24 Oct

রেন রেন কাম এগেন

লিখেছেন:ত্রিদিবেশ বন্দ্যোপাধ্যায়


বাড়ি ফিরে এসে মনোরমা একটু চুপচাপই হয়ে গেল।  সিনেমা দেখার পর ওরা সাধারণত আলোচনা করে। দুজনেই অল্পবিস্তর সিনেমা বোঝে। সিনেমাকে ওরা বই বলে না,  বিশ্লেষণ করতে পারে, পন্ডিতদের মত নয় নিজেদের মত করেই। মেয়েদের আবেগ একটু বেশি হয়, মনোরমার ও তাই। কিন্তু অপরেশ একটু কাটাছেঁড়া করতে ভালবাসে। তাই মাঝে মাঝে তর্ক বিতর্কও হয়ে যায়। তা হোক, ওরা বিষয়টা উপভোগ করে। ওদের ছেলেমেয়েরা যে যার কর্মস্থলে, ওরা দুজনে নিজেদের মত করে সময় কাটান।

আজ কিন্তু সিনেমা নিয়ে আলোচনা করতে ইচ্ছে করলো না। কেমন যেন একটা ভয় এসে বাসা বেঁধেছে মনোরমার মনে। কিছুদিন ধরেই বুঝতে পারছেন ওনার স্মৃতি ঠিক সহযোগিতা করছেনা। প্রথম প্রথম ভাবতেন মানুষ তো এটা ওটা ভুলে যেতেই পারে। তা নিয়ে অত চিন্তা কীসের। কিন্তু ইদানিং বুঝতে পারছেন ব্যাপারটা আর ‘ও কিছু নয়’ নয়। পরিচিত মানুষদের নাম ভুলে যাচ্ছেন, ওষুধ খেতে ভুলে যাচ্ছেন, ওষুধ খেয়েছেন কি না ভুলে গিয়ে আবার খেয়ে ফেলছেন। আজ সিনেমাটা দেখার পর থেকে সেই ভয়টা আতঙ্কে পরিণত হল।

-কী হল, কেমন লাগলো ছবিটা বললে নাতো? এরকম তো তুমি কর না। ভালো লাগেনি? 

-না না ভালোই তো হয়েছে। 

– কাল রাতে বললে ক্লান্ত লাগছে। আজও সারাদিন কেটে গেল কাজে কর্মে। সন্ধ্যেবেলা চায়ের টেবিলেও কোনও কথা বলছনা। জিজ্ঞেস করতে এক কথায় উত্তর দিচ্ছ ‘ভালোই তো হয়েছে’। এমন তো তুমি কর না। শরীর ঠিক আছে তো?

– হ্যাঁ শরীর ঠিক আছে। আচ্ছা আমি অসুস্থ হলে তুমি আমাকে…

– অসুস্থ হলে মানে? তুমি অসুস্থ হলে আমি দেখব, আমি অসুস্থ হলে তুমি দেখবে। এতে এত চিন্তার কি আছে?

– না সাধারণ অসুস্থ হওয়ার কথা নয়। ওইরকম স্মৃতি চলে যাওয়া। স্বামী, ছেলেমেয়েকেও চিনতে না পারা। আমার যদি অমন হয়? আমার কিন্তু ডিমেনশিয়া শুরু হয়ে গেছে। এখান থেকেই তো অ্যালজাইমারস হয়। 

-আরে তুমি তো দেখছি একটা সিনেমা দেখে ডাক্তার হয়ে গেলে।

– আজকাল রীতিমত রিসার্চ করেই ছবি তৈরি করা হয়। ছবিতে ডাক্তার রোগ সম্পর্কে যা বলেছে সেটা ভুল হবার কথা নয়। 

– ঠিক আছে এখন ওসব থাক। যখন রোগ হবে তখন দেখা ্যাবে। আজকের জন্যে এখন বাঁচো।

– তাই তো বাঁচি। কিন্তু কিন্তু সিনেমাটা দেখার পর ব্যাপারটা মন থেকে সরাতে পারছি না। তোমাকে যদি চিনতে না পারি কোনদিন? 

