08 Aug

ক্যামিলা হাউস

লিখেছেন:নীতীশ রঞ্জন দাস


৬ই অক্টোবর, ২০২২ সাল। দিনটা ছিল দূর্গাপূজার একাদশী তিথি। আমরা চারজন বেরিয়ে পড়লাম ডুয়ার্সের জঙ্গল ও পার্বত্য এলাকায় কয়েকদিনের ভ্রমণের উদ্দেশ্যে।প্রথমে ডুয়ার্সের সমতলে দু-চারদিন কাটিয়ে ১১ই অক্টোবর যে স্থানে পৌঁছালাম তার প্রকৃত নাম করা যাবে না। ধরে নিন লামলিমডং, সেখানে যে পর্যটন নিবাস আমরা দু’দিনের জন্য রিজার্ভ করেছিলাম তার নামটাও ধরে নিন ক্যামিলা হাউস।

এই পর্যটন নিবাস এক অপূর্ব সুন্দর পরিবেশে। শহরের কোলাহল থেকে চার কিলোমিটার দূরে এক গ্রাম্য পরিবেশে। এটি একটি পাহাড়ের চূড়ায় যাকে ইংরাজিতে বলে হিলটপ। পর্যটন নিবাসের সামনে সবুজ ঘাসের বিস্তৃত লন, যেখানে চেয়ার টেবিল পাতা আছে। ইচ্ছা করলে সকাল বিকালের চা বা কফি খেতে খেতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য প্রাণ, মন ভরে এনজয় করা যায়। পিছনে আছে নানা পার্বত্য ফুল ও বাহারি পাতার গাছের বাগান। সব মিলিয়ে জায়গাটি প্রায় ১৬ একর। বাড়িটি দেখলেই বোঝা যায় বহুদিনের পুরাতন কোনো ঐতিহ্যপূর্ণ নিবাস যাকে আমরা সচরাচর বলে থাকি হেরিটেজ বিল্ডিং। নিবাসটি দ্বিতল, এই দ্বিতল নিবাসের চারধারের দেওয়াল পাথরের ইট দিয়ে তৈরি। দুদিকের দেওয়াল বেয়ে উঠে গেছে আমার নাম না জানা মাঝারি মাপের পাতার লতানে গাছ। দেখলে বোঝা যায় এই গাছটির বয়স অন্তত একশত বছর পার হয়ে গেছে। এই লতানে গাছের পাতাগুলো সম্পূর্ণ দেওয়ালকে ঢেকে রেখেছে। বাকি দুধারের দেওয়াল সবুজ শ্যাওলার আস্তরণে ঢাকা পড়ে আছে।

এই পর্যটন নিবাসের ১৬ একর জমির চারধারের খাদ থেকে উঠে এসেছে আশি, নব্বই ফুট লম্বা লম্বা পাইন গাছ। তারা যেন গোটা পর্যটন নিবাসকে দিনরাত দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পাহারা দিচ্ছে। বাড়িটির দ্বিতলে সর্ব্বমোট ছয়টি ঘর। এর মধ্যে একটি বেশ বড় মাপের, এটিই ছিল বাড়ির মালিকের মাস্টার বেডরুম। এইঘরেই বাড়ির মালিক তার স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন। বাড়িটি আনুমানিক প্রায় একশত বিশ বছরের পুরাতন। বাড়ীর দ্বিতলের ছাদ দোচালার মত দু’দিকে ঢাল, বোধহয় এখানে শীতকালে বরফ পড়ে। দ্বিতলের প্রতিটি ঘরে আগুনের জায়গা বা ফায়ারপ্লেস আছে। প্রতিটি ঘরের ফায়ারপ্লেস থেকে ছাদ ফুঁড়ে বেরিয়ে এসেছে চিমনী। প্রতিটি চিমনী পাথরের ইঁট দিয়ে তৈরি। সম্পূর্ণ বাড়ীটির কোন রং নেই, শুধু পাথর দিয়ে তৈরি বলে নিকষ কালো। বাড়ির একতলায় সামনের দিকে দেড়ফুট উঁচু পাথর দিয়ে তৈরি প্রাচীর। তার উপর অসংখ্য টব সাজান আছে। যাতে আছে পার্ব্বত্য অঞ্চলের নানা ফুলের গাছ। প্রবেশ পথে রয়েছে কয়েকটি প্রশস্ত পাথরের ইঁট দিয়ে তৈরি সিঁড়ি। সিঁড়ি দিয়ে উঠলেই লম্বা করিডর। করিডরের একধারে লাউঞ্জ। লাউনঞ্জটি বেশ বড় মাপের যা চেয়ার, সোফা ও টেবিল দিয়ে সজ্জিত। করিডরের একধারে সিঁড়ির ডানদিকে রিসেপশন। রিসেপশনের পিছনে ম্যানেজারের অফিস। করিডরের আর এক প্রান্তে, বাঁদিকে রান্নাঘর ও ডাইনিং। একতলায় কোন থাকার ঘর নেই। একতলা ও দ্বিতলের মেঝে ও ছাদ বা সিলিং, সম্পূর্ণ পাইন কাঠের তক্তা পরপর সাজিয়ে নিপুণভাবে তৈরি। তার উপরে আছে মেহগনী রংয়ের পালিশ। যা বাড়িটির সৌন্দর্য্যকে আরও বেশি করে ফুটিয়ে তুলেছে।

