-
শারদ অধ্যায় ২০২৪
[ চারিদিকেই যেন আজ অসুখ।একজন মানুষকে ভরসা,বিশ্বাস করতে পারছেন না আর একজন মানুষ। একজন মানুষের ধর্ম,ভাষা,আর্থিক পরিস্থিতি থেকে গায়ের রঙ, লিঙ্গ তাকে আলাদা করে রাখছে অন্যদের থেকে। সভ্য বলে বড়াই করলেও আজও নিরাপত্তা নেই নারীর, শিশুর বাসযোগ্য হয়ে ওঠেনি এই সমাজ।কুকথা, কুযুক্তিতে ভরে যাচ্ছে তার দেওয়ালগুলো। গভীর সব অ-সুখ ঘিরে ধরছে আমাদের।করোনাকালে ‘উৎসব’ কথাটা সচেতনভাবে বর্জন […]
-
সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের মুখোমুখি
[বাংলা সাহিত্যের অন্যতম ব্যতিক্রমী কথাসাহিত্যিক সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের দীর্ঘ এই সাক্ষাৎকারটি ইতিমধ্যেই প্রকাশিত। বিখ্যাত অনুবাদক ও সম্পাদক অনিন্দ্য সৌরভের অনুমতিক্রমেই এই মূল্যবান আলাপটি ‘গল্পের সময়’ এর পাঠকদের জন্য ফের প্রকাশ করা হল।] অনিন্দ্য: সাহিত্য সৃষ্টিতে কীভাবে এলেন? বাড়িতে কি লেখালেখির অনুকূল পরিবেশ ছিল? সিরাজ: জ্ঞান হবার পর থেকেই বাড়িতে প্রচুর বই-পত্র দেখেছি। এরই মধ্যে বেড়ে […]
-
কৃকলাশ
তাহলে আমরা যাচ্ছি কি না লাস্ট শো-এ ? তাড়াতাড়ি ঠিক করে বল, টিকিট বুক করবো তো ! প্রমথ দুই বন্ধুদের দিকে তাকিয়ে বললো। তিনজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু কানপুর ইঞ্জিনীয়ারিং কলেজে ইলেকট্রনিক্সের ছাত্র, প্রমথ ডে স্কলার, বাকি দুজন হোস্টেলবাসী । শনিবারের দুপুর থেকে প্রমথর বাড়িতে এসে খাওয়া দাওয়া আর জোর আড্ডা দিচ্ছে সুজন আর অনন্ত। ওদের দুজনের […]
-
সীতা
১ অশোক বাড়ি ফিরছিল রিক্সা করে। এভাবে রিক্সাভাড়া সচরাচর সে খরচ করে না। শিখা বলে সে নাকি কিপ্টে। অশোক মুচকি হেসে এড়িয়ে যায়। ব্যাংক কর্মী অশোকের একটা ছোট বাড়ি আছে। ব্যাংক লোন করে প্রথমে জমি কিনেছিল সে। পরে লোন শোধ হলে বাড়ির জন্য লোন নেয়। অশোক বেশ হিসেবী । একটা ডায়েরি তে সে সব হিসেব […]
-
ঘুম এনে দেবে কেউ
ঘুম আর শেষঘুম এক নয়, শেষ ঘুম হলো মৃত্যু। শেষ ঘুম একবারে অজ্ঞান,এক্কেবারে নিস্তার। ঘুমও নিস্তার- কিছু সময়ের জন্য ভুল-ঠিক, কর্তব্যাকর্তব্য,মায়া না মতিভ্রম, সুমতি- কুমতির হাত থেকে বাঁচা। শেষ ঘুমে তাই হয়তো স্বর্গ আসে ও ঘুমের মাঝে দেখা দেয় স্বপ্ন নামে ক্ষণস্বর্গ। রিটায়ার করা- ইস্তক প্রফুল্লবাবুর ঘুরে ফিরে ঘুম ছাড়া আর কিছুই ঠিক মনে হচ্ছে […]
-
বিন্দু বিসর্গ
গল্প আছে ?- রিষড়ার বাঙ্গুর পার্কের ফ্ল্যাটের সান্ধ্য দ্বিপাক্ষিক আড্ডার মধ্যেই হটাৎ প্রশ্নটা ছুড়েছিল কলকাতার একটি নামী সংবাদপত্রের সাব এডিটর পীযুষ আশ। গল্প তো আছেই ? খাস্তা, বাসি, টাটকা কোন গল্প শুনতে চাস বল?- চটজলদি পালটা প্রশ্ন ছুঁড়লো লেখক সদানন্দ। সবেমাত্র আই বি- র লার্জ পেগটা শেষ করে গ্লাস নামিয়েছে। সন্দিপনীয় ভাষায় উৎসব শুরু হয়েছে […]
