-
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের মুখোমুখি
[ এই মুহূর্তে বাংলা সাহিত্যের অভিভাবক সমান, শীর্ষস্থানীয় সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের দীর্ঘ এই সাক্ষাৎকারটি ইতিমধ্যেই প্রকাশিত। ২০১২ সালে এটি প্রকাশিত হয় বিখ্যাত অনুবাদক ও সম্পাদক অনিন্দ্য সৌরভের নিজস্ব ‘শিল্প ও সাহিত্য’ পত্রিকায়।অনিন্দ্য সৌরভের অনুমতিক্রমেই এই মূল্যবান আলাপটি ‘গল্পের সময়’ এর পাঠকদের জন্য ফের প্রকাশ করা হল।] অনিন্দ্য সৌরভ: আপনার সৃষ্টি করা বেশ কিছু চরিত্র […]
-
গাবগুবি তার একলা আছে
অরুণদার সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় ১৯৭৪-১৯৭৫ এ। তখন সবে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে কলেজে ঢুকেছি। অরুণদা তখন হিন্দমোটরে কাজ করে। ‘শ্রীরামপুর স্টেশনে মহুয়া গাছটিকে’ লেখা হয়ে গিয়েছে। আমার শহরের আর এক কবি সমর বন্দ্যোপাধ্যায় আমায় নিয়ে গিয়েছিল চন্দননগরের শুকসনাতনতলায় অরুণদার বাড়িতে। লিটল্ কার্লমাক্সকে দেখে সেদিন সদ্য যুবক চমকে উঠেছিলাম। সেদিন কয়েকটা কবিতা শোনার পর স্বভাব বাউল […]
-
এক বিস্মৃতপ্রায় সঙ্গীতকার
[ মূল্যবান এই লেখাটি লেখা হয়েছিল অনেক আগেই, সেই আশির দশকে।সম্পাদক সাগরময় ঘোষের অনুমতিক্রমে এই বিস্মৃতপ্রায় সঙ্গীতকারের কথা প্রকাশ পাওয়ার কথা ছিল সেই সময়ের ‘দেশ’ পত্রিকার পাতায়।কিন্তু বিশেষ কারণে তা না হওয়ায় এতদিন লেখাটি অজান্তেই বাক্স বন্দি হয়ে পড়েছিল লেখকের কাছে। হঠাৎ তা মিলে যাওয়ায় লেখক তা সরাসরি পাঠিয়ে দিয়েছেন ‘গল্পের সময়’কে।] ১৯৩২ সালের গোড়ার […]
-
ফিরে দেখা – দেখি নাই ফিরে
ফিরে দেখলাম। তবে বড্ড দেরিতে। অথচ ঘরেই ছিল সে, এতকাল। ভালো করে নজরই করিনি। সেই যে.. তা সবে অবোধ আমি, অবহেলা করি… এতকাল অবহেলাই করেছি। পরধন লোভে মগ্ন হয়েছিলাম কিনা, তা জানি না, তবে অবহেলা করেছি। কতটা অবহেলা করেছি, তা বোধগম্য হল, দেখি নাই ফিরে শেষ করার পর। রামকিঙ্কর বেইজের জীবন নিয়ে লিখেছেন সমরেশ বসু। […]
-
ধূমপান, বাঙালি ও বাংলা সিনেমা
শিরোনামেই যেখানে ধূমপানের সঙ্গে বাঙালি ও বাংলা ছবি যুক্ত হয়েছে তখন বাঙালির সঙ্গে অন্য প্রদেশের মানুষ এবং বাংলা ছবির সঙ্গে অন্য ছবির তুলনা আসবেই। এ কথা স্বীকার করে নেওয়া ভাল যে আমাদের হাতে এমন নির্দিষ্ট তথ্য বা পরিসংখ্যান নেই যা থেকে বাঙালি ও অন্য প্রদেশবাসীর ধূমপানের অভ্যাস অথবা বাংলা ও হিন্দী ছবিতে ধূমপানের প্রতিতুলনা করা […]
-
কাপুরুষ এবং এক যুদ্ধের সমাচার
কাপুরুষ ঘুমের ঘোরে হাত রেখেছিল অন্যের হৃদয়ে। হৃদয় উষ্ণ, তবে তাতে শোণিতের শব্দ ছিলো না। মুহূর্তে তার ভেতরে ককিয়ে উঠেছে কান্না। তার অন্তরাত্মা বৈশাখের ঝুরো ধুলোর মতো মাটিতে ছড়িয়ে থাকছে।সীমান্তে তখন সন্নাটা। এক্মুহূর্তের রাতশেষ। তবে কার বুকে সে হাত রেখেছিল? সে নারী না পুরুষ বুঝতে পারেনি তখন ঘোর ভয়ে। নিজে সে মেয়ে নয়। পাশ ফিরে […]
