আমার মা পান চিবুতে চিবুতে মাঝে মাঝেই জিভটাকে বার করে নিয়ে এসে অনেকটা লম্বা করে দেওয়ার চেষ্টা করত। খুব একটা সফল হতো না তবে তা নিয়ে তার কোনো কষ্ট ছিল না। কারণ জিভটাকে সামান্য কিছুটা দেখতে পেলেই সে খুশি। উদ্দেশ্য কতটা লাল হয়েছে সেটা দেখা।
এখন রাত, তবে কত রাত আমি জানি না। আমার ঘরে কোনো ঘড়ি নেই। চাঁদটা একেবারে আমার মাথায়। হঠাৎ রাতে মায়ের পান খাওয়া আর লাল জিভ বার করার কথা মনে হল কেন? এর একটা কারণ অবশ্য আছে আমার কাছে তবে সেই কারণটা আপনাদের কাছে কতটা বিশ্বাসযোগ্য হবে আমি ঠিক বলতে পারব না। আসলে এইধরনের ভাবনা আমি আগে কখনও ভাবিনি তো তাই কারণটা চটজলদি ঠিক করতেও পারিনি। তবে এর পেছনে রাতের কোনো ভূমিকা নেই। সূর্যও যদি মাথার ওপর থাকত তাহলেও এমন ভাবনা মাথায় হঠাৎ করেই আসতে পারত এবং কারণ নির্ণয়ের ব্যাপারেও এখনকার মতোই টলোমলো থাকতাম।
কাজ আমার একটা দরকার। তার মানে কিন্তু এই নয় যে আমি কাজের জন্যে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি বা কাজ না থাকার জন্যে না খেয়ে মরছি। আমি চেয়েছিলাম একটাই কাজ বছরের পর বছর ধরে থাক। কোনোরকম ভাবনা চিন্তা না করে রোজ যাব আর আসব। একপ্রকার যন্ত্রের মতো। কিছুতেই নিজের সবটুকু মালিকের হাতে তুলে দেব না। কিন্তু তেমন একটা পরিস্থিতি কিছুতেই তৈরি হচ্ছে না। একদিনের জন্যেও কাজে কোনো কামাই নেই। যতটুকু সময় দেওয়ার তার সবটাই আমি দিই, তবুও মাস ঘুরতে না ঘুরতেই আমাকে কাজ থেকে ছাড়িয়ে দেয়।
এসব নিয়ে আগে কখনও ভাবিনি। আসলে কোনো কিছুর ভেতর নিজেকে ডুবিয়ে দিয়ে যে ভাবা সেটাই তো আমার আসে না। আমি পারি না ঠিক তা নয়। ছোটবেলা থেকেই এসব পথে আমার নামমাত্র কোনো চলাচল নেই। তবুও এই অনভ্যস্ত আমি ভাবছি। কাজ নিয়ে ভাবছি। কেন আমাকে কেউ চাইছে না? যদিও এই ভাবার পেছনে আমার কোনো ভূমিকা নেই। ক’দিন হল দেখছি, সকাল হলেই আমাকে বাড়ি থেকে ঠেলা মারছে। আমি ঠিক জানি না, সকলের আমাকে না চাওয়ার সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক আছে কিনা।
মায়ের পান খাওয়ার কথাটা হঠাৎ রাতের অন্ধকারে কেন মাথায় এসেছিল এবার বলি। মা শুধু দুপুরে পান খেত, তাও সবদিন নয়। মা যেদিন পান খেত সেদিন দুপুরে ভাত খাওয়ার আগে সব কাজ সেরে রাখতো। বিকেলের কাজ, এমনকি সন্ধের কাজ পর্যন্ত। তারপর ভাত খেয়ে পানটি মুখে দিয়ে তাকে আর পায় কে! বারবার জিভ বার করে দেখত কতটা লাল হয়েছে। কাছে কেউ থাকলে অল্প একটু জিভ বার করে বলত, “এই লাল হয়েছে রে?” পান খাবার আগে যা জল খাওয়ার খেয়ে নিত। পান মুখে দিয়ে আর এক ফোঁটা জলও নয়। জিভের খয়ের ধুয়ে যাবে বলে। পান তো অনেকেই খায়। কিন্তু এই যে পান মুখে দিয়ে সর্বক্ষণ পানের মধ্যে ডুবে থাকতে খুব কম মানুষকেই দেখেছি। মাঝে মাঝে মনে হতো পানই বোধহয় মাকে চালনা করছে।
