হরিদাস দৌড়াচ্ছে। আমোদপুরের হরিদাস। খেঁচে দৌড়। মাঝে মাঝে মনে হচ্ছে বাতাসকেও টেক্কা দিচ্ছে বুঝি। দৌড়াতে দৌড়াতে পরনের লুঙ্গিটার দিকে দ্রুত একবার তাকিয়ে নিচ্ছে সে। শতছিন্ন লুঙ্গিটা মালকোঁচা মেরে দৌড় শুরু করেছিল। আছে তো এখনও কোমরে? আছে বলেই মনে হচ্ছে যেন। অবশ্য না থাকলেও থামার উপায় নেই, ল্যাংটো হয়েই দৌড়ে যেতে হবে তাকে। দৌড়াতে দৌড়াতে নিজেই অবাক হয়ে যাচ্ছে সে। জিরজিরে বুকের খাঁচা, রোগা প্যাঙলা, গোটা পাঁচেক নেন্ডিগেন্ডি সন্তানের দিন-মজুর পিতা, তিন-পা হাঁটলেই যার কোমরে খিল আর বুকে টান ধরে – সেই হরিদাস এত ভালো দৌড়াতে পারে। শুধু দৌড়- তার সঙ্গে হাই-জাম্প, লং-জাম্প, ভল্ট- আচ্ছা আচ্ছা অলিম্পিকের মেডেলওয়ালাকে লজ্জায় ফেলে দেবে। এই তো, একটু আগেই হরিদাস দেখল সামনে একটা বড় পগার; এক লাফে সে টপকে গেল অনায়াসে। তারপর দেখল- একটা উঁচু পাঁচিল। পাখির মতো শরীরটা হওয়ায় রেখে ছুটল আবার। ছুটতে ছুটতে পিছনে তাকাল- এখনও ছুটে আসছে ওরা। দলে আরও ভারী হয়েছে। হরিদাসকে চাই ওদের।
সকালে উঠোনে দাড়িয়ে কাঠকয়লার ছাই দিয়ে দাঁত মাজছিল হরিদাস। বউকে চায়ের কথা বলতে গিয়ে মুখ-ঝামটা খেয়েছে একটু আগেই। চা – পাতা নেই চা হবে কী দিয়ে শুনি! ব্যাজার মেজাজ নিয়ে দাঁতে আঙুল চালাচ্ছিল হরিদাস। দেখল, বাসু পোড়েল আসছে। প্রচুর পয়সার মানুষ বাসু ভক্ত মানুষ। কপালে তিলক কেটে, থলির মধ্যে হাত ঢুকিয়ে সবসময় মালা জপছে। আর দারুন কিপটে। দোকানে জিনিস কিনে পয়সা দিতে চায় না।, বাসে চড়লে টিকিট ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করে। কিছুদিন আগে হরিদাসকে দিয়ে বাগান পরিষ্কার করিয়েছে; দশটা টাকা এখনও বাকী। রোজই দিচ্ছি দেব করছে। ইদানীং মুখোমুখি পড়ে গেলে না দেখার ভান করে চলে যাচ্ছে। সেই বাসু পোড়েলই একমুখ হাসি নিয়ে এগিয়ে এল – বুঝলি হরি, ঠাকুর এখনও আছেন, সবকিছু দেখছেন উপর থেকে।
মুখ থেকে কালো থুতু পিক করে ফেলে হরিদাস বলে, কোথায় আর আছেন; থাকলে কী আর আমার এমন দশা হয়!
