পুরানো সংখ্যা:

  1. লক্ষ্মী-সরস্বতী

    ।। ১।। আর বোলো না, কি দিনকাল পড়েছে ! তাই নয় তো কি? কাল রাতে কখন ফিরেছে জানো ? কখন ? সাড়ে বারোটা ! ভুতুর বাবা স্মোক করতে উঠেছিল, ব্যালকোনি থেকে দেখেছে। জানোই তো তিন দিন ওয়ার্ক ফ্রম হোম, তার উপর বিজি সিজন, মাঝে মাঝে রাতভর জাগতে হয় গো লোকটাকে ! হ্যাঁ। পুরুষ মানুষ হলে […]

  2. গল্পের সময়
    উন্নয়ন

    দুর্গাপুর থেকে বিষ্ণুপুর যাচ্ছিলাম সপরিবারে। সাত বছরের মেয়ের চোখে অপার বিস্ময়, অসীম আনন্দে চিকচিক করছে দুটো চোখ-মা দেখ কি সুন্দর গাছ, মা, কত সবুজ! মা কি পাখি ডাকল? প্রকৃতি প্রেমীর প্রশ্নবাণ থেকে বাঁচবার জন্য মেয়ের বাবা খবরের কাগজের আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে ফেলেছেন। আশা করছেন আড়াই ঘণ্টার পথ এই ভাবেই কাটবে। পুজোর আগমনী বার্তা জানিয়ে রাস্তার […]

  3. গল্পের সময়
    ছবি

    সুরবালার বয়স এখন প্রায় পঁচাশি। মোটামুটি নিজের সব কাজ সে নিজে করতে পারে। শুধু চুল আঁচড়াতে গেলে বড্ড হাত ব্যথা করে। হাতটা উঁচু করতে গেলেই যত বেদনা। ছেলে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়েছিল। ওষুধ মালিশ এসব করলে একটু উপশম হয় । সুরবালা বুঝে গেছেন যে এই বয়েসে এর বেশি কোন কিছু আশা করা ঠিক নয়। তিনি […]

  4. ডিলিট

    পাড়ার প্রদীপ বোধহয় পটাই হয়ে যাওয়ার পর থেকেই বদের গাছ হয়েছে একখানা। হেন দুষ্কর্ম নেই যে পটাই করে না। তোলাবাজি মস্তানি গুন্ডামি মেয়েদের টিজ করা সব কাজে সে সিদ্ধ হস্ত। এহেন পটাই কে সবাই এড়িয়ে চলবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু চলবো ভাবলেই তো আর চলা যায় না। বিশুর চায়ের দোকানের বেঞ্চিতে  ঘুম চক্ষুটি খুলেই ব্রাশে মাজন […]