পরিবেশ সম্পূর্ণ নিস্তব্ধ। পর্যটন নিবাসের বাইরে বাঁদিকে গলফ কোর্স আর অনতিদূরে ডানদিকে আর একটি হেরিটেজ বিল্ডিং সারকিট হাউস। ক্যামিলা হাউস ও সারকিট হাউস সম্পূর্ণ ইউরোপের পার্বত্য অঞ্চলের বাড়ির ডিজাইনে তৈরি।

ক্যামিলা হাউসকে ঘিরে রয়েছে এক অদ্ভুত শান্ত পরিবেশ। মনে হবে ক্যামিলা হাউস যেন যুগ যুগ ধরে ঘুমিয়ে আছে। অপেক্ষা করছে কোন এক যাদুকরের জন্য যে তার ম্যাজিক দন্ড স্পর্শ করে ক্যামিলা হাউসকে জাগিয়ে তুলবে।

এই পর্যটন নিবাস দেখে আমার ভীষন ভাল লেগে যায়, তাই আমি চেষ্টা করি এর ইতিহাস জানার জন্য। আমার কৌতুহল নিরসনের জন্য ম্যানেজারের সঙ্গে আলোচনা করি। তার মুখ থেকে জানতে পারি, এই বাড়িটি তৈরি করেছিলেন ওয়াটসন সাহেব। ওয়াটসন সাহেব ছিলেন একজন আর্কিটেক্ট। ইংরেজ সরকার ওয়াটসন সাহেবকে এদেশে এনেছিলেন উত্তরবঙ্গের ডুয়ার্স ও পার্বত্য অঞ্চলে বৃটিশ সরকারের যেসব আধিকারিক এই অঞ্চলের প্রশাসন ও উন্নতির জন্য এখানে কাজ করে যাচ্ছেন তাঁদের বাংলো তৈরি করার জন্য। ওয়াটসন সাহেব নিজেও তার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা ব্যাবহার করে এই অপূর্ব মনোরম গৃহটি গড়ে তোলেন। এই নিবাসের ওয়াটসন নিজেই নাম দিয়েছিলেন ক্যামিলা হাউস। ওয়াটসন এদেশে যখন এসেছিলেন তখন তাঁর বয়স ৫০ কি ৫২ বছর হবে। ওয়াটসনের স্ত্রীর নাম ক্যামিলা। ওয়াটসন দম্পতি ছিলেন নিঃসন্তান। শোনা যায় এই দম্পতি অত্যন্ত সুখী ছিলেন এবং পরস্পরের মধ্যে এক অপূর্ব বনিবনা ছিল। একজন আরেক জনকে ছেড়ে থাকতেই পারতেন না। তাদের মধ্যে অসম্ভব ভালোবাসা ছিল। ওয়াটসন সাহেব একটু রোগা রোগা ছিলেন এবং উচ্চতা ছল সাড়ে ছয় ফুট, অপরপক্ষে ক্যামিলা মেমসাহেব একটু মোটাসোটা ও উচ্চতা পাঁচ ফুটের হয়তো একটু বেশী। তাই সাহেব তার স্ত্রীকে ভালোবেসে লিটল ক্যামিলা বলে সম্বোধন করতেন। এর বেশী আমি এই দম্পতি সম্পর্কে আর কিছু জানতে পারিনি।

