চেপে পড়ুন দিদিমণি। দেরী করবেন না যেন আর বেশি — আহিরী দোনোমনা করছিল বেশ। মধ্যবয়স্ক, লম্বা, দেহাতি লোকটা তার অচেনা। এই ভর সন্ধ্যেবেলা তার মোটরবাইকে আহিরী কে বাড়ি পৌঁছে দেবার কথা বলছে লোকটা।
চকিতে হাতঘড়িটার দিকে একবার তাকায় আহিরী।সাড়ে পাঁচটার কাঁটা ছুঁইছুঁই। নারায়ণপুর স্কুলের পাট চুকে গেছে সেই কবে ! পাশের নদীপাড়ে সূর্য্যি এখন নিবু নিবু প্রায়। বাস তো দূরের কথা, পড়ে পড়ে এতক্ষণ একটা ট্রেকার কিম্বা একটা অটো…. একটা টেম্পোর পর্যন্ত দেখা পায়নি আহিরী। দুটো একটা রিক্সা ছিল বটে। তবে তাতে করে ঘর পৌঁছনো অসম্ভব ব্যাপার !
— কী ভাবছেন এত দিদিমণি ? বাসের জন্য দাঁড়িয়ে আছেন ! আজ কিচ্ছু মিলবে না — লোকটা ফের ডাকে।
— কেন, কী হয়েছে আজ ? — তটস্থ গলায় আহিরী জিজ্ঞেস করে।
— লাফড়া। বাঁধের মাছ নিয়ে সব ঝামেলা হয়েছে।তাতে সামনে আবার মায়ের পুজো। ঝামেলা আছে বহুৎ এবার।
আহিরী বুঝতে পারে না কিচ্ছু । দাঁড়িয়ে থাকে চুপটি করে।
লোকটা আবার গলা খাঁকারি দেয়– বাঁধের রাস্তা ভালো নয় দিদিমণি। উদ্ধারণপুরে নবীন ঘোষের সাঙ্গ রা সব রাস্তা আটকে বসে আছে। ওই এলাকা ওদের। আর বেশি দেরী করবেন না। বেশী রাত মানে বেশী ঝামেলা।
আহিরী ঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারছিল না। ইতিউতি করতে করতে নিঃশব্দে চেপে গিয়ে বসে লোকটার পেছনে।
নারায়ণপুরের রাস্তা ছেড়ে তাদের মোটরবাইক বাঁধের মুখে এগিয়ে চলে। আহিরী তখনও বুঝতে পারছিল না কাজটা তার ঠিক হল না ভুল হল। খানিকটা তফাতে গিয়ে চেপে বসেছিল লোকটার পেছনে। লোকটা অবশ্য একবারও ঘুরে তাকায়নি পেছনে।
খানিকটাদূর গিয়ে হঠাৎ রাস্তা ছেড়ে বাইনে একটা বাঁক নিল লোকটা। তারপর সামান্য এগিয়ে ফের বাঁহাতে।শেষে একটা পলস্তারাখসা জীর্ণ একতলা ছোট বাড়ীর সামনে মোটরবাইকটা নিয়ে গিয়ে দাঁড় করাল আচমকা।
— একী ! এখানে কেন দাঁড়িয়ে পড়লেন ? — আহিরীর গলাকেঁপে ওঠে অজানা আশংকায়।
বিন্দুমাত্র কর্ণপাত করে না লোকটা। হনহনিয়ে বাড়িটার ভেতরে চলে যায়।
আহিরী বিপদের আভাস পায়।রাতবিরেতে অপরিচিত জায়গায় এভাবে অপরিচিত কোনো ব্যক্তির সাহায্য নেওয়াটাই তার ভুল সিদ্ধান্ত ছিল !