  5. ভাষা-শহিদ কে জানত একটা কথা থেকেই এত ঝামেলার সৃষ্টি হবে। পটাই মেয়েটার সামনে দাঁড়িয়ে গদাইকে বলেছে - অত ভাবার কিছু নেই।ভাল লাগলে বলে দে-আই লেবু। ব্যস ওখানেই শুরু হল নতুন বিপ্লব।এলাকার দাপুটে নেতা ও কাউন্সিলর সত্যেনদাকে সঙ্গে নিয়ে পাড়ার মোড়েই ধরেছিল পটাইকে।দলের ছেলেদের সামনেই গরম নিতে আরম্ভ করল আর তারপরই শুরু হল মেয়ের বাবার ধমকানি - চেনো আমাকে? কানেকশন জানো? তোমার থোবড়া বিল্লা করে দিতে পারি একটা ফোনে। দমার ছেলে নয় পটাই। কাউন্সিলর সত্যেনদার সামনে ঝুঙ্কুর বাবাকে বলেই দিয়েছিল - দেখুন, আমাকে চমকে খুব একটা লাভ নেই।একটা উঠতি বয়সের ছেলে।তার লাবারকে আই লেবু বলেছে। তো তাতে হয়েছেটা কি! আর তো কিছুই করে নি! এতেই এত টেম্পো নেওয়ার কি আছে? ওর হয়ে আমি সরি বলে দিচ্ছি।হয়ে গেল। খেল খতম, পয়সা হজম।তবে এটাও জেনে জান আপনার মেয়েরও কিন্তু পিনিক মারার অভ্যেস আছে।খিল্লি ওই প্রথম করেছিল।তাই এত। ঝুঙ্কুর বাবা দাঁত কিড়মিড় করে বলেছে- পিনিক মারা দেখবে? ওকে।আই উইল গিভ ইউ অ্যা লেশেন। তুই থামবি - বলে সত্যেনদার ধমকে আপাতত চুপ করলেও পরে লোকটা চলে যেতেই সত্যনদার সামনেই বলেছে- বালের শিক্ষিত। সত্যেনদার পাল্টা ধমক - মাইণ্ড ইওর ল্যাংগুয়েজ পটাই।ভাষা ঠিক কর।নইলে তাড়াব দল থেকেই।এত নোংরা ল্যাংগুয়েজ।পার্টির ইমেজ বলে একটা কিছু আছে তো নাকি রে! একে তো ইভ টিজিং এর কেস ।তার ওপর স্ল্যাং ইউস।কি বলবে বল লোকে।তোদের এই স্ল্যাং ইউজটা কি বাই বার্থ? তোরা ভদ্র সমাজে বসবাসের অযোগ্য। দলে তো বটেই। পটাই চিৎকার করে বলল- ধূর বাল।ছাড়ো না।এই বালের ইংলিশ, যায় বোঝা না যায় পড়া।যারা বোঝে না,দের সামনে ঝেড়ে কি যে আনন্দ পাও কে জানে!এর চেয়ে বাল, হিন্দি অনেক ভাল। অন্তত বোঝা যায়। গদাই অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল পটাই এর দিকে পটাই চিৎকার করল- কি বাল? তাকিয়ে দেখছিস কি? থতমত খেয়ে গদাই বলল- দেখছি না শুনছি। কি শুনছিস ? বল না ? খেপে উঠেছে পটাই। তোমার মাতৃভাষা- নরম গলায় বলল উচ্চমাধ্যমিক ফেল গদাই।একটু থেমে আরও নরম গলায় বলল আসলে বুঝতে চাইছি হিন্দি আর তোমার মাতৃভাষার পার্থক্যটা। সত্যেনদা গদাই এর দিকে তাকিয়ে বললেন -'বোঝার কোন চেষ্টাই কোর না গদাই।মাথার সব চুল টেনেও বুঝতে পারবে না, আমিও পারিনি।’ গদাই নিষ্পাপ কণ্ঠে প্রশ্ন করল- কোন বিষয়টা? সত্যেনদার নির্লিপ্ত জবাব- এই একটা ভাষা শহীদ হয় কখন? অন্য ভাষার তাপে না ভুল ব্যবহারের চাপে? একটা সিগারেট ধরিয়ে লম্বা টান দিয়ে ছোট্ট ছোট্ট রিং ছাড়তে ছাড়তেই পটাই বলল- আমাদের এই মাতৃভাষার জোর জান? আমরা জানি।আমাদের সমাজ জানে।আমাদের এই ভাষার জোরেই কিভাবে ওই বালের শিক্ষিত সমাজের ইংলিশ মাড়ানো ধান্দাবাজদের চাপে বাপ বলাতে হয়। সত্যেনদার ধমক এল - ওই ছোটলোকের ভাষার কোন দাম নেই। চকিতে ঘুরে দাঁড়াল পটাই - শুধু দাম কখন বলতো? অন্যকে ভয় দেখাতে বা চমকাতে ? তাই না? যখন আমাদের ডাক পড়ে? মানে যখন আপনারা ডেকে নিয়ে যান, আরকি! থতমত খাওয়া সত্যেনদার দিকে তাকিয়ে গদাই নিষ্পাপ কণ্ঠে বলল - ঘাবড়াবেন না - কথা অমৃত সমান।