১১ই অক্টোবর ২০২২, আমি, আমার স্ত্রী, আমার শ্যালিকা, আমার পুত্র চার জনে ডুয়ার্স ঘুরতে ঘুরতে এখানে এসে পৌঁছই। ১১ই অক্টোবর , মঙ্গলবার বেলা ১১টা নাগাদ নিজেদের গাড়ি করে এই পর্যটন বাংলোয় উপস্থিত হই। দুপুরে লাঞ্চ করে একটু শহরে ঘোরার জন্য বেরিয়ে পড়ি। সন্ধ্যায় খোলা বারান্দায় বসে নিজেদের মধ্যে কফি আর ভেজ পকোড়া নিয়ে গল্পে মত্ত হয়ে উঠি। ঠিক সেই সময় আমার শ্যালিকা বলে উঠে যে সে আমাদের সঙ্গে আসবার আগে তার এক বন্ধুর বাড়ি যায়, নিমন্ত্রণ রক্ষার জন্য। সেখানে তার বন্ধু যখন জানতে পারে আমরা ক্যামিলা হাউসে থাকবো তখন সে আমার শ্যালিকাকে বলে – তোরা ওখানে যাচ্ছিস, ওটা তো একটা হন্টেড হাউস বা ভুতের বাড়ি।

যাক, রাত্রি তখন দুটো বাজে আমার ঘুম ভেঙে গেল, মনে হল কে যেন দ্বিতলের করিডরে ভারী বুট পরে হাঁটা হাঁটি করছে আর আমাদের ঘরের কলিংবেল বাজাল। তাড়াতাড়ি উঠে দরজা খুলতেই মনে হল একটা কোর্ট প্যান্ট পরা লম্বা লোক সিঁড়ি দিয়ে খুব দ্রুত পদে হেঁটে নেমে যাচ্ছে। আমিও বুটের আওয়াজ অনুসরণ করে সিঁড়ি দিয়ে নেমে এলাম, কিন্তু কিছুই দেখতে পেলাম না।

রপরের দিন আমার শ্যালিকা বললো- আপনি কি রাত্রিতে খাটের উপরে হেঁটে গিয়ে বিছানা থেকে নামলেন? আমি বললুম- দূর, আমার তো এমনিতেই হাঁটতে গেলে মাথা টল টল করে, কি করে আমি ঐ নরম গদির উপর দিয়ে হাঁটবো? তুমি তাহলে রাত্রে স্বপ্ন দেখেছ।

আমার শ্যালিকা বললো – তাই হবে।

১২ই অক্টোবর বুধবার রাত তখন ২টো বাজে। হঠাৎ দ্বিতলের করিডরে আমাদের ঘরের সামনে শুনতে পেলাম একজন পুরুষ ও একজন নারী ঝগড়া ঝাটি করছে কিন্তু ইংরাজী ভাষায়, তার সঙ্গে দুজনের কাঠের করিডরের উপর দাপাদাপির শব্দ। আমি অত্যন্ত ভয় পেয়ে গেলাম। কিছুতেই শুয়ে থাকা অবস্থায় নড়তে পারছি না। আমার পাশে দুজন শুয়ে থাকলেও মনে হচ্ছে হাত, পা সব অবশ হয়ে গেছে। চেষ্টা করেও ওদের ডাকতে পারছি না। নিশ্চল, নিশ্চুপ হয়ে বিছানায় পড়ে আছি। গলা দিয়ে কোনো আওয়াজও বার করতে পারছি না।