ছিঃ ছিঃ হরি ! বাসু চোখ বড়ো বড়ো করে বলে, অমন কথা বলিস না; একটু হয়তো দেরি করলেন; আসলে কথা কী জানিস – মনপ্রান ঢেলে ডাকতে হয়, আসল ভক্তকে ঠিক তিনি চেনেন, অনেক করে বলেছিলাম রে – বড়ো দুঃখী মানুষ আমাদের হরিদাস, ওর একটা গতি কর, তা একবারে এক নম্বরটাই দিলেন।
বলে, কপালে একবার হাত ঠেকায় বাসু পোড়েল।
তখনও ব্যাপারটা বোধগম্য হচ্ছে না হরির। সাতসকালে এ কী তামাশা! আর একবার থুতু ফেলে বলে, কিন্তু দাদা, তুমি আর দু-নম্বরি কোর না, দশটা টাকা এবার ছাড়।
ওরে হতভাগা। বাসু আঁতকে ওঠে – ওই দশ টাকা দিয়েই তো পুজো দিলাম তোরে নামে, তা দেখ ঠাকুরে একেবারে ফার্স্ট প্রাইজ লাগিয়ে দিলেন। তোর কি আর এখন ওইসব ছাইপাঁশ দিয়ে দাঁত মাজা মানায়, যা বাজার থেকে ভালো দেখে মাজন-ব্রাশ কিনে নিয়ে আয়, তুই এখন সাতাশ লাখ টাকার মালিক রে।
মুখে আর একটু থুতু জমেছিল। কপ করে গিলে ফেলল হরিদাস।
তবে হ্যাঁ, কথা রাখিস কিন্তু। বাসু বলে চলেছে, আমি কিন্তু ঠাকুরকে বলেছি, হরি যদি পায়, বড়ো ভোগ চড়াব তোমার, মানতের কথাটা ভুলে যাবি না, তুই শুধু টাকাটা দিয়ে দিবি আমার হাতে, কিপটেমি করবি না, সাতাশ লাখ পেলি…।
মাথার মধ্যে কেমন যেন ভুলভাল হয়ে যায় হরিদাসের। সাতাশ লাখ ! শব্দটা যেন চেনা-চেনা লাগছে। আগেও যেন শুনেছিল শব্দটা। হ্যাঁ, মনে পড়েছে। কাল দুপুরে। হাতে কাজ নেই, সকাল থেকে বসে আছে হাবুর চায়ের দোকানে। পকেটে পাঁচটা টাকার একটা কয়েন ঠুনঠুন করছে। এই টাকায় না হবে চাল-ডাল, না হবে আনাজপাতি, বাড়ি ফিরলেই বউয়ের কু-বাক্য কপালে নাচছে। তাই ঠায় বসে আছে দোকানে। তাই ঠিক তখনই মদন টিকিটওয়ালা পাশে এসে বসল। তারপর এটা সেটা গপ্পো। বাজারদর, নেতাদের ধান্দাবাজি, ছেলে-ছোকরাদের মতিগতি এইসব। তার ফাঁকেই টুক করে জিজ্ঞেস করল, একটা টিকিট কাটবে নাকি হে হরিদাস, বাম্পার খেলা, একটাই পড়ে আছে। মিষ্টি মিষ্টি করে মদন বোঝাল, পাঁচটা টাকাতো মোটে দাম- কত টাকাই তো এদিক-ওদিক হয়, বলা যায় না, এটাতেই হয়ত লেগে গেল…। মদন এমন কী, কয়েকটা ভ্যানওলা, রিকশাওলা, আনাজওলার প্রাইজ পাবার কাহিনিও শোনাল। কোনও দিন লটারির টিকিট কাটেনি হরিদাস। এই প্রথম হাতে উল্টে পাল্টে দেখল। বেশ রঙচঙে কাগজটা। কী সব লেখা উপরে। তখনই শুনল শব্দটা। সাতাশ লাখ। সেটা কত? মদন বলল, সে অনেক, তুমি-আমি কেন, অনেক দাদাই একসঙ্গে অত টাকা চোখে দেখেনি। হাবুও চা ছাঁকতে ছাঁকতে উৎসাহ দিল, কেটে ফেল হরিদা ; বলা যায় না, লেগে গেলে তুমি রাজার ব্যাটা – তখন একটু দেখ আমাদের।
না, রাজাগজা হবার ইচ্ছে কোনও কালেই নেই হরিদাসের। সে বড়োজোর চায়, ভাতের সঙ্গে রোজ যেন একতাল আলুভাতে জোটে, সকালের চায়ে এক ড্যালা গুড়, সেই গুড় আলুভাতের কথা চিন্তা করতেই করতেই কেটে ফেলেছিল টিকিটটা । তারপর ভুলেও গেছে কখন যেন। কোথায় রেখেছে মনেও করতে পারছে না এখন।
হাজার দশেক অন্তত দিস ঠাকুরের পুজোয়।
বাসু পোড়েলের কথায় ভাবনায় তাল কাটে হরিদাসের। দেখে হন্তদন্ত হয়ে এগিয়ে আসছে দুলাল মাস্টার। দুলাল মাস্টারের টোল এ অঞ্চলে বিখ্যাত। ইস্কুলে কমই পাওয়া যায় মাস্টারকে – সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দলে দলে ছেলেপুলে তার টোলে ঢুকছে আর বেরোচ্ছে। আগাম মাইনে দিয়ে তার টোলে ভর্তি হতে হয় । তবে ভর্তি হলে মার নেই – পাস সে করবেই। লোকে বলে, দুলাল মাস্টার নাকি টোলের ছেলেদের কোশ্চেন বলে দেয়।
দুলাল এসেই হাঁপাতে হাঁপাতে বলে , বলি হরি , তোকে কতদিন বলেছি , ছেলেপুলেগুলোকে আমার কোচিংয়ে পাঠিয়ে দিবি।মুখ্যু করে রাখবি না কী ওদের ?