কি বলেন? ……………………………. নিউ নর্মাল দেবাশিস মজুমদার আমাদের সাধনার ওপরে উঠলে দেখা যায়, উঁচু উঁচু পাহাড় ছোঁয়া মিনারখানা যেন আকাশে হেলান দেওয়া। হাঁটতে হাঁটতে কথা বলছিলেন ষাটোর্ধ সুখময় তপাদার। - বলেন কি? আপনি সাধন মার্গের মানুষ বুঝি নি তো। - না, না। সাধনা আমাদের ২০ জন অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মচারীদের আবাসন। সেই চারতলা আবাসনের মাথায় উঠলে পাশেই দেখা যেত গঙ্গা।এখন গঙ্গার পাশে খেলনা গম্বুজের মতন ত্রিশতলা নতুন কমপ্লেক্স নিউ কোলকাতা। - জানি একেবারে অত্যাধুনিক ব্যবস্থার অ্যাপার্টমেন্ট।আমার মেয়ের অফিসের বস্ বুক করেছেন একটি।মেয়েও বলছে আমাদের গঙ্গা দর্শনের পাঁচতলার ওপরের ফ্ল্যাটটি বিক্রি করে ওখানেই একটা বুক করতে।এক নিশ্বাসে কথাগুলো বলে থামলেন প্রাতঃভ্রমণকারী নির্বেদ রায়। - ওখানে সব ভাল। একটাই অসুবিধা, সবাই অচেনা। পনেরো কুড়ি হাজার মানুষ গোটা এলাকায়। পাঁচ হাজার মতন ফ্ল্যাট, ত্রিশতলা দশটা টাওয়ার।কে কার? এটাই বুঝি না।হয়ত বা বয়সটা বোঝায় না।এটাও হতে পারে।নিজের যুক্তিতে অটল সুখময়। - আপনি গিয়েছিলেন কখনও? - হ্যাঁ, আমার ভাগ্নী মুন কিনেছে, ২৮ তলায়। গেলাম, থাকলামও একদিন। ভাল বন্দোবস্ত। - হবেই তো। কত বড় কর্পোরেটের ব্যাপার। খারাপ হবে কেন? - না, তা নয়। সাধনার চারতলা আবাসনের সামনে দাঁড়ালে নিজেকে এত ছোট মনে হয় না কখনও। ওপরের বারান্দায় গেলেও না। কিন্তু মুনের চল্লিশতলা টাওয়ার নীচে দাঁড়িয়েও নিজেকে যা মনে হল ওর আঠাশতলার ব্যালকনিতে গিয়েও তাই মনে হল। - কি? - নিজেকে একটা বিন্দুর মতন। - ওসব কিছু না। অত উঁচু তো। তাই ওরকম মনে হয়। - না, আসলে আমার মনে হল, ওপর থেকে নীচে তাকালে মাটির পৃথিবীর মানুষগুলো বিন্দু হয়ে যাচ্ছে আর নীচে দাঁড়ানো মাটির পৃথিবীর মানুষের দল ছোট হতে হতে হয়তো একদিন চাপা পড়ে যাবে। - সে কি! কি করে! - দাপুটে উচ্চতার আগ্রাসী ক্ষুধার সামনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে হতাশা আর অভিমানে। - সে তো পাহাড়ের সামনে দাঁড়ালেও হয় আমাদের তাই না? আবার পাহাড়ী উচ্চতা থেকে তাকালেও হয়। - নো – নো।নেভার নেভার।প্রাকৃতিক উচ্চতা বা গুণগত উচ্চতা কোন মানুষকেই নীচু করে না বা ছোট করে না বাঁচার শর্তগুলোকে। - তাহলে আপনি কোন উচ্চতার কথা বলছেন সুখময় দা? - বৈভবের উচ্চতার কথা। - কিন্তু এখন তো চেঞ্জিং সোসাইটির এটাই নর্মাল ডিমাণ্ড সুখময় দা। টু মেক অ্যা ডিফারেন্স বিটুইন কমন অ্যাণ্ড আনকমন ম্যান। - কেন? কেন বলুন তো? - সোসাইটির নর্মাল ডিমাণ্ডকে অ্যাবনর্মাল চাহিদার মুখে ফেলে আর একটা নতুন সোসাইটির বাজার তৈরির জন্য। - কারা তৈরি করছে এই সোসাইটি আর বাজার? - নিউ নর্মাল সোসাইটি আর তাদের বৈভবের দাপুটে সাপ্ল্যায়ার। যাদের উচ্চতার দাপটে ছোট হয়ে যাচ্ছে আমাদের চাহিদাগুলো বিন্দুর মতন।
    দুটি গল্প

