08 Aug

বিষ বান্ধব

লিখেছেন:উত্তম বিশ্বাস


পথের ওপর সংসার বিছিয়ে বসে আছে পান্না। পান্না পণ করেছে কোনোদিন ঘরে যাবেনা। প্রথম প্রথম বেশ কয়েকদিন কাকুতিমিনতি করেছিল কিন্নাহার। কিন্তু পান্নাকে কিছুতেই বশে আনতে পারেনি কিন্নাহার। এখন হাল ছেড়ে দিয়ে সেও খোলা আকাশের নিচের ঘরবাড়িকে ভালবাসতে শুরু করেছে।
কিন্নাহারের বড় মাটির ঘর। ঘরটি সেকেলে। ঘর তো নয়, যেন দালানকোঠা! মোটা মোটা দেওয়াল। ঝড়ে ভাঙ্গেনা। বাদলায়ও ওর গা থেকে চাঁই খসেনা।এমন একখান ঘর দেখিয়েই পান্নার বাপকে বাগে এনেছিল  কিন্নাহার। কিন্তু এ কী! ঘর ভর্তি এত পোকামাকড় নিয়ে থাকে কিন্নাহার?
প্রথম যেদিন বউ-বেশে পান্না এ বাড়িতে পা দিয়েছিল, প্রতিবেশীদের হাসি হল্লা শাঁখ উলুধ্বনিতে কিছুই মালুম করতে পারেনি। বৌভাতের দিনও প্রচুর লোকজন হুড়োহুড়ি, বাদ্যি বাজনা নানাকিছুর মধ্যে ডুবে ছিল পান্না। কিন্তু যখন আলো নিভল। কিন্নাহারকে যেন বড্ড বেশি অপ্রাকৃত আর আগ্রাসী মনে হতে লাগল। একইসাথে মাথার ওপর থেকে বোঁ বোঁ ভোঁ ভোঁ শব্দ উড়ে আসতে লাগল! পান্না ভয়ে নিজেকে যতই গুঁটিয়ে নিতে চাইল, কিন্নাহার ততোই যেন মরিয়া হয়ে উঠল। ঘোমটা সরাতেই একের পর এক বিষাক্ত কামড়! পান্না আতঙ্কে চিৎকার করে উঠল। কিন্নাহার পান্নার মুখ চেপে ধরল, “কী পাগলামো করছ? এভাবে মানুষের ঘুম নষ্ট করে নাকি? লোকে নিন্দা করবে তো?”
-“খাটে কী রেখেছ তাই বলো? আঃ! জ্বলে গেল!”
এমন সময় বাইরের দরজায় টোকা পড়ল, ঠক ঠক ঠক। কিন্নাহার দরজার হুড়কো খুলল। অব্যয় বুড়ি এসেছে। পান্না অন্ধকারেও শুনতে পাচ্ছে বুড়ি হিস হিস করে কিন্নাহারকে শাসন করছে, “কী রে, হেঁই মিনসে! এট্টু আস্তে সুস্থে ব্যবহার করতে হয় তো না কি! বাইরে বেরিয়ে দেখ, পাড়ার লোক সব রাস্তায় বেরিয়ে এসেছে!”
কিন্নাহার কথা বলছে না দেখে বুড়ির ভয় হল। সে আলো উঁচু করে জিজ্ঞাসা করল, “কী রে, ক্ষতি খ্যাসারত করে ফেলেছিস মনে হচ্ছে?”
এবার পান্না দপ করে জ্বলে উঠল, “জ্বালার ওপরে আর বিষ ঢেলো না তো আয়ি!”
বুড়ি আলো উঁচু করে ফোগলা দাঁতে এবার অতিপ্রাকৃত হাসি হেসে উঠল, “এমন রসালো জিনিস যদি আমি আমার যৈবন কালে পেতাম! আহা! পুরুষ তো না যেন রসের দানাদার!”