পালাবে কিনা ভাবছিল দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে।
মিনিট দুয়েকের মধ্যেই দুটো ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে লোকটা ঘর থেকে বেরিয়ে এল লম্বা লম্বা পা ফেলে।আহিরী শিউরে ওঠে। কী করতে চায় এরা !
— দিদিমণি, বাঁধের এইপাড়টা আমাদের এলাকা।আর ওপাড়টা ওদের।খবর আছে, শালারা রাস্তা আগলে বসে থাকবে সারা রাত।কাউকে গলে পেরতে দেবে না– বলতে বলতে মোটরবাইকে চেপে বসে লোকটা।
লোকটার কথা শুনে আহিরী ফের দোনোমনায় পড়ে যায়। লক্ষ্মীপূজোর পর আজই তাদের স্কুল খুলেছে কেবল। আর যত ঝামেলা আজই সব !
শুকনো গলায় বলে, আমাকে তাড়াতাড়ি পৌঁছে দেবেন প্লীজ।
পেছনের ছেলে দুটো হাঁকল, — শংকরদা, তুমি আগে আগে চল। আমরা পেছনে আসছি।
ওরা দুটোতে আরও একটা মোটরবাইকে চেপে গিয়ে বসে। শংকর গাড়ীতে স্টার্ট দেয়। আহিরী পেছনে চেপে বসে ফের।
মোরাম বিছানো চওড়া লালমাটির রাস্তা বাঁধের। মাঝে মধ্যে উঁচু নিচু ঢিবি গর্ত। সামান্য কয়েকহাতে একপাশে বাঁধের গায় উঁচু দেয়াল আর একপাশে বিস্তৃত খাঁ খাঁ মাঠ। কোজাগরী পূর্নিমা পেরিয়ে সবে চাঁদ ঢাকতে শুরু করেছে। তবু পথঘাট ঠাওর হয় বেশ ভালোমতই।দিগন্তরেখা বরাবর দূরে মিটমিটে আলোগুলো বোধহয় হালি শহরের।বাঁধের এই রাস্তা ধরে উদ্ধারণপুর পেরিয়ে তবে শহর যাওয়া যায়।
খানিকটা পর একটা চড়ামত জায়গায় গিয়ে রাস্তা বেশ সমতল মনে হল আহিরীর।
শংকর বলল, বাঁধ বরাবর এই যে উঁচু জায়গাটা দেখছেন দিদিমণি, এখান থেকেই শুরু উদ্ধারণপুর।নবীন ঘোষের এলাকা।
— নবীন ঘোষ টা কে? –গলাটা একটু ঝাঁকিয়ে জিজ্ঞেস করে আহিরী।লোকটাকে পুরোপুরি বিশ্বাস করে উঠতে না পারলেও কিছুটা স্বাভাবিক হচ্ছিল এবার সে। বলে, — আর মাছ নিয়ে ঝামেলাটাই বা কি ?
শংকর একবার মুখ ফিরে পেছনটা দেখে নেয়। ওর চ্যালাদুটো সামান্য তফাতেই অনুসরণ করে আসছে। বলে, সে এক কাহিনী। বাঁধের মাছের ভাগাভাগি কারবার আমাদের নারায়ণপুরের বিজন ঘোষ আর উদ্ধারণপুরের ঐ নবীন ব্যাটার।লাগালাগি আজ নয়, আমাদের বাপ ঠাকুর্দার আমল থেকে দেখে আসছি আমরা। নবীন শালা বজ্জাত লোক। আমরা মাছ চুরি করেছি বলে অপবাদ দিয়েছে বহুবার। ঝামেলাও করেছে। এবারেও তাই হল। তবে একটু বেশি হয়ে গেল এইবারেরটা। হাতাহাতির পর্যায়ে চলে গেল ব্যাপারটা। পল্টার মাথাটা গেল ফেটে। শালা নবীন ঘোষের ছেলে পল্টু।সেই থেকে সুযোগ খুঁজছে মারবে বলে। রাস্তা আটকিয়ে বসে আছে। এধার থেকে যে ই যাবে তাকেই মারবে বেইজ্জতরা। একদম পাকা খবর আছে।
— কিন্তু আমি তো নারায়ণপুরের কেউ না… — আহিরী শংকরের কথা কেড়ে নেয়।
শংকর একটা বিচ্ছিরি দেঁতো হাসি হাসে। বলে, নবীন আর তার ছোঁড়াদের হাড়ে হাড়ে বজ্জাতি দিদিমণি। ভূতে বিশ্বাস আছে, ওদের শালা নাই !
