-
বেদেনী
শম্ভু বাজিকর এ মেলায় প্রতি বৎসর আসে। তাহার বসিবার স্থানটা মা কঙ্কালীর এস্টেটের খাতায় চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মতো কায়েমি হইয়া গিয়াছে। লোকে বলে, বাজি; কিন্তু শম্ভু বলে ‘ভোজবাজি-ছারকাছ’। ছোট তাঁবুটার প্রবেশপথের মাথার উপরেই কাপড়ে আঁকা একটা সাইনবোর্ডেও লেখা আছে ‘ভোজবাজি-সার্কাস’। লেখাটার একপাশে একটা বাঘের ছবি, অপরদিকে একটা মানুষ, তাহার এক হাতে রক্তাক্ত তরবারি, অপর হাতে […]
-
মেঘে ফোটা তারা
বাস থেকে নেমে ময়েনউদ্দিন একেবারে ঘুটঘুটে অন্ধকার নিয়ে গ্রামে ঢুকলো। কালো পলিব্যাগে মোড়ানো হাতের ছোট পুটুলিটা অন্ধকারে মিশে একাকার হয়ে গেছে। অবশ্য বকের ডানার শাদাও গিলে খেতো এ অন্ধকার। বড় রাস্তা থেকে প্রায় হামাগুড়ি দিয়ে বাড়িমুখো আলপথে নেমে যেন সে অন্ধকার আরো গাঢ় করতে করতে ধীরলয়ে হেঁটে যাচ্ছে ময়েনউদ্দিন। পথ যেন তার পায়েই পেঁচিয়ে আছে। […]
-
বনফুলের দুটি গল্প
বনফুলের দুটি গল্প বেচারামবাবু হরিশ মুদী সন্ধ্যাবেলা হিসাব বুঝাইয়া গেল যে গত মাসের পাওনা ২৭.৭০ পঃ হইয়াছে এবং তাহা অবিলম্বে দেওয়া দরকার। সদ্য-অফিস-প্রত্যাগত বেচারামবাবু বলিলেন–“আচ্ছা মাইনেটা পেলেই–!” অতঃপর কাপড়-চোপড় ছাড়িয়া বেচারামবাবু বাহুরের রোয়াকটিতে বসিয়া হাঁক দিলেন–“অরে চা আন্–।” চা আসিল। চা আসিবার সঙ্গে সঙ্গে পাড়ার হরিবাবু, নবীন রায়, বিধু ক্লার্ক প্রভৃতি চার পাঁচজন ভদ্রলোকও সমাগত […]
-
জলের ধর্ম
১ ওস্তাদের কাছ থেকে শিখে নেওয়া ম্যাজিকগুলো ধীরে ধীরে পুরনো হয়ে যাছে মানিক বুঝতে পারে।এই তো সেদিন কিশোরগঞ্জে একটা শো ছিল,দর্শকের আসন থেকে অভিযোগ উড়ে আসে-‘এসব পুরোনো খেলার বদলে নতুন কিছু দেখান’। নতুন কি আর দেখাবে মানিক। বছর দুই হল ওস্তাদ মারা গেছে। শহরে গিয়ে নতুন ওস্তাদের কাছ থেকে ম্যাজিক শেখার মতো ক্ষমতাও মানিকের নেই। […]
-
জমিদার রবীন্দ্রনাথ
রবীন্দ্রনাথকে জমিদার হওয়ার ব্যবস্থা করে গিয়েছিলেন তাঁর পিতামহ প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর, যাঁকে রবীন্দ্রনাথ অস্বীকার ও উপেক্ষা করার সবরকম চেষ্টা করেছিলেন। প্রিন্স দ্বারকানাথ ছিলেন বিরল প্রতিভার মানুষ। তিনি নানা দিকে বিশাল ব্যবসা বাণিজ্যের স্থপতি ছিলেন। প্রকৃতপক্ষে তাঁকে এ বিষয়ে সারা ভারতেই পথিকৃৎ বলা যায়। বিপুল ধন সম্পত্তির মালিক হয়েও দূরদৃষ্টি সম্পন্ন দ্বারকানাথ বুঝেছিলেন যে তাঁর উত্তরাধিকারীদের […]