বুড়ি এবার আলো ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখতে চেষ্টা করল, “কৈ দেখি কদ্দুর গড়েছে? উরি বাপ্পুরে! তাই বলি! প্রথমে ছিল তো ওই এক কোণে। কাঠি করে করে বাবুদের একেবারে শিথেন অব্দি টেনে এনেছ? বলি শখ তুমার মন্দ না!”
এবার পান্নার নজরে পড়ল বিশাল এক মৌচাক। খাটের মাঝ বরাবর বাতার ওপরে ঝুলছে। চাকটি গড়তে গড়তে কুলুঙ্গি অব্দি নেমে এসেছে। আর ওতে কিলবিল করছে লাখো লাখো মাছি।এমন গোঁ গোঁ শব্দ! যেন গোখরো সাপ!
পান্না এক লাফ দিয়ে উঠোনে নামল। এক গোছা পাটকাঠি এনে অব্যয় বুড়ির ল্যাম্পে ঠেসে ধরল। শুকনো কাঠি ফস করে জ্বলে উঠল। কিন্নাহার খাট থেকে নেমে এসে তাড়াতাড়ি পান্নাকে জড়িয়ে ধরল, “ঘর জ্বলে যাবে তো সোনা!”
-“যাক। ওই বিষাক্ত বস্তু শিথানে নিয়ে আমি শুতে পারব না!”
বুড়ি পান্নাকে সান্ত্বনা দিল, “এতটা অশৈলে ভালো না নাতবউ! প্রথম রাত বলে কথা! পাপ হবে বুঝলে? ওরা হল গিয়ে মৌ ভিক্ষু! বিন্দু বিন্দু মধু মুখে করে এনে ওরা তোমার সংসারকে সাজিয়ে রেখেছে। তুমি খুশি হবে কি, আর উল্টে তুমি যাচ্ছ ওদের গায়ে আগুন দিতে? বলিহারি শিক্ষা তোমার বাপু!”
সে রাতের মতো আগুন নিভে গেল বটে! কিন্তু পান্নার ভেতরে অন্য প্রদাহ শুরু হল।
এবার একটু একটু করে তার সংসার সরানোর কাজ শুরু করল। প্রথমে তার বাপের বাড়ি থেকে দেওয়া খাট বিছানা, বালিশ তোষক বার করে আনল। এমনকি শাড়ি আলনা আলমারি এগুলোও সব টেনে টেনে নিজের আয়ত্বে নিলো। এমনকি এঁটো বাসনগুলোও সে রাস্তার ওপর আছাড় মেরে ফেলতে শুরু করল।
কিন্তু কিন্নাহারের তৃষ্ণা তো এখন আর্তেজীয় কূপ! অতএব সে সুযোগ পেলেই পান্নাকে জাপটে ধরে ঘরে আনে। পান্নাও হাতপা ছোড়ে। আর ঠিক এইসময় ওদের সাথে পাংগা দিয়ে মাছিরাও উড়তে থাকে। কোনো কোনো মাছির রোখ এমন যেন সদ্য বিবাহিত কিন্নাহারের চাইতেই আগ্রাসী! আজ যখন পান্না তার ঠোঁটের ওপর থেকে বিষাক্ত হুলগুলো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে তুলে চুন লাগাচ্ছিল, তখন কিন্নাহারের হাসি পাচ্ছিল খুব! কিন্তু প্রকাশ করল না। বরং আস্তে আস্তে উঠে এসে দেওয়ালে ঝোলানো দিলরুবাটা নামিয়ে নিয়ে ওটাতে টুং টাং করে ঘা দিতে লাগল। আর ঠিক এইসময় পান্নার সমস্ত আক্রোশ উদ্বেগকে উপেক্ষা করে আকাশের এককোণে একফালি চাঁদ হেসে উঠল।