এমন কথা দুলাল মাস্টারের মুখে কোনও দিন শুনেছে বলে মনে করতে পারে না হরিদাস। তবু ভাবার চেষ্টা করে। মাস্টার মানুষ, মিছিমিছি কী আর বলছে! কিন্তু স্থির হয়ে ভাবার আগেই দুলাল হরিদাসের হাত ধরে হ্যাঁচকা টান দেয়। তারপর ফিস ফিস করে বলে – কারও কথা শুনিসনি, আমি তোর ভালোর জন্যই বলছি…।
ছিপের মাছ খুলে জলের ধারে পড়লে ছিপুড়ে যেমন লাফিয়ে পড়ে, তেমনই লাফিয়ে হরিপদর অন্য হাতটা ধরে বাসু পোড়েল – কোথাও যাবি না হরি, যে যাই বলুক…।
এই টানাটানির মধ্যেই হরিদাস দেখল দৌড়ে আসছে নিকুঞ্জ মুখুজ্জে। হাতে একটা ছোটো শিশি। পেয়েছি রে হরি পেয়েছি, তুই যে বাতের তেলের কথা বলেছিলি সেই তেল। আসল নারান কবিরাজের তেল। এই দেখ গায়ে ছবি রয়েছে; আমি নিজে গিয়ে তোর জন্য এনেছি। তিনদিন পরপর মালিশ করলে বাতের ব্যাথা গায়েব। কোন পায়ে ব্যাথা তোর?
বহুদিন আগে বলেছিল বটে নিকুঞ্জ মুখুজ্জেকে তেলের কথা। তখন তেমন গা করেনি নিকুঞ্জ। আজ একেবারে তেল নিয়ে হাজির।
নিকুঞ্জ ততক্ষণে হরিদাসের একটা পা টেনে নিয়ে তেল লাগাতে শুরু করে দিয়েছে।।
লাফিয়ে উঠে চিৎকার করে হরিদাস – আরে কর কী নিকুদা, তুমি ব্রাক্ষ্মণ মানুষ, তায় গুরুজন।
নিকুঞ্জ বলে, শোন বাবা হরি, আতুড়ে নিয়ম নাস্তি ; তুই আরাম পাচ্ছিস কি বল আগে।
হরিদাস বলে, আরে, ব্যথা–বেদনা তো আমার নয় ; গিন্নির।
ও তোর গিন্নির ! নিকুঞ্জ বলে, সে তো ভালো কথা, তাকেও দেব, বাত খুব ছোঁয়াচে যে রে, তোর বউয়ের হলে তোরও হবার চান্স আছে ; আর হবে না। দেখি ওই পা–টা দে এবার।
হঠাৎ কাঁধে হাত পড়তে চমকে পিছন ফেরে হরিদাস, ফেলু নাপিত। হাতে কাঠের বাক্স নিয়ে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে। বলে, হরিদা, তুমি ঝুপ্পুস চুল, আর খোঁচা দাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়াও – কী বিচ্ছিরি দেখায়, এস সাফ করে দিই তোমাকে।
বারমুডা আর কালো গেঞ্জি পরে এল কানা কার্তিক। ডান হাতে স্টিলের বালা। গতবার কালীপুজোয় একশো টাকা চাঁদা চেয়েছিল কার্তিক। হরিদাস দিতে পারেনি বলে দলবল নিয়ে বাড়িতে এসে সে কী তম্বি – মায়ের পুজোয় এই কটা টাকা দিতে পারবে না ! ছেলেপুলে নিয়ে সংসার, মায়ের কোপে পড়লে কী হবে ! কার্তিক বুক চিতিয়ে সোজা এসে বলল, এই যে হরিদাসদা, স্শুনলুম বিশু শ্লা কাল নাকি তোমাকে হবে চমকেছে, আমাকে শ্লা খবর দাওনি কেন ; কে কত মায়ের দুধ খেয়েছে দেখা যেত।