-
ডোন্ট পারসিউ থিংস,লেট দেম পারসিউ ইউ- রাস্কিন বন্ড
‘তিনি নিঃসঙ্গতাকেও বাঙ্ময় করে তুলেছিলেন’- বলেছেন ভি.এস. নইপল। তিনি বলতে রাস্কিন বন্ড। জন্মেছেন হিমাচল প্রদেশের কসৌলিতে। জন্মসূত্রে ব্রিটিশ হলেও মাঝখানে বছর চারেক বাদে ভারত ছেড়ে আর পা বাড়াননি বিদেশে। মাত্র সতেরো বছর বয়সে প্রথম উপন্যাসের জন্য পেয়েছিলেন আর্ন্তজাতিক পুরস্কার। আকাদেমি পেয়েছেন ১৯৯৩তে। ৯৯’ তে পেয়েছেন পদ্মশ্রী। ২০১৪তে পদ্মভূষণ। তাঁর লেখা থেকে জনপ্রিয় সিরিয়াল ছাড়াও ছবি […]
-
ছবির রবীন্দ্রনাথ
সাতষট্টি বছর বয়েসে ছবি আঁকার নেশা পেয়ে বসলো রবীন্দ্রনাথকে। তদ্দিনে কবিতা লিখে নোবেল প্রাইজও পাওয়া হয়ে গেছে তাঁর। আর সত্যিকথা বলতে কি কবিতার ভাষাও গেছে অনেকদূর এগিয়ে। ছবি দেখে ভক্তজন আহা আহা করতে লাগলো। ‘ঠাকুর’ এঁকেছে বলে কথা, খারাপ হতেই পারে না, নৈব নৈব চ। কিন্তু শুধু ভক্তজন বললেই তো আর চলে না, তাত্ত্বিক লোকজনের […]
-
চিত্রকর
ময়মনসিংহ ইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করে আমাদের গোবিন্দ এল কলকাতায় । বিধবা মায়ের অল্প কিছু সম্বল ছিল । কিন্তু , সব চেয়ে তার বড়ো সম্বল ছিল নিজের অবিচলিত সংকল্পের মধ্যে । সে ঠিক করেছিল , ‘ পয়সা’ করবই সমস্ত জীবন উৎসর্গ করে দিয়ে । সর্বদাই তার ভাষায় ধনকে সে উল্লেখ করত ‘ পয়সা ‘ বলে […]
-
অতৃপ্ত কামনা
সাঁঝের আঁধারে পথ চলতে চলতে আমার মনে হল, এই দিনশেষে যে হতভাগার ঘরে একটি প্রিয় তরুণ মুখ তার ‘কালো চোখের করুণ কামনা’ নিয়ে সন্ধ্যাদীপটি জ্বেলে পথের পানে চেয়ে থাকে না, তার মতো অভিশপ্ত বিড়ম্বিত জীবন আর নেই! আমারই বেদনা-রাগে রঞ্জিত হয়ে গগনের পশ্চিম দুয়ারে জ্বালা সন্ধ্যা-তারা আমার মুখে তার অশ্রু-ভরা ছল-ছল চোখ নিয়ে চেয়ে ওই […]
-
অনধিকার প্রবেশ
একদা প্রাতঃকালে পথের ধারে দাঁড়াইয়া এক বালক আর-এক বালকের সহিত একটি অসমসাহসিক অনুষ্ঠান সম্বন্ধে বাজি রাখিয়াছিল। ঠাকুরবাড়ির মাধবীবিতান হইতে ফুল তুলিয়া আনিতে পারিবে কি না, ইহাই লইয়া তর্ক। একটি বালক বলিল, “পারিব”, আর-একটি বালক বলিল, “কখনোই পারিবে না।” কাজটি শুনিতে সহজ অথচ করিতে কেন সহজ নহে তাহার বৃত্তান্ত আর-একটু বিস্তারিত করিয়া বলা আবশ্যক। পরলোকগত মাধবচন্দ্র […]
-
কুয়োর শহর
