আকাশটা মেঘে মেঘে ভারাক্রান্ত । কয়েকদিন ধরে মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে । এখানে ওখানে জল জমে রাস্তা, অলিগলিগুলি এখনো জলময় । এখন বৃষ্টি পড়ছে,তবে তীব্রতা আগের থেকে কম। ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বৃষ্টি দেখছেন অখিলেশ বাবু। উদ্বিগ্ন।এরকম বৃষ্টিতে ছাতা মাথায় ছেলেটা ছলাৎ ছলাৎ করে নোংরা ঘোলা জলে সন্তর্পণে পা ফেলে ফেলে মোড়ের মাথার ফার্মেসিতে গেছে প্রায় এক ঘন্টা হয়ে গেলো । মাঝে সাঝে দু-চারটে সাইকেল বা মোটরবাইকে করে আপাদমস্তক বর্ষাতিতে ঢাকা সওয়াররা যাচ্ছে বাঁদিকে-ডানদিকে । কদাচিৎ দু’একটা ছাতা মাথায় দেওয়া লোককে চোখে পড়ছে । কিন্তু নাহ,কাছে আসতেই তারা অচেনা মুখের আদলে রূপান্তরিত হয়ে যাচ্ছে ।
গভীর ভাবনার মধ্যে অখিলেশ এমন ডুবেছিলেন যে ঘর থেকে একটা চাপা গোঙানির শব্দ আসছে, প্রথমে তা তিনি একদমই খেয়াল করেননি।পরে ঘর থেকে সজোরে মেঝেতে কিছু একটা পড়বার শব্দ শুনে তিনি সচেতন হলেন।নিশ্চয়ই স্টিলের কোনো গ্লাস ঝোড়ো হাওয়াতে মেঝেতে পড়ে …
দ্রুতপদে ঘরে আসবার চেষ্টা করলেন অখিলেশ।আর্থ্রাইটিসের পেশেন্ট।জোরে হাঁটা-চলা করতে গেলে ব্যাথা পান। এখন ব্যাথা অগ্রাহ্য করেই এগিয়ে গেলেন বেডরুমের দিকে।
বেডরুমে ঢুকেই আঁতকে উঠলেন অখিলেশ। মন্দিরা কয়েকদিনের জ্বরে শয্যাশায়ী। তবে বেঁচে গেছেন যে কোভিড টেস্ট নেগেটিভ। ডাক্তার বলেছেন, সিজন চেঞ্জের জ্বর । শুশ্রূষা করতে গিয়ে বছর একষট্টির অখিলেশ কিছুটা কাহিল।একমাত্র ছেলে অভিরূপ একটা আই.টি কোম্পানিতে কাজ করে। বাবা-মার সঙ্গে তীব্র মতবিরোধ, বান্ধবী প্রত্যুষাকে নিয়ে। মন্দিরা বা অখিলেশ, কারোরই প্রত্যুষাকে পছন্দ নয়। নিত্য অশান্তি,তর্কাতর্কি এই নিয়ে। অভিরূপ জানিয়েছে, সে আর বাবা-মার সঙ্গে থাকতে চায় না।বরানগরে একটা ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছে।রেজেস্ট্রি ম্যারেজ করে প্রত্যুষাকে নিয়ে পরের মাসেই চলে যাবে ফ্ল্যাটে। মন্দিরা নিঃশব্দে চোখের জল ফেলেন।অখিলেশের বুক ভারাক্রান্ত।ছেলে চলে গেলে তারা দুজনে খুব একা হয়ে যাবেন…
