“বলছি এ বাড়িতে কেউ কি আছে আমার কথা শোনার মত? না কি আমি একেবারেই উপেক্ষিত? এই অনাহূতের দিকে একবার একটু দেখলে তো উদ্ধার হই” শিবশঙ্করবাবু রাগ দেখাতে দেখাতে এ ঘর ও ঘর পায়চারি করছেন । কিন্তু রান্নাঘরের সামনে যেতে পারছেন না।রান্নাঘরে শাশুড়ি বৌমা রান্নায় ব্যস্ত। শিবশঙ্করবাবুর রাগকে পাত্তাই দিচ্ছেন না মীনাক্ষী দেবী।আজ রবিবার। রাজ্যের কাজ।তাছাড়া সপ্তাহে এই একটি দিনই তো স্বামীকে, ছেলেকে, নিজের হাতে রেঁধে খাওয়ানোর সময়টুকু পান।এটা সেটা করতে করতে চার – পাঁচ রকম পদ হয়েই যায়। এছাড়াও সারা সপ্তাহের জামাকাপড় কাচা, ইস্ত্রি করার ঝামেলা তো আছেই। অথচ, এই মানুষটাকে দেখ! দিন দিন যেন মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে।সর্বক্ষণ শুধু খাই খাই! মনে মনে ভাবেন মীনাক্ষী। শাশুড়িকে চুপ করে থাকতে দেখে বৌমা বলল,”মা, আপনি যান, একবার শুনে আসুন বাবা কি বলছেন!”
“তুমি থামো তো বৌমা। ঐ মানুষটা সারাটা জীবন এরকম করে গেল আমার সঙ্গে। কেন করছে বুঝি না ভাবছ? কথা বলতে বলতেই মীনাক্ষী দ্রুত হাতে ওভেনে কড়াই চাপিয়ে তেল ঢাললেন। তারপর আঁচ একেবারে কমিয়ে দিয়ে রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে গিয়ে কর্তার মুখোমুখি দাঁড়ালেন , “কি হয়েছে টা কি? তখন থেকে দেখছি পাগলামো করছ! বলি লজ্জা শরমের মাথা কি একেবারে খেয়ে ফেলেছ?”
“হ্যাঁ, সে তো বহুকাল আগেই,বিয়ের পিঁড়িতে যেদিন বসেছি, সেদিনই খেয়ে ফেলেছি”
“মানে? কি বলতে চাও তুমি?”
“আর কি ! জীবনটা শেষ হয়ে গেল সংসার করে”
“ঐ একই কথা তো বহুদিন ধরে শুনছি।নতুন কথা কি আছে বলো ? বলি হুজ্জুতিটা কিসের?”
“আমি মানুষটা এখনো জ্যান্ত আছি তো, এখনো মরে যাইনি তো, আমারও খিদে-টিদে পায়তো, না কি?”
“মানে? একঘন্টাও হয়নি রুটি-তরকারি খেয়েছ, এর মধ্যেই খিদে! পেটে কি হাঙর ঢুকেছে?”
“আহা হা রাগ করছ কেন? বলছি রান্নাঘরে কি হচ্ছে? একটা সুস্বাদু গন্ধ নাকে ভেসে এল!”
“তোমার মাথা আর আমার মুন্ডু” বলে মুখ ভার করে রান্নাঘরে ফিরে এলেন মীনাক্ষী দেবী।
“কি হয়েছে মা?” বৌমা কৌতূহলী।
“নতুন কি আবার? খাই রোগ! দাও এখন এক বাটি পায়েস— গন্ধ পৌঁছে গেছে নাকে”
মীনাক্ষীর জীবনটা আসলে সূচিপত্র দেওয়া বইএর মত।কোনো আলাদা ছত্র বা আলাদা সংযোজন কোনোদিনই হয়নি। সেই মেয়ে হয়ে জন্ম নেওয়া, বড় হওয়া, লেখাপড়া শেখা, তারপর অচেনা অজানা একটা মানুষকে বিয়ে করে শ্বশুরবাড়ি চলে আসা। সেখানে মেনে নিতে নিতে আর মানিয়ে নিতে নিতে জীবনটা কাটিয়ে দেওয়া।ছোট থেকেই মীনাক্ষীর লেখাপড়ার প্রতি ঝোঁক ছিল প্রবল। বাবাও চেয়েছিলেন মেয়েকে উচ্চশিক্ষিত করতে। কিন্তু মায়ের অনিচ্ছাতেই অঙ্কে অনার্স নিয়ে বি.