চতুর্দিকে গড়াগড় উঁচু হয়ে আছে পাঁচিল, শুধু পুবপানে সূর্য ওঠার জায়গাটা শূন্য করে দিতে অল্প ইরেজারের কাজ একদম কাঁটায় মাপা। ওই ফাঁক দিয়ে সে বাইরে যায় না কখনো, কুকুর এক্তিয়ার মানে। প্রায় এক বর্গমাইল তার সাম্রাজ্য। চৌকো জমিখানার ঠিক মধ্যে তার বাংলো। যার পাথরের মেঝে, কাচের জানালা, মসৃণ ছাদে ঝুলছে ঝাড়বাতি। জন্মাবধি সে এখানেই।
তার বাড়িটার নাম মহল। এর ডাইনে সূর্য ওঠে এবং বাঁয়ে ওঠে চাঁদ। তবে একটাই মুশকিল আগে সে রাত জাগত, দিনের বেলা যথেচ্ছ ঘুমিয়ে নিত। গতমাসে তাঁর আগমন না হওয়া ইস্তক সে দিনে ঘুম ভুলেই গেছে। শুধু তাই নয়, সবটাই ভোজবাজিতে অন্য চেহারা নিচ্ছে । তার খাবার বরাদ্দ আগের আদ্ধেকও নেই। এসেছে শাড়িপরা মানুষ। নতুন কর্তা তাঁর চেয়ে দেখতে দুস্তর ভিন্নরকম, মাত্র কাঁচা পাকা গোঁফটা তাঁর আদল বুঝিয়ে দেয়, মুখ দেখলে মনে হবে বয়েস কম অথচ ডেঁপো।
গত দুদিন চাট্টি শুধু ভাত দিয়েছিল, এমনই হেনস্থা ! আজ বাধ্য হয়ে ওপরে উঠে এসেছে। সামনেই ডাইনিং টেবল্, উঃ কত মাংসের পদ। আর হ্যাঁ একদিকের চেয়ার একটু টানা-
দুপায়ে যেমন উঁচু হয়ে দেখে বেড়াচ্চে এখন তেমনই উঁচু হ’ল ও । কাঁচাপাকা গোঁফ আর চশমা টেবিলে পড়ে আছে। চটপট প্লেট টানার শব্দ, ছুরি- কাঁটার টিংটাং ,খুশির উদ্গার। বেয়ারারা ছুটে এসেছে। এসে তো তারা থ। তারা দেখল ছোটোবাবু উচ্ছিষ্ট ভরা প্লেট থেকে হাড় তুলে কড়মড়িয়ে চিবোচ্ছেন, চোখদুটি বুজে গেছে। চক্ষু বিস্ফারিত করে দুপুরবেলার সূর্য যেন উঠে এসে তাই দেখছেন। আকাশ পর্যন্ত কতোই না সুস্বাদ।
Tags: গল্প, তন্বী মুখোপাধ্যায়, স্বাদ
email:galpersamay@gmail.com
মতামত
আপনার মন্তব্য লিখুন
আপনার ইমেল গোপনীয় থাকবে।