খোলা রাস্তার ওপর এখন জমজমাটি সংসার পান্নার। হরেক কিসিমের লোক উঁকি দিয়ে যায় পান্নার সংসারে। একপ্রকারের হাটের ব্যস্ততা বলতে গেলে চলে। পান্না প্রথম প্রথম কেঁদে কেঁদে দুঃখের কথা প্রচার করত। কিন্তু এখন করে না। যতটা পারে সে এখন কিন্নাহারকে জড়িয়ে নিয়ে রসের কথা বলে। মানুষ মুগ্ধ হয়ে শোনে। কিন্নাহারও এখন ব্যাপক লোক টানছে। সে যখন দিলরুবাতে সুর তোলে মানুষের সুখ দুঃখ চাওয়া না পাওয়া সব একাকার হয়ে যায়। সন্ধ্যা নামার আগে আগেই পান্না এখন বেসন ফ্যাটাতে শুরু করে। চোখে কাজল মেখে চপ ভাজে। মুচমুচে চপ। সাথে অব্যয় বুড়ির হাত-খোলায় ভাজা মুড়ি। তাতে পেঁয়াজ কাঁচা লংকা পড়লে আরও মধুময় হয়ে ওঠে!

গল্প জমে ওঠে। পান্না আর কিন্নাহারের গল্প। একখানি রসালো মৌচাক এই গল্পের প্লট। অতএব মাছি আর মধু ছাড়া, কোনও প্রথাসিদ্ধ পাঠক যদি এখানে আখ্যানের অতিরিক্ত কিছু অনুসন্ধান করতে যান, তাহলে তিনিও কিন্তু ঠোক্কর খাবেন, এ বিষয়ে বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ কোড়ে ডেওয়া হলো! কিন্নাহারের কি তাহলে আর কেউ নেই? আছে। পরিজন বলতে মধু সঞ্চয়ী মাছিরাই। আর একমাত্র বন্ধু খান্ডব। এটুকু ছাড়া ওদের না আছে আধার কার্ড, না আছে ভোটার কার্ড, না কোনও আইডেনটিটি। আছে কেবল একটি গল্পের গ্রাম, নাম আজীব গাঁও। দুজন ইউটিউবার কোনও এক ঘনায়মান আষাঢ়ের দিনে গল্পটির বীজ বুনে রেখেছিল। ওরা নিশ্চিত ছিল, এমন চরিত্র থেকে অনেক প্রফিট পাবে। আর ওটাই হবে অনলাইন মার্কেটের অভিনব মধু!
অতএব গল্পকার এখন গাড়োয়ানের ভূমিকায়। এপিকের আকার নিয়ে এগিয়ে চলেছে কল্পিত এক মোহমধুপের গল্প। পান্না প্রতিদিন তার আসবাব পত্রগুলো উলটে পাল্টে লোককে দেখায়। সকলেই একবাক্যে পান্নার বাপকে প্রশংসা করে। কেউ কেউ অনুরূপ আরেকখানি বানাবে বলে ছবি তুলে নিয়ে যায়।রাত বাড়ে। আকাশের এক কোণে মোটা পুরু মেঘ জমে। সংসারে আসক্ত মানুষ যারা তারা একে একে উঠে পড়ে। দমকা হাওয়া ছাড়ে। সেই হাওয়ায় আকাশের কোণে জমে থাকা চাই চাই মেঘ উড়ে আসে কিন্নাহারের খোলামেলা বসতের ওপর। কিন্নাহার দিলরুবা নামিয়ে রেখে গাব গাছের গুড়ির ওপরে একটুখানি এলিয়ে পড়ে। তখনো দুয়েকজন অতি কৌতূহলী রয়ে যায়, “ওরা কিন্নাহারের কাছে জানতে চায়, “এখনই যদি আমফান আসে কী করবি?”
কিন্নাহার জবাব দেয়না। সে জানে পান্না এখন ঝড়ের পানকৌড়ি! সে আয়লা আসুক আর আমফান আসুক ওকে কিছুতেই ঘরে নেওয়া যাবে না!”
এবার এক ফোঁটা দু ফোঁটা বৃষ্টি পড়তে শুরু করল। খাণ্ডব পান্নার নেশাতুর চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে। খাণ্ডব কিন্নাহারের বাচ্চা-বয়েসের বন্ধু। সর্ব সমস্যার সমাধান। কিন্নাহার ওর কাছে অনেককিছু শিখেছে। এর মধ্যে অন্যতম মাছি বশীকরণের কৌশল! এবার সে কিন্নাহারকে উদ্দেশ্য করে বলে গেল, “আজই চাকটা ভেঙে ফেল বুঝলি? ভালো মাল পাবি!”
খাণ্ডব চলে গেল। আবার দমকা উঠল। এবার হুস হুস করে ধুলো উড়তে লাগল। কিন্নাহার দেখল পান্নার চোখেও আজ ঝড়ের ঝিলিক! এবার সে পান্নার হাতখানা ধরে অনুনয় করল, “চলো!”
-“কোথায়?”
-“শুনলে না খাণ্ডব কী বলে গেল?”
-“যাব। তবে অন্য জায়গায়!”
-“মানে?”
-“রঙ পাহাড়ে!”
-“এত রাতে?”
-“এছাড়া আর কোত্থাও ল্যাংটো হতে পারব না কিন্নাহার। দেখছ না আমিও কেমন শুকিয়ে এসেছি! অব্যয় আয়ির কাছে শুনেছি, ওখানে নাকি একটা গুহা আছে। দারুণ নিরাপদ আর আরামদায়ক!”
-“ওটা গুহা নয়। গর্ত। মানুষ মাটি তুলে তুলে ওটাকে বানিয়েছে।”
-“যাবে কিনা বলো? নইলে আমি একাই যাবো!”

