ তেলাপিয়া মাছের দো-পেঁয়াজা করেছি, দেখ কেমন হইছে?’
মা একটা মাছ তুলে দিলো খাবার প্লেটে। ধীর গতিতে, মনে হয় অনেকটা অনিচ্ছা সত্ত্বেও মাছের পেটের দিক থেকে, যেখানে কোন কাঁটা থাকেনা, সেখান থেকে আঙুল দিয়ে একটু অংশ ছিঁড়ে নিয়ে ভাতের সাথে মিশিয়ে মুখে দিলো জাবেদ। মা, ছেলের মুখের ভঙ্গী দেখে বুঝে নিতে চায় মাছটা স্বাদ লাগছে কিনা তার। অবশ্য খাবার নিয়ে কোন কালেই কোন অভিযোগ ছিলো না জাবেদের, যখন যা পেতো চুপচাপ তাই খেয়ে নিতো।যাক খাবারটা মনে হয় ভালোই হয়েছে, জাবেদের মুখ দেখে আশ্বস্থ হয় মা।
আনমনে খেয়ে যাচ্ছিলো সে, হঠাৎই চোখ পড়লো মাছটার চোখে। ঘন কালো চোখ, স্বচ্ছ স্ফটিকের মতন। সেই চোখে হাসি। জাবেদের মনে হলো বিদ্রুপের হাসি। এইসব কি ভাবছি আমি? পাগল হয়ে যাচ্ছি নাকি? আমার ভাবনা বারবার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে কেনো?
আবার ভালো করে দেখলো চোখটা। হ্যাঁ, একটা বিদ্রুপের চাপা হাসি আর বোবা অভিমান। এই ধরণের চোখ কোথায় যেন দেখেছে সে। মনে পড়েছে, ভার্সিটিতে ঝুপড়ি দোকানগুলোতে ছাত্র নেতারা যখন চা-সিঙ্গারা-সিগারেট ফুঁকে বিল না দিয়ে চলে যেত তখন দোকানদারদের চোখে-মুখে যে বিদ্রুপ আর বোবা অভিমান দেখেছে অবিকল একই অভিব্যাক্তি প্লেটের এই মাছটার চোখে মুখে!
বিদ্রুপের হাসি-মাখা এই স্বচ্ছ চোখের দিকে তাকিয়ে চোখটা ঘোলাটে হয়ে আসে, এক প্রচন্ড বিবমিষা পুরো শরীর আচ্ছন্ন করে ফেলে; কেমন একটা চাপা অস্বস্থি নিয়ে খাবার টেবিল থেকে উঠে যায় জবেদ।
মা শুধু শূন্য দৃষ্টিতে গভীর উদ্বেগ নিয়ে তার যাওয়ার পথে তাকিয়ে থাকে।
নিজের রুমে এসে টেবিলের পাশে রাখা চেয়ারটায় উদ্ভ্রান্তের মতন বসে থাকে জাবেদ। বাইরে শরতের আকাশ ক্রমশ আলো কমিয়ে দেয়, আস্তে আস্তে অন্ধকারে ডুবতে থাকে জাবেদ আর বাইরে শরতের আকাশ। আধো ঘুমে কানে বাজে লালনগীতি-
“ পৃথিবী গোলাকার জানি
অহর্নিশি ঘুরে আপনি
তাতেই হয় দিন রজনী
জ্ঞানি-গুনী তাই মানে।
কেন জিজ্ঞাসিলে খোদার কথা দেখায় আসমানে?…”
আধো ঘুমে কতক্ষণ বসেছিল মনে নেই, আজানের শব্দেই আচমকা জেগে ওঠে, সাথে সাথে জেগে ওঠে চাপা অস্বস্থিটাও। পুরো ঘটনাক্রম এবং চিন্তার ধারাবাহিকতা বোঝার জন্য ব্যাপারগুলো আরেকটু খতিয়ে দেখে সে। হ্যাঁ, বুজতে শেখার পর থেকেই নানান বিষয় নিয়ে নানান কৌতুহল তাকে পেয়ে বসতো। মহাজাগতিক এবং রহস্যময় অনেক বিষয়ই তাকে কৌতুহলী করে তুলতো এবং সেটা স্বাভাবিক ও বটে। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে যেসব বিষয় তাকে ভাবাচ্ছে তা একটু ভিন্ন রকম বৈকি।