-
রূপাতীত
বাতাসে শিউলিফুলের গন্ধ। নিশ্চয় চামেলিদের গাছে ফুল ধরেছে। আমাদের বাড়ির পেছন দিকে রান্নাঘরের পাশে একটা শিউলিগাছ ছিল। শোঁয়াপোকা হয় বলে বছর দুয়েক আগে কেটে ফেলা হয়। রান্নাকরা ডালে একটা শোঁয়াপোকা পড়ে-ছিল। সরলাপিসি আমাদের রান্না করে। সেই বলল গাছটা কাটিয়ে ফেলার কথা। বড় বাটি ভরতি পুরো ডালটা ফেলা গেল। দেখা গিয়েছিল তাই, নাহলে কারও পেটে চালান […]
-
মসসা
এক রণধীর চৌবে গ্লাসে আর এক পেগ হুইস্কি ঢেলে নিয়ে আমার খালি গ্লাসের দিকে ইঙ্গিত করে সুশীলের দিকে ফিরে বললেন, তখন আমি পালামৌ ডিসট্রিক্টের এস পি, বুঝলে। পালামৌতে, আমাদের সাবেকি বাড়ির দুমাইলের মধ্যে ডালটনগঞ্জের ডিসট্রিক্ট কোর্ট এরিয়াতে আমার অফিস। পুরো কেরিয়ারের মধ্যে সেই একবারের পোস্টিং-এই বাবা, মা, দাদা, বৌদি সকলের সঙ্গে বছর দুয়েক থাকার সুযোগ […]
-
জীবন
১ বৃষ্টি থেমে গেছে তাতো প্রায় সাত দিন হয়ে গেল। সুমিদের উঠোন থেকে জল নেমে গেছে। গত কয়েকদিন রোদের তেজ ছিল প্রখর। উঠোন মোটামুটি শুকিয়ে গেছে। তবু সুমি সাবধানে উঠোনের ধার ঘেঁষে হাটে। তাঁর মা কাঠ এবং কয়লার উনুনে রাঁধেন। সেই ছাই ফেলে একটা সরু চলার পথ করেছেন তিনি। তাঁদের বাড়ির সীমানায় কলাবতী ফুলের গাছ […]
-
এক চাঁদ চার তারা
সেক্টর ফাইভ থেকে বাসে করে উল্টোডাঙা নামতেই খিদেটা চাগার দিল অনুষ্টুপের। শেষ খাবারটা খেয়েছে সেই দুপুরবেলা। বাড়ি থেকে দেওয়া টিফিনে আজ ছিল পরোটা, আলুর তরকারি আর মিষ্টি। আজ যেন একটু বেশিই খিদে পাচ্ছে।কী জানি কী হয়েছে।দুপুরের টিফিনটাও আজ টিফিন টাইম হতে না হতেই সাঁটিয়ে দিয়েছে। একটা বাজতে না বাজতেই অনুষ্টুপ টিফিন কৌটো খুলে বসায় কাশ্মীরাদি […]
-
অ্যাক্টিভিস্ট
১ ইস্যু ঘুরতে দেওয়া যাবে না। বার্নিং টপিককে আরও বার্নিং করে ধরে রাখতে হবে। ফোনের ওপারের কথা শুনতে শুনতে রাস্তার মোড়ের দোকান থেকে গোল্ড ফ্লেকটায় অগ্নিসংযোগ করল পঙ্কজ। তারপর দোকানের পেছনের দিকের ছায়াঘেরা বাবলা গাছটার নিচে বেঞ্চি পাতা সেফটি জোনে ঢুকে বাঁ হাতটা মোবাইলের নীচে ধরে ,কথা আড়াল করে, নিচু স্বরে বলতে শুরু করল – […]
-
ভেজা খড়ের গন্ধ
চামড়ার ওপর এসে পড়ে এক ফোঁটা ঠাণ্ডা জল। কেমন যেন কুঁচকে যায়। ঠিক কুঁচকে যাওয়া নয়, নিজেকে কেমন যেন গুটিয়ে নেয়। শুকনো বালির মধ্যে এক ফোঁটা জল এসে পড়লে যেমন হয়, চারপাশের পাড়ায় কেমন যেন একটা ধ্বস নামে। পাড়ায় পাড়ায় চাউর হয়ে যায় জল পড়ার খবর। তারপর শক্তির দিকে আস্তে আস্তে ঘেঁষে যাওয়া। কিছুতেই মুখ সরিয়ে […]
-