জানালাগুলো আগেই বুজিয়ে দিয়েছিল পান্না। এখন দেওয়ালের ফাটলগুলো আটকাবার জন্যে মরিয়া হয়ে উঠেছে সে। সেদিন রঙ পাহাড় থেকে এত্তো মাটি এনেছে। নানান রঙের মাটি। সব ভাগে ভাগে রেখেছে পান্না।অব্যয় বুড়ি বলে, “রঙ পাহাড়ের মাটি দুর্মূল্য রে বউ! খালি খালি ফাটল বুজিয়ে নষ্ট করবি? আলপনা দে। দেখবি দালান ফেলে তোর ঘর দেখবে বলে হুমড়ে পড়বে!”
কিন্তু পান্না তো ওই ঘরে কোনোদিন মাথা রাখবে না। সে কেন দেওয়ালে আলপনা দেবে?
বুড়ি বলে, “আঁকবি তো ঘরের পেছন পার্টে। এখেনে তো আপত্তি থাকবার কথা নয়।”
কথাটা অবশ্য ঠিক। এদিকে সময়ও কাটে না। আর সেই কারণেই পান্না বাধ্য হয়ে বুড়ির হাতে হাত ঠেকিয়ে মাটির দেওয়ালে আঁক কাটতে থাকে। অল্প দিনেই হাত পেকে উঠল। পান্নার। দেখে কিন্নাহারের খুশি আর ধরে না। সে দৌড়ে গিয়ে পাহাড়ের গর্ত থেকে অনেক অনেক মাটি কেটে বস্তায় করে আনতে লাগল। যখন পান্না বলে আর না, তখন কিন্নর আরো একবার ছুটে যায়। এবার সে শাল পাতার ঠোঙায় করে তুলে আনে নামহারা সুগন্ধি সব বুনো ফুল।
পান্না চোখ মোটা মোটা করে জিজ্ঞেস করে, “এত সুন্দর ফুল কোথায় ফোটে গো? কি মিষ্টি গন্ধ!”
এখন প্রতিদিন বুনো ফুলের মালা বেণীতে পেঁচিয়ে পথ পরিষ্কার করে পান্না। তারপর মাটি গুলে দেওয়ালে আঁক কাটে। কিন্নাহার দিলরুবা নিয়ে গান ধরে। যেসব গানের আদৌ কোনও আগামাথা নেই। পান্না রাগ করে বলে, “কী ছাই গাও? ভালো কিছু করো!”
কিন্নাহার অপলক চেয়ে থাকে পান্নার হাতের দিকে। কী মোহিনী জাদু ওই হাত দুখানায়! দেওয়াল জুড়ে কত কত ছবি এঁকেছে পান্না। দেখলে মনে হবে এই যেন ওরা কথা বলছে!
-“তুমি কী আর জনমে পটুয়ার মেয়ে ছিলে পান্না?” পান্না কথা কয় না। একটা দুটো করে মাছি উড়ে আসে। পান্নার বেণীতে বসে। কিন্নাহার ভাবে, হয়ত ওরা মধু খুঁজে পান্নার কানের কাছে উড়তে শুরু করেছে। কিন্নাহার ব্যস্ত হয়ে উঠল। সে দিলরুবাটা নামিয়ে রেখে বাড়ির সমুখ দরজার কাছে গেল। খানিক ঘোরাঘুরি করল। তারপর দজার খিড়কি খুলবে বলে যখন কোমর থেকে চাবি হাতড়াচ্ছিল, অমনি এক হ্যাঁচকায় চাবির গোছা ছিনিয়ে নিয়ে পান্না বলে উঠল, “রঙ পাহাড়ের মাটি এমন বিচিত্র কীকরে হল গো? ওইখানে একখানা ঘর বাঁধলে হয়না?”

মন ভালো নেই কিন্নাহারের। মাছি উড়ে যাচ্ছে। খান্ডবের কাছে পরামর্শ নেয় কিন্নাহার।
খান্ডব এসে বলে। “তোমরা তো দিব্য বাপু হাওয়া খাচ্ছ! ঘরে হাওয়া বাতাস ঢোকার রাস্তা এভাবে বন্ধ করলে মাছি কেন মাকড়শাও থাকবেনা!”
-“আসছে পূর্ণিমায় ভাঙব ভাবছি।”
-“পারলে আগে জানলা দুটো ভাঙো।”
খাণ্ডবের কথামতো শাবল দিয়ে কিন্নাহার জানালার মাটি খসাতে শুরু করল। দেখে পান্নার আগুন পাহাড় দপ করে জ্বলে উঠল। সে সংসারের জিনিসপত্র সমস্ত রাস্তায় আছাড় মেরে মেরে ভাঙতে লাগল। অব্যয় বুড়ি এসে অনেক বোঝাল। কিন্তু পান্নাকে কিছুতেই রস্ত করতে পারল না। একটা জানালা ভাঙা হয়ে গেল। নানা ভাজের মাটিগুলো ঝুরঝুর করে ঝরে পড়ল। এমনকি পান্নার হাতের কারুকাজ করা মাটির কলকা সেগুলোতেই চিড় খেতে শুরু করল। এবার পান্না চিৎকার করে করে প্রথম রাতের কেচ্ছা প্রকাশ করতে শুরু করল। পান্নার উঠোনে এখন এক হাটের মানুষ। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সবাই তার যন্ত্রনাকাতর জীবনের কাহিনী শুনছে। বৈশাখের ঠা ঠা রৌদ্রে দাঁড়িয়ে পান্না তার অঙ্গের আঁচল এলিয়ে ক্ষতস্থানগুলো দেখাতে লাগল।সারা শরীর জুড়ে বিশ্রীরকম ক্ষত! কোথাও কোথাও মনে হল ঘা হয়ে গেছে। এমনসময় বাইকে চেপে দুজন ছেলে এল। ওরা একটা গাবগাছের ছায়ায় বাইক দাঁড় করালো। ফটাফট পান্নার ফেলে দেওয়া দোমড়ানো মোচড়ানো বাসনকোসনের ছবি তুলল। তারপর ক্যামেরা অন করে পান্নার সামনে এসে দাঁড়াতেই পান্নার সাতসমুদ্র উত্তাল হয়ে উঠল!
-“আস্তে আস্তে বলুন!” ছেলেগুলো বাইট নিতে নিতে বলল।
অব্যয় বুড়ি পান্নার চোখ মুখ মুছিয়ে অঙ্গের কাপড়চোপড় গুছিয়ে দিয়ে বলল, “মনে করে করে বল!”
পান্না যতটুকু পারল সব বলল।
ঘরের সব কটা জানালা মুক্ত করে কিন্নাহার যখন পান্নার কাছে এল। পান্না বলল, “এই যে সেই শয়তান লোকটা!”
ছেলেগুলো মাথা নেড়ে নিজেদের মধ্যে কী সব বলাবলি করল। তারপর বাইক নিয়ে চলে গেল।