তারপরেই শুনতে পেলাম নারী কণ্ঠে কেউ অত্যন্ত ভীত অবস্থায় বলে চলেছে- “Save Me, Save me, is there anyone? Please save me. Please, he will kill me. আর শুয়ে থাকতে না পেরে শরীরের সমস্ত শক্তি সঞ্চয় করে বিছানা থেকে লাফিয়ে উঠে পড়লাম। কোনো রকমে ঘরের দরজা খুলতেই দেখি একজন সাহেব আর একজন মেম ধস্তাধস্তি করতে করতে ছুটে চলেছে একজনের পিছনে আরেকজন। সামনের জন নারী কণ্ঠে বলে চলেছে Save me, Save me. আমিও তাদের পিছনে পিছনে ছুটতে লাগলাম। দেখলাম পর্যটন আবাসের দরজা খুলে ঐ নারী ছুটে বাইরে বেরিয়ে গেল, পিছনে সাহেব। আমিও তখন ওদের অনুসরণ করতে করতে সামনের লনে বেরিয়ে পড়েছি। দেখতে পেলাম মেমসাহেব লনের ধারে পা পিছলে নীচে খাদে পড়ে গেল তার সঙ্গে এক বীভৎস চিৎকার। পিছনে পিছনে অনুসরণরত সাহেব সঙ্গে সঙ্গে পর্যটন নিবাসের দরজা দিয়ে আবার ভিতরে ফিরে এলেন। আমিও আর থাকতে না পেরে চিৎকার করতে লাগলাম- ম্যানেজার সাহেব, এখুনি আসুন, একজন ভদ্রমহিলা খাদে পড়ে গেছেন।

দেখলাম ম্যানেজার দৌড়ে আমার কাছে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন- প্লিজ শান্ত হোন। আপনি এত উত্তেজিত হবেন না। আপনি ভিতরে আসুন। এই বলে আমার হাত ধরে ম্যানেজার লাউঞ্জে নিয়ে এসে পাশে বসালেন। তারপর আমাকে বললেন- বলুনতো আপনি কি দেখেছেন, আপনি খুব হাঁপাচ্ছেন। এই বয়সে এত টেনশন করবেন না। আপনি যা ভাবছেন তা ঠিক নয়, কেউ খাদে পড়ে যায়নি। আপনি বসুন।

আমি আস্তে আস্তে সমস্ত ঘটনাই ম্যানেজারকে বললাম। তিনি কিছুক্ষণ চুপ থেকে আমাকে বললেন- আপনি যা দেখেছেন তা সবই অতিপ্রাকৃত ঘটনা। আমি এব্যাপারে যা জানি আপনাকে বলছি। আমি সারকিট হাউসের কেয়ারটেকারের মুখ থেকে শুনেছি, কিন্তু বিশ্বাস করতে পারিনি বলে আপনাকে কিছু বলিনি। আমি রাতে জেগেইছিলাম যে ঘটনা শুনেছিলাম তা সত্যি কিনা দেখার জন্য। আমি উদগ্রীব হয়ে অপেক্ষা করছিলাম। আপনার চিৎকার শুনে তাই ঘর থেকে ছুটে বেরিয়ে এলাম।

আমি বললাম- প্লিজ, আপনি তাড়াতাড়ি আমার কৌতুহল নিরসন করুন। আমি আর ধৈর্য্য ধরে রাখতে পারছি না।

এবার ম্যানেজার শুভঙ্কর বাবু বলতে আরম্ভ করলেন- সমস্ত ঘটনাই আমার সারকিট হাউসের কেয়ার টেকার মিঃ চক্রবর্তীর মুখ থেকে শোনা। যে সব পর্যটক এখানে আসেন সকলেই বলেন এই বাড়িটি নাকি ভুতের। তাই আমি মিঃ চক্রবর্তীকে জিজ্ঞাসা করি এবিষয়ে তিনি কিছু জানেন কিনা? কারণ মিঃ চক্রবর্তীর পিতা স্বর্গীয় ভূবণ বাবু এই বাড়ির বহুদিন ধরে পরিচারক ছিলেন। এ বাড়ির মালিক ওয়াটসন সাহেব ও তার স্বর্গতা স্ত্রীর প্রধান পরিচারক হিসাবে বহুদিন কাজ করেছেন। এই দম্পতির সবকিছু কাজ তিনিই করতেন। সাহেব ও মেমসাহেব দুজনেই ভূবণবাবুকে খুবই ভালোবাসতেন। ভূবণবাবুও এই ওয়াটসন দম্পতির সন্তানের মত ছিলেন।

১৯৩১ সালের ১২ই অক্টোবর বৃদ্ধ ও বৃদ্ধা ওয়াটসন দম্পতি এক দূর্ঘটনায় মারা যান। তাদের আত্মা এই বাড়িতে প্রতি সাত বৎসর অন্তর ফিরে আসে এবং ১৯৩১ সালের ১২ই অক্টোবর রাতের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে, তবে কুশীলবেরা হল মৃত সাহেব দম্পতির আত্মা।