এক এক সময় আমার মনে হতো মা পান খেয়ে যে আনন্দ পায় ভাত খেয়ে বোধহয় তা পায় না। কোনো কোনো দিন মায়ের এসব আমার অসহ্য লাগতো। মনে হতো আদিখ্যেতা। রেগে গিয়ে দু চারদিন কথা বন্ধ রাখতাম। তবে আমার এই আচরণকে মা কি চোখে দেখতো জানি না। আমার কাছে কোনোদিন কিছু খুলেও বলেনি। হয়তো আমার ভেতরটা দেখতে পেত শুধু মা বলে। আমি কি চাইতাম, চোখে যা দেখতাম তা কতটা আমার ভেতর পর্যন্ত যেত — মা হয়তো ঠিক বুঝতে পারতো।
মায়ের মতো না হলেও আমাকে কিছুটা বুঝতে পেরেছিল আমার প্রাইমারি স্কুলের বন্ধু জগা। যদিও ঘটনাটা ছাত্রবেলার নয়। কলেজের পড়া শেষ। চায়ের দোকানে বসে সময় কাটে। একদিন চায়ের দাম মেটাতে গিয়ে পকেট থেকে একটা একশ টাকার নোট পড়ে যায়। পরদিন জগা যখন টাকাটা আমাকে ফেরত দিল আমি একটা কথাও বলিনি তার সঙ্গে। আমার মনে হয়েছিল, এখানে কথা বলার কি থাকতে পারে! টাকাটা তো ওর নয়, ও কুড়িয়ে পেয়েছে এবং পাশে বসা আমারই সেটা হতে পারে, এই মনে করে আমাকে ফোন করেছে। অনেকেই বলেছিল, আমাকে ফোন না করতেও পারতো। কিন্তু কেন করবে না? যখন ও বুঝতেই পারছে টাকাটা ওর নয়। কিন্তু আমার ওকে প্রশংসা করার কোনো কারণ খুঁজে পাইনি। টাকাটা ফেরত দেওয়ার প্রায় দিন কুড়ি পরে আবার ফোন করেছিল জগা — “তোর সঙ্গে মিশে কোনো আনন্দ নেই। তোর হচ্ছে চোখ বোজা জীবন। চারদিকে সবকিছুর ওপর তুই ভালো করে চোখ বোলাস না।” আমার খুব হাসি পেয়েছিল জগার কথা শুনে, আমি তো মিশতেই চাই না।
আমার মনে হয় কারও সঙ্গে মেশা মানে কিছু কিছু সময়, কখনও আবার অনেকটা বেশি সময় ধরে তার মতো হয়ে নিজেকে তার কাছে তুলে ধরা। এইভাবে নিজের কাছ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে আসা, অথবা নিজের ভেতর একটা অনভ্যস্ত মানুষকে ঢোকানোর কথা ভাবলেই আমার বমি পায়। খুব ছোটবেলা থেকেই দেখেছি কারও মধ্যে আমি বেশিক্ষণ বসে থাকতে পারি না। আবার আমার মধ্যেও কেউ বেশিক্ষণ রাজত্ব করুক আমি চাই না।
আমার মা এইসব ব্যাপার নিয়ে আমার সঙ্গে কোনোদিন কথা বলেনি। আমার ভেতরের সবকিছু দেখে মায়ের খারাপ লাগতো কিনা সেটাও মায়ের আচরণ দেখে বুঝতে পারতাম না। শুধু বাবা আমার দিকে অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে থাকত।