হঠাৎ একদিন চাউর হল পান্না ভাইরাল হয়েছে। ওর দেওয়া সাক্ষাৎকারে হাজার হাজার টাকা কামাচ্ছে একশ্রেণীর লোক! খাণ্ডব প্রতিনিয়ত কিন্নাহারকে উত্যক্ত করতে লাগল, “আইনের দারস্থ হতে দোষ কি? বউকে ভাঙিয়ে টাকা রোজগার করবে অন্যলোক। আর তুই কেবলমাত্র মাছিদের মুখ চেয়ে চুপ করে পড়ে থাকবি? তা হয় নাকি?”
পান্না এখন আর চপ ভাজে না। চুলের মধ্যে বিলি দিয়ে সারাক্ষণ এলোমেলো হতে থাকে। অব্যয় বুড়ি পান্নাকে কোলে টেনে মাথায় তেলের জাব দিতে দিতে বলে, দেখিস একদিন তোর নিচ্চই ডাক আসবে। তোর মতো এত রূপ আর কোনও নায়িকার আছে নাকি? সেই একসময় দেখেছিলাম বেদের মেয়ে জুসনা! তারপরে আর এ পুড়ার দেশে তেমন নায়িকা জন্মালো কই?”
খোলা আকাশের নিচে বসে এখন রোজ টাকার অঙ্কের চুলচেরা হিসেব চলতে লাগল। অনেকে মোবাইল মুঠো করে আসে। প্রতিদিন কক কত ভিউয়ার হচ্ছে সে হিসেবও সব এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে!
অতএব কিন্নাহার সিদ্ধান্ত নিল আইনের পথে যেতেই হবে!
কিন্তু অভিযোগের বয়ান কী হবে? দাওয়ায় বসে বসে খান্ডব আর কিন্নাহার এসব নিয়ে যখন ভাবছিল। ঠিক এই সময় সেই ছেলেদুটো এল। যারা পান্নার সাক্ষাৎকার নিয়েছিল, সেই ছেলেদুটো। সাথে এত্তো খাদ্যখাবার আর কসমেটিক।কিন্নাহার দৌড়ে পান্নাকে খবর দিতে গেল। কিন্তু অব্যয় বুড়ি বলল, “পান্না রঙ পাহাড়ে গেছে। সন্ধ্যার আগে আসবেনা বলে গেছে!”
-“কেন?”
-“জ্বলুনি বেড়েছে বলছিল। গুহার গর্তে শুয়ে থাকলে জ্বালা কমে বলছিল!”
কিন্নাহারের উৎসাহ অর্ধেক হয়ে গেল। সে এক ছুট্টে ছেলেদুটোর কাছে এল।
ছেলে দুটোর বয়েস বেশি না। একুশ তেইশের মাঝামাঝি হবে। একজনের নাম জরিপ। অন্যজন আঠা। নাম শুনেই কিন্নাহারের ভ্রু দলা হয়ে এল, “কী নামের ছিরি!”
খাণ্ডব বোঝাল, এটা ব্যাপসার কৌশল! তবে কথাবার্তায় হাবেভাবে বেশ রাশভারী মনে হচ্ছিল।
নাহ পান্না আসছে না দেখে ছেলেগুলো কিছুক্ষণ বাদে বাদেই উসখুস করে উঠছিল। ওদেরকে আটকে রাখবার জন্যে অনেকগুলো গান শোনালো। দিলরুবা বাজিয়ে দেখাল।
-“আপনার কী করা হয়?”
-“মৌ পালন!”
-“কতটা প্রোডাক্ট আসে বছরে?”
-“চলে যায় মোটামুটি!”
-“কোথায় করেন আপনার এপিকালচার? আমরা কি একবার দেখতে পারি?”
কিন্নাহার দরজা খুলে দিল।
ছেলেদূটোর চোখ এবার কপালে উঠবার উপক্রম হল, “উরিব্বাস! এ তো সাঙ্ঘাতিক ব্যাপার! এতবড় মৌচাক আগে কখোনো দেখেছি বলে মনে হচ্ছে না!”
একজন জিজ্ঞেস করল, “কত বছরের প্রোজেক্ট এটা?”
কিন্নাহার বলল, “আগে কুলুঙ্গি অব্দি ছিল। পান্নাকে ঘরে আনার পর থেকে প্রতিদিন প্রায় দেড়গুণ হারে বৃদ্ধি পায় স্যার!”
-“আর হানি?”
-“আপনি এই খাট খানার ওপরে শোন।দেখতে পাবেন।” ছেলেটি একটু ইতস্তত করছিল। কিন্নাহার অভয় দিল। ছেলেটি ভয়ে ভয়ে শুলো। কিন্নাহার ওকে শার্ট খুলে চিৎ করিয়ে দিল। এবার একটা সরু কাঠের সড়কি দিয়ে আস্তে আস্তে মাছিদের ওপর বুলাতে লাগল। দূরে যে ছেলেটি দাঁড়িয়ে ছিল সে চিৎকার করে উঠল, “ওহ মাই গড! এত মধু!”
থপ করে একদলা মাছি শুয়ে থাকা ছেলেটির বুকের ওপরে পড়ল। মাছি মুঠো করে ছেলেটি একছুট্টে বাইরে বেরিয়ে গেল।
কিন্তু কিন্নাহার মরিয়া! এবার সে নিজে সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে শুয়ে পড়ল। খাণ্ডবকে বলল কাঠি করতে। খাণ্ডব আস্তে আস্তে কাঠি দিয়ে মাছিকে বশ করতে লাগল। নিচের দিকের মাছে সরে সরে উপরের দিকে উঠতে লাগল। গোটা চাক জুড়ে এখন কী যেন এক সর্পিল স্রোত! মোটা মোটা মাছি। ভয়ংকর তাদের স্বর! আস্তে আস্তে নিচের দিকটা ফাঁকা হয়ে গেল। উজ্জ্বল ঘন সরিষা তেলের মতো মধু। একটু ঘা দিলেই ঝমঝমিয়ে পড়বে! খাণ্ডব সড়কির আগাটা আস্তে আস্তে পুঁতে দিল।
এখন টুপ টাপ করে গাঢ় রসের ফোঁটা কিন্নাহারের বুকের ওপর, নাভির গর্তে পড়ছে! আর জিভ দিয়ে চেটে চেটে খেয়ে দেখাচ্ছে খাণ্ডব! অদূরে দাঁড়িয়ে আছে ছেলেদুটো।ওদের মুখে কথা নেই! যেন এক পরাবাস্তব জগতের মধ্যে উড়ে এসে পড়েছে ওরা!