আহিরী আর কথা বাড়ায় না।নদীর জলের শীতল হাওয়াটা ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাচ্ছিল তার শরীরকে।বেশ লাগছিল। শুধু একটানা ঝিঁঝিঁ র ডাক শীতল নীরবতায় এক অদ্ভুত বৈপ্যরীত্য এনে দিচ্ছিল মাঝে মাঝে।
শংকর তার বাইকের গতি বাড়ায়।
বাঁধের রাস্তা ওপারে ঠিক শেষ হবার মুখেই একটা ছোট্ট ক্যানেল পেরল ওরা।ক্যানেলের পাড় বরাবর বাঁদিকে জঙ্গলের রাস্তাটা ধরে বাঁধের জাগ্রত কালীর মন্দির। আর বাঁহাতে না গিয়ে নাক বরাবর সোজা উদ্ধারণপুর।এখানেই রাস্তা ঘিরে বাঁশের ব্যারিকেড লক্ষ্য করল ওরা।
শংকরের ঠিক পেছনেই ছিল ছেলেদুটো। মৃদুস্বরে শংকর ওদের বলল , সাবধান মন্টু।কপালে আজ লাফড়াই লেখা আছে, মনে হচ্ছে !
আহিরী বাইকের পেছনে হাতলটা শক্ত করে ধরে।
ব্যারিকেডের ওপারে রাস্তার ঠিক পাশেই টিনের ছাউনি। টিমটিমে আলোয় কয়েকজনকে ঘোরাফেরা করতে দেখা যাচ্ছিল ওখানে।কয়েকজন আবার মাটিতে বসে তাস পিটছিল। গাড়ীর শব্দে হঠাৎ মনোসংযোগে ভাঁটা পড়ে ওদের। সঙ্গে সঙ্গে প্রায় সবকটা মুখই ঘুরে তাকায় এদিকে।
— হে… কে রে ওখানে… — চেঁচিয়ে বলে ওদেরই কেউ একজন।বলার প্রায় সাথে সাথেই দুজন ছুটে আসে ব্যারিকেডের কাছে।
— রাস্তা ছাড়। স্কুলের ম্যাডাম আছে। — শংকর শক্ত গলায় বলে।
ওদের ছেলে দুটো মুখ তাকাতাকি করছিল নিজেদের মধ্যে। আহিরীর বুক ঢিপঢিপ করছিল ভয়ে ।
— এ.. তোরা কি শুধু মুখ দেখতে দাঁড়িয়ে আছিস… বলতে বলতে একটা মোটা মতো লোক উঠে এল এপাশে । ওর সাথে আরও কয়েকটা।টপাটপ সব টপকে ফেলল বাঁশের ব্যারিকেড। নিমেষে ওদের চারটেকে ঘিরে ধরল।
— ঝিন্টু ঝামেলা বাড়াস না খামোখা। যেতে দে। –মোটা লোকটাকে বলল শংকর।
— ঝামেলা…… ঝামেলা ত আজ হবেই শংকা … — বলেই শংকরের মুখে সজোরে একটা ঘুঁষি কষাল মোটা লোকটা।