-
দেবী আছেন ওদেশেও
মানুষের মনের ভিতরের যে অন্ধকার, যে আসুরিক প্রবৃত্তি তাকে দমন করবার ভেতর দিয়েই এগিয়েছে আমাদের সভ্য হওয়ার ইতিহাস। কিন্তু এই সভ্য হয়ে ওঠবার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে যে এখনো বহু যোজন পথ পাড়ি দিতে হবে তা বুঝতে কোন অসুবিধা হয় না। অতি সাম্প্রতিক কালের ভয়ানক নারী নির্যাতনের ঘটনা এক নিমেষে সভ্যতার আপাত পরিশীলিত মুখোশকে ছিঁড়ে ফেলে […]
-
বুঝিনি সে নিরুচ্চার ভালোবাসা ছিল নিরন্তর
এক দুপুর থেকে একা একা কফি হাউসে বসে দু’তিন রাউন্ড ইনফিউশন শেষ কোরেও একটা লাইনেই আটকে থাকল পদ্যটা, ‘বুঝিনি সে নিরুচ্চার ভালোবাসা ছিল নিরন্তর’। আগে পরে আর কিছুই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। নাহ্, আজ আর হবে না। বিকেলের দিকটায় উঠব উঠব করছি, এমন সময় দেখলাম প্রফেসর সাহেব ঢুকছেন, অনেকদিন পরে! আমার অনেক দিনের পরিচিত জন। […]
-
তান্ত্রিক
কথা ছিল পুরুলিয়া যাব পলাশ দেখতে। কিন্তু যাবার আগের দিন হুজুক উঠলো তারাপীঠ । আমি প্রথমে রাজি হচ্ছিলাম না গন্তব্য পরিবর্তনে। শেষ পর্যন্ত লড়ে গিয়েছিলাম তারাপীঠ না যাওয়ার জন্য। কিন্তু মহিলা সদস্যদেরই জয় হলো। তারাপীঠ সম্পর্কে গল্প শুনে শুনে কেমন যেন একটা অনাগ্রহ তৈরি হয়েছিল আমার মনের মধ্যে। এই অনাগ্রহের কারণ বলতে গেলে আমাকে অরুণের […]
-
গাছ কন্যা
গ্রামে গঞ্জে শহরের আনাচে-কানাচে কত যে ঘটনা ঘটে যায় তার খবর আমরা কি রাখি। কতটুকু রাখতে পারি।নদীর ধারে সাজানো-গোছানো গাছ গাছালি ঘেরা সেরান্দি গ্রাম। এই গ্রামে একটা হাই স্কুল ছিল। রুনু নামে, একটা মেয়ে পড়ত এই স্কুলে। যখন অঙ্কের ক্লাস হতো, তখন দিদিমণি দেখলেন অংক না করে রুনু ছবি আঁকছে। আবার বাংলার ক্লাসে মাস্টারমশাই গেলেন […]
-
মুক্তি
[প্রখ্যাত লেখক শৈলেশ মটিয়ানির জন্ম ১৪ই অক্টোবর, ১৯৩১, আলমোড়া জেলার বাড়েছিনা গ্রামে। উত্তরাখণ্ডের গ্রামীণ-পাহাড়ি জনজীবনের বিশিষ্ট কথাশিল্পী। কিছু সরকারি পুরস্কার ছাড়াও কুমায়ুন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পেয়েছেন সাম্মানিক ডি. লিট. (১৯৯৪ সাল)। মৃত্যু: ২৪শে এপ্রিল, ২০০১, দিল্লি। উত্তরাখণ্ড সরকার তাঁর স্মৃতিতে প্রতি বছর শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের ‘শৈলেশ মটিয়ানি পুরস্কার’ দেয়।] কেবল পান্ডে সবে নদীটা অর্ধেক পেরিয়েছেন। চতুর্মাসের […]
-
আকাশপথের উদ্দেশে
আমার মা পান চিবুতে চিবুতে মাঝে মাঝেই জিভটাকে বার করে নিয়ে এসে অনেকটা লম্বা করে দেওয়ার চেষ্টা করত। খুব একটা সফল হতো না তবে তা নিয়ে তার কোনো কষ্ট ছিল না। কারণ জিভটাকে সামান্য কিছুটা দেখতে পেলেই সে খুশি। উদ্দেশ্য কতটা লাল হয়েছে সেটা দেখা। এখন রাত, তবে কত রাত আমি জানি না। আমার ঘরে […]