এ বছর প্রচণ্ড দাবদাহ। খোলা আকাশের নিচে থেকে রঙ জ্বলে যাবার কথা ছিল পান্নার। কিন্তু না। ওর গ্লামার দিনকে দিন বেড়েছে বই কমেনি। ইতিমধ্যে অনেকগুলো ভিডিও ভাইরাল হয়েছে ওর। তবে সবচেয়ে বেশি টাকা এসেছে প্রথম রাতের অভিজ্ঞতা যাদেরকে শেয়ার করেছিল সেই জরিপের একাউণ্ট থেকে। এখন দলে দলে লোক আসে পান্নার কাছে। সবাই ইউটিউবার। রান্না খাওয়ার অবসর পায়না পান্না। রান্না করবে কী, ইদানিং যারাই আসে, কেউ না কেউ বিরিয়ানি এগরোল মোমো চাউমিনের মতো লোভনীয় সব ফার্স্টফুডের প্যাকেট নিয়ে আসে। কিন্নাহার খায়। খুব বেশি হলে খাণ্ডবকে সাধাসাধি করে।পান্না মুখে প্যাক মেখে ওদের যাচাই করে, “আপনি কি কেবলমাত্র ওই স্ট্রীট-ফুডের ভিডিওই আপলোড করেন?”
-“না। ভ্যারাইটি আইটেম আছে ম্যাডাম।”
-“যেমন?”
-“একমাত্র পলিটিক্যাল খিল্লি ছাড়া, বাকী সবরকম এনটারটেন্টমেণ্টই রাখবার চেষ্টা করি!”
-“কিন্তু আপনার আইটেম কিছু কিছু দেখেছি। বড্ড বোরিং!”
সত্যিকথা বলতে কী, পান্না আজকাল সবাইকে অ্যাকসেস দেয়না। কেবলমাত্র যাদের আইটেমের মধ্যে রিয়েল স্টোরি থাকে তাদেরকেই বসতে বলে।
আজ আবার এসেছে ওই ছেলে দুটো। খুব সংক্ষেপে অনেকগুলো গল্প বলেছে পান্না।পান্নার কিশোরী বেলার গল্প। অব্যয় আয়ির গল্প। রহস্যময়ী রঙ পাহাড়ের গল। অবশেষে যেটা ওদের মনে ধরল, সেটা হল, রঙ-পাহাড়ের বুকে যে গোপন গুহাটি ইদানিং আবিষ্কার করেছে পান্না, তার গল্প।
ঠিক হল আজ ওইখানে শুটিং হবে।