খুব অবাক হয় হরিদাস। কার্তিক কখনও তাকে ‘হরে’ ছাড়া সম্বোধন করেছে বলে মনে পড়ছে না। আজ একবারে ‘হরিদাসদা’ ! সে কাঁচুমাচু গলায় বলে, না তো, বিশুর সঙ্গে আমার তো কাল দেখাই হয়নি।
তাহলে বোধহয় পরশু। হাতের বালা ঘোরাতে ঘোরাতে বলে কার্তিক।
কিন্তু পরশুও তো …।
তাহলে নিশ্চয়ই তার আগের দিন ; কোনওদিন না কোনওদিন তোমাকে চমকেছে ; তুমি শ্লা ভালো লোক তাই ভুলে গেছ, আজই শ্লাকে টাইট দিচ্ছি ; দেখা যাবে কে কত মায়ের দুধ খেয়েছে।
দেখতে দেখতে হরিদাসের উঠোনে কুম্ভমেলার ভিড়। সবার মুখে – হরি, বাবা হরি – হরিদা – হরিদাস – হরিদাসদা। পাঁচুর মায়ের কালো ছাগিটা বাচ্চা দিয়েছে, নতুন দুধ ; তারই এক পোয়া নিয়ে পাঁচুর মা হাজির – আহা হরি, তোর ছোলপুলেগুলো বড্ড রোগা, এই দুধটুকু …। ঘটক সুদর্শন হরিদাসের বড়ো মেয়ের জন্যে পাত্রের সন্ধান এনেছে। হরি যত বলে, ওর তো মোটে ন’বছর বয়েস, সুদর্শন নাছোড় – আহা, এক্ষুণি তো দেবার কথা বলছি না, ছেলেও তো তেরো বছর, তবে কথাবার্তাটা হয়ে যাক। মাছওলা শঙ্কর বড়ো একটা কাতলা মাছ এনে ফেলল – হরিদাসদা, একদম টাটকা, দেখ খাবি খাচ্ছে, মুড়োটা বউদিকে বোল মুড়োঘন্ট করতে …। মর্ডান টেলারিং –এর নন্দ টেপ নিয়ে হাজির। বলছে – কী সব ধুলধুলে জামাটামা পড় বল তো, স্থির হয়ে দাঁড়াও, মাপটা নিই…।
হরিদাস স্থির হয়ে দাঁড়াবে উপায় কী ! কে হাত ধরে টানছে, কে পা ধরে, কে চুলে চিরুনি চালাচ্ছে, সামনেই ঝটাপটি মারপিট করছে তিন – চারজন লোক, সবাই পার্টির নেতা ; প্রত্যেকের দাবি, হরি তাদের লোক, এবার ভোটে হরিকে দাঁড় করাবে তারা।
হরি মিনতি করছে, কাঁদছে, চিৎকার করছে। কিন্তু শোনার কেউ নেই। হরি বুঝল, মৃত্যু আসন্ন। তখন মরিয়া হয়ে উঠল সে। শরীরের সব শক্তি এক করে মুক্ত করল নিজেকে। মালকোচা মারল লুঙ্গিটায়, তারপর দৌড় – খেঁচে দৌড়।
কিন্তু দৌড়েও নিস্তার নেই যে ! ওরা আসছে। দল বেঁধে আসছে হরিকে ধরতে।
অনেকক্ষণ ছুটছে হরিদাস। এবার দমে টান পড়ছে তার। শরীর যেন এলিয়ে আসছে। টলমল করছে পা – দুটো। কিন্তু থামার উপায় নেই। পিছনের দলটা যেন নতুন উদ্যমে আসছে। ক্রমশ কমে আসছে দূরত্ব।