***
সারাদিন ভয়ঙ্কর গরমের পর বিকেলে মেঘ করে আসতো। বৃষ্টি হতো না কিন্তু ঠাণ্ডা হাওয়া দিত। অন্য কোথাও বৃষ্টি হয়ে গেলে যেমন হয়। হাওয়ার সঙ্গে ধুলো উড়ে এলেও মা সব ঘরের জানলা খুলে দিত। আমি জানলা খুলতাম না।৷ ধুলোর ভয় নয়, এতক্ষণ যে অবস্থার মধ্যে হেঁটে চলে বেরিয়েছি মুহূর্তের পরিবর্তনে তাকে ঘরে ডেকে এনে তার মধ্যে ডুবে যাওয়ার মানসিকতা আমার একেবারেই পছন্দ নয়।
বৃষ্টি হলে আমি বৃষ্টির ফোঁটাগুলের দিকে তাকাই। আকাশপথ থেকেই আমি বৃষ্টির ওপর নজর রাখতে চেষ্টা করি। আমার চোখের অনেক আগে বৃষ্টি খুব দ্রুত এসে শুকনো মাটির সঙ্গে মিশে যায়। কোনো কোনো বৃষ্টির ফোঁটায় চোখ পড়েও যায়। এইভাবে তাকিয়ে থাকতে থাকতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়ি! যতক্ষণ জেগে থাকি চারপাশ ঘষা কাচের মতো আবছা হয়ে থাকে। মনে হয় আমি অন্য পৃথিবীর বাসিন্দা। আমি সকলের থেকে অনেক দূরে চলে গেছি।
রোজ দিন তো বৃষ্টি হয় না। অথচ রোজ দিনই তো আমার সকলের থেকে আলাদা হয়ে যেতে ইচ্ছে করে। কোনো কোনো দিন নিরুপায় হয়ে বিছানায় মদের বোতল নিয়ে বসি। চারদিকের জানলা খুলে দিই। আমার ঘরে জ্বলে একটা কম পাওয়ারের আলো। রাস্তার আলোগুলো জানলা দিয়ে এসে বোতলের গায়ে পড়ে। এখানে আলাদা হয়ে যাবার কিছু নেই। দোতলা ঘরটার চারপাশের জানলায় উঠে আসে কারও শোবার ঘর, কারও রান্নাঘর, কারও বাথরুমের দরজা। সকলের চোখ হুড়মুড়িয়ে এসে বোতলের গায়ে আটকে যায়। এমন ছবিটা আমার দারুণ পছন্দের। সকলের চোখের ওপর থেকে বোতল সরিয়ে নেওয়ার কোনো ইচ্ছেই আমার থাকে না। জলের গেলাসের মতো সেটি আমার বিছানায় শোভা পায়। সকলের চোখের ভাষা যেন একটাই — খুব তাড়াতাড়ি দেখে নাও। আর একটু পরে এমনভাবে সকলের চোখের ওপর থাকবে না। তাই সরে যাবার আগে শেষবারের মতো একবার দেখে নেওয়া। সবাই যখন বোতলের আশেপাশে আমি তখন উড়ে বেড়াই।
মদ আমি বার দুই তিন খেয়েছিলাম। তারপর থেকে আর কোনোদিন ঠোঁট ছোঁয়াইনি। না, কোনো বিরূপ অভিজ্ঞতা নয়। আপনাদের হয়তো কিছু একটা মনে হতে পারে কিন্তু আমার সেদিন কিছু মনে হয়নি। আসলে মদ খেলে আমার চরিত্রবিরোধী একটি কাজ করে ফেলতাম — যে আমি সর্বক্ষণ উড়ে উড়ে বেড়াই, কখনও কারও সামনে এসে দাঁড়াই না, কথার ডালপালা ছুঁয়ে ছুঁয়ে ঘুরে বেড়াই না অতীত বর্তমান ভবিষ্যতের দুয়ারে দুয়ারে — সেই আমি মদ পেটে পড়লে একেবারে আবেগে ভেসে যেতাম। আমার তো