গ্রহের বাকি সব শহরের মতন এই শহরটা লোকে পরিপূর্ণ ছিল না। এটা কুয়োয় ভর্তি ছিল। জ্যান্ত … তবে শেষমেশ ওগুলো কুয়োই। কুয়োগুলো প্রত্যেকেই আলাদা রকমের ছিল। কেবল যে সব জায়গায় খোঁড়া হয়েছিল তাদের, তার প্রেক্ষিতে নয় বরং তাদের পাঁচিলের তুলনায়ও ওগুলো আলাদা ছিল ( কুয়োমুখ গুলো দিয়েই তারা বাইরের পৃথিবীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখত)। মূল্যবান ধাতু […]
-
সাহিত্যবিচার
সূক্ষ্মদৃষ্টি জিনিসটা যে রস আহরণ করে সেটা সকল সময় সার্বজনিক হয় না। সাহিত্যের এটাই হল অপরিহার্য দৈন্য। তাকে পুরস্কারের জন্য নির্ভর করতে হয় ব্যক্তিগত বিচারবুদ্ধির উপরে। তার নিম্ন-আদালতের বিচার সেও বৈজ্ঞানিক বিধি-নির্দিষ্ট নয়, তার আপিল-আদালতের রায়ও তথৈবচ। এ স্থলে আমাদের প্রধান নির্ভরের বিষয় বহুসংখ্যক শিক্ষিত রুচির অনুমোদনে। কিন্তু কে না জানে যে, শিক্ষিত লোকের রুচির […]
-
থ্রু – লেন্স
তখনও ‘উড’-কালচার শুরু হয়নি। মানে হলিউড, বলিউড, টলিউড–এসব আর কি। তখনও সিডি, ডিভিডি, ক্যাসেট জন্ম নেয় নি। মানুষ সিনেমাকে ‘ফিলিম’ বলতেই অভ্যস্ত। অন্তত আমাদের দেশের সাধারণ মানুষেরা তো বটেই। তারা বলত ‘বোম্বের ফিলিম’ আর ‘আংরেজি ফিলিম’। আর বাংলা কিন্তু হলে ‘বাংলা বই’। এইসব সময়ে হল মানে সিনেমা হল – মানে এক রহস্যময় জগৎ। আর পর্দায় […]
-
জীবন নামের মহাগ্রন্থ
প্রায় দিনই মানুষটিকে একই সময়ে মেট্রো স্টেশনে দেখে চন্দ্রানী। সেই মানুষটিও চন্দ্রানীকে দেখে। একদিন সকালের মেট্রো রেলে অফিসের ব্যাগ্রতা ও ব্যস্ততার সময়ে নিজের সিট ছেড়ে দিয়ে সেই মানুষটি চন্দ্রানীকে বসতে দেয়। চন্দ্রানীর এক হাতে ব্যাগ অন্য হাতে মস্ত বড় এক প্যাকেট। বসতে পেয়ে সুবিধেই হল। বসে পড়ে কৃতজ্ঞ হাসি হেসে চন্দ্রানী বলে, “ধন্যবাদ ! আজকাল […]
-
সুগন্ধি সাবান, শারুক খান ও শঙ্করী
দুপুর প্রায় তিনটে নাগাদ এল শারুক খান। দীর্ঘদিন পর ফের তার স্বপ্নের মানুষটাকে দেখতে পেয়ে কুলকুল করে বয়ে চলা নদীতে ভোরের সূর্যের আলো পড়লে যেমন হয়, মনের ভেতর তেমনই ঝিলমিল করতে লাগলো শঙ্করীর। কয়েক ঘন্টা ধরে সামনের খোয়া ওঠা মলিন রাস্তাটার দিকে তাকিয়ে সে ভাবছিল আজও বোধ হয় শারুক খান আসবে না। ও এলেই এক […]
-
সন্ধ্যাবেলার গল্প
ওরা দুজন মুখোমুখি বসে আছে । বহুদিন পর আজ দেখা হলো দুজনের । ঠিক এই দিনটার জন্য ওরা অপেক্ষা করে ছিল এতদিন । ওরা পার্কের যে কোণটাতে বসে আছে সেখানটা খুব নির্জন । ওদের দুজনেরই এই নির্জনতাটার খুব দরকার ছিল । ওদের মুখে কোন কথা নেই । মনের ভেতর অনেক কথা জমে থাকলে কি এরকম […]