– আচ্ছা আমি যদি আজ তোমাকে কথা দিই তুমি অ্যালজাইমারে আক্রান্ত হলেও আমি তোমাকে দেখব সেকথার কি কোনও মূল্য আছে? তুমি তো তখন বলতে পারবে না ‘তুমি আমাকে কথা দিয়েছিলে……’। কারণ তখন তো তোমার কিছুই মনে থাকোবে না। আসল কথাটা হল পরিস্থিতিতে না পড়লে কেউ বলতে পারে না সে কী করবে। তুমি আমার দাদার কথা ভাব। দাদা যে এইভাবে বৌদির যত্ন করতে পারবে কেউ ভাবতে পেরেছিল আগে?

মনোরমা ভাসুরের কথা ভাবেন। তিনি সংসারের কাজে কোনও দিনই পটু ছিলেন না, বাইরের কাজ নিয়েই থাকতেন। আর দিদি রান্নাবান্না, লোকলৌকিকতা, অতিথি আপ্যায়ন, মানে সংসারের সব কিছু সামলেছেন সারা জীবন। শেষকালে দিদি অসুস্থ হয়ে পড়লেন, শেষ দুবছর বিছানায়। ধরাধরি করেও বাথরুমে নিয়ে যাওয়া যেতোনা শেষের দিকে। কাজের লোক ছিল, তবু অনেক কাজই করতে হতো ভাসুরকে। কখনো তার মুখে বিরক্তি ছিল না, কোন কাজই দায়সারা ভাবে করতেন না। মনোরমা ভাবেন কম বয়সের ভাসুরকে দেখে ভাবা যেতোনা উনি এই ভাবে স্ত্রীর দেখাশুনা করতে পারবেন কখনও।

এক বন্ধুর দিদির কথাও মনে পড়ে যায় মনে পড়ে যায়। সিনেমার চরিত্রের মতো তিনি সব ভুলে গেছেন, জামাইবাবুকেও চিনতে পারেননা। জামাইবাবু স্কুল শিক্ষক ছিলেন, এমএলএ ও ছিলেন। তিনি এখন সব সামলান। দিদির চুল আঁচড়ে দেন, জামাকাপড় পরতে সাহায্য করেন। কম বয়সের জামাই বাবু মিটিং, মিছিল, বিধানসভা- সবসময় বাইরের কাজে ব্যাস্ত থাকতেন। সেদিনকার জামাইবাবুকে দেখে বোঝাই যেতোনা প্রয়োজন হলে তিনি এই ভাবে সব সময় বাড়িতে থেকে স্ত্রীর সেবা করতে পারবেন। একদিন মায়ের অবুঝ কাজে বিরক্ত হয়ে মেয়ে মাকে বকেছিল। জামাইবাবু মেয়েকে বলেছিলেন, ‘আমি বেঁচে থাকতে এরকম যেন আর না শুনি’।

-কী গো, কিছু বললে না যে? আমার কথা মানলে না মানলে না?

– মানলাম। পরিস্থিতিতে না পড়লে…

-হ্যাঁ। ওসব দুশ্চিন্তা ছাড়। চল খাওয়া দাওয়া করে শুয়ে পড়ি।

##

কী হলো, তুমি এরকম মনমড়া হয়ে আছ কেন বলোতো? কী হলো টা কী?

-না কিছুনা। এই সিনেমাটা দেখে থেকে কেমন যেন একটা ভয়………

-এতো মহা মুশকিল হলো দেখছি। একটা সিনেমা দেখে…। যদি তুমি অসুস্থ হও, যদি তোমার স্মৃতি লোপ পায়, যদি আমি তোমাকে দেখাশোনা না করি…। এতগুলো ‘যদি’ কে সত্যি ধরে নিয়ে তুমি আজকের জীবনটা নষ্ট করে ফেলবে? এমন জানলে কে যেতো সিনেমাটা দেখতে !

-না না ঐ দুশ্চিন্তাটা আমি মন থেকে সরিয়ে দিয়েছি। তুমি আমাকে দেখবে আমি জানি। অন্য আরেকটা ভয়…

– সে আবার কী? বল শুনি কী এমন ভয় আর এই ছবিটার সঙ্গে তার কী সম্পর্ক ।
– আচ্ছা আমি যদি আমার কম বয়সের কথা সব বলে ফেলি- কোনও রাখ ঢাক না করে………

– এই কথা ? তা কী এমন গোপন কথা আছে তোমার কম বয়সের ? অপরাধই বা তুমি কী করেছ?

– না অপরাধ নয়। আমি যদি সিনেমার মতো ছোটবেলার বন্ধুর কথা বলে ফেলি? বড়জামাই কীরকম হাসাহাসি করছিলো? আমাকে নিয়েও তো ঐরকম………

– তোমারও ঐরকম একজন  ছিল নাকি?