ছেলে দুটোকে আজ অন্যদিনের তুলনায় দারুণ উত্তেজিত দেখাচ্ছে! এখন ঘনঘন তাদের ফোন বেজে উঠছে।
-“হ্যাঁ বলছি। সন্ধ্যার আগেই পৌঁছে যাবি। ঘোড়া দুটো। অবশ্যই সাজানো। একটু বেশি ভাড়া দিবি। দুদিনও লাগতে পারে। গুড় আর ছোলা কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমানে আনতে হবে।“”
-“আর আঠা?”
-“আঠা আমার সাথে এসেছে বললাম তো! পারলে আরও দুজন টেকনিশিয়ান পাঠাও। মনে রেখো, দুটো মালা লাগবে কিন্তু আজ। একটা জরির টুপি। একটা বড় মশাল। গালা আনিস একটু বেশি করে!”
গাব তলায় তিল ধারণের জায়গা নেই। বেলা থাকতে থাকতে বেশ কয়েকটা শট নেওয়া হল। অব্যয় আয়িও আজ দারুণ সেজেছে। সে সংলাপ বলতে গিয়ে বার বার হেসে ফেলছে।
পান্না বকুনি দিয়ে বলল, “তোমাকে ডায়লগ কে বলতে বলেছে শুনি? পারলে পাঁজরগুলো আরেকটু উঁচু করে দেখাও!”
সূর্য ডোবার সাথে সাথে একটা ঘোড়া নিয়ে খাণ্ডব বেরিয়ে গেল। ওর পরনে সম্রাটের পোশাক। আর হাতে একখানা সড়কি।
সন্ধ্যার ঘন অন্ধকারের জন্যে অপেক্ষা করছিল টেকনিশিয়ানরা। লোকজন সরে যেতেই ওরা অর্ডার করল, “এবার শুরু করা যাক।”
শট শুরু হল। পান্নার পরনে ন্যাকড়া-কুড়ুনীর পোশাক। আর অপরদিকে সাদা শেরওয়ানীতে সেজেছে কিন্নাহার! ঘোড়ার ওপরে বসে আছে যেন শাহাজাদা! ওরা এখন অনেকটা বনের মধ্যে চলে এসেছে। আর খানিকটা এগোলেই সেই গুহা। এমনসময় কিন্নাহার বলে উঠল, “থামাও থামাও! ঘোড়া থামাও! আমার দিলরুবা রেখে এসেছি!”
ওদের মধ্যে একজন কিন্নাহারের মুখ চেপে ধরল, “রিল রানিং। এর মধ্যে আউট অ্যাকশান দেখানো যাবেনা!”
কিন্নাহার পান্নার হাতদুখানা ধরে ককিয়ে কেঁদে উঠল, “সর্বনাশ হয়ে গেল গো! আমার দিলরুবা!”
পান্না হিসহিসিয়ে বলে উঠল, “কী ছেলে মানুষী করছ! চুক্তির টাকা ফেরৎ দিতে পারবে?”
কিন্নাহারের কান্না কিছুতেই থামে না। এবার পান্না মশালে আগুন দিল। একছুট্টে ফিরে এল সেই ছড়ানো ছেটানো সংসারের কাছে। দেখল দিলরুবাটি একটা এঁটো-ফেলা পাত্রের পাশে উপুড় হয়ে পড়ে আছে। ওটাকে তুলে নিয়ে এবার সে এক নিঃশ্বাসের ছুটতে শুরু করল।
কিন্তু এ কী! কিন্নাহার কোথায়? ছেলেগুলো কোথায়? কোথায় সেই সাজানো বাদশাহি ঘোড়া? ফোন করল। টাওয়ার নেই। একা একা অনেক খুঁজল পান্না। গুহার কাছে এল। এখানে এখন অতলান্ত অন্ধকার! ভয়ে ভয়ে ডাকল, “খাণ্ডব, কোথায় তোমরা? আমার কিন্নাহারকে কোথায় লুকিয়ে রেখেছ?”
আধখানা আয়নার মতো একটি অবয়ব সামনে এসে দাঁড়াল।
পান্না ব্যাগ্র হয়ে বলে উঠল, “তুমি কি জরিপের লোক? আঠা সে কোথায়? কাউকে দেখছিনা কেন?”
-“আর কোনদিনই দেখতে পাবেনা!”
পান্না ভয়ে আঁতকে উঠল, “কে তুমি?”
-“আমি একজন স্ক্রিপ্ট রাইটার। তোমাদের নির্মাণ করে এই অব্দি এনেছি।”
-“এত যখন করলে, শেষ রক্ষা করো!”
-“কল্পনাটুকুও এখন কিনতে হচ্ছে ম্যাডাম! খালি হাতে আর কদ্দিন?”
-“মানে?”
-“আমি এত করলাম, অথচ আমার প্রফিট কোই? অতএব গল্প এখানেই শেষ!”
কান্নায় ভেঙে পড়ল পান্না, “এমন সর্বনাশ কেন করলে? আমি কী নিয়ে বাঁচব?”
এমনসময় ঘোড়াটি ফিরে এল। পান্না দেখল ওর সারা গায়ে ফোসকাপড়া দাগ! লোকটি ঘোড়ার ঝুঁটি ধরে পান্নার দিকে ঠেলে দিয়ে বলল, “একে নেবে?”
পান্না শিউরে উঠল, “কে করল এমন ক্ষতি?”
-“গরম ছাইয়ের গাদায় ছুটাছুটি করেছে বোধহয়!”
-“এখানে ছাই এল কোত্থেকে?”
লোকটি ইশারায় দেখিয়ে দিলো, “ওই যে!”
-“ও মা! ওটা তো রঙ পাহাড়!”
-“একসময় ছিল। কিন্তু এখন থেকে ওটা ছাইয়েরই পাহাড়।”
-“শুনেছি সমাজের প্রতি তোমাদের মতো মানুষেরা নাকি সাংঘাতিকরকম দায়বদ্ধ! সুন্দরকে এভাবে হত্যা করতে পারো না!”
-“পৃথিবীর কসাইগুলোকে এই কথাটাই ঠিক এইভাবে বলতে পারবে?”
পান্না ভীষণরকম ভেঙে পড়ল, “এখন আমার কী গতি হবে বলে দাও?”
লোকটি এগিয়ে এসে পান্নার হাতের মশালে ফুঁ দিতেই, পান্না দৌড়োতে শুরু করল!