-
উভয়-সঙ্কট
[ ‘Coordination Game’ – অর্থশাস্ত্রে ব্যবহৃত ‘Game Theory’ –র একটি অনবদ্য অবদান। ‘Prisoner’s Dilemma’ ‘Coordination Game’ এরই একটি বহু প্রশংসিত উদাহরণ। ‘Prisoner’s Dilemma’ নামকরণটি করেন গণিতবিদ Albert. W. Tucker. ‘Dilemma’- অর্থাৎ ‘উভয় সঙ্কট’-ই এই গল্পের মূল বিষয়বস্তু যেখানে যুক্তিবাদী মনোভাব সহযোগিতাকে লঙ্ঘন করেছে একটি মজার আঙ্গিকে।] বিশ্বাস বা ভরসা হল বন্ধুত্বের অনিবার্য উপাদান। বিশ্বাস […]
-
৮ থেকে ৮০র জন্য লিখি
[বাঁটুল দি গ্রেট, হাঁদা-ভোঁদা আর নন্টে-ফন্টে – ছোটোবেলায় এদের খপ্পরে পড়েনি এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া ভার। বাঁটুল,হাঁদা-ভোঁদার কাণ্ডকারখানা পড়ার জন্য প্রতি মাসেই নতুন ‘শুকতারা’ নিয়ে কাড়াকাড়ি পড়ে যেত আজকের বড়দের মধ্যে। আজ কয়েকশো চ্যানেলের টিভি আর ইন্টারনেটের হাত ধরে বিশ্ববাজারের হাজারো কমিকস ও কার্টুন চরিত্র হুড়মুড়িয়ে বাঙালির ঘরের ভেতর ঢুকে পড়লেও হাঁদা-ভোঁদা,নন্টে-ফন্টের সৃষ্টিতে আজও নিরলস […]
-
নববর্ষে বইপাড়ার আড্ডা
[পৃথিবীর যে খানেই বাঙালি থাকুক না কেন বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন বা পয়লা বৈশাখ তার কাছে নিয়ে আসে এক বিশেষ অনুভব । ঢাকার বৈশাখী উৎসবের একটি আবশ্যিক অঙ্গ মঙ্গল শোভাযাত্রা। সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটের সঙ্গীতানুষ্ঠানের মাধ্যমে আহ্বান করা হয় নতুন বছরের সূর্যকে। বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ বা ত্রিপুরার বিভিন্ন জায়গায় বসে বৈশাখী মেলা। নববর্ষ মানেই নতুন জামাকাপড়, আত্মীয়স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের বাড়িতে […]
-
গল্পের উপাদান আমি জীবন থেকে পাই-কৃষ্ণা বসু
গল্পের সময় – আপনি মূলত কবি। কবিতার পাশাপাশি আপনি গল্পও লেখেন। আপনি কবে থেকে গল্প লিখছেন? কৃষ্ণা বসু – আমি আট বছর বয়স থেকে কবিতা লিখছি। প্রায় শৈশব থেকেই কবিতা লিখছি। আমি কবিতা আক্রান্ত। কোনও ঘটনার অভিঘাত আমার মধ্যে তরঙ্গ তৈরি করে এবং তা কবিতায় প্রকাশিত হয়ে যায়। কোনও অভিজ্ঞতা যা কবিতার আয়তনের চেয়ে বড় […]
-
রঙিন দারিদ্ররেখা