মন্দিরার বিছানাটা ফাঁকা । চাদরটা লন্ডভন্ড। মেঝের ওপর একটা স্টিলের গ্লাস গড়াগড়ি খাচ্ছে, জল ছিটকে পড়েছে মার্বেলের চকচকে নকশায় । ঘরের চারপাশটা ভালো করে দেখলেন অখিলেশ। মন্দিরা কোথাও নেই। “মন্দিরা ! কোথায় গেলে তুমি ? মন্দিরা!” দিশাহারা হয়ে খুঁজে বেড়ালেন এ ঘর, ও ঘর। নিচের তলায় এসে দেখলেন সদর দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করা।মন্দিরা এই দুর্যোগে, দুর্বল শরীর নিয়ে কোথায় গেল?অখিলেশকে জানালো না ই বা কেন ?অখিলেশ ফোনটা রেখেছিলেন পাঞ্জাবির বুক পকেটে।হঠাৎ খেয়াল করলেন,সেটা ভাইব্রেশন হয়ে চলেছে।তড়িঘড়ি ফোনটা বের করে কানে দিয়ে বলে উঠলেন , “হ্যালো…” ।
চোখদুটো বিস্ফারিত হয়ে বেরিয়ে আসছে অখিলেশের কি শুনছেন বিশ্বাস করতে পারছেন না । প্রত্যুষা ফোন করেছে। এদিকে ঘরে কোথাও মন্দিরাকে খুঁজে পাচ্ছেন না, তার ওপর ফোনে প্রত্যুষা কি বলছে!। সবমিলিয়ে তাঁর মাথাটা ভোঁভোঁ করছে । ফোন কেটে ধপ করে খাটে বসে পড়লেন অখিলেশ। কি করবেন, বুঝে উঠতে পারছেন না। আলমারি খুলে বর্ষাতিটা বের করলেন, পাজামার তলাটা গুটিয়ে নিলেন প্রায় হাঁটু পর্যন্ত । সদর দরজার পশে রাখা স্ট্যান্ড থেকে ছাতাটা নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন রাস্তায়। তখন বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। মাঝে মাঝে ঝলসে যাচ্ছে চোখ। পরক্ষণেই ঘুটঘুটে অন্ধকার দেখছেন সব।কড়কড় করে বাজে পড়ল কাছে পিঠে কোথাও। কানে যেন তালা লেগে গেল অখিলেশ বাবুর। ইষ্টনাম জপ করতে করতে হেঁটে চলেছেন। হাঁটু অবধি জল । কুলকুল করে দুর্গন্ধময় জল বয়ে যাচ্ছে পায়ের নিচ দিয়ে । বৃষ্টির ঠান্ডা ঝাপ্টা বর্ষাতি সম্পূর্ণভাবে আটকাতে পারছে না, তাঁর সমগ্র শরীর কাঁপছে বাঁশপাতার মতন । ধীরে ধীরে টলমলে পা ফেলে খোলা ম্যানহোলগুলো এড়িয়ে এগিয়ে চললেন ধীর গতিতে । তাকে পৌঁছতে হবে প্রত্যুষার কাছে । দশ মিনিট দূরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে রয়েছে প্রত্যুষা,অখিলেশের চেয়ে কিছু কম বিচলিত নয় সেও । কিছুক্ষণ আগে অভিরূপ কল করেছিল তাকে । নেটওয়ার্ক ভাল ছিল না, কথাগুলো খুব কেটে কেটে আসছিলো । আকাশপাতাল প্রায় কিছুই বুঝতে পারেনি প্রত্যুষা।শুধু শুনতে পেয়েছিলো, “বাবলুদের দোকান…অ্যাক্সিডেন্ট… তাড়াতাড়ি এসো…” । বৃষ্টির দিন কোথাও না বেরিয়ে কফির কাপ হাতে বৃষ্টির সৌন্দর্য উপভোগ করছিলো প্রত্যুষা। ঠিক সেসময় তার কানে বজ্রপাতটা আসে ঠিক এভাবেই । বাবলুদের দোকানের সামনে এসে দাঁড়িয়ে আছে সে । অখিলেশ প্রত্যুষার স্বভাবটা ভাল করেই জানেন, সে একটা ক্যায়স করে লোক জড়ো করবেই এবং যেকোনো ব্যাপারের ওপর প্রতিক্রিয়া করার ক্ষেত্রে তার জুড়ি নেই । এইসব কথা ভাবতে ভাবতে গলির মুখে এসে দেখলেন একটা রিকশা । এই দুর্যোগের দিনেও