লক্ষ্মী-সরস্বতী
।। ১।। আর বোলো না, কি দিনকাল পড়েছে ! তাই নয় তো কি? কাল রাতে কখন ফিরেছে জানো ? কখন ? সাড়ে বারোটা ! ভুতুর বাবা স্মোক করতে উঠেছিল, ব্যালকোনি থেকে দেখেছে। জানোই তো তিন দিন ওয়ার্ক ফ্রম হোম, তার উপর বিজি সিজন, মাঝে মাঝে রাতভর জাগতে হয় গো লোকটাকে ! হ্যাঁ। পুরুষ মানুষ হলে […]
-
উন্নয়ন
দুর্গাপুর থেকে বিষ্ণুপুর যাচ্ছিলাম সপরিবারে। সাত বছরের মেয়ের চোখে অপার বিস্ময়, অসীম আনন্দে চিকচিক করছে দুটো চোখ-মা দেখ কি সুন্দর গাছ, মা, কত সবুজ! মা কি পাখি ডাকল? প্রকৃতি প্রেমীর প্রশ্নবাণ থেকে বাঁচবার জন্য মেয়ের বাবা খবরের কাগজের আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে ফেলেছেন। আশা করছেন আড়াই ঘণ্টার পথ এই ভাবেই কাটবে। পুজোর আগমনী বার্তা জানিয়ে রাস্তার […]
-
ছবি
সুরবালার বয়স এখন প্রায় পঁচাশি। মোটামুটি নিজের সব কাজ সে নিজে করতে পারে। শুধু চুল আঁচড়াতে গেলে বড্ড হাত ব্যথা করে। হাতটা উঁচু করতে গেলেই যত বেদনা। ছেলে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়েছিল। ওষুধ মালিশ এসব করলে একটু উপশম হয় । সুরবালা বুঝে গেছেন যে এই বয়েসে এর বেশি কোন কিছু আশা করা ঠিক নয়। তিনি […]
-
ডিলিট
পাড়ার প্রদীপ বোধহয় পটাই হয়ে যাওয়ার পর থেকেই বদের গাছ হয়েছে একখানা। হেন দুষ্কর্ম নেই যে পটাই করে না। তোলাবাজি মস্তানি গুন্ডামি মেয়েদের টিজ করা সব কাজে সে সিদ্ধ হস্ত। এহেন পটাই কে সবাই এড়িয়ে চলবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু চলবো ভাবলেই তো আর চলা যায় না। বিশুর চায়ের দোকানের বেঞ্চিতে ঘুম চক্ষুটি খুলেই ব্রাশে মাজন […]
-
দুটি গল্প
ভাষা-শহিদ কে জানত একটা কথা থেকেই এত ঝামেলার সৃষ্টি হবে। পটাই মেয়েটার সামনে দাঁড়িয়ে গদাইকে বলেছে – অত ভাবার কিছু নেই।ভাল লাগলে বলে দে-আই লেবু। ব্যস ওখানেই শুরু হল নতুন বিপ্লব।এলাকার দাপুটে নেতা ও কাউন্সিলর সত্যেনদাকে সঙ্গে নিয়ে পাড়ার মোড়েই ধরেছিল পটাইকে।দলের ছেলেদের সামনেই গরম নিতে আরম্ভ করল আর তারপরই শুরু হল মেয়ের বাবার […]
-
এক সওদাগরের ‘সপ্তডিঙা ও অন্যান্য’
সদ্য একটা ভালো বই পড়ে উঠলাম। ঠিক গল্প, উপন্যাস কিম্বা প্রবন্ধ নয়, তবে এই বইটিতে সব রসদই মজুত। বিশিষ্ট সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক শঙ্কর ঘোষ এর লেখার একটি সংকলন- সপ্তডিঙা ও অন্যান্য। নোয়াখালি মার্চে সাংবাদিক হিসেবে গান্ধীজির সঙ্গী ছিলেন তিনি, প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রনেতাদের সফর সঙ্গী শঙ্করবাবু প্রশাসন এবং রাজনৈতিক সাংবাদিকতার চাপ সামলেও নিয়মিত বই রিভিউ […]
-
শারদ অধ্যায় ২০২৪