    ভাষা-শহিদ   কে জানত একটা কথা থেকেই এত ঝামেলার সৃষ্টি হবে। পটাই  মেয়েটার  সামনে  দাঁড়িয়ে গদাইকে বলেছে – অত ভাবার  কিছু নেই।ভাল লাগলে বলে দে-আই লেবু। ব্যস ওখানেই  শুরু  হল নতুন  বিপ্লব।এলাকার  দাপুটে নেতা ও কাউন্সিলর সত্যেনদাকে সঙ্গে নিয়ে পাড়ার  মোড়েই  ধরেছিল  পটাইকে।দলের  ছেলেদের  সামনেই  গরম নিতে আরম্ভ  করল আর তারপরই শুরু হল মেয়ের  বাবার  […]

  6. এক সওদাগরের ‘সপ্তডিঙা ও অন্যান্য’

    সদ্য একটা ভালো বই পড়ে উঠলাম। ঠিক গল্প, উপন্যাস কিম্বা প্রবন্ধ নয়, তবে এই বইটিতে সব রসদই মজুত। বিশিষ্ট সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক শঙ্কর ঘোষ এর লেখার একটি সংকলন- সপ্তডিঙা  ও অন্যান্য। নোয়াখালি মার্চে সাংবাদিক হিসেবে গান্ধীজির সঙ্গী ছিলেন তিনি,  প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রনেতাদের সফর সঙ্গী শঙ্করবাবু প্রশাসন এবং রাজনৈতিক সাংবাদিকতার চাপ সামলেও  নিয়মিত বই রিভিউ […]

  7. [প্রকাশিত হল ‘গল্পের সময়’ শারদ অধ্যায় ২০২৪। এই আয়োজনে সামিল হয়েছেন নবীন ও প্রবীণ গল্পকারেরা।]
    শারদ অধ্যায় ২০২৪

    [ চারিদিকেই যেন আজ অসুখ।একজন মানুষকে ভরসা,বিশ্বাস করতে পারছেন না আর একজন মানুষ। একজন মানুষের ধর্ম,ভাষা,আর্থিক পরিস্থিতি থেকে গায়ের রঙ, লিঙ্গ তাকে আলাদা করে রাখছে অন্যদের থেকে। সভ্য বলে বড়াই করলেও আজও নিরাপত্তা নেই নারীর, শিশুর বাসযোগ্য হয়ে ওঠেনি এই সমাজ।কুকথা, কুযুক্তিতে ভরে যাচ্ছে তার দেওয়ালগুলো। গভীর সব অ-সুখ ঘিরে ধরছে আমাদের।করোনাকালে ‘উৎসব’ কথাটা সচেতনভাবে বর্জন […]

  8. সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের মুখোমুখি / সাক্ষাৎকারঃ অনিন্দ্য সৌরভ
    সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের মুখোমুখি

    [বাংলা সাহিত্যের অন্যতম ব্যতিক্রমী কথাসাহিত্যিক সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের দীর্ঘ এই সাক্ষাৎকারটি ইতিমধ্যেই প্রকাশিত। বিখ্যাত অনুবাদক ও  সম্পাদক অনিন্দ্য সৌরভের অনুমতিক্রমেই এই মূল্যবান আলাপটি ‘গল্পের সময়’ এর পাঠকদের জন্য ফের প্রকাশ করা হল।] অনিন্দ্য: সাহিত্য সৃষ্টিতে কীভাবে এলেন? বাড়িতে কি লেখালেখির অনুকূল পরিবেশ ছিল? সিরাজ: জ্ঞান হবার পর থেকেই বাড়িতে প্রচুর বই-পত্র দেখেছি। এরই মধ্যে বেড়ে […]

  9. সিদ্ধার্থ সান্যাল / কৃকলাশ
    কৃকলাশ

    তাহলে আমরা যাচ্ছি কি না লাস্ট শো-এ ? তাড়াতাড়ি ঠিক করে বল, টিকিট বুক করবো তো ! প্রমথ দুই বন্ধুদের দিকে তাকিয়ে বললো। তিনজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু কানপুর ইঞ্জিনীয়ারিং কলেজে ইলেকট্রনিক্সের ছাত্র, প্রমথ ডে স্কলার, বাকি দুজন হোস্টেলবাসী । শনিবারের দুপুর থেকে প্রমথর বাড়িতে এসে খাওয়া দাওয়া আর জোর আড্ডা দিচ্ছে সুজন আর অনন্ত। ওদের দুজনের […]

  10. রূপা সেনগুপ্ত / সীতা
    সীতা

    ১ অশোক বাড়ি ফিরছিল রিক্সা করে। এভাবে রিক্সাভাড়া সচরাচর সে খরচ করে না। শিখা বলে সে নাকি কিপ্টে। অশোক মুচকি হেসে এড়িয়ে যায়। ব্যাংক কর্মী অশোকের একটা ছোট বাড়ি আছে। ব্যাংক লোন করে প্রথমে জমি কিনেছিল সে। পরে লোন শোধ হলে বাড়ির জন্য লোন নেয়। অশোক বেশ হিসেবী । একটা ডায়েরি তে সে সব হিসেব […]