সে রিক্সা নিয়ে বেরিয়েছে দুটো বাড়তি পয়সার জন্য । “ও ভাই! যাবে ? খুব আর্জেন্ট!”, ডাক ছাড়লেন অখিলেশ বাবু । গলাটা কেমন ফ্যাঁসফেঁসে শোনাল। লোকটা শুনতে পেলো কিনা কে জানে ! এগিয়ে যাচ্ছিল রাস্তার জল কেটে মোড়ের দিকে । হাত দেখাশেন অখিলেশ বাবু । রিকশার গতিটা হ্রাস পেয়েছে, বোধহয় থামছে। সত্যিই থামলো এবার । রিকশার কাছে এসে, উঠে নির্দেশ দিলেন কোনদিকে যেতে হবে। রিকশাওয়ালা পঞ্চাশ টাকা দাবি করল । পকেট থেকে একটা নতুন নোট বের করে বিনা বাক্যব্যায়ে গুঁজে দিলেন তার হাতে। সে প্যাডল ঘোরাতে শুরু করল, তরতর করে এগিয়ে চলল গন্তব্যের দিকে। এমন সময় পাশ দিকে একটা গাড়ি যেতে গিয়ে জলের ছাঁটে খানিকটা ভিজিয়ে দিল অখিলেশকে । রিক্সার পর্দা ফেলে দিয়ে জবুথবু হয়ে বসে থাকলেন তিনি ।
বাবলুদের দোকানের সামনেই একটা জটলা , কিছু লোক এখনো ইতস্তত দাঁড়িয়ে আছে কালভার্টের সামনে । উত্তেজিত হয়ে কথা বলছে তারা নিজেদের মধ্যে। অখিলেশ বাবুর বুঝতে এতটুকুও অসুবিধা হলনা ,জটলাটা কিসের। তবে
তিনি কোথাও প্রত্যুষাকে দেখতে পেলেন না । ফোনটা বের করে নম্বর ডায়াল করলেন, একবার পুরো রিং হয়ে কেটে গেলো, ধরল না । অগত্যা তিনি ওখানে দাঁড়িয়ে থাকা লোকদের দ্বারস্থ হলেন।
জিজ্ঞাসাবাদ করলেন ঘটনাটা জানার আশায়। পুরো ব্যাপারটা আস্তে আস্তে মিলে যেতে লাগলো অখিলেশের কাছে ।
প্রত্যুষা অখিলেশ বাবুর আসার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকে নি । বেশ কিছু লোকজন নিয়ে সে প্রায় উড়েই চলে এসেছে এখানে, এই বেসরকারি হাসপাতালে । অভিরূপের গুরুতর অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে। বাঁ পায়ে মেজর ফ্র্যাকচার । মায়ের ওষুধ কিনে সে ফিরছিলো একটা শর্টকাট পথ দিয়ে । বাবলুদের দোকানের পাশে একটা বিরিয়ানি হোটেল খুলেছে, সেটার পেছন দিক দিয়ে একটা সরু আঁকাবাঁকা গলি চলে গেছে অভিরূপদের পাড়ার দিকে । দুদিকে ঘাস, আগাছা, পুরোনো কিছু বাড়ির পাঁচিল । বাড়িগুলোতে কেউ থাকে না। শোনা যাচ্ছে এইখানে পুরোনো বাড়িগুলো ভেঙে প্রমোটররা বড় বড় অ্যাপার্টমেন্ট তুলবে । মাঝে সাঝে এখানে মাদক ব্যবসায়ীদের আনাগোনা বাড়ে । পুলিশের নজরে বেশ কিছুদিন ধরেই আছে গলিটা । সেই পথ ধরে আসবার সময় একটা মোটরবাইক প্রবল বেগে তাকে আঘাত করে, বেরিয়ে চলে যায়,জোরে হর্ন বাজাতে বাজাতে বর্ষণ মুখর আবহাওয়ার ছন্দ নিমেষে খানখান করে দিয়ে । সম্ভবত ইঞ্জিনের অশ্বশক্তি খুব বেশি ছিল, জলের ভেতর দিয়েও সশব্দে ওরকম বেগে ছুটে আসছিলো তার দিকে । ধাক্কা লাগবার পরেও গতিবেগ হ্রাস পায়নি । পড়ে গিয়ে কাতরাতে কাতরাতে অভিরূপ দু-তিনটে নম্বর ডায়াল করে । প্রচন্ড ব্যথায় প্রথমেই তার মায়ের মুখটা মনে পড়ে।