এম সি কিউ
কোন দেশ ২০১৮ সালে শ্রেষ্ঠ উপস্হাপকের পুরস্কার পেয়েছে মউলী?
অপশন দিন স্যার
অপশন না দিলে এগোতে পারছো না?
কী করব স্যার, দিনরাত মাল্টিপল চয়েস ঘাঁটতে ঘাঁটতে জীবনটাই এম সি কিউ হয়ে গেছে। ঘুমে,জাগরণে,স্বপ্নে…
ওভার স্মার্ট?
একটু তো হতেই হবে স্যার।
ওক্কে,ইন্ডিয়া,চায়না,ক্যানাডা, ব্রাসিলিয়া- হু?
স্যার, প্রদর্শক বা উপস্হাপক মানে কী?
বাংলাটাও গেছে? শোন, যে সাড়ম্বরে নিজেকে প্রদর্শন করে।
নিশ্চিত, ইন্ডিয়া।
রাইট অ্যানসার।
২৪ তম রাজীব গান্ধী সদ্ভাবনা পুরস্কারের জন্য কে মনোনীত হয়েছেন?
অপশন প্লিজ-
রেড্ডি,গোপালকৃষ্ণ গান্ধী,অজিত কর্মকার, অমিত সিং?
সদ্ভাবনা ব্যাপারটা ভীষণ গোলমেলে। যিনি আছেন, তিনি স্যার অড ম্যান আউট।
এদের মধ্যে কাউকে পাচ্ছো না?
পেয়েছি। ভালোমানুষ গোছের তো? গোপালকৃষ্ণ গান্ধী।
রাইট অ্যানসার।
স্যার, আমার একটা এম সি কিউ-এর অ্যানসার কিন্তু আপনাকে করে দিতে হবে।
যুবক শিক্ষকটি এম সি কিউ এর জালে ঘুরতে ঘুরতে, গিঁট পাকাতে পাকাতে জিগ্যেস করলেন, কোনটার?
স্যার, স্ট্রিক্টলি পারসোনাল।
ক্লাসে কোন পারসোনাল ম্যাটার আলোচনা হবে না।
স্যার, ভীষণ, ভীষণ সিরিয়াস
আমি ক্লাসের পরে বলি?
ওক্কে।
সবাই মুখচাওয়াচাওয়ি করে চলে গেলে, শিক্ষক জিগ্যেস করলেন,
সে,হোয়াট ইউ ওয়ান্ট টু।
স্যার, এই পাজলটা আপনাকে সলভ করে দিতেই হবে।
আরে বলবে তো!
স্যার আমার লাইফে ৪টে অপশন আছে
মানে?
মানে,এক নম্বর একজন এঞ্জিনিয়ার, মাঝারি কম্পানিতে চাকরি করে, ভবিষ্যতে চাকরি থাকবে কিনা সন্দেহ। দু’নম্বরে একজন এম বি এ,তার আরও দুজন গার্লফ্রেণ্ড, আমি স্পাইইং করে জেনেছি। তিনে একজন ব্যাঙ্ক ম্যানেজার, রেস্ত ভালো আছে, কিন্তু বউকে সময় দিতে পারবে না, দিনরাত ব্যাঙ্কে পড়ে থাকবে। চারে আছে একজন কলেজ প্রোফেসর, রেস্ত ভালো, কিন্তু ভীষণ আনরোম্যান্টিক, ছিনিয়ে খেতে জানে না।এবং তিনি আমার সামনেই বসে আছেন। আমার চাই স্পিড, প্যাশন,মানি,ফান অ্যাণ্ড ভিরিলিটি।
কোন টা সঠিক হবে স্যার?
অধ্যাপক টি চুপ করে থাকলেন কিছুক্ষণ, তারপর বললেন,
নান অফ দি অ্যাবাভ।
………………………………
একটি অণুগল্প
দু’হাজার এক
বাবুরাম মাহাতোর হাত থেকে ছিটকে পড়ল কাঁচের গেলাস।
এবং ভাঙল।
চাদ্দিকে ছিটকে পড়ল জল।
শালো বেহুদা। হাথমেঁ জোস নাহি? আজ তুম্হারা খানাউনা বন্ধ্।
নেতারহাটের ঘাসজঙ্গলে কুয়াশার থিকথিকে সরের মত ম্যানেজারের মুখ: শালো বেহুদা কাঁহিকা, হাথমেঁ জোস্ নাহি?
হ্যা হ্যা করে হেসে উঠল হনিমুনার ছেলেটা।
তাই দেখে বছর বারোর বাবুরাম ও বোকার মত দাঁত বার করল।
দ্যাখ,দ্যাখ,বেহেড মেইয়াছেল্যার মুতন ওঠের ফঁকে ফুকুর ফুকুর হাসছ্যে। গা জ্বইল্যে যায়!
ততখণে ঢুলুঢুলু বিবির গায়ে শরমের পানি পড়ে গেল কিছুটা।।
আরে এ সান্থাল মুণ্ডার ছা,চোখে কি বনশূয়ারের গু ঘষেছিস?
ইউ সোয়াইন,আই’ল কিল ইউ।
ঝাঁপিয়ে পড়ল হনিমুনার ছেলেটা। ওর বউ ঘ্যানঘ্যান করতে লাগল, দ্যাখ দিকি, দামী শাড়িটা, এর দাম দিতে পারবি?
ঠিক তখনই নেতারহাটের আহ্লাদী ঘাসজঙ্গল ছাড়িয়ে, কোয়েল ভিউপয়েন্ট, আপার ঘাঘরি লোয়ার ঘাঘরি, রাজারাপ্পা, হুড্রো ফল্স হাজারিবাগের ছাঁটজঙ্গলতক ধোঁয়া উঠছে ধিকিধিকি……
দু‘হাজার পনের
আগুন কুড়োতে আসা মাঝবয়সী এক সমাজবিজ্ঞানী বেশ জোরে জোরে স্মৃতি রোমন্হন করছিলেন: বুইলেন, সেই কতকাল আগে হনিমুনে এখানে এসেছিলাম, ফ্যান্টাস্টিক সানরাইজ মশাই, ভোলা যায়না।
অতজোরে ইখানে কথা বইলেন্ না সায়েব সঙ্গী গাইড আর দায়ে পড়ে আসা ম্যানেজারের চোখে কুয়াশা।
ঝরাপাতায় পা ফেলতে ফেলতে সাবধানী বিজ্ঞানীটি ম্যানেজারকে শুধোলেন, কেন?
ম্যানেজার ঠোঁটে আঙুল দিয়ে চুপ করতে বললেন।
গাছগুলি কত বড়ো হয়ে গেছে, না? সমাজবিজ্ঞানী নীরবতা ভেঙে সহজ হবার চেষ্টা করলেন।
চুপ,চুপ!
দি এম মেনাস?
চুপ একদম।
ন্যাও সেফ?
অনেকবার তো কুম্বিং হল?
ঘোলাটে চোখে সামনে তাকিয়ে স্হির হয়ে গেলেন ম্যানেজার। তোতলাতে লাগলেন।
গুঁড়ি মেরে এগিয়ে আসছে ঝোপ জঙ্গল গাছ পাথর টিলা খাদান
ভেঙে যাচ্ছে অসংখ্য কাঁচের গেলাস।
Tags: এম সি কিউ ও অন্য গল্প, গল্প
email:galpersamay@gmail.com
মতামত
আপনার মন্তব্য লিখুন
আপনার ইমেল গোপনীয় থাকবে।