মিঃ চক্রবর্তীর কথা অনুযায়ী বৃদ্ধ ওয়াটসন সাহেবের মাথা বৃদ্ধ বয়সে খারাপ হয়ে যায়। তিনি স্ত্রীর সঙ্গে অত্যন্ত খারাপ ব্যাবহার করতে থাকেন। মিঃ চক্রবর্তীর পিতা ভূবণবাবু দেখেছিলেন, যে সাহেব তার স্ত্রীকে এত ভালোবাসতেন, সেই তিনিই মেমসাহেবের উপর অকথ্য অত্যাচার করতে শুরু করেন। কারণ কিছুই ভূবণবাবু বুঝতে পারতেন না। তিনি দেখেছিলেন প্রায় প্রতি রাতে সাহেব খুব বেশী পান করে ক্যামিলা মেমসাহেবকে মারধর করতেন এবং বলতেন – I will kill you।

যে রাতে দূর্ঘটনা ঘটে সেই ১২ই অক্টোবর রাত দুটোর সময় ওয়াটসন সাহেব স্ত্রীর সঙ্গে করিডরে ঝগড়া করতে করতে স্ত্রীর গলা টিপে ধরেন। ক্যামিলা নিজেকে রক্ষার জন্য প্লিজ সেভ মি, প্লিজ সেভ মি বলে চিৎকার করতে থাকেন। দু’জনে ধস্তাধস্তি করতে করতে ওয়াটসন সাহেবের হাত থেকে কোন রকমে মুক্তি পেয়ে দৌড়ে সিঁড়ি দিয়ে নীচে নেমে আসেন।সাহেবও তার পিছন পিছন দৌড়তে থাকেন তাকে ধরবার জন্য। মেমসাহেব নীচে নেমে এসে বাড়ির সামনের দরজা খুলে অন্ধকারে লনের মধ্যে চলে যান এবং পা পিছলে নীচে খাদে পড়ে যান। এরপর দেখা যায় সাহেব দৌড়ে বাড়ি ফিরে দোতলায় নিজের ঘরে এসে গলায় দড়ি দেন।

বাকি রাতটা ভূবণবাবু আতঙ্কিত ও ভয়ে ভীত হয়ে বাড়ির লনে বসে থাকেন। সকালবেলা মৃতদেহ দুটি পুলিশ এসে উদ্ধার করে।

এই পর্যন্ত বলেই মিঃ চক্রবর্তী শুভঙ্কর বাবুকে বলেন যে সাহেবের আত্মা প্রতি ৭ বৎসর অন্তর ঐ ১১ই অক্টোবর ক্যামিলা হাউসে ফিরে আসে, পরেরদিন ক্যামিলা মেমসাহেবের আত্মা ও রাতে ঐ বাড়িতে আসে আর ঐ রাতের সেই বীভৎস, বিভীষিকাময় ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। আমি বললাম- যে ঘটনার সাক্ষী আমি এইমাত্র হলাম। ঠিকই ৭ বৎসর অন্তর যদি মৃত আত্মাদের এই বাড়িতে ফিরে আসার ঘটনাটি ঘটে তবে আজ ১২ই অক্টোবর ২০২২ সাল, ঠিক সেই সময় উপস্থিত হয়েছিল।  কেউ ২০২৯ সালের ১২ই অক্টোবর ঐ রাতে সরকারী পর্যটন নিবাসে আসেন তবে তারাও এই অতিপ্রাকৃত ঘটনার সাক্ষী হবেন। কেন যে ৭ বৎসর অন্তর এই ঘটনা ঘটে তার কোন ব্যাখ্যা আমি পাইনি।

(বানানবিধি ও মতামত লেখকের নিজস্ব)

Tags: , ,

 

 

 




  • খোঁজ করুন




  • আমাদের ফেসবুক পেজ

  • মতামত

    আপনার মন্তব্য লিখুন

    আপনার ইমেল গোপনীয় থাকবে।




    Notify me when new comments are added.

    যোগাযোগ


    email:galpersamay@gmail.com

    Your message has been sent. Thank you!

    গল্পের সময় পরিবার
    সমীর
    অগ্নীশ্বর
    দেবাশিস
    চিন্ময়
    পার্থ
    মিতালি
    জাগরণ
    দেবব্রত

    © 2016 - 2024 গল্পের সময়। ডিজাইন করেছেন অগ্নীশ্বর। নামাঙ্কন করেছেন পার্থ