ওই গলিতে আছড়ে পড়ে তার বুক পর্যন্ত ডুবে গেছিলো মাটিমাখা দূষিত জলে। সেখান থেকে কে তাকে নিয়ে এসে হসপিটালে অ্যাডমিট করিয়েছে সেটা এখনো স্পষ্ট করে জানতে পারে নি সে।
মোটামুটি দশ-বারো মিনিট পর অখিশেশবাবু কয়েকজন লোক নিয়ে উপস্থিত হন হাসপাতালে। হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা দু-একজন তাঁকে জানায় এমারজেন্সিতে অ্যাডমিট করা হয়েছে অভিরূপকে।এমারজেন্সি রুমে একটা বেডে শুয়ে আছে অভিরূপ। ।মাথার কাছে দাঁড়িয়ে প্রত্যুষা। ডাক্তারের সঙ্গে কথা বললেন অখিলেশ বাবু ।ডাক্তার পুরো ব্যাপারটা ভালোভাব বুঝিয়ে দিলেন অখিলেশকে, “দেখুন আপনার ছেলের একটা সাংঘাতিক দুর্ঘটনা ঘটেছে । ওর ডান পায়ের থাইবোন অর্থাৎ ফিমারে ফ্র্যাকচার হয়েছে, খুবই আনফর্চুনেট। আজ ওর পায়ে প্লেট ও রড বসানো হবে ওপেন রিডাকশন কাম ইন্টারনাল ফিক্সেশন সার্জারি করে । এটার রিকভারি টাইম মিনিমাম ৬ মাস । আজকেই ওটি করা হবে সন্ধ্যার দিকে” সব শুনে আরো উদ্বিগ্ন হয়ে পড়লেন অখিলেশ বাবু ।এর মধ্যেই একবার ধন্যবাদ জানালেন প্রত্যুষাকে ঠিক সময়ে অভিরূপকে হাসপাতালে নিয়ে আসবার জন্য। প্রত্যুষা কিছু না বলে করিডোরের দিকে ইঙ্গিত করলো।প্রত্যুষার আঙুল নির্দেশিত দিক বরাবর তাকালেন অখিলেশ । মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে চেয়ে রইলেন সেই দিকে । নিজের চোখকে যেন বিশ্বাস করতে পারছেন না তিনি । গটগট করে হেঁটে অগ্রসর হলেন সেই দিকে । মুখে নিজের অজান্তেই ফুটে উঠলো এক চিলতে হাসি ।
এক ভদ্রমহিলা বসে রয়েছেন কাঠের বেঞ্চিতে হেলান দিয়ে । চোখদুটো বোজা ।দুহাত জোড় করে রাখা । পাশে এসে আস্তে করে বসলেন অখিলেশ । আজ আউটডোরে ভিড়টা একটু কম অন্যদিনের তুলনায়। আস্তে করে নিজের পকেট থেকে রুমাল বের করে ডান হাতটা মুছলেন । তারপর হাত রাখলেন ভদ্রমহিলার মাথায় । জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে তার । ভদ্রমহিলা চোখ খুলে তাকালেন, কিছু বলবার জন্য উদ্যত হলেন । ঠোঁটের কাছে তর্জনী এনে তাকে থামিয়ে দিলেন অখিলেশবাবু। এখন তাঁর উৎকণ্ঠা সম্পূর্ণভাবে প্রশমন হয়েছে।
“ওষুধটা খেয়ে নিয়েছেন তো মা?” কাছে এসে দাঁড়িয়েছে প্রত্যুষা।