সকাল হতে না হতে অব্যয় আয়ি একেবারে আগুন মুখে করে ছুটে এল, “হ্যাদে ও পান্না, রাতে চাক ভেঙেছিস? কত হাঁড়ি মধু নামালি রে? ভাঙলি ভাঙ। তাইবলে অবলা প্রাণগুলোকে এইভাবে মারলি? দেখ গিয়ে সারা গ্রামের প্রত্যেকের উঠোনে কী হারে মাছি মরেছে! আমি তো ভাবলাম শুকনো সজনের ফুল বোধহয়! ও মাগো না! ষষ্ঠীর বউ ডেকে বলল, পান্নার ঘরের ভেতরে সারারাত ধোঁয়ার হল্লা খেলেছে। কী সর্বনাশ! আরেকটু হলে ঘরখানা পুরোটাই জ্বলে যেত রে! করেছিস কী?”
পান্না কথা বলে না। আধপোড়া চাটনার ওপর বসে আছে যেন স্বর্গলাঞ্ছিতা বেহুলা!
-“কী রে, ঘরে আগুন দিয়েছিস? কিন্তু কেন?”
এবার পান্না গলা ছেড়ে কেঁদে উঠল, “বালাই নিয়ে এভাবে আর কতদিন বাঁচা যায় আয়ি! এছাড়া আমার আর কোনও রাস্তা ছিল না!”
বুড়ি তেল-জলে ফেটিয়ে পান্নার মাথায় দিতে গেলে পান্না বাধা দিয়ে বলল, “এসব লাগবে না। পারলে আমার হয়ে একটু উপকার করো!”
বুড়ি ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করল, “কী উপকার? রাস্তার ওপর থেকে তোর গেরস্থালী গুছিয়ে এনে দেবো, তাই তো?”
-“না। পারলে চাকখানায় একটু চাপ দাও!”
-“কোই চাক? ও তো একখান শুকনো মোমের ঢ্যালা!”
পান্না বুকের কাপড় সরিয়ে শূন্য চাকতিটার দিকে চেয়ে আছে। পান্না এখন পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছে, কোটি কোটি কুঠুরি! সমস্তটা এক করে কী অপূর্ব কৌশলে মাছিরা এটাকে নির্মাণ করেছে!
মোমের চাকতিটা ধরে বুড়ি জোরে জোরে চাপছে। খানিক বাদে বাদে ভেতর থেকে একফোঁটা দুফোঁটা সেদ্ধ লার্ভার রস আর হলুদ বিষ্ঠা বেরিয়ে আসছে!

[মতামত ও বানানবিধি লেখকের নিজস্ব ] 

Tags: , ,

 

 

 




  • খোঁজ করুন




  • আমাদের ফেসবুক পেজ

  • » আষাঢ়ে গল্প on August 8, 2023

    […] বিষ বান্ধব […]

    মতামত

    আপনার মন্তব্য লিখুন

    আপনার ইমেল গোপনীয় থাকবে।




    Notify me when new comments are added.

    যোগাযোগ


    email:galpersamay@gmail.com

    Your message has been sent. Thank you!

    গল্পের সময় পরিবার
    সমীর
    অগ্নীশ্বর
    দেবাশিস
    চিন্ময়
    পার্থ
    মিতালি
    জাগরণ
    দেবব্রত

    © 2016 - 2024 গল্পের সময়। ডিজাইন করেছেন অগ্নীশ্বর। নামাঙ্কন করেছেন পার্থ