হঠাৎ বাড়িটা চোখে পড়ে তার। মাটির দোতলা বাড়ি একটা। টিনের চাল। লম্বা একটা মই ঠেকানো রয়েছে চালে। অগাধ জলে ডুবন্ত হরিদাস খড়কুটোর মতো আঁকড়ে ধরে মইটা।
বাড়ির মালিকও চিনতে পেরেছে হরিদাসকে। সে–ও শুনেছে লটারি পেয়েছে হরিদাস। সবে ভাবছিল, যাবে দেখতে। আর সেই হরিদাস কিনা তার বাড়ি। এ তো তক্তপোশের নীচে গুপ্তধন ! কোথায় বসাবে, কী খেতে দেবে, ভেবে পাচ্ছে না সে।
কিন্তু সে বসতে চায়। বসতে চায় টিনের চালের ওপর। আর একটাই প্রার্থনা, তার, চালে ওঠার পর লুকিয়ে ফেল ভাই মইটা।
মালিক প্রথমে প্রবল ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়। চালের ওপর বসবে হরিদাস ! এত জায়গা থাকতে–চালে ! তারপর ভাবে, কী জানি, হরিদাস এখন বড়োলোক। কথায় বলে – মাটির দেওয়াল, পাগলা শেয়াল আর বড়োলোকের খেয়াল – এদের বোঝা দায়। তাই সে মইটা ঠেকিয়ে ধরে চালে। তড়বড় করে হরিদাস উঠে পড়লে, লুকিয়ে ফেলে মই।
ঘন্টাখানেক কেটে গেছে তারপর। এখন ওই যে হরিদাস বসে আছে টিনের চালে। উবু হয়ে বসে আছে। মাথার ওপর খাঁ–খাঁ রোদ।
আর দলটা ফিরে যাচ্ছে। এতক্ষণ এই বাড়ির নীচেই ছিল ওরা। কত আবেদন, নিবেদন, মাথা ঠোকা, কানমলা, নাকে খত আর কান্নাকাটি – নেমে আর বাবা হরি, নেমে এস হরিদা, হরিপদবাবু নেমে আসুন…। ওপর থেকে শুধু জুল জুল করে দেখছিল হরিদাস, আর মইয়ের মালিককে আশীর্বাদ করছিল – সত্যি উপকার করেছে বটে লোকটা।
কিন্তু একটু পরেই এল খবরটা। কেউ একজন আনল। আরে, লটারি যে পেয়েছে, সে তো অন্য হরিদাস। সে হল গিয়ে হরিদাস দে। আর এ হরিদাস পাল। এ তো লটারি পায়নি।
সঙ্গে সঙ্গে ……
অ্যাঁ, তাই নাকি ! সত্যি ? কী কান্ড দেখ … আমার অবশ্য তখনই সন্দেহ হয়েছিল… আমি তো বলেই ছিলাম এ কখনো হয় … চল চল …
তাই সবাই ফিরে যাচ্ছে। দৌড়াচ্ছে। দৌড়ে যাচ্ছে সেই হরিদাসের খোঁজে। এদের সঙ্গে যাচ্ছে মইওলাও। কাঁধে তার লম্বা মই। সেই হরিদাসের যদি লাগে মইটা।
হরিদাস অনেক চিৎকার করেছে – ওগো, তোমরা শোন, আমার নামার কী হবে !
শুনতে পায়নি কেউ। সবাই এখন ভীষণ ব্যস্ত। হরিদাসের উপকার করতে হবে যে ! আসল হরিদাসের।
Tags: উল্লাস মল্লিক, গল্প, হরিদাস পাল
email:galpersamay@gmail.com
মতামত
আপনার মন্তব্য লিখুন
আপনার ইমেল গোপনীয় থাকবে।