নিজের শরীরকে বড্ড অপরিচিত মনে হচ্ছে তার, অথচ জন্ম থেকেইতো এই শরীরটার সাথে বসবাস। সময়ের সাথে প্রাকৃতিক ভাবেই শরীর বেড়ে উঠেছে, মনেরও তো অনেক পরিবর্তন হয়েছে, পরিবর্তন হয়েছে চিন্তাধারা। তাহলে এই শরীরকে এতো অচেনা ঠেকছে কেন? তার মন শরীরের খোলসের সাথে খাপ খাওয়াতে পারছেনা কেন? না, তার চিন্তা-ভাবনার গতি প্রকৃতি কিছুতেই পুরোপুরি বোধগম্যতার সীমায় আনা যাচ্ছেনা। সাথে-সাথে, বিভিন্ন মহা-জাগতিক রহস্যময়তা নিয়ে মানুষের একেবারে নির্বিকার থাকার ব্যাপারটা ও কেমন অযৌক্তিক আর উদ্ভট মনে হয়।
রাতে কিছুতেই ঘুম আসছিলো না জাবেদের, এপাশ-ওপাশ করে তারপর সটান সোজা হয়ে রইলো কিছুক্ষন। হঠাৎ অনেক আগের একটা ঘটনা মনে পড়লো তার।এক মামাতো ভাইয়ের সাথে বিলে গিয়েছিলো উল্কা ঝড় দেখতে। রাত তখন বারোটার চেয়ে কিছু বেশি, চারিদিক চুপচাপ; দুই-ভাই অসম্ভব আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে আছে উন্মুক্ত আকাশের দিকে। রাশেদ বছর পাঁচেক বড় হবে জাবেদের। হঠাৎ নিস্তব্ধতা ভেঙে বলে উঠলো- ‘ দেখ দেখ সত্যিই কেমন উল্কারা ঝরে পড়ছে’
কই দেখলাম না তো?
ঐ তো ঐ যে ওপাশে আরো ছয়-সাতটা খসে পড়লো। এইবার পরিষ্কার দেখতে পেলো সে।
তারপর আরো আরো অনেক উল্কা খসে পড়তে দেখলো দু’জন। যদিও রাত একটার বেশি বেজে গেছে সেদিকে খেয়াল নেই দু’জনের কারোই। সে এক অবিস্মরণীয় রাত, উল্কা খসে পড়ার উৎসব। এইসব ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে পড়লো মনে নেই।
সকালে বেশ ঝরঝরে ভাব নিয়েই ঘুম ভাঙে তার। ব্রাশ হাতে নিয়ে পেস্ট লাগায়। আস্তে আস্তে দাঁত মাজতে থাকে, দাঁত মাজা শেষে কুলি করে আয়নায় চোখ পড়ে। আয়নার দিকে তাকিয়ে একটা ব্যাপার পরিষ্কার হয়- তার মুখটাকে অতো বেশি অপরিচিত মনে হয়না, যেমন মনে হয় হাত-পা, পেট এবং শরীরের অন্যান্য অংশকে। চা খেয়ে পেপারটাকে একটু উল্টে-পাল্টে দেখে। তার হঠাৎ খুব ইচ্ছে করলো জীবনানন্দের একটা কবিতা পড়ার। অনেক খুঁজে-ফিরে বইটা পেলো সে, তারপর পড়তে শুরু করলো-
“ আলো-অন্ধকারে যাই-মাথার ভিতরে
স্বপ্ন নয়,-কোন এক বোধ কাজ করে!
স্বপ্ন নয়-শান্তি নয়-ভালোবাসা নয়!
হৃদয়ের মাঝে এক বোধ জন্ম লয়।
আমি তারে পারিনা এড়াতে,
সে আমার হাত রাখে হাতে;
সব কাজ তুচ্ছ হয়, -পন্ড মনে হয়,
সব চিন্তা-প্রার্থনার সকল সময়
শূন্য মনে হয়,
শূন্য মনে হয়!”