শংকর উল্টে গিয়ে পড়ে রাস্তায়।বাইকটা পড়ে যায় তার ঠেলায়। আহিরীও উল্টে গিয়ে পড়ে রাস্তার পাশে একটা মেঠো অন্ধকার গড়ানে। চাপা একটা আর্তনাদ বেরিয়ে আসে তার কন্ঠ চিরে। পেছনের ছেলে দুটোর একজন বাইক থেকে আগেই নেমে পড়েছিল। ‘শংকরদা ‘ বলে এদিকে ছুটে আসতেই সামনে থেকে দুটো লোক ওকে জাপটে ধরে। পরপর দুটো লাথি চালায় ওর পেটে। মোটা লোকটা এগিয়ে এসে হাতের পাঞ্জাটা দিয়ে আঘাত করে ওর মুখে। মুখ নাক ছিঁড়ে রক্ত গড়াতে থাকে ছেলেটার। রাস্তার ওপর বসে পড়ে দুহাতে মুখ চেপে।বেগতিক বুঝে বাইকের ছেলেটা কোনমতে বাইকে স্টার্ট মেরে ওদের হাত থেকে পালাতে সক্ষম হয়।
এদিকে ঢালু গড়ানে গড়াতে গড়াতে আহিরী একটা জলা মত জায়গায় এসে পড়ে। গায়ে হাতে নরম কাদামাটি অনুভব করে অন্ধকারে।প্রথমটায় পড়ে গিয়ে কিছুক্ষণ সম্বিত হারিয়ে ফেলেছিল আহিরী। পরে বুঝতে পারে ক্যানেলের ধারে কোথাও পড়েছে সে।এখান থেকে লোকগুলোকে দেখা যাচ্ছিল না। শুধু ওদের চেঁচামেচি আসছিল কানে সমানে।’ ধর ধর’ বলে একটা সমস্বরে চিৎকার শোনা গেল এরপরই। আর তার কিছু পরেই একটা হাত এসে ঠেকল আহিরীর ভেজা গায়ে।
–দিদিমণি, পালিয়ে আসুন এইদিকে — চাপা গলায় শংকর ডেকে ওঠে আহিরীকে। মার খেয়ে এদিকেই পালিয়ে এসেছে শংকর কোনরকমে।
ছুটতে ছুটতে দুজনে ওরা জঙ্গল মত একটা এলাকায় এসে পড়ে কিছুক্ষণ পর ।একটা মোটা দেখে গাছের গুঁড়ির পেছনে থেমে পড়ে তারপর।শংকর হাঁপাতে হাঁপাতে বলে, বাঁধের কালী এ রাস্তাতেই। মন্দিরের পেছনে একটা রাস্তা, সোজা ডাইনে বেরিয়ে গেছে, ওদিকেই পালাতে হবে আমাদের।
আহিরীর প্রায় কান্না আসছিল। সামান্য স্কুল থেকে আজ কি ভয়ংকরসব ঘটনা একটার পর একটা হয়ে চলেছে !