[ চারিদিকেই যেন আজ অসুখ।একজন মানুষকে ভরসা,বিশ্বাস করতে পারছেন না আর একজন মানুষ। একজন মানুষের ধর্ম,ভাষা,আর্থিক পরিস্থিতি থেকে গায়ের রঙ, লিঙ্গ তাকে আলাদা করে রাখছে অন্যদের থেকে। সভ্য বলে বড়াই করলেও আজও নিরাপত্তা নেই নারীর, শিশুর বাসযোগ্য হয়ে ওঠেনি এই সমাজ।কুকথা, কুযুক্তিতে ভরে যাচ্ছে তার দেওয়ালগুলো। গভীর সব অ-সুখ ঘিরে ধরছে আমাদের।করোনাকালে ‘উৎসব’ কথাটা সচেতনভাবে বর্জন […]
-
সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের মুখোমুখি
[বাংলা সাহিত্যের অন্যতম ব্যতিক্রমী কথাসাহিত্যিক সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের দীর্ঘ এই সাক্ষাৎকারটি ইতিমধ্যেই প্রকাশিত। বিখ্যাত অনুবাদক ও সম্পাদক অনিন্দ্য সৌরভের অনুমতিক্রমেই এই মূল্যবান আলাপটি ‘গল্পের সময়’ এর পাঠকদের জন্য ফের প্রকাশ করা হল।] অনিন্দ্য: সাহিত্য সৃষ্টিতে কীভাবে এলেন? বাড়িতে কি লেখালেখির অনুকূল পরিবেশ ছিল? সিরাজ: জ্ঞান হবার পর থেকেই বাড়িতে প্রচুর বই-পত্র দেখেছি। এরই মধ্যে বেড়ে […]
-
কৃকলাশ
তাহলে আমরা যাচ্ছি কি না লাস্ট শো-এ ? তাড়াতাড়ি ঠিক করে বল, টিকিট বুক করবো তো ! প্রমথ দুই বন্ধুদের দিকে তাকিয়ে বললো। তিনজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু কানপুর ইঞ্জিনীয়ারিং কলেজে ইলেকট্রনিক্সের ছাত্র, প্রমথ ডে স্কলার, বাকি দুজন হোস্টেলবাসী । শনিবারের দুপুর থেকে প্রমথর বাড়িতে এসে খাওয়া দাওয়া আর জোর আড্ডা দিচ্ছে সুজন আর অনন্ত। ওদের দুজনের […]
-
সীতা
১ অশোক বাড়ি ফিরছিল রিক্সা করে। এভাবে রিক্সাভাড়া সচরাচর সে খরচ করে না। শিখা বলে সে নাকি কিপ্টে। অশোক মুচকি হেসে এড়িয়ে যায়। ব্যাংক কর্মী অশোকের একটা ছোট বাড়ি আছে। ব্যাংক লোন করে প্রথমে জমি কিনেছিল সে। পরে লোন শোধ হলে বাড়ির জন্য লোন নেয়। অশোক বেশ হিসেবী । একটা ডায়েরি তে সে সব হিসেব […]
-
ঘুম এনে দেবে কেউ
ঘুম আর শেষঘুম এক নয়, শেষ ঘুম হলো মৃত্যু। শেষ ঘুম একবারে অজ্ঞান,এক্কেবারে নিস্তার। ঘুমও নিস্তার- কিছু সময়ের জন্য ভুল-ঠিক, কর্তব্যাকর্তব্য,মায়া না মতিভ্রম, সুমতি- কুমতির হাত থেকে বাঁচা। শেষ ঘুমে তাই হয়তো স্বর্গ আসে ও ঘুমের মাঝে দেখা দেয় স্বপ্ন নামে ক্ষণস্বর্গ। রিটায়ার করা- ইস্তক প্রফুল্লবাবুর ঘুরে ফিরে ঘুম ছাড়া আর কিছুই ঠিক মনে হচ্ছে […]
-
বিন্দু বিসর্গ
গল্প আছে ?- রিষড়ার বাঙ্গুর পার্কের ফ্ল্যাটের সান্ধ্য দ্বিপাক্ষিক আড্ডার মধ্যেই হটাৎ প্রশ্নটা ছুড়েছিল কলকাতার একটি নামী সংবাদপত্রের সাব এডিটর পীযুষ আশ। গল্প তো আছেই ? খাস্তা, বাসি, টাটকা কোন গল্প শুনতে চাস বল?- চটজলদি পালটা প্রশ্ন ছুঁড়লো লেখক সদানন্দ। সবেমাত্র আই বি- র লার্জ পেগটা শেষ করে গ্লাস নামিয়েছে। সন্দিপনীয় ভাষায় উৎসব শুরু হয়েছে […]
-
দেবী আছেন ওদেশেও