  11. ঘুম এনে দেবে কেউ / তন্বী মুখোপাধ্যায়
    ঘুম এনে দেবে কেউ

    ঘুম আর শেষঘুম এক নয়, শেষ ঘুম হলো মৃত্যু। শেষ ঘুম একবারে অজ্ঞান,এক্কেবারে নিস্তার। ঘুমও নিস্তার- কিছু সময়ের জন্য ভুল-ঠিক, কর্তব্যাকর্তব্য,মায়া না মতিভ্রম, সুমতি- কুমতির হাত থেকে বাঁচা। শেষ ঘুমে তাই হয়তো স্বর্গ আসে ও ঘুমের মাঝে দেখা দেয় স্বপ্ন নামে ক্ষণস্বর্গ। রিটায়ার করা- ইস্তক  প্রফুল্লবাবুর ঘুরে ফিরে ঘুম ছাড়া আর কিছুই ঠিক মনে হচ্ছে […]

  12. বিন্দু বিসর্গ /দেবাশিস মজুমদার
    বিন্দু বিসর্গ

    গল্প আছে ?- রিষড়ার বাঙ্গুর পার্কের ফ্ল্যাটের সান্ধ্য দ্বিপাক্ষিক আড্ডার মধ্যেই  হটাৎ প্রশ্নটা ছুড়েছিল কলকাতার একটি নামী সংবাদপত্রের  সাব এডিটর পীযুষ আশ। গল্প তো আছেই ? খাস্তা, বাসি, টাটকা কোন গল্প শুনতে চাস বল?- চটজলদি পালটা প্রশ্ন ছুঁড়লো লেখক সদানন্দ। সবেমাত্র আই বি- র লার্জ পেগটা শেষ করে গ্লাস নামিয়েছে। সন্দিপনীয় ভাষায় উৎসব শুরু হয়েছে […]

  13. দেবী আছেন ওদেশেও / দেবরাজ গোস্বামী
    দেবী আছেন ওদেশেও

    মানুষের মনের ভিতরের যে অন্ধকার, যে আসুরিক প্রবৃত্তি তাকে দমন করবার ভেতর দিয়েই এগিয়েছে আমাদের সভ্য হওয়ার ইতিহাস। কিন্তু এই সভ্য হয়ে ওঠবার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে যে এখনো বহু যোজন পথ পাড়ি দিতে হবে তা বুঝতে কোন অসুবিধা হয় না। অতি সাম্প্রতিক কালের ভয়ানক নারী নির্যাতনের ঘটনা এক নিমেষে সভ্যতার আপাত পরিশীলিত মুখোশকে ছিঁড়ে ফেলে […]

  14. বুঝিনি সে নিরুচ্চার ভালোবাসা ছিল নিরন্তর / অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়
    বুঝিনি সে নিরুচ্চার ভালোবাসা ছিল নিরন্তর

    এক দুপুর থেকে একা একা কফি হাউসে বসে দু’তিন রাউন্ড ইনফিউশন শেষ কোরেও একটা লাইনেই আটকে থাকল পদ্যটা, ‘বুঝিনি সে নিরুচ্চার ভালোবাসা ছিল নিরন্তর’। আগে পরে আর কিছুই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। নাহ্, আজ আর হবে না। বিকেলের দিকটায় উঠব উঠব করছি, এমন সময় দেখলাম প্রফেসর সাহেব ঢুকছেন, অনেকদিন পরে! আমার অনেক দিনের পরিচিত জন। […]

  15. তান্ত্রিক, ত্রিদিবেশ বন্দ্যোপাধ্যায়
    তান্ত্রিক

    কথা ছিল পুরুলিয়া যাব পলাশ দেখতে। কিন্তু যাবার আগের দিন হুজুক উঠলো তারাপীঠ । আমি প্রথমে রাজি হচ্ছিলাম না গন্তব্য পরিবর্তনে।  শেষ পর্যন্ত লড়ে গিয়েছিলাম তারাপীঠ না যাওয়ার জন্য। কিন্তু মহিলা সদস্যদেরই জয় হলো। তারাপীঠ সম্পর্কে গল্প শুনে শুনে কেমন যেন একটা  অনাগ্রহ তৈরি হয়েছিল আমার মনের মধ্যে। এই অনাগ্রহের কারণ বলতে গেলে আমাকে অরুণের […]