উইয়ের ঢিবি থেকে মাটি ভেঙে টিনের বালতিতে বোঝাই করতে করতে সুধাকৃষ্ণ বুঝে উঠতে পারছিল না কটা বাজে। গ্রাম–ভারতের যে মানুষেরা রোদের এগনো–পেছনো, তারা আর চাঁদের অবস্থানে বেলা রাত মাপে সুধাকৃষ্ণ তাদেরই একজন। অথচ আষাঢ়ের এই থমধরা মেঘলা সকালে এই বৃষ্টি, বৃষ্টি নয়, মেঘভাঙা ধারালো রোদ, কখনও আগলা–পাগলা হাওয়া – এমনই যখন চারপাশের প্রাকৃতিক খেলা; তখন […]
-
এই প্রজন্ম
সিমিভ্যালিতে চমৎকার বাড়ি কিনেছে সম্বিৎ। কাঠের দোতলা বাড়ি। ক্যালিফোর্নিয়ায় ভূমিকম্প হয় বলে সব বাড়িই কাঠের তৈরি। বাড়িটার বাঁদিক দিয়ে বোধহয় গেছে পাঁচ নম্বর নর্থ ফ্রি ওয়ে। খানিকটা এগোলেই পাহাড়। সেই পাহাড়ের গা বেয়ে এঁকেবেঁকে চলে গেছে চওড়া ফ্রি ওয়ে। চৌষট্টি মেইল এগনোর পর তবে সমতলে গিয়ে মিশেছে রাস্তাটা। সম্বিতের বাড়ির সামনে এক টুকরো বাগান। বাগানে […]
-
চোর
তুমুল শোরগোলে ঘুম ভেঙে গেল কামিনীর, এত চিৎকার-চেঁচামেচি কীসের? যারাই করুক, পরে দেখা যাবে, আগে তো ওকে ডাকি। পাশেই শুয়েছিলেন তাঁর স্বামী বিবিধান। রিটায়ার হতে আর বেশি দেরি নেই। এক মেয়ে ছিল। তারও বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন মাসখানেক আগে। জামাইটাও খুব ভাল পেয়েছেন। যেমনি ভাল পরিবার। তেমনি দেখতে-শুনতে ভাল। তার উপর চাকরিও করে আরও ভাল। দমকলের […]
-
বাতাসী
বাতাসী জেলের মেয়ে। বাপ নাই, মা নাই, ভাই নাই – থাকিবার মধ্যে আছে এক বুড়ি ঠাকুরমা। সকলে মরিয়া গেল ; যাহাদের পরে মরিবার কথা, তাহার আগে চলিয়া গেল ; বুড়ি রহিল, আর রহিল তাহার বুড়া বয়সের একমাত্র অবলম্বন বাতাসী। বাতাসী নামটার একটু ইতিহাস আছে। বাতাসীর বাপ মার অনেক দিন সন্তান হয় নাই। তাহারা কত দেবতার […]
-
বাংলা সাহিত্যে সমকামিতা
মানবমন অতলান্ত। সেই মনের অতলে লুকিয়ে থাকে গুপ্ত ও সুপ্ত কামনা বাসনা। তবে মাত্রাভেদে ভিন্নতা তো আছেই। তার সঙ্গে যখন যুক্ত হয় শরীরের বিবিধ রসায়ন, তখনই সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ পায় একটি মানবরূপ। তৈরি হয় সম্পর্কের নানা রূপভেদ, যে সম্পর্ক নানা প্রকৃতির, নানা প্রবৃত্তির। কারণ বৈষ্ণবশাস্ত্র অনুযায়ী সব ভাবই বিবিধ রসাশ্রিত। এর মধ্যে মধুর ভাব থেকেই মুখ্যত […]
-
জেলফেরত
নাম ছিল রমেশচন্দ্র সেন। কিন্তু লোকে তাকে রমেশ বলে জানত আর রাজ্যসুদ্ধ ছেলেমেয়ে সকলেই তাকে ঐ নামেই ডাকত। ছেলেবেলা মারপিট করে স্কুল থেকে তাড়িত হয়ে জিমন্যাস্টিক আর গুন্ডামি করে বেড়াচ্ছিল, একটু – আধটু ছবি আঁকার দিকে ঝোঁক থাকায় বাড়ির লোকে তাকে আর্টস্কুলে ভর্তি করিয়ে দিলে কিন্তু সেখানেও তার কিছু হল না। লতা–পাতা–ফুল আঁকার ক্লাস থেকেই […]