মানুষের মনের ভিতরের যে অন্ধকার, যে আসুরিক প্রবৃত্তি তাকে দমন করবার ভেতর দিয়েই এগিয়েছে আমাদের সভ্য হওয়ার ইতিহাস। কিন্তু এই সভ্য হয়ে ওঠবার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে যে এখনো বহু যোজন পথ পাড়ি দিতে হবে তা বুঝতে কোন অসুবিধা হয় না। অতি সাম্প্রতিক কালের ভয়ানক নারী নির্যাতনের ঘটনা এক নিমেষে সভ্যতার আপাত পরিশীলিত মুখোশকে ছিঁড়ে ফেলে […]
-
বুঝিনি সে নিরুচ্চার ভালোবাসা ছিল নিরন্তর
এক দুপুর থেকে একা একা কফি হাউসে বসে দু’তিন রাউন্ড ইনফিউশন শেষ কোরেও একটা লাইনেই আটকে থাকল পদ্যটা, ‘বুঝিনি সে নিরুচ্চার ভালোবাসা ছিল নিরন্তর’। আগে পরে আর কিছুই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। নাহ্, আজ আর হবে না। বিকেলের দিকটায় উঠব উঠব করছি, এমন সময় দেখলাম প্রফেসর সাহেব ঢুকছেন, অনেকদিন পরে! আমার অনেক দিনের পরিচিত জন। […]
-
তান্ত্রিক
কথা ছিল পুরুলিয়া যাব পলাশ দেখতে। কিন্তু যাবার আগের দিন হুজুক উঠলো তারাপীঠ । আমি প্রথমে রাজি হচ্ছিলাম না গন্তব্য পরিবর্তনে। শেষ পর্যন্ত লড়ে গিয়েছিলাম তারাপীঠ না যাওয়ার জন্য। কিন্তু মহিলা সদস্যদেরই জয় হলো। তারাপীঠ সম্পর্কে গল্প শুনে শুনে কেমন যেন একটা অনাগ্রহ তৈরি হয়েছিল আমার মনের মধ্যে। এই অনাগ্রহের কারণ বলতে গেলে আমাকে অরুণের […]
-
গাছ কন্যা
গ্রামে গঞ্জে শহরের আনাচে-কানাচে কত যে ঘটনা ঘটে যায় তার খবর আমরা কি রাখি। কতটুকু রাখতে পারি।নদীর ধারে সাজানো-গোছানো গাছ গাছালি ঘেরা সেরান্দি গ্রাম। এই গ্রামে একটা হাই স্কুল ছিল। রুনু নামে, একটা মেয়ে পড়ত এই স্কুলে। যখন অঙ্কের ক্লাস হতো, তখন দিদিমণি দেখলেন অংক না করে রুনু ছবি আঁকছে। আবার বাংলার ক্লাসে মাস্টারমশাই গেলেন […]
-
মুক্তি
[প্রখ্যাত লেখক শৈলেশ মটিয়ানির জন্ম ১৪ই অক্টোবর, ১৯৩১, আলমোড়া জেলার বাড়েছিনা গ্রামে। উত্তরাখণ্ডের গ্রামীণ-পাহাড়ি জনজীবনের বিশিষ্ট কথাশিল্পী। কিছু সরকারি পুরস্কার ছাড়াও কুমায়ুন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পেয়েছেন সাম্মানিক ডি. লিট. (১৯৯৪ সাল)। মৃত্যু: ২৪শে এপ্রিল, ২০০১, দিল্লি। উত্তরাখণ্ড সরকার তাঁর স্মৃতিতে প্রতি বছর শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের ‘শৈলেশ মটিয়ানি পুরস্কার’ দেয়।] কেবল পান্ডে সবে নদীটা অর্ধেক পেরিয়েছেন। চতুর্মাসের […]
-
আকাশপথের উদ্দেশে
আমার মা পান চিবুতে চিবুতে মাঝে মাঝেই জিভটাকে বার করে নিয়ে এসে অনেকটা লম্বা করে দেওয়ার চেষ্টা করত। খুব একটা সফল হতো না তবে তা নিয়ে তার কোনো কষ্ট ছিল না। কারণ জিভটাকে সামান্য কিছুটা দেখতে পেলেই সে খুশি। উদ্দেশ্য কতটা লাল হয়েছে সেটা দেখা। এখন রাত, তবে কত রাত আমি জানি না। আমার ঘরে […]