এস.সি. পাশ করার পর আর লেখাপড়া করতে পারেননি মীনাক্ষী। বিয়ে হয়ে গিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকারী আপিসে কর্মরত সুউপায়ী পাত্রের সঙ্গে। তারপর থেকে সেই এক গড়পড়তা বাঙালি মেয়ের জীবন। অথচ মীনাক্ষী একটু অন্যরকম জীবন চেয়েছিলেন নিজের জন্য। যেমন পাশের বাড়ির কণিকা কাকিমার মত প্রতিদিন ভোরবেলায় তানপুরা বাজিয়ে গান গাইবেন কিংবা কোনো বর্ষণমুখর সন্ধ্যায় আপন মনে নেচে উঠবেন ময়ূরীর মত।কিন্তু না, তেমন কিছুই ঘটে নি তার জীবনে।শুধু কিভাবে যেন ব্যাঙ্কের চাকরিটা তার নিরুত্তাপ জীবনে খোলা আকাশ হয়ে এসেছিল! কতদিন ভোরবেলা উঠে,সংসারের বাসি কাজ সেরে, বিধবা শাশুড়ির নিরামিষ, বাকি সকলের জন্য দুটো একটা আমিষ পদ রান্না করে, ছেলে, মেয়ে, বরের টিফিন গুছিয়ে, নিজে শুধু চায়ের কাপে চুমুক দিয়েই কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে বেরিয়ে গেছেন। ঠিকে কাজের দিদি কতদিন পেছন থেকে চেঁচিয়েছে, “বৌদিদি এমন করলে শরীর টিকবে নি কিন্তু, বলে দিলুম” তবু একান্ত নিজের জন্য একটুখানি সময় মীনাক্ষী বের করতে পারেননি। এমনি করেই একরকম কেটেই গেল অনেকগুলো দিন। শাশুড়ি মারা গেলেন। ছেলে- মেয়েরা স্কুল ছেড়ে কলেজে পা দিল।ছেলে হোটেল ম্যানেজমেন্ট পড়তে চলে গেল ব্যাঙ্গালোর।মীনাক্ষীর শরীরে তখন মধ্য চল্লিশের আঁচ। যৌবন যাই যাই করছে। ঠিক এই সময় থেকেই কবে যেন, কেমন করে, একটু একটু করে বদলে গেলেন মীনাক্ষী। সেদিন অফিসে লাঞ্চ ব্রেকএ পাঁচ টাকার একটা ছোট্ট বিস্কুটের প্যাকেট নিয়ে ক্যান্টিনে বসে চা খাচ্ছিলেন। পাশে কে কখন এসে দাঁড়িয়েছে খেয়াল করেননি।
“দুপুরটা কি শুধু এই চা বিস্কুটের ওপর দিয়েই যায়, না কি?
পুরুষালি জলদগম্ভীর, অথচ কি মায়ামাখানো কন্ঠস্বর! একটু ঘাবড়ে গিয়ে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখতে পেলেন একজন অচেনা মানুষ। বয়স পঞ্চাশের ধারে কাছে হবে। বেশ লম্বা, সুঠাম শরীর, কোঁকড়ানো চুল ব্যাকব্রাশ করা। “ভদ্রলোককে তো চিনি বলে মনে হচ্ছেনা”—মনে মনে ভাবতে ভাবতে চেয়ার ছেড়ে উঠে পড়তে যাবেন মীনাক্ষী এমন সময় খপ্ করে মীনাক্ষীর হাতটা ধরে ফেললেন আগন্তুক। “আরে ভয় পাবেননা, বসুন, বসুন। আমি অনিকেত, অনিকেত সেন।গতকালই আপনাদের ব্র্যাঞ্চে সার্ভিস ম্যানেজার হয়ে এসেছি”
ঘটনার আকস্মিকতায় মীনাক্ষীদেবীর ফর্সা মুখ যুগপৎ লজ্জায় ও রাগে লাল হয়ে উঠল। তিনি মৃদুস্বরে অভিযোগ করলেন, “অদ্ভুত মানুষ তো আপনি! চেনেননা, জানেননা,একজন মহিলার হাত ধরে ফেললেন!”