– হ্যাঁ ছিল একজন। ছোটবেলার বন্ধু। কিন্তু সবাই তো আমাকে নিয়ে ……… আমি তো তখন বানিয়ে বানিয়ে রেখে ঢেকে বলতে পারব না। তখন তো তোমার সম্মান থাকবে না। আমকেও তুমি কী না কী ভাববে।

-কিছু ভাবব না। তুমি বরং এখন বলে দাও। আমি মজা করে শুনি। 

-মজা করে শুনবে? তোমার কিছু মনে হবে না? 

-কী আবার মনে হবে? আমি পঞ্চাশ বছর আগের একটা গল্প শুনব। একটা সিনেমা দেখব।  দুটো অল্পবয়সী ছেলেমেয়ের মিস্টি প্রেমের সিনেমা।।

-তাই?

-হ্যাঁ তাই। তুমি গল্প বল দুটো ছেলেমেয়ের,অতীত কালের গল্প। তারা আজ তোমার থেকে শত যোজন দূরে। তাদের সঙ্গে তোমার কোনই সম্পর্ক নেই।  আমি তোমাকে ধরিয়ে দিচ্ছি। মেয়েটার নাম ছিল রমা। তারা তখন ধানবাদ জেলায় একটা ছোট্ট টাউনশিপে থাকতো। দামোদরের বুকে  বাঁধ, তারই কোলে ছবির মত কিছু কোয়ার্টার। দূরে পঞ্চকূট পাহাড়। কর্মীরা নিজেদের কাজের বাইরে ক্লাব, নাটক, গানবাজনা, খেলাধূলা এসব নিয়েই মেতে থাকতো। কাছাকাছি শহর আসানসোল, বরাকরে যাওয়া ভীষণ ঝকমারি ছিল। খুব প্রয়োজন না হলে কেউ সেদিকে হাঁটত না। ওরা স্কুল বাসে আসানসোল বরাকরে পড়তে যেতো। ওখানকার স্কুলের একজন শিক্ষক কমল স্যার ভাল গান গাইতেন, শেখাতেনও। গানবাজনা ছিল তাঁর নেশা, আনন্দের খোরাক। মেয়েরা দলে দলে গান শিখতে যেতো তাঁর কাছে। কয়েকটি ছেলেও ছিল। রমা ছিল তার প্রিয় ছাত্রী। এবার তুমি বল। আমি তোমাকে ভূমিকা টা করে দিলাম। এই পর্যন্ত তোমার মুখে শুনে শুনে আমার মুখস্ত হয়ে আছে। বল রমা আর আর বন্ধুর গল্প। নাও শুরু কর।

– চুপ করে আছো কেন? তুমি বরং থার্ড পারসনে বল, নইলে লজ্জা পাবে।  অর্ধসত্য হয়ে যাবে।

-শুরু করি? 

-হ্যাঁ কর। দাঁড়াও আলোটা একটু ছোট কোরে দিই। শুরু কর, বেল পড়ে গেল।

কিছুক্ষণ চুপ করে বসে থেকে মনোরমা শুরু করে।

-রমা তখন কলেজে পড়ে। রবীন্দ্রজয়ন্তী এসে গেছে। রোজ বিকেলে কমলকাকুর কোয়ার্টারে রিহার্সাল। নাচ, গান আবৃত্তি হবে। শেষে হবে একটা গীতিআলেখ্য। ছোট মেয়েরা একে একে গান করছে, কোরাস গান ওঠাচ্ছে। রমা হারমোনিয়ামে, কাকু তবলায়। ছোটদের রিহার্সাল হয়ে গেলে বড়দের শুরু হবে। রিহার্সাল চলছে, এমন সময়ে ঘরে ঢুকল এক যুবক। পাজামা-পাঞ্জাবী,ঝাঁকরা চুল, গালে হালকা দাড়ি। টানা টানা বড় বড় চোখ। 