কোনো জ্ঞান ছিল না, একবার নাকি মদ খেয়ে সারারাত একজনের নাম ধরে ডেকে গিয়েছিলাম। ভোররাতে বউ বিরক্ত হয়ে আমাকে বসার ঘরে ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। সকালে উঠে নিজেকে বদ্ধ ঘরে দেখে একটু অবাক হয়েছিলাম। বউয়ের সিদ্ধান্তে এ কাজ হয়েছে জেনে খুবই রেগে গিয়েছিলাম। কিন্তু যখন জানতে পারি একটা নাম ধরে সারারাত ডাকাডাকি তখন ভিন্ন মত ও পথের যাত্রী আমি নিজের এই শাস্তিতে খুশি হয়েছিলাম।
***
হ্যাঁ, কাজ আমার একটা দরকার। বাড়ি থেকে সরে পরার জন্যে — সবকিছু থেকে উড়ে যাবার জন্যে। কারখানায় একটানা যে যন্ত্রের শব্দ, সবাইকে চাপা দিয়ে দেয়। তখন আমি উড়ে উড়ে যাই, তারপর এক হলুদ আস্তরণ। কারও উপস্থিতি টের পাই না। আমি চোখ বুজে ফেলি, তারপর আমার ভেতর যে কি হয়ে যায় আমি নিজেও ঠিক জানি না। এই তো গতবছরের ঘটনা। আমি হলুদ আস্তরণ পার হয়ে যাচ্ছি। ঠিক এমন সময় কে যেন আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিল — গায়ের জোরে চেঁচিয়ে উঠেছিলাম। চোখ খুলেই দেখলাম আমার চারপাশে কারখানার লোকে ভর্তি। শুনতে পেলাম ওরা বলাবলি করছে আর কিছুক্ষণের মধ্যেই আমার সারা শরীরটা নাকি মেশিনের ভেতর ঢুকে যেত। বুঝতে পারলাম মেশিন চালিয়ে দিয়ে কোথাও একটা হারিয়ে গিয়েছিলাম। আমি বেরিয়ে আসতে চেয়েছি আর ছোটবেলা থেকে, এমনকি এখনও পর্যন্ত আমাকে সবকিছুর মধ্যে আবার কোনো কোনো সময় একটা কিছুর সঙ্গে জুড়ে দেবার চেষ্টা চলেছে। বেরিয়ে আসত পারলে মুক্তি পাই। চেনাজানা পরিধি আমার গায়ে জ্বালা ধরায়।
মা বাবা চলে যাবার অনেকদিন পর্যন্ত আমি বিয়ে করিনি। তখন তো উড়ে যাবার ইচ্ছে হয়নি। সারাদিনের মধ্যে বাড়ি থেকে একবার কি দু’বার বেরোতাম, কখনও আবার সেটাও নয়। কোনো মুখ আমাকে বারবার দেখতে হয়নি। কেউ আমার ওপর কোনো কিছু চাপিয়ে দেয়নি আর তাই একবারের জন্যেও আমি রেগে যাইনি।
রাগ আমার তখন হয় যখন মনে পড়ে মেয়েটি আমাকে একদিন তার আঁচলে বেঁধে ফেলেছিল। মেয়েটি মানে আমার বউ। আমি তো কোনো আগ্রহ দেখাতে পারি না আর দেখাইওনি। কিন্তু মেয়েটি বার দু’য়েক আমার সঙ্গে মিশে আমাকে পড়ে ফেলে এবং অবশ্যই কাছ ছাড়া করে না। ওর মনে হয়েছিল পরে কোনো একটা সময় আমাকে যেমন খুশি তেমন ঘোরানো ফেরানো যাবে এবং হলোও তাই। যেহেতু আমি কোনোকিছুর মধ্যে বেশিক্ষণ যুক্ত থাকা পছন্দ করি না তাই মেয়েটি ঘুরে ঘুরে আমার ফেলে যাওয়া অংশগুলোকে নেড়েচেড়ে দেখে যখন ফল পেতে শুরু করল তখনই সেটা গুছিয়ে নিয়ে নিজের এক্তিয়ারের মধ্যে নিয়ে চলে এলো। এইভাবে একটু একটু করে শুধু আমি নয়, সংসারও আমাকে উড়িয়ে দিয়েছে।