প্রশান্তিময় একটা জ্যোতি যেন ছড়িয়ে গেল ভদ্রমহিলার মুখে। আকাশটা একটু পরিষ্কার হতে আরম্ভ করেছে । মাথার কাছে জানালা দিয়ে আলোর আনাগোনা বাড়ছে, ঘরটা আস্তে আস্তে উজ্জ্বল হয়ে উঠছে । অখিলেশের বয়স যেন এক লাফে তিরিশ বছর কমে গেছে, তিনি দেখতে পাচ্ছেন তাঁর দেহের চামড়ার কুঁচকানো ভাবটা আর নেই, পাঞ্জাবিটা আবার নতুন লাগছে, যেন সদ্য ইস্ত্রি করে পরেছেন, শরীরটা অনেক হালকা লাগছে, উদরের অতিরিক্ত মেদ একদম উধাও । পাশে বসে আছেন বছর সাতাশ-আঠাশের মন্দিরা, নীলরঙা শাড়ি, কপালে লালটিপ, গোলাপের পাপড়ির মত ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক, কোমর ছাপানো খোলা চুল ।কয়েকটা উড়ে এসে পড়ছে কপালে।অখিলেশের হৃদয়ে অদ্ভুতভাবে ফিরে এসেছে সেই উৎফুল্লতা, সেই অনুভূতি, যৌবনের পুষ্পোদগমের মুহূর্তের সেই অনাবিল আনন্দ… ধীরে ধীরে তিনি হাত ধরে দাঁড় করালেন মন্দিরাকে । আরেকপাশে ধরে আছে প্রত্যুষা। ধীরে ধীরে কথা বলতে শুরু করলেন মন্দিরা, “জানো ,অভি আমাকে ফোন করেছিল, ওর খুব কষ্ট হচ্ছিল। পা’য়ে প্রচন্ড আঘাত পেয়েছে মোটরবাইকের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে, শুনে আমি পড়িমরি করে …”,
মাঝপথে অখিলেশবাবু ও প্রত্যুষা দুজনেই তাঁর পিঠে হাত রেখে থামিয়ে দিলেন । এখন কথা বলবার সময় নয়, এখন অনুভব করার সময়।এখন তাঁরা তিনজন একসঙ্গে হাঁটছেন, তিনজনের একত্রিত হওয়ার সময় । ধীরে ধীরে তিনজনে সিঁড়ি দিয়ে নামতে লাগলেন । নিখিলেশবাবু স্ত্রীকে বাড়িতে পৌঁছে প্রত্যুষার হেফাজতে রেখে ফিরে আসবেন ছেলের কাছে । এই একদিনের দুর্ঘটনা কতদিনের মনোমালিন্য, ভুল বোঝাবুঝি, বিবাদ নিমেষে মুছিয়ে দিয়ে গেল !প্রত্যুষা মেয়েটিকে দুজনেই যা বুঝেছিলেন এতদিন, সে তা নয় । তারও রক্ত-মাংসের হৃদয় আছে।
এমারজেন্সি বেডে শুয়ে চোখে জল চলে আসে অভিরূপের । মায়ের কথা ভেবে তার মন আর্দ্র হয়ে ওঠে । প্রত্যুষাকে নিয়ে বাবা ও মার সাথে কতই না দুর্ব্যবহার করেছে সে । বেড থেকে ছাড়া পেলে মায়ের দুপায়ে প্রণাম করে ক্ষমা চেয়ে নেবে। গত কয়েক বছর বাবা-মাকে বিজয়াতেও প্রণাম করেনি ।
আকাশটা পরিস্কার হচ্ছে। সূর্যের কিরণ দীর্ঘায়িত হয়ে পৌঁছয় অখিলেশ বাবু,মন্দিরা ও প্রত্যুষার মুখে,চোখে। এক অনাস্বাদিত ভাল লাগার ।
[বানানবিধি ও মতামত লেখকের নিজস্ব]
Tags: অপরাজিতা ঘোষ, গল্প, সন্ধ্যা নামার আগে
email:galpersamay@gmail.com
মতামত
আপনার মন্তব্য লিখুন
আপনার ইমেল গোপনীয় থাকবে।