‘কমলদা এসে গেছি’ বলতে বলতে ঘরে ঢুকলো।

  “ আরে এসো এসো সন্দীপ। এই তোমার জায়গা। আমি এতদিন ঠেকা দিয়ে চালিয়েছি। ফাংশানের দিন অবশ্য একজন ভালো তবলিয়া আসেন। কিন্তু রিহার্সালে খুব অসুবিধে। কমলদা উঠে গিয়ে তবলার সামনে জায়গা করে দিয়ে সকলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলেন, “এই কাকু নতুন এখানে এসেছেন, এখানকার ব্যাঙ্কে। উনি আমাদের সঙ্গে তবলা বাজাবেন”। ওখানে একটা প্রথা ছিল, কলোনির ছেলে মেয়েরা অফিস কর্মীদের কাকু বলতো। বালক বালিকারা মৃদু হেসে অভ্যর্থনা জানাল। সন্দীপের দৃষ্টি এড়ায়না, দলছুট এক অবালিকা গানের খাতা মুখে চাপা দিয়ে হাসি লুকোতে চেষ্টা করে। যদিও সে সফল হয়না কারণ তার উজ্জ্বল চোখ দুটো নিয়ন্ত্রন মানেনা। সন্দীপ তবলায় আঙুল ছুঁতেই সবাই টান টান হয়ে বসল।

 কয়েকদিন রিহার্সালের পর রবীন্দ্রজয়ন্তী এসে গেল। প্রথম দিনের সেই আচরনের কারণ স্পষ্ট হল সন্দীপের কাছে ফাংশানের দিন। রমা গানের খাতা মুখে চাপা দিয়ে হাসি হাসি চোখে প্রশ্ন করে, “আমাকেও কি ‘কাকু’ বলতে হবে?” সন্দীপ চাপা স্বরে বলেছিল “আমি তাহলে সাড়াই দেবোনা”। সেই ছিল শুরু। 

এর পরের কাহিনীর সঙ্গে যে কোনও প্রেমের গল্পের বিশেষ পার্থক্য নেই। ঝর্ণার মত উচ্ছল কলেজে পড়া এক তরুণী আর সদ্য চাকরি পাওয়া যুবকের এলোমেলো প্রেমের কাহিনী। বিচ্ছিন্ন ঐ লোকালয়ে গান বাজনা, রিহার্সাল, জলসা, নাটক এসবই ছিল মানুষের বিনোদন। আর ঐ অনুষ্ঠানে এদের দুজনেরই অংশগ্রহণ একদম স্বাভাবিক ছিল। রমাকে ছল করে জল আনতে যেতে হতনা।

মনোরমা এই পর্যন্ত বলে থেমে গেল। মুখতুলে অপরেশের দিকে চাইল, পড়তে চেষ্টা করল ওর মুখের রেখা। অপরেশ বলল ‘তারপর?’ 

-তারপর কিছু নেই।

– কিছু নেই মানে ? কিছু তো নিশ্চয়ই আছে শেষে। 

– রমার বাবা বদলি হয়ে চলে গেল অন্য জায়গায়।  ‘কাপুরুষ’ সিনেমাটা মনে আছে তো?  ধরে নাও শেষটা ঐ রকমই।

অপরেশ বলে, “এই জন্যে তুমি এতো চিন্তা করছিলে? এতো খুব সাধারণ ঘটনা। এতো সবার জীবনেই ঘটে। কিন্তু যাই বল সিনেমাটা ইনকমপ্লিট, জমল না। কাহিনীতে একটা ‘পিক’ থাকবে না? মানে সারা জীবন মনে রাখার মতো ঘটনা! ‘এর পরের কাহিনীর সঙ্গে যে কোনও প্রেমের গল্পের বিশেষ পার্থক্য নেই’ বলে তুমি এড়িয়ে গেলে। নাও শুরু কর। ইন্টারভ্যাল শেষ।