শংকর কান পেতে শোনে, পেছনে ওদের হল্লাটা ক্রমে এগিয়ে আসছে এদিকেই।গাছের আড়ালে মুখ বাড়িয়ে দেখে,সামান্য তফাতে কয়েকটা টর্চের আলো এদিক ওদিক ঘোরাফেরা করছে জঙ্গলের মধ্যে ।তন্নতন্ন করে খুঁজছে ওদের।
হঠাৎ কানে এল, কে একজন নির্দেশ দিচ্ছে, ওদের মধ্যে দুজন এখানেই খোঁজাখুঁজি করবে। বাকীরা যাবে জঙ্গলের অন্যদিকটায়।
শংকর কিছু একটা করবার চেষ্টায় ছিল।শুধু মুহূর্তটার জন্য অপেক্ষা করছিল নিঃশব্দে।
একটা লোক খুঁজতে খুঁজতে হঠাৎ ঠিক ওদের গাছটার বিপরীতে এসে পড়ে।একমূহূর্ত শংকর ইশারায় চুপ করে থাকতে বলে আহিরীকে।পরমুহূর্তেই গাছের আড়াল ভেঙে একহাত মাটির ওপরে উঠে আসা গাছটার একটা গুঁড়িতে ভর মেরে দুপা ছড়িয়ে উড়ে গিয়ে নিখুঁত কায়দায় ঝাঁপিয়ে পড়ল লোকটার ওপর।বাঘ যেমন শিকারের ওপর আচমকা ঝাঁপিয়ে তাকে বেহাল করে দেয়, লোকটারও তাই দশা হল। চকিতে এরপর শংকর হাতের শক্ত পাঞ্জা কষাল পরপর কয়েকটা লোকটার ওপর। নিমেষেই নিস্তেজ হয়ে পড়ল ও। আর একজন ছুটে এসেছিল প্রায় সঙ্গে সঙ্গে।ঠিক ওর নীচেই শংকর তখন সঙ্গীটার ওপর চেপে বসে। লোকটা শংকরকে মারতেই যাচ্ছিল, প্রায় সেকেন্ডের মধ্যে নিজের ডান হাতের তর্জনী আর মধ্যমা একসাথে ভাঁজ করে ওর গলায় সুতীব্র আঘাত করল শংকর অত্যন্ত ক্ষীপ্র গতিতে। দ্বিতীয় লোকটা আর দ্বিতীয় সুযোগ পেল না। অসাড় হয়ে হুড়মুড়িয়ে মাটিতে পড়ে গেল।
আহিরী যেন সিনেমা দেখছিল। নিজের চোখকে বিশ্বাস করে উঠতে পারছিল না শংকরের এমন প্রতিঘাত দেখে। একপলক স্থানু মূর্তির দাঁড়িয়ে ছিল।
— দিদিমণি, এবার চলুন। আর দেরী করা মোটেই উচিত হবে না — শংকর আহিরীর হাতটা শক্ত করে ধরে। টেনে নিয়ে চলে জঙ্গলের রাস্তায়। আহিরী বাধা দেয় না। শংকর কে অনুসরণ করে চলে ছায়ার মত। ওর ওপর এবার বিশ্বাস হারালে পাপ হবে !
হালি শহরের চকচকে আলোর সিমেন্ট বাঁধানো মসৃণ রাস্তাটায় আহিরীকে যখন পৌঁছে দিল শংকর, তখন অনেক রাত। শংকর বলল, –দিদিমণি, আমার কাজ শেষ হয়েছে। এবার আমি আসি।
আহিরী র মনে অজস্র প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছিল। শুধু বলতে পারল , আপনি তো একদম হিরো মশাই ! শংকরবাবু, আমি আপনার কেউ না। তবু নিজেকে এতটা বিপন্ন করলেন। কেন জানতে পারি ?
শংকর তার কর্দমাক্ত হাত দিয়ে ঠোঁটের কোণে চাপ বেঁধে থাকা রক্ত পরিষ্কার করছিল।
আহিরীর কথা শুনে একটা ম্লান হাসি হাসে। গলাটা একটু কেঁপে ওঠে তার । বলে,– বিজন ঘোষের অনেক ঋণ এই অধমের ওপর।সুদে আসলে তারই গোলামি করি তার দলে। জীবন গেলেও তা থেকে আর নিস্তার নাই।ছেলেদুটো আপনার স্কুলে যায়।শুধু ওদের আপনি হিরো করে দিয়েন !আর কিচ্ছু চাই না।
শংকর বিদায় নিল।
তারপরও আহিরী নিশ্চল হয়ে দাঁড়িয়েছিল কতক্ষণ ! ওর মনে তখন গোলাম – হিরোর লুকোচুরি খেলা !
Tags: গল্প, গোলাম-হিরো, মানস দাস
email:galpersamay@gmail.com
মতামত
আপনার মন্তব্য লিখুন
আপনার ইমেল গোপনীয় থাকবে।