  16. গাছ কন্যা/সুদীপ ঘোষাল
    গাছ কন্যা

    গ্রামে গঞ্জে শহরের আনাচে-কানাচে কত যে ঘটনা ঘটে যায় তার খবর আমরা কি রাখি। কতটুকু রাখতে পারি।নদীর ধারে সাজানো-গোছানো গাছ গাছালি ঘেরা সেরান্দি গ্রাম। এই গ্রামে একটা হাই স্কুল ছিল। রুনু নামে, একটা মেয়ে পড়ত এই স্কুলে। যখন অঙ্কের ক্লাস হতো,  তখন দিদিমণি দেখলেন অংক না করে রুনু ছবি আঁকছে। আবার বাংলার ক্লাসে মাস্টারমশাই গেলেন […]

  17. গল্পের সময় শৈলেশ মটিয়ানি হিন্দি থেকে ভাষান্তর: অনিন্দ্য সৌরভ
    মুক্তি

    [প্রখ্যাত লেখক শৈলেশ মটিয়ানির জন্ম  ১৪ই অক্টোবর, ১৯৩১, আলমোড়া জেলার বাড়েছিনা গ্রামে। উত্তরাখণ্ডের গ্রামীণ-পাহাড়ি জনজীবনের বিশিষ্ট কথাশিল্পী। কিছু সরকারি পুরস্কার ছাড়াও কুমায়ুন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পেয়েছেন সাম্মানিক ডি. লিট. (১৯৯৪ সাল)। মৃত্যু: ২৪শে এপ্রিল, ২০০১, দিল্লি। উত্তরাখণ্ড সরকার তাঁর স্মৃতিতে প্রতি বছর শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের ‘শৈলেশ মটিয়ানি পুরস্কার’ দেয়।]   কেবল পান্ডে সবে নদীটা অর্ধেক পেরিয়েছেন। চতুর্মাসের […]

  18. গল্পের সময় আকাশপথের উদ্দেশে হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়
    আকাশপথের উদ্দেশে

    আমার মা পান চিবুতে চিবুতে মাঝে মাঝেই জিভটাকে বার করে নিয়ে এসে অনেকটা লম্বা করে দেওয়ার চেষ্টা করত। খুব একটা সফল হতো না তবে তা নিয়ে তার কোনো কষ্ট ছিল না। কারণ জিভটাকে সামান্য কিছুটা দেখতে পেলেই সে খুশি। উদ্দেশ্য কতটা লাল হয়েছে সেটা দেখা। এখন রাত, তবে কত রাত আমি জানি না। আমার ঘরে […]

  19. কর্মফল

    হঠাৎ মামন চিৎকার করে উঠলো।মা মা বাঁচাও বাঁচাও ,জ্বলে গেল জ্বলে গেল .. দৌড়ে গেল শিবানী, মামনের মা বাবা। সবাই ভেবেছে বুঝিবা আগুন লেগে গেছে ওর গায়ে। কিন্তু মেয়ে কে দেখে আশ্বস্ত হলো সবাই। আগুন তো নেই।তবে কিসে জ্বলে যাচ্ছে? মামন নাক টা চেপে ধরছে কখনো,কখনো বা দৌড়ে গিয়ে জল দিচ্ছে। মুহূর্তের মধ্যে ঘেমে স্নান […]

  20. ভেবলির নতুন বছর রূপা সেনগুপ্ত
    ভেবলির নতুন বছর

    আকাশে তামাটে হলুদ চাঁদ। তিনমাথার মোড়ে পুবদিকে একফালি গোল মেঠো জমি।   পাড়ার বাচ্চামেয়েরা কিৎ কিৎ খেলে সেখানে। আজ ন্যাড়াপোড়া হবে। দোলপূর্ণিমার আগের দিন রাতে শুকনো ডালপালা জোগাড় করে ন্যাড়াবুড়ি বানিয়েছে ভূদেব। কোলে ছোটভাই হরিকে নিয়ে দূরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখে ভেবলি। সবিতা ভেবলির দিকে তাকিয়ে বলে, যা ঘর থেকে আলু আর বেগুন নিয়ে আয়। পুড়িয়ে নিবি […]