মনোরমা দ্বিধা ঝেড়ে শুরু করে। 

সেবার নববর্ষ উদযাপন হবে বড় করে। রিহার্সাল চলছে জোরদার, ক্লাব অডিটোরিয়ামে। চৈত্রমাস, অসহ্য গরম। গরম থেকে বাঁচতে অডিটোরিয়ামের সব দরজা খোলা। নাচ গান হয়ে যাবার পর স্টেজে নাটকের রিহার্সাল চলছে। রমা অন্য সকলের সঙ্গে নিচে বসে দেখছে। হঠাৎ শুরু হল কালবৈশাখী। তুমুল ঝড়, ধূলোয় ভরে গেল চারদিক। ঝড় উঠলে আলো নিভে যাওয়াটা খুব স্বাভাবিক ছিল ওখানে। তাই হল,তারপর ঝড় কমে এল আর শুরু হল বৃষ্টি। বছরের প্রথম কালবৈশাখী, বছরের প্রথম বৃষ্টি। প্রবল গরম থেকে মুক্তি। খোলা দরজার কাছে ভীড় করে সকলে বৃষ্টি দেখছে, হাওয়ার সঙ্গে ভেসে আসা বৃষ্টিকণা ওদের চোখে মুখে এসে পড়ছে। ওরা উপভোগ করছে বছরের প্রথম বৃষ্টি। একটা সময় মনে হল এবার বাড়ি যেতে হবে কিন্তু বৃষ্টি ধরার লক্ষণ নেই। মাঝে মাঝে বিদ্যূৎ চমকাচ্ছে, সেই আলোয় ওরা নিজেদের দেখছে। কারো কারোর বাবা মা ছাতা নিয়ে এসে নিজেদের মেয়েদের নিয়ে যাচ্ছে। একসময় বিদ্যুতের আলোয় রমা দেখল একটা দরজায় সন্দীপ একা। রমা গিয়ে দাঁড়াল তার পাশে। বিদ্যুতের আলোয় ওরা খুব কাছ থেকে দুজনে দুজনকে দেখল। সন্দীপ বলল ‘চল ভিজি’। 

আমি কিছু ভাববার আগেই আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে গেল খোলা আকাশের তলায়। প্রচন্ড গরমের পর বছরের প্রথম বৃষ্টিতে ভেজা সন্দীপের হাত ধরে। আমরা এগিয়ে চললাম বাড়ির দিকে। রাস্তার দুধারে কোয়ার্টার,আমরা এগিয়ে চলেছি। মাঝে এক টুকরো মাঠ। সন্দীপ আমার দুহাত ধরে ছোট ছেলেমেদের  মত ঘুরতে লাগলো, ঘুরতে ঘুরতে বলল ‘রেন রেন কাম এগেন’। আমরা দুজনে ঘুরছিলাম আকাশের দিকে তাকিয়ে, আমাদের চোখে মুখে বৃষ্টি পড়ছিল, আমরা বলছিলাম ‘রেন রেন কাম এগেন’।  

এখনও গ্রীষ্মকালে প্রথম বৃষ্টি এলে আমার মনে আসে ওই লাইন দুটো। ‘রেন রেন কাম এগেন’।

গুড। চমৎকার বলেছ। সম্পূর্ণ হয়েছে গল্পটা। এটা একটা চমৎকার শর্ট ফিল্ম হবে। প্রথম দৃশ্য একজন বয়স্ক মহিলা জানলায় বসে বসে বৃষ্টি দেখছে, অঝোর ধারায় বৃষ্টি হচ্ছে। তারপর ফ্ল্যাশ ব্যাকে তোমার গল্প ‘রেন রেন কাম এগেন’। শেষ দৃশ্যে মহিলা তার স্বামীকে বলবে ‘চল না একটু বৃষ্টিতে ভিজি’। ওরা দুজন ছাদে গিয়ে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে বলবে ‘রেন রেন কাম এগেন’।

-ইস তুমি সিনেমা পরিচালক হলে না কেন? 

– সে আর ভেবে কী হবে এখন? তার চেয়ে বরং আমরা ফিল্ম ক্রিটিক হতে চেষ্টা করি। ওই সিনেমাটার আলোচনাটা বাকি আছে। আজ করে ফেলতে হবে। 

Tags: , ,

 

 

 




  • খোঁজ করুন




  • আমাদের ফেসবুক পেজ

  • অনিমেষ বন্দ্যোপাধ্যায় on October 27, 2022

    চমৎকার গল্প। ফর্মটা বেশ ব্যতিক্রমী। বেলাশুরু দেখে এসে এইধরণের ভয় খুব স্বাভাবিক।

    মতামত

    আপনার মন্তব্য লিখুন

    আপনার ইমেল গোপনীয় থাকবে।




    Notify me when new comments are added.

    যোগাযোগ


    email:galpersamay@gmail.com

    Your message has been sent. Thank you!

    গল্পের সময় পরিবার
    সমীর
    অগ্নীশ্বর
    দেবাশিস
    চিন্ময়
    পার্থ
    মিতালি
    জাগরণ
    দেবব্রত

    © 2016 - 2024 গল্পের সময়। ডিজাইন করেছেন অগ্নীশ্বর। নামাঙ্কন করেছেন পার্থ