অনিকেত একটুও বিচলিত না হয়ে বললেন,”কে বলল চিনি না? এই তো চিনে নিলাম।আপনি আমার কলিগ।আর আপনি না খেয়ে উঠে যাচ্ছিলেন, সেটা আমার পছন্দ নয়, তাই আমি জোর করে আপনার হাত ধরে আটকেছি। এর জন্য যদি সরি বলতে বলেন তো আয়্যাম সরি। মুখ লজ্জায় লাল হয়ে গিয়েছিল মীনাক্ষীর। বেশ কিছুক্ষণ নিজের চেয়ারে বসে নিজের পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই বুকের ধড়ফড়ানির আওয়াজ নিজের কানে শুনেছিলেন।এটা কি নিছক ঠাট্টা তামাশা! না কি তার শান্ত নিথর হৃদয়ের জলে ঢিল মেরে কেউ নাড়িয়ে দিল আজ! আসলে সূচিপত্রে বাঁধা জীবনে রোজ ঘুম থেকে ওঠা, রান্না করা, সারাদিন অফিসে পরিশ্রম আর রাতে ক্লান্ত শ্রান্ত শরীরটা নিয়ে আর একটা অশান্ত মানুষের শরীরের চাহিদা মিটিয়ে ঘুমোতে যাওয়া করতে করতে মীনাক্ষী যেন নিজের বুকের ভেতরে মনটাকেই হারিয়ে ফেলেছিলেন। শেষ কবে তার স্বামী তার দিকে ভাল করে তাকিয়েছেন মনে নেই। তায় আবার সে কি খেল না খেল নজর রাখা! দূর কল্পনাতেও এরকম কিছু কোনোদিন কল্পনা করেননা মীনাক্ষী দেবী ।
সেই শুরু—। মীনাক্ষী মজুমদারের মাপা -জোপা, এক গতে বাঁধা জীবনে দখিন হাওয়ার আসা যাওয়া। কিছুই নয়, আবার অনেক কিছু।
শুরু হল রোজ টিফিন নিয়ে আসা।প্রথম প্রথম কম কম।সাধারণ কিছু। গাওয়া ঘি দিয়ে ঝুরঝুরে সুজি, গাজরের হালুয়া কিংবা ডিমের পোচ।তারপর সম্পর্কের সাথে তাল মিলিয়ে বাড়ল টিফিনও। কখনো সেনবাবুর পছন্দের পালং পরোটা, পনির, আবার কখনো ঝুরি আলুভাজার সঙ্গে ভাত আর কষা কষা মুরগীর মাংস। একটু একটু করে, দিন,সপ্তাহ, মাস বছরের বেড়া ডিঙিয়ে দুজন যেন দুজনের কাছের মানুষ হয়ে উঠলেন, হয়ে উঠলেন একে অপরের সমব্যথী। প্রেমের গান গেয়ে গেয়ে গঙ্গার ঘাটে বা পার্কে ঘুরলেন না তারা। ভ্যালেন্টাইন্স ডে, রোজ ডে, কিস ডে পালন করলেন না ঘটা করে, তবু কি করে যেন মীনাক্ষীদেবী জেনে গেলেন সেনবাবুর কাশির ধাত।পাড়ার দোকান থেকে দুলালের তাল মিছরি কিনে এনে ব্যাগে ঢুকিয়ে দিলেন লুকিয়ে। ছোট্ট চিরকুটে লিখে দিলেন কখন কিভাবে খেতে হবে।কথায় কথায় সেনবাবু জেনে গেলেন মীনাক্ষীদেবীর পায়ে ব্যথা। ডাক্তার বন্ধুর পরামর্শ মত একটা দামী অয়েনমেন্ট কিনে আনলেন একদিন। বুঝিয়ে দিলেন,কিভাবে লাগাতে হবে। একজন কোনো একদিন অফিসে না এলে সকলের অগোচরে অন্যজন ফোন করে জেনে নেন, “কালকে আসছ তো?”
সেনবাবুর জন্মদিনে মীনাক্ষীদেবী উপহার দিলেন কাঁথাস্টিচের আকাশি-নীল পাঞ্জাবি।
মীনাক্ষীদেবীর জন্মদিনে সারা দুপুর কলেজ স্ট্রিট ঘুরে সেনবাবু সংগ্রহ করে আনলেন মীনাক্ষীর প্রিয় গীতবিতান।
আর সবচেয়ে বড় কথা, দুপুরে একসাথে খাওয়াটা কেমন যেন সূচিপত্রে আলাদা করে যোগ হয়ে অভ্যাসে পরিণত হল।একটা দুটো করে বছর গড়াতে গড়াতে কোথা দিয়ে যেন জলের মত আট- আটটা বছর কেটে গেল—–
আজ টিফিন কৌটোর ঢাকনা খুলে, দুটো ছোট ছোট ফাইবারের সাদা প্লেটে রুটি, তরকারি আর শশার টুকরোগুলো সাজাতে গিয়ে মীনাক্ষীদেবীর মনে পড়ে গেল, নাহ্ আজ থেকে তো আর দুটো প্লেটের দরকার নেই! সেনবাবু তো কালই রিটায়ার করে চলে গেছেন।আজকে থেকে তো আর আসবেননা। খেতে ইচ্ছে হলোনা মীনাক্ষীর। চোখের কোণে একটুখানি জল এলো কি!
রুটি তরকারি আবার টিফিনবক্সে তুলে রেখে চেয়ার ছেড়ে উঠে পড়ছেন, এমন সময় বেয়ারা রামরতন এল মীনাক্ষীদেবীর কাছে।হাতে দুটো প্যাকেট।
“কি ব্যাপার রামরতন?