***
আজ সকাল থেকেই বৃষ্টি। খুব ছোটবেলা থেকেই বৃষ্টির ফোঁটা আমার খুব ভালো লাগে। বিশেষ করে রাতের বেলা ছড়ানো আলোর ভেতর দিয়ে বৃষ্টি পড়লে দূর থেকে কি দারুণ লাগে দেখতে! আবার যদি হাওয়া দেয় বৃষ্টির ফোঁটাগুলো অদ্ভুতভাবে উড়তে থাকে। এসব দেখতে দেখতে আমি কোথায় যেন হারিয়ে যাই। না, সেখানে কোনো চেনা মুখ থাকে না। নিজের তালে উদ্দেশ্যহীন ভাবে উড়ে বেড়াতে পারি। আমার চেনা জগতে বৃষ্টি একটা ঢাকনা ফেলে দেয়। বুঝতে পারি, এসবের জন্যেই বৃষ্টি আমার প্রিয়।
এখন বুঝতে পারি, সঠিক সময়ে হাজিরা, কাজে ফাঁকি না দেওয়া, যখন তখন ছুটি না চাওয়া — কাজে বহাল থাকার ক্ষেত্রে এসবই যথেষ্ট নয়। মালিক পক্ষের লোকজনদের সঙ্গে হেসে কথা বলা, টিফিনবেলায় কারখানার অন্যান্য কর্মীদের সঙ্গে কিছুটা হলেও সময় কাটানো — এগুলো খুব দরকার। অর্থাৎ কারখানায় থাকাকালীন সময়ে তোমাকে দেখে যেন বন্ধু বলে মনে হয়। চিন্তায় পড়ে যাই, এগুলোর কোনোটাই আমার চরিত্রে নেই। অথচ ছোটবেলা থেকে মাকে দেখে এসেছি কী দারুণভাবে কোনো বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আছে। যখন যেটা করছে সেটা ছাড়া আর কিছু জানে না। কিন্তু আমি সকলের মুখের ওপর বলে এসেছি কাজটাই তো আসল — কাজ পেলে কেউ তোমার কাছ থেকে আর কিছু চাইবে না।
কিন্তু চাইছে তো বটেই এবং ওটাই প্রধান হয়ে দেখা দিয়েছে। আজ আর কাকে কাছে ডাকব! দীর্ঘ সময় সরে সরে থেকে, প্রয়োজনের চাওয়াকে উড়িয়ে দিয়ে মানুষ আজ আমাকে ভুলেই গেছে। বিছানা থেকে উঠে জানলা খুলে দিলাম। এখনও মুষলধারে বৃষ্টি হয়ে চলেছে। জানলা দিয়ে হাত বাড়িয়ে দিলাম। বৃষ্টির গুঁড়ো এখন আমার সারা গায়ে।
আয়নার সামনে এসে দাঁড়ালাম। আমাকে কি চেনা যাচ্ছে? মনে হচ্ছে কি আমি কোনো বেণুফুলের পাখি? সারাটা সকাল উড়ে উড়ে গভীর রাতে বাসায় ফিরে মনে হচ্ছে, এখন আমার খিদে পেয়েছে। কিন্তু সমতলের কোনো গাছ নয়। এখানের কাটাছেঁড়ার জন্যে পর্যাপ্ত ছুরি কাঁচি আমার কাছে নেই। আমি এখন পাহাড় প্রদেশের যাত্রী। উড়ে যাব বলেই আমার দেহের সবটুকু হাওয়া ভাসিয়ে দিলাম আকাশপথের উদ্দেশে।
মতামত ও বানানবিধি লেখকের ব্যক্তিগত
Tags: আকাশপথের উদ্দেশে, গল্প, হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়
email:galpersamay@gmail.com
মতামত
আপনার মন্তব্য লিখুন
আপনার ইমেল গোপনীয় থাকবে।