-
লেখা আসে নিঃসঙ্গতার গর্ভ থেকে – মনোজ দাস
[ ভারতীয় সাহিত্যের বিশিষ্ট ছোটোগল্পকার, ঔপন্যাসিক ও প্রাবন্ধিক মনোজ দাস। মনোজ দাস ওড়িয়া ও ইংরাজি মিলিয়ে আশিটির ওপর বই লিখেছেন। সাহিত্য পুরস্কার প্রাপ্তির তালিকাও দীর্ঘ। ঝুলিতে রয়েছে সাহিত্য আকাদেমি, সরস্বতী সম্মান, উৎকলরত্ন, ডি.লিট, শ্রীঅরবিন্দ পুরস্কার। সাহিত্য আকাদেমি তাদের সর্বোচ্চ সম্মান ‘ফেলো অব দি আকাদেমি’ অর্পণ করেছেন মনোজ দাসকে। অশীতিপর এই সাহিত্যিকের এই সাক্ষাৎকারটি গৃহীত […]
-
ছোটোবেলায় রবীন্দ্রনাথ ছিল অবশ্যপাঠ্য : গৌতম ঘোষ
[বিশিষ্ট চলচিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ ১৯৯৫ সালে ‘গল্পের সময়’ পরিবারের অন্যতম সদস্য দেবাশিস মজুমদারের সঙ্গে দীপাবলির এক দ্বিপ্রাহরিক আড্ডায় নিজের বেড়ে ওঠা নিয়ে এক দীর্ঘ সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন অধুনালুপ্ত একটি বহুল প্রচারিত বাংলা সংবাদপত্রের জন্য। কিন্তু তৎকালীন সাংবাদিক দেবাশিসবাবু পেশাগত কারণে অন্য পত্রিকাগোষ্ঠীতে যোগদান করায় অপ্রকাশিত অবস্থায় পড়ে ছিল সাক্ষাৎকারটি। ‘গল্পের সময়’ সেই দীর্ঘ আলাপচারিতাটির […]
-
উপযুক্ত সম্মান নেই অলংকরণ শিল্পীর : যুধাজিৎ সেনগুপ্ত
[দীর্ঘ সময় ধরে বাংলা প্রকাশনা জগতে অলংকরণ বা ইলাস্ট্রেটর হিসেবে যুক্ত যুধাজিৎ সেনগুপ্ত। ৬০-এর দশকে বসুমতী, সপ্তাহ পত্রিকা থেকে শুরু করে হাল আমলের ‘জাগো বাংলা’র পুজো সংখ্যা সবেতেই সমানতালে এঁকে চলেছেন তিনি। একজন ইলাস্ট্রেটর হিসেবে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করার নানা অভিজ্ঞতার কথা আমাদের শুনিয়েছেন যুধাজিৎবাবু। বসন্তের এক সকালে তাঁর বাড়িতে বসে শিল্পীর কর্মজীবনের নানা প্রাপ্তি নানা অভিযোগের […]
-
তু…চ্ছ
‘গেহ্রায়ি কিতনা হোগা …’ ‘করিব, হাজার ফিট তো হোগা …’ ‘আগার গিরতা তো …’ ‘কিমা বন যাতা …’ হেডলাইটের হলুদ সমান্তরাল দুটো রেখা সামনের সরলবর্গীয় জঙ্গল ভেদ করবার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে এখনও। অরণ্যরাজির দেওয়ালে পৌঁছানোর আগেই জড়িয়ে গেছে কুয়াশার মরণ-জালে। আমাদের সামনে খাদের গা বেয়ে উঠে আসা সুউচ্চ দেবদারু, ওক, বার্চ, ম্যাপ্লের জঙ্গলের ভগ্নাংশ। পিছনে […]