মেমসাব, সেনসাব গতকাল বলে গেছেন এগুলো আপনাকে আজ দিতে”
“আচ্ছা রাখো”
রামরতন টেবিলের ওপর প্যাকেটদুটো রেখে চলে গেল।
হতভম্বের মত হাতে প্যাকেটগুলো নিলেন মীনাক্ষী। একটা প্যাকেট খুলতেই একমুঠো গোলাপের পাপড়ি ছড়িয়ে পড়ল একটা নতুন নীলরঙা পিওরসিল্কের ওপর।এবার অন্য প্যাকেটের মুখটা ছিঁড়েলেন। একটা চিঠি, আর তার সঙ্গে সেই ব্যথানাশক মলম।
ধীরে ধীরে চিঠিটা খুলে পড়তে শুরু করলেন মীনাক্ষীদেবী…
“মীনাক্ষী, অত্যন্ত প্রিয় যে মানুষটা, তাকে আর প্রিয় সম্বোধন করতে হয়না। তাই ‘প্রিয়’ শব্দটা লিখলামনা। আচ্ছা, সেই একেবারে প্রথম দিনে তোমার হাত ধরেছিলাম, মনে আছে তোমার? জানি, তুমি ভোলনি। আমিই বা ভুলেছি কোথায়! এই এতগুলো বছরে, দিন সপ্তাহ মাসের খেলায় কখন যে বিদায় বেলা এসে পড়বে, ভ্রুক্ষেপই করিনি অথবা বলতে পারো বুঝেও না বোঝার ভান করে গেছি। আমার স্ত্রী বা তোমার স্বামী কেউ হয়তো খারাপ মানুষ নয়। এমনকি কোনোদিন বড় কিছু ভুল বোঝাবুঝিও হয়নি দুজনের ব্যাক্তিগত জীবনে,তবু এসব কিছুর বাইরে,কবে কখন যেন তোমার – আমার সম্পর্কটা একটা মধুর সুরে বেজে উঠল। তুমি কিভাবে যেন জেনে গেলে,আমি কবিতা পড়তে ভালবাসি। লুচি আর সাদা আলুর তরকারি আমার খুব প্রিয়। একমুঠো জুঁইফুল আর কচি সবুজরঙা আদ্দির পাঞ্জাবি তোমার কাছ থেকে পেয়ে আমি সারা রাত ছাদে পায়চারি করে কাটিয়ে দিয়েছিলাম।এমনটা কেন হলো বলো তো? আসলে বাধ্য স্বামী আর বাধ্য স্ত্রী হয়ে থাকতে থাকতে কোনো একসময় জীবনটা বোধহয় হাঁপিয়ে ওঠে। ধরা-বাঁধা জীবনের সীমানা পেরিয়ে এক টুকরো খোলা আকাশের জন্য মনটা আনচান করে। একমুঠো সবুজ ঘাস খোঁজে। সেই যে তোমার পাশে বসে খাবার খেতে খেতে হঠাৎ বিষম লেগে গেলে তুমি উদ্বিগ্ন হয়ে জলের বোতলটা বাড়িয়ে দিতে! কতবার সাধ হয়েছে যদি বুকে একবার হাতটা বুলিয়ে দাও!
মীনাক্ষী, বিদায় বেলায় এই সামান্য উপহারগুলো আমি নিজেই তোমাকে দিতে পারতাম, তবু দিলামনা। কারন নিজের ওপর এই প্রথমবার আমি বিশ্বাস রাখতে পারিনি। বারবার মনে হয়েছে হয়তো আমি বেশি ইমোশনাল হয়ে পড়ব। হয়তো চোখের কোনে চকচক করে উঠবে জল, তাই—
আর বোধহয় কোনোদিন দেখা হবেনা। চলে যাচ্ছি অনেক দূরে, ছেলের কর্মস্থলে। সেখানেই শেষ কটাদিন কাটিয়ে দেব বুড়োবুড়ি।
ভাল থেকো । হাঁটুর ব্যথাটা বেশি বাড়লে নিয়ম করে মলমটা লাগিও।
–তোমার সেনবাবু
মীনাক্ষীদেবী খুব সাবধানে প্রতিটা জিনিস একটা প্যাকেটে রাখলেন। আর একটা প্যাকেটে চিঠিটা আর গোলাপের পাপড়িগুলো গুছিয়ে রাখলেন। তারপর অফিসে নিজের আলমারিতে সব যত্ন করে রেখে চাবি দিলেন। চাবিটা পার্সে ভরে বেরিয়ে এলেন রাস্তায়।একটা গভীর দীর্ঘশ্বাস উঠে এল বুকের ভেতর থেকে।
Tags: গল্প, বিলম্বিত ফাগুন
email:galpersamay@gmail.com
মতামত
আপনার মন্তব্য লিখুন
আপনার ইমেল গোপনীয় থাকবে।