  21. দুটি গল্প / ধ্রুব বাগচী
    দুটি গল্প

    গিফট রাসবিহারী এভেন্যুর ফুটপাত। একটা  লাইটপোস্টের নিচে দাঁড়িয়ে থাকার ব্যবসা ভূষণের। ওর মতে এটাই লেটেস্ট ইনফরমেশন টেকনোলজি। সারাবছর তো বটেই, চৈত্র বৈশাখে ভূষণের কাজের চাপ বাড়ে। নিজের কোম্পানিতে নিজেকেই ওভার টাইম দেয় তখন। ব্যাপারটা ভেবে ফিক করে একটু হেসে নিল। হঠাৎ  কানের কাছে এক প্রৌঢ়ের গলা- “আচ্ছা ভাই, খানদানি লুঙ্গি কোন দোকানটায় পাবো বলো তো?” […]

  22. আঁচল শাশ্বত বোস
    আঁচল

    “তুর গতর টোয় আর আগের মত মজ নাই রে, দিখলে খিদা লাগেক লাই বটে।” ডগরের দড়ি পাকানো, বিবস্ত্র দেহটাকে, বিছানায় একপাশে ফেলে, গা ঝাড়া দিয়ে উঠে পরে দেবু সারেন। তাঁর বলিষ্ঠ সুঠাম দেহে, কাষ্ঠল পেশীগুলো ক্রমশঃ ফুটে উঠতে থাকে, যেন মদন মোহন মন্দিরের গায়ে, বিষ্ণুপুরী টেরাকোটা ভাস্কর্য। ডগর তখনও পরে থাকে একে বেঁকে, যেন আস্ত […]

  23. অন্য রূপকথা অভিষেক ঘোষ
    অন্য রূপকথা

    (১) তেপান্তরের মাঠ পেরিয়ে স্বরূপকুমার চলেছেন নীল ঝিলের কোলে ফিসফিসানির বনে। সে বড়ো অদ্ভুত বন, সেখানে কারা যেন কথা কয় সর্বক্ষণ! মনে হয় কে যেন হঠাৎ নাম ধরে ডাকে, অথচ ফিরে তাকাও, দেখবে না কাউকে। তেমনি আশ্চর্য ওই নীল ঝিল, কত যে গভীর কেউ জানে না! শোনা যায় সেই ঝিলের কোথাও কোথাও নাকি দেখা গেছে […]

  24. ক্রম বিন্যাস জনা বন্দ্যোপাধ্যায়
    ক্রম বিন্যাস

    শাল পিয়াল মহুয়ার জঙ্গল ঘেরা অযোধ্যা পাহাড়ের পথে পথে শুকনো পাতার মর্মরতা আর লাল মাটির রুক্ষতা ছড়িয়ে আছে। ওখানকার বাঘমুন্ডি ব্লকের চড়িদা গ্রামের একনিষ্ঠ মুখোশ শিল্পী সমীরণ মাহাতোকে কে না চেনে! তাঁর সতেরো বছরের ছেলে সিধু ও পনেরো বছরের মেয়ে তরলা বাবাকে ছৌ নাচের মুখোশ তৈরির কাজে সাহায্য করে। কাদামাটি দিয়ে ছাঁচ বা কাঠামো বানিয়ে […]

  25. স্বাগত ১৪৩১, লেখা আহ্বান
    বাংলা নতুন বছরে লেখা আহ্বান

    লেখা পাঠানোর জন্য … ১। আমাদের অনলাইন পত্রিকা। www.galpersamay.com টাইপ করলেই পত্রিকাটি দেখতে পাবেন। মেনে নিন পরীক্ষামূলক ( তবে হাত পাকানোর আসর নয়) গল্প লেখানিখির জন্য এ প্ল্যাটফর্ম আপনারও। ২।  সকলেই  যে কোনও সময় গল্প পাঠাতে পারেন। আপনার লেখার অপেক্ষাতেই আমরা। ভাল গল্প প্রকাশ করাই আমাদের উদ্দেশ্য। তবে গল্প প্রকাশের পর লেখককে সাম্মানিক দেওয়া আমাদের পক্ষে […]

  26. ভন্তে জ্যাঠা মিতালী মিত্র
    ভন্তে জ্যাঠা

    ভন্তে জ্যাঠা ছিলেন সজ্জন মানুষ। ভন্তে নামেই পরিচিতিটা এত ব্যাপকছিল যে আসল নামটা আর কারও মনে পড়ে না আর। সাহেবদের মতো টকটকে ফর্সা কিন্তু ছোটখাটো চেহারার এই ভদ্রলোক জেলা সদরের কালেকটরেটে ক্লার্কের চাকরি করতেন। সেই সুবাদেপাড়ার লোকের হাজারটা ঝামেলার কাজ করে দিতে হত তাঁকে। মফঃস্বল শহরের প্রতিটি বাড়িতেই জমি জমা অথবা বসত বাড়ির খাজনা দেওয়ার […]

  27. অথ ব্যাঘ্র শাবক কথা সিদ্ধার্থ সান্যাল
    অথ ব্যাঘ্র শাবক কথা

    ডেপুটি  ফরেস্ট অফিসার প্রভাত গড়গড়ি হাত বাড়িয়ে সামনে জড়সড় হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা সনাতন সাঁপুইয়ের হাত থেকে কাগজটা নিলেন । ডাইরেকটরেক্ট অফ ফরেস্ট, বিকাশ ভবন থেকে ইস্যু হওয়া একটা গভরনমেন্ট অর্ডার, স্টাফ অ্যাপয়েন্টমেন্ট অ্যান্ড পোস্টিং-এর । ‘…শ্রী সনাতন সাঁপুইকে সুন্দরবন প্লট ১২৬-এর ঝড়খালি ডিএফও অফিসে সিনিয়র ফরেস্ট গার্ড পদে নিযুক্ত করা হচ্ছে ।…ডেপুটি ফরেস্ট অফিসারের কাছে […]

  28. জগাদার গুল গপ্পো মহুয়া রায়
    জগাদার গুল গপ্পো

    জগাদা বলে সে নাকি অদ্যাবধি  কত ধরণের যে কাজ করেছে অর্থ রোজগারের  জন্য তার কোনো হিসেব নেই।আর তার ফলেই নাকি  নানান অভিজ্ঞতাও সঞ্চয় করেছে সে। জগাদার সঙ্গে দেখা হলে  আমি ধরে বসি গল্প শোনার জন্য।আর সেও দারুণ   উৎসাহে  গল্প শোনায়।সেসব নাকি তার জীবনেরই ঘটনা।ঘোর বাস্তব।মোটেও নয়  কল্পনা। আর কি রোমাঞ্চকর সেসব বাস্তব ঘটনা! শুনলে  মনে […]

  29. ঝন্টু মামা ও তাঁর শিকারের গল্প পীযূষ কান্তি দাস
    ঝন্টু মামা ও তাঁর শিকারের গল্প

    ঝন্টু মামাকে যে আপনারা চেনেন না সে ব্যাপারে আমি একশ শতাংশ নিশ্চিত। কারণ ঝন্টুমামা এমন কোন বিখ্যাত ব্যক্তি নন যে তাঁকে সব্বাই চিনে রাখবেন। আসলে আজ পর্যন্ত তাঁর কথা আপনাদের কোনদিনই বলিনি।সে যাই হোক আসুন আজ আমি তাঁর সঙ্গে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিই।   আজ আমি প্রায় মধ্যবয়স ছাড়িয়ে বার্ধ্যকে পৌঁছে যাওয়া এক মানুষ আর […]

  30. জিন্দা লাশ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়
    জিন্দা লাশ

    সূর্যটা যেখানে শেষ ঝরে যাচ্ছিল সেখান থেকে একটা রঙিন ঢেউ উঠতে উঠতে ক্রমশঃ রামধনু হয়ে ঢুকে এল ক্লাস ঘরে! স্বপ্নের মাত্র দু’ একটা টুকরো ছবিই ক্যাচ লাইনের মতন থেকে যায় সারাটা জীবন জুড়ে। তার আগে বা পরে ঠিক কি ঘটে মনে রাখা যায় না। সেবার ক্লাস নাইনের ফাইনাল পরীক্ষার পরেই এমনি এক স্বপ্নে তখন ভেঙেচুরে […]

যোগাযোগ


email:galpersamay@gmail.com

Your message has been sent. Thank you!

গল্পের সময় পরিবার
সমীর
অগ্নীশ্বর
দেবাশিস
চিন্ময়
পার্থ
মিতালি
জাগরণ
দেবব্রত

© 2016 - 2025 গল্পের সময়। ডিজাইন করেছেন অগ্নীশ্বর। নামাঙ্কন করেছেন পার্থ