বাইরের অন্ধকার বারান্দায় রেলিংয়ে কপোল ঠেকিয়ে নির্বাক, নিশ্চুপ পাথর হয়ে দাঁড়িয়ে আছে অনন্যা। তার বাষ্প ভরা চোখের কোন থেকে গাল বেয়ে নামছে জমাট বাঁধা কষ্টের ফল্গু ধারা। বারান্দার এদিকটায় রাত্রির এক টুকরো কালো আকাশটাকে খুব ভালো করে দেখা যায়, আর দেখা যায় কাস্তের মতো টানানো এক-ফালি চাঁদ। নীচের ড্রয়িং রুম থেকে বাংলা সিরিয়ালের বিরতির মাঝে মাঝে গানের হালকা সুরে ভেসে আসছে। হয়তো’বা মা আর দিদুন তেল মুড়ি মাখিয়ে গল্প করতে করতে উপভোগ করছে বাংলা সিরিয়ালের অন্তহীন ক্লাইম্যাক্স।
বুকের মোচড়টা আর নিতে পারছে না অনন্যা।
“দিদি, অ্যাই দিদি, তুই এখানে দাঁড়িয়ে। আর আমি তোকে এ রুম, সে রুম করে কখন থেকে খুঁজে চলেছি জানিস। অনেকক্ষণ ধরে তোর রুমে ফোন রিং হয়ে যাচ্ছে। এই নে ধর, তিয়াসা-দি ফোন করেছে।”
“হ্যালো! হ্যাঁ বল.., কিছু বলছিলি?” দু’বার নাক টেনে, চোখ মুছে কানে মুঠোফোন ঠেকায় অনন্যা। তারপর হালকা ধমকের সুরে তুকাইকে বলে, “যা তো এখান থেকে।”
“অ্যাস্যাইন্মেন্ট করছিস, শুক্রবারে সবাই জমা দেবে বলছে তো। তারপর নাকি অভিরূপ স্যার থাকবে না। চার দিন সময় হাতে আছে রে, কি করে সব করি বলতো? তোর কত দূর এগোল রে।”
“করছি, এই একটু আধটু” নাক টানল আরও দুবার।
“ঠাণ্ডা টাণ্ডা লাগালি নাকি! আমারও কদিন আগে লেগেছিল বুঝলি। ওয়েদার চেঞ্জ হচ্ছে তো।”
“না তেমন কিছু না! তোর কতদূর হল। পিপিটি ফাইল রেডি করেছিস কিছু।”
“ধুর! আমি তোর কাছ থেকে নেব বলেই তো বিন্দাস বসে আছি। তুই থাকতে আমার আবার কিসের টেনশন!”
“আমার কিছুই হয়নি রে,” অনন্যার ধরা গলা।
“ঢপ মরিস না তো। তোর মত সিনসেয়ার মেয়ে না করলে আর কে করবে বল! বাই দ্যা ওয়ে তোদের প্রেম কেমন চলছে রে।”
এক ঝড়ের রাতে গাছ ভাঙার মতো করে মন ভাঙে অনন্যার। রেলিং-এর হাত ধরে বারান্দার ঠাণ্ডা মেঝেয় বসে পড়ে।
“তুমিও ক্যারিয়ার তৈরি করো, এইভাবে হাওয়ায় গা ভাসানো আমাদের আর শোভা পায় না, ইমোশন নিয়ে তো আর জগৎ চলে না।” অনি অর্থাৎ অনিন্দ্য দেড় বছর প্রেম করার পর হঠাৎ এই কথা বলছে! শুধু ফ্যালফ্যাল করে টানটান চোখে অনির দিকে চেয়েছিল অনন্যা।
“দেখো অনু” অনিন্দ্য অনন্যা কে অনু বলে ডাকে। “আমার কাঁধে এখন অনেক দায়িত্ব, এভাবে প্রেম করে সময় নষ্ট করা ঠিক নয়।”
“তুমি এটাকে নষ্ট-সময় বলছ অনি। তাছাড়া আমি কি তোমার ক্যারিয়ারের বাধা? এরকম নাই’বা বলতে পারতে অনি!”
“একসঙ্গে দুটো কাজ করা যায় না, সেটা বোঝার মত ম্যাচুরিটি হয়েছে নিশ্চয়ই এখন।”
অনন্যা কিছু বলতে যাচ্ছিল। পাশে মোটা, কালো গোঁফ-ওয়ালা ইউনিভার্সিটির সেন্ট্রাল ক্যান্টিনের ম্যানেজার সুজয়দা এসে বলল, “পাঠিয়ে দিচ্ছি, ফুল করে দেব, না হাফ? দারুণ বানিয়েছে কিন্তু আজ, সঙ্গে লেগ পিসও। পুরো জমে যাবে।”
অনিন্দ্য হাত ইশারায় নাকচ করে দেয়। সুজয়দার কোন দোষ ছিল না। সে জানত এই কাপলদ্বয়ের বিরিয়ানি ফেভারিট। শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ক্যান্টিনে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আরও চার পাঁচটা টেবিলে কাপলরা বসে আছে। আজকের দিনটাতে বড্ড অচেনা লাগছে অনন্যার এই অতি পরিচিত ক্যান্টিনটিকে। প্রতিদিন টিফিন আওয়ারে এক ঘণ্টা সময় কাটিয়ে যাই ওরা দুজন।
অনিন্দ্য হঠাৎ করে অনন্যার হাত ধরে বলল, “তুমি হয়তো আমাকে ভুল ভাবছ, ভাবছ কি করে আমি এমন কথা বলতে পারছি, আসলে কিছু করার নেই অনু।”
অনন্যা কিছু না বলে মাথা নিচু করল শুধু।
“ফাইনাল সেমিস্টার একমাসও বাকি নেই। আমাকে অনেক পড়তে হবে। বাবা বলে দিয়েছে, সেমিস্টার শেষ হবার সঙ্গে সঙ্গে কলকাতায় কম্পিটিটিভ পরীক্ষার কোচিং নিতে। আমিও তাই ভেবেছি।”
“আর আমি?” মাথা তুলে ঈষৎ ঠোঁট ফাঁক করে ভেজা গলায় বলেছিল অনন্যা। কথার উত্তর এড়িয়ে অনিন্দ্য শুধু বলেছিল, “তোমাকে এই কলাপাতি কালারের কুর্তিতে খুব ভালো লাগে। পারলে প্রত্যেক বছর নিজেই নিজেকে একটা উপহার দিও।”
কফির অর্ধেক শেষ করেই উঠে পড়ে অনিন্দ্য।
“দিদিভাই খাবে চলো, তোমার মা খাবার বেড়েছে, চলো।” অনন্যা মেঝে ছেড়ে উঠে দাঁড়াল।
“তুকাই, তোমাকে দু’দুবার ডেকে গেছে। বলল, তুমি নাকি অন্ধকারে একা একা বসে আছো। তাই তোমাকে ডাকতে এলাম।”
অন্ধকারে অনন্যার গালভরা একরাশ কষ্ট দেখতে পাইনি তো দিদুন? অনিন্দ্যর কথা বার বার মনে পড়ছে। চোখ মুছে কোন রকমে নিজেকে সামলে বলল, “কই ডাকেনি তো?”
“ডেকেছে, তুমি অন্য জগতে ছিলে, তাই হয়ত শুনতে পাওনি। চলো, নীচে চলো, তোমার বাবা বকবে তখন আবার।”
“আমার খিদে নেই দিদুন, তুমি যাও। আর তোমাকে সিঁড়ি ভেঙ্গে উঠতে কে বলেছে, তোমার না বাতের রোগ আছে।”
“এইতো! দিদিভাই আমাকে কত্ত ভালোবাসে। আর আমি সত্তর বছরের এই শরীরটাকে নিয়ে উপরে উঠে আসতে পারবো না!”
অনন্যা দিদুনকে জড়িয়ে ধরে ফোঁপাতে লাগলো। দিদুন অনন্যার মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে বলে, “ওই যে দূরে এক-ফালি চাঁদ দেখছ, ওই যে দূর আকাশে, ও-তো মাঝে মাঝে একা হয়ে যায়। তারারা মাঝে মাঝে ওর কাছে ছুটে আসে আবার কোথায় হারিয়ে যায়। এভাবেই তো জীবন দিদিভাই, ভেঙ্গে পড়লে চলবে? যা হয়েছে দেখবে, আপনাআপনি সব ঠিক হয়ে যাবে।”
“দিদুন তোমার দাদামশায়ের কথা, তোমার মা-বাবার স্মৃতি মনে পড়ে না, কষ্ট হয়না তাদের জন্য?”
“তুমি আছো, দাদুভাই আছে, আমার আবার কষ্ট কিসের? তবে মনে পড়লে কষ্ট হয় কিন্তু তোমাদের দেখে সব ভুলে যায়। এবার চলো, না হলে তোমার বাবা ঝাঁজিয়ে উঠবে তখন আমি আবার সামাল দিতে পারব না।”
বাবার সামনে ডাইনিং টেবিলে বসে একটুকরো রুটি মুখে নিয়ে স্মৃতির মলিন পৃষ্ঠা এক-এক করে উল্টে যায় অনন্যার—
“এই শোনো, তোমার নাম কি অনিন্দ্য? ওদিকে একবার চলো তো।” পাঞ্জাবি পরা, টল ফিগার, গোটা গালে চাপ দাড়ি, উজ্জ্বল শ্যাম বর্ণের ছেলেটাকে ইতস্তত করে বলেছিল অনন্যা।
“হ্যাঁ, আমি অনিন্দ্য, কেন বলত! আর একটু বাদে আমার নাম এনাউন্স করবে, আমি এখন যেতে পারবো না কোথাও।”
ডিপার্টমেন্টাল ফ্রেসার্স এর দিন গোটা ডিপার্টমেন্ট রঙ্গিন সাজে সেজে উঠেছে। বেশিরভাগ ছেলেই পাঞ্জাবি এবং মেয়েরা সবাই শাড়ি পরে এসেছে। মঞ্চের পর্দায় নীল কাপড়ের উপরে সাদা রঙের থার্মোকল কেটে বাংলা অক্ষরে লেখা ‘নবীন বরণ ২০২১’ আর তার নীচে সোনালী অক্ষরে লেখা ‘গণিত বিভাগ’ এবং একেবারে ডানদিকে জ্বলজ্বল করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো। মঞ্চের চারিধার নানান ফুলে ভরে উঠেছে। ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র ছেলে-মেয়েরা গতকাল অনেক রাত অবধি এসব সাজিয়েছে। মঞ্চের পিছনের দিকে স্যাররা সারিবদ্ধ হয়ে বসে আছেন।
“আরে, চলো না, এখনি চলে আসবে, তুমি কবিতা আবৃত্তি করবে তো? সেটা তো একটু দেরি হবে। ওই, ওই দিকটা চলো, আমার বান্ধবী অপেক্ষা করছে।”
অনিন্দ্য আর তিয়াসার প্রেম পুরো জমে গিয়েছিল ফ্রেসার্স-এর দিন থেকে। তিয়াসা অনন্যার কলেজ সময় থেকেই ফ্রেন্ড। তারপর একই ইউনিভার্সিটিতে চান্স পায় ওরা দুজন।
“এত লেট করলে যে!” অনিন্দ্য তিয়াসা কে প্রশ্ন করে। অন্যান্য ও একই প্রশ্ন করতে গিয়ে থেমে গেল।
“আর বোলো না, কাল অনেক রাত অবধি ক্যান্ডি-ক্রাশ খেলেছি, তাই ঘুম ভাঙতে লেট হল। একটা টাইম কিলার গেম বটে!”
ওরা তিনজনেই ভোরবেলাতে হাঁটতে বের হত। তিনজনেই তিন হোস্টেল থেকে বেরিয়ে তারাবাগের মোড়ে ঠিক ৫ টায় বিধানচন্দ্র রায়ের মূর্তির পাদদেশে মিলিত হতো। এ সময় অনেকেই হাঁটতে বের হয়।
তিয়াসা এবং অন্যান্য দুজনেই ভোরের কুয়াশার টাকে মুঠো-বন্দী করে ধরতে চাইত। ওরা তিনজনই হেঁটে চলতে ইউনিভার্সিটির মেইন গেটের দিকে। তিয়াসা ছিল টলমলে প্রশান্ত মহাসাগর আর অনন্যা ছিল চাপা হিমালয়।
অন্যান্যর থেকে তাদের প্রেমের ব্যাপারগুলো লুকাতে চাইত অনিন্দ্য । তিয়াসা ব্যাপারটা বুঝতে পেরে বলেছিল, “আরে, অনন্যার কাছে লুকোবার কি আছে! ও তো আমার সেই কলেজ থেকেই ফ্রেন্ড।”
“সেই-ই কলেজ থেকে। মাত্র তিন বছর পেরিয়ে চার বছর পড়েছে আর তুমি বলছ সেই-ই!”
“সেই-ই বলবো না তো, কি বলবো? তোমার সাথে সবে দু’মাসের সম্পর্ক। তাহলে এটাকে কি বলবো?” তিয়াসা সারা মুখে কুয়াশা মাখানো হাসি লেপ্টে অনিন্দ্যর হাতে হাল্কা চাপড় দিয়ে বলেছিল।
“কি তখন থেকে খাবার থালায় আঁকিবুঁকি করে যাচ্ছিস, তোর ভাই কখন খেয়ে উঠে গেছে। খাবার ইচ্ছা না আছে তো উঠে যা।” বাবার ধমকে খাবারে ফেরে অনন্যা।
অনন্যা তার বাবাকে যমের মতো ভয় করে। বাবার দিকে একবার মাথা তুলে তাকিয়ে একটু রুটি মুখে নিয়ে বলে, “এইতো খাচ্ছি।”
“আহ্! খাবার সময় না বকলেই নয় ছেলে-মেয়েদের।” দিদুন বাবাকে উদ্দেশ্য করে আরও বলে, “এই তো দুদিন আগে মেয়েটা হোস্টেল থেকে ফিরল, আর তুই শুরু করে দিলি।”
খাবার শেষে বারান্দায় অন্ধকার জায়গায় এক-ফালি চাঁদের দিকে রেলিং-এ মাথা ঠেকিয়ে আবার দাঁড়ায় অনন্যা। হু-হু করে হেমন্তের শীতল হাওয়া শরীরের দুপাশ কেটে বেরিয়ে যাচ্ছে। মনের ছাই চাপা কষ্টের ভিতরে পবনদেব প্রবেশ করতে পারলে হয়তো বিরহ বেদনা একটু প্রশমিত হত!
অনন্যা আবার চলে যায় নস্টালজিক সময়ে…
“এই অনন্য, তুমি বোঝাও না তোমার বেস্টিকে, আমার সাথে কেন এমন করছে ও।”
“আমি কি করে জানব? তোমার প্রেমিকা তুমিই জান! আমি বাবা তোমাদের রাগ অভিমানের মধ্যে নেই।”
“এরকম বোলো না! আমি জানি, তোমাদের দুজনের তো ‘হার্ট অ্যান্ড সৌল’ সম্পর্ক। তুমি কিছু একটা করো। ও আমাকে ফোন কল, মেসেঞ্জার সব জায়গায় ব্লক করে দিয়েছে।”
তিয়াসাকে খুব বুঝিয়েছিল অনন্যা। একদম শামুক বোঝার মত। কিন্তু তিয়াসা স্রেফ বলে দিয়েছিল, “আমার ভালো লাগছে না তাই আমি আর এগোবো না। কোন কারণ নেই।”
অনিন্দ্য এবং তিয়াসার প্রেমের গাড়ি হঠাৎ করেই থেমে গিয়েছিল। অনন্যা জানত, অনিন্দ্যর এতে কোন দোষ ছিল না কিন্তু তিয়াসা বরাবরই এরকম।
ব্রেকাপের পর থেকে অনিন্দ্য কেমন উদভ্রান্তের মতো দেখাত। তার চোখে মুখে হতাশার ছাপ লেপ্টে লাগত। অনন্যা লক্ষ্য করত, ডিপার্টমেন্টে ক্লাস শেষে তিয়াসার সাথে কথা বলার জন্য খুব চেষ্টা করে অনিন্দ্য। কিন্তু তিয়াসা ‘ডোন্ট কেয়ার’ ভাব নিয়ে এড়িয়ে চলত সবসময়।
অনন্যা ভেবেছিল, এই সময় অনিন্দ্য কে একটু সঙ্গ দেওয়া দরকার, তা নাহলে সে আরোও ভেঙে পরবে।
“কি হল, মন খারাপ! চল, সেন্ট্রাল ক্যান্টিনে গিয়ে কফি খেয়ে আসি।” টিফিন আওয়ারে পিছনের বেঞ্চে একা একা বসে থাকতে দেখে অনিন্দ্যকে প্রস্তাব দেয় অনন্যা।
ধীরে ধীরে কিভাবে তিয়াসার প্রতি আকর্ষণ, সেই প্রেম কিভাবে অনন্যাতে শিফট হয়েছিল বুঝতে পারেনি অনিন্দ্য। অনিন্দ্যর পুরুষত্ব, সপ্রতিভ আচরণ, মেয়েদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন প্রথম থেকেই ভাল লাগত অনন্যার। তবে এ ভাবে একটা নতুন সম্পর্কের রূপ নেবে সেও বুঝতে পারেনি!
আজ চারদিন কোন যোগাযোগ করেনি অনিন্দ্য। অনন্যার মনের ক্যানভাসে ভেসে উঠতে থাকে ফেলে আসা দেড় বছর সম্পর্কের ইতিবৃত্ত। সেই ক্যান্টিন, সেই হাত ধরে বড় বড় গাছের ভিতর দিয়ে ডিপার্টমেন্ট যাওয়া, সেই শান বাঁধানো বর্গক্ষেত্র আকৃতির পুকুরে পাড়ে বসে অনিন্দ্যের দৃঢ় কণ্ঠে স্বরচিত প্রেমের কবিতা… ‘বাতাসে আজও বাজে তোমার গান…’
রেলিং থেকে মাথা তোলে অনন্যা। জমাট বাঁধা অন্ধকারে দূর আকাশের দিকে তাকায়। হয়তো, দিদুনের কথা মত আপনা-আপনি সব ঠিক হয়ে যাবে, হয়তো’বা না। আবার হয়তো ওই এক-ফালি চাঁদ টার মত একা!
Tags: এক-ফালি চাঁদ, গল্প, তন্ময় নন্দী
email:galpersamay@gmail.com
মতামত
আপনার মন্তব্য লিখুন
আপনার ইমেল গোপনীয় থাকবে।