আহা! জীবনানন্দ কিভাবে লিখলেন এতো সুন্দর কবিতা। জাবেদের মাথায়ও এখন এক অদ্ভুত বোধ কাজ করছে, সেই বোধ সে কিছুতেই মাথা থেকে তাড়াতে পারছেনা। হঠাৎ মনে হলো গতকাল ও গোসল করেনি সে, আজ তাড়াতাড়ি গোসল করতে চলে গেলো। কিন্তু গোসল করতে গিয়ে আরেক বিপত্তি-কি বিশ্রী ব্যাপার, তার নিজেকে মনে হতে লাগলো একটা সরীসৃপ জাতের প্রানি। নিজেকে মনে হলো একটা ডলফিন মাছ অথবা মনে হলো একটা বড়সড় সাপ! গায়ে সাবান মাখতে গিয়ে থমকে গেলো, তারপর নিজেকে খুব নিবিড়ভাবে দেখতে থাকলো । সাবান মাখতে মাখতে জাবেদ ভাবছে – এটা কি আমারই শরীর! সাবান মেখে গোসল করছে একটা ডলফিন। এই অচেনা শরীর নিয়ে এখন সে কি করবে? ভালোভাবে গোসল শেষ না করেই বাথরুম থেকে বেরিয়ে পড়লো।
হঠাৎ-ই একটা তেলাপোকা উড়ে এসে বসলো এক্কেবারে ডান হাতের কব্জিতে। ব্যাপারটা এতো দ্রুত ঘটলো যে, জাবেদ কেঁপে উঠে এক ঝটকায় ঝেড়ে ফেললো পোকাটাকে। পোকাটা দেয়ালে প্রচন্ড ধাক্কা খেয়ে মেঝেতে উল্টে পড়লো। তারপর পা গুলোকে অদ্ভুত দ্রুত গতিতে নাড়তে লাগলো। পোকাটার অবস্থা দেখে, অপরাধবোধে এক্কেবারে মুষড়ে পড়লো জাবেদ। কি এক গভীর বেদনায় আর মর্মপীড়ায় পুড়তে লাগলো সে। ভেতরে ভেতরে এক ভিন্ন চিন্তা পেয়ে বসলো তাকে- আচ্ছা, এমন যদি হতো আমি দৌড়ে গেলাম এক বিশাল প্রানীর দিকে আর সে ও এক ঝটকায় ঝেড়ে ফেললো আমায়। আসলে সে গভীরভাবে ভাবতে চাচ্ছিলো পোকাটার অপমানবোধের কথা। পোকাটার গভীর অপমানের কথা ভাবতে ভাবতে তার নিজেকে মনে হতে লাগলো এক ভয়ংকর খুনী।
এভাবে পোকাটাকে অপমানিত করার জন্য হাঁটু গেড়ে ক্ষমা-প্রার্থনার ভঙ্গীতে পোকাটার সামনে বসলো। পোকাটার লজ্জার কথা ভেবে তার চোখে পানি চলে আসলো। সে হাতজোড় করে বিড়বিড় করে বলতে লাগলো- “ আমি বুঝতে পারিনি, আমি সত্যিই বুঝতে পারিনি। এইভাবে তোমাকে অপমান করার জন্য তোমার শরীরকে অপমান করার জন্য আমি দুঃখিত । তুমি আমাকে ক্ষমা করো, ক্ষমা করো। বিনিময়ে যেকোন শাস্তি দাও, তা যত কঠিনই হোক, আমি মেনে নেব। আমি মেনে নেব।”
কথাগুলো বলতে বলতে তার দু’চোখ গড়িয়ে অশ্রুবিন্দু টপটপ করে মেঝেতে পড়তে লাগলো।
পোকাটা এসবের কিছু আদৌ বুজতে পারলো কিনা তা আমরা কখনোই জানতে পারবো না, কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় পোকাটা আগের মত দ্রুত পা কাঁপানো বন্ধ করে, খুব ধীরগতিতে ওঠা-নামা করতে লাগলো। আর তা দেখে জাবেদ ও খানিকটা স্বস্তি বোধ করলো। তার নিজেকে অনেক বেশি ভারমুক্ত মনে হতে লাগলো, যদিও সে একই ভঙ্গীমায় আরো অনেকক্ষণ অনড় বসে থাকলো।
Tags: অদ্ভুত অপমান, শফিউল আজম মাহফুজ
email:galpersamay@gmail.com
মতামত
আপনার মন্তব্য লিখুন
আপনার ইমেল গোপনীয় থাকবে।