– কি রে, পরীক্ষা কেমন হল? লকডাউনের এতদিন পর স্কুলে বসে পরীক্ষা দিলি — স্কুল ফেরত মেয়ের দিকে প্রশ্ন ছুঁড়লেন রুচিরা।
– না, মা, অ্যাকচুয়েলি খুব প্রবলেম হচ্ছিল সবার। সবাই তো…অর্ধেক কথা থামিয়ে তার বাপির ঘরের দিকে তাকিয়ে ইশারায় মাকে কাছে ডেকে আদুরে গলায় জড়িয়ে নিচু স্বরে প্রশ্ন করল, – বাপি কোথায়? বাথরুমে? তারপর আরও নীচুতে বলল, – বাপি ঠিকই বলেছিল খালি ওপেনবুক এক্সাম দিতে ইচ্ছা করছিল।
-জানি তো এটাই হবে। বাথরুমের দরজা খুলতে খুলতে বললেন অধ্যাপক আকাশনীল রায়।
-বা-আ-পি-ই-ই বলে ছুটে গিয়ে বাপের বক্ষলগ্না হল আহ্লাদি মেয়ে পৃথা।
রান্নাঘরে খাবার গরম করতে করতে রুচিরা জানতে চাইলেন, – প্রজেক্টে কি দিল রে?
-দিয়েছে। শুনলে না মাথাগরম হয়ে যাবে – অনলাইন বনাম অফলাইন শিক্ষাব্যবস্থা ও ছাত্রসমাজ। এটা একটা টপিক হল বল বাপি?
-কেন নয়? যা ফেস করছিস তাই বল্।
-ধুস্। বড্ড চাপের ব্যাপার। যাকগে আজকেই জিজ্ঞেস করলাম, কালকেই তো জন্মদিন। দাড়িবুড়োর কোনও ফাটাফাটি লাইন হবে এই বিষয়ের ওপর যেটা ইউস করব প্রোজেক্টের শুরুতে বা মাথায়।
-আবার দাড়িবুড়ো! কান পাত এখনই চলছে বাইরের মাইকে। চোখকান খোলা রাখবি নিজেই খুঁজে নিতে পারবি।
বাপের কথা শুনে কান পাতল মেয়ে পৃথা। পাড়ার রক্তদান শিবিরের মাইক তখন গাইছে – ‘চোখের আলোয় দেখেছিলেম চোখের বাহিরে।’ উত্তেজনায় মেয়ের চোখ দুটো গোল হয়ে গেল। আকাশনীল মিটি মিটি হাসছেন।আল্লাদে আটখানা মেয়ে পৃথা, চেঁচিয়ে উঠল – সত্যি বাপি তুমি না জাস্ট অসাধারণ।
– উঁহু, আমি না উনি।
-ঠিক। ভাবা যায় না কিভাবে মিলিয়ে দিলেন।
-কি বলতো দেখি – প্রশ্ন ছুঁড়লেন আকাশনীল।
-কেন?
-কাছে দূরের তফাৎটা।
-ইয়েস। মেয়ের পিঠ চাপড়ে উঠে দাঁড়ালেন আকাশনীল, – কি বলবি এই দেখাকে? অনলাইন না অফ লাইন?
– না না বাপি,ইউ আর রাইট, দাড়িবুড়ো ইজ আওয়ার লাইফলাইন।আর তাই অলটাইম বাইলাইন।
Tags: গল্প, দেবাশিস মজুমদার, বাইলাইন
email:galpersamay@gmail.com
Tridibesh Bandyopadhyay on May 27, 2023
ভালো লাগলো। রবীন্দ্রনাথের লাইনের সুন্দর ব্যবহার।
মতামত
আপনার মন্তব্য লিখুন
আপনার ইমেল গোপনীয় থাকবে।