-
কর্মফল
হঠাৎ মামন চিৎকার করে উঠলো।মা মা বাঁচাও বাঁচাও ,জ্বলে গেল জ্বলে গেল .. দৌড়ে গেল শিবানী, মামনের মা বাবা। সবাই ভেবেছে বুঝিবা আগুন লেগে গেছে ওর গায়ে। কিন্তু মেয়ে কে দেখে আশ্বস্ত হলো সবাই। আগুন তো নেই।তবে কিসে জ্বলে যাচ্ছে? মামন নাক টা চেপে ধরছে কখনো,কখনো বা দৌড়ে গিয়ে জল দিচ্ছে। মুহূর্তের মধ্যে ঘেমে স্নান […]
-
ভেবলির নতুন বছর
আকাশে তামাটে হলুদ চাঁদ। তিনমাথার মোড়ে পুবদিকে একফালি গোল মেঠো জমি। পাড়ার বাচ্চামেয়েরা কিৎ কিৎ খেলে সেখানে। আজ ন্যাড়াপোড়া হবে। দোলপূর্ণিমার আগের দিন রাতে শুকনো ডালপালা জোগাড় করে ন্যাড়াবুড়ি বানিয়েছে ভূদেব। কোলে ছোটভাই হরিকে নিয়ে দূরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখে ভেবলি। সবিতা ভেবলির দিকে তাকিয়ে বলে, যা ঘর থেকে আলু আর বেগুন নিয়ে আয়। পুড়িয়ে নিবি […]
-
দুটি গল্প
গিফট রাসবিহারী এভেন্যুর ফুটপাত। একটা লাইটপোস্টের নিচে দাঁড়িয়ে থাকার ব্যবসা ভূষণের। ওর মতে এটাই লেটেস্ট ইনফরমেশন টেকনোলজি। সারাবছর তো বটেই, চৈত্র বৈশাখে ভূষণের কাজের চাপ বাড়ে। নিজের কোম্পানিতে নিজেকেই ওভার টাইম দেয় তখন। ব্যাপারটা ভেবে ফিক করে একটু হেসে নিল। হঠাৎ কানের কাছে এক প্রৌঢ়ের গলা- “আচ্ছা ভাই, খানদানি লুঙ্গি কোন দোকানটায় পাবো বলো তো?” […]
-
আঁচল
“তুর গতর টোয় আর আগের মত মজ নাই রে, দিখলে খিদা লাগেক লাই বটে।” ডগরের দড়ি পাকানো, বিবস্ত্র দেহটাকে, বিছানায় একপাশে ফেলে, গা ঝাড়া দিয়ে উঠে পরে দেবু সারেন। তাঁর বলিষ্ঠ সুঠাম দেহে, কাষ্ঠল পেশীগুলো ক্রমশঃ ফুটে উঠতে থাকে, যেন মদন মোহন মন্দিরের গায়ে, বিষ্ণুপুরী টেরাকোটা ভাস্কর্য। ডগর তখনও পরে থাকে একে বেঁকে, যেন আস্ত […]
-
অন্য রূপকথা
(১) তেপান্তরের মাঠ পেরিয়ে স্বরূপকুমার চলেছেন নীল ঝিলের কোলে ফিসফিসানির বনে। সে বড়ো অদ্ভুত বন, সেখানে কারা যেন কথা কয় সর্বক্ষণ! মনে হয় কে যেন হঠাৎ নাম ধরে ডাকে, অথচ ফিরে তাকাও, দেখবে না কাউকে। তেমনি আশ্চর্য ওই নীল ঝিল, কত যে গভীর কেউ জানে না! শোনা যায় সেই ঝিলের কোথাও কোথাও নাকি দেখা গেছে […]
-
ক্রম বিন্যাস
শাল পিয়াল মহুয়ার জঙ্গল ঘেরা অযোধ্যা পাহাড়ের পথে পথে শুকনো পাতার মর্মরতা আর লাল মাটির রুক্ষতা ছড়িয়ে আছে। ওখানকার বাঘমুন্ডি ব্লকের চড়িদা গ্রামের একনিষ্ঠ মুখোশ শিল্পী সমীরণ মাহাতোকে কে না চেনে! তাঁর সতেরো বছরের ছেলে সিধু ও পনেরো বছরের মেয়ে তরলা বাবাকে ছৌ নাচের মুখোশ তৈরির কাজে সাহায্য করে। কাদামাটি দিয়ে ছাঁচ বা কাঠামো বানিয়ে […]
-
বাংলা নতুন বছরে লেখা আহ্বান
লেখা পাঠানোর জন্য … ১। আমাদের অনলাইন পত্রিকা। www.galpersamay.com টাইপ করলেই পত্রিকাটি দেখতে পাবেন। মেনে নিন পরীক্ষামূলক ( তবে হাত পাকানোর আসর নয়) গল্প লেখানিখির জন্য এ প্ল্যাটফর্ম আপনারও। ২। সকলেই যে কোনও সময় গল্প পাঠাতে পারেন। আপনার লেখার অপেক্ষাতেই আমরা। ভাল গল্প প্রকাশ করাই আমাদের উদ্দেশ্য। তবে গল্প প্রকাশের পর লেখককে সাম্মানিক দেওয়া আমাদের পক্ষে […]
-
ভন্তে জ্যাঠা
ভন্তে জ্যাঠা ছিলেন সজ্জন মানুষ। ভন্তে নামেই পরিচিতিটা এত ব্যাপকছিল যে আসল নামটা আর কারও মনে পড়ে না আর। সাহেবদের মতো টকটকে ফর্সা কিন্তু ছোটখাটো চেহারার এই ভদ্রলোক জেলা সদরের কালেকটরেটে ক্লার্কের চাকরি করতেন। সেই সুবাদেপাড়ার লোকের হাজারটা ঝামেলার কাজ করে দিতে হত তাঁকে। মফঃস্বল শহরের প্রতিটি বাড়িতেই জমি জমা অথবা বসত বাড়ির খাজনা দেওয়ার […]
-
অথ ব্যাঘ্র শাবক কথা
ডেপুটি ফরেস্ট অফিসার প্রভাত গড়গড়ি হাত বাড়িয়ে সামনে জড়সড় হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা সনাতন সাঁপুইয়ের হাত থেকে কাগজটা নিলেন । ডাইরেকটরেক্ট অফ ফরেস্ট, বিকাশ ভবন থেকে ইস্যু হওয়া একটা গভরনমেন্ট অর্ডার, স্টাফ অ্যাপয়েন্টমেন্ট অ্যান্ড পোস্টিং-এর । ‘…শ্রী সনাতন সাঁপুইকে সুন্দরবন প্লট ১২৬-এর ঝড়খালি ডিএফও অফিসে সিনিয়র ফরেস্ট গার্ড পদে নিযুক্ত করা হচ্ছে ।…ডেপুটি ফরেস্ট অফিসারের কাছে […]
-
জগাদার গুল গপ্পো
জগাদা বলে সে নাকি অদ্যাবধি কত ধরণের যে কাজ করেছে অর্থ রোজগারের জন্য তার কোনো হিসেব নেই।আর তার ফলেই নাকি নানান অভিজ্ঞতাও সঞ্চয় করেছে সে। জগাদার সঙ্গে দেখা হলে আমি ধরে বসি গল্প শোনার জন্য।আর সেও দারুণ উৎসাহে গল্প শোনায়।সেসব নাকি তার জীবনেরই ঘটনা।ঘোর বাস্তব।মোটেও নয় কল্পনা। আর কি রোমাঞ্চকর সেসব বাস্তব ঘটনা! শুনলে মনে […]
-
ঝন্টু মামা ও তাঁর শিকারের গল্প
ঝন্টু মামাকে যে আপনারা চেনেন না সে ব্যাপারে আমি একশ শতাংশ নিশ্চিত। কারণ ঝন্টুমামা এমন কোন বিখ্যাত ব্যক্তি নন যে তাঁকে সব্বাই চিনে রাখবেন। আসলে আজ পর্যন্ত তাঁর কথা আপনাদের কোনদিনই বলিনি।সে যাই হোক আসুন আজ আমি তাঁর সঙ্গে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিই। আজ আমি প্রায় মধ্যবয়স ছাড়িয়ে বার্ধ্যকে পৌঁছে যাওয়া এক মানুষ আর […]
-
জিন্দা লাশ
সূর্যটা যেখানে শেষ ঝরে যাচ্ছিল সেখান থেকে একটা রঙিন ঢেউ উঠতে উঠতে ক্রমশঃ রামধনু হয়ে ঢুকে এল ক্লাস ঘরে! স্বপ্নের মাত্র দু’ একটা টুকরো ছবিই ক্যাচ লাইনের মতন থেকে যায় সারাটা জীবন জুড়ে। তার আগে বা পরে ঠিক কি ঘটে মনে রাখা যায় না। সেবার ক্লাস নাইনের ফাইনাল পরীক্ষার পরেই এমনি এক স্বপ্নে তখন ভেঙেচুরে […]
-
বয়েলিং ফ্রগ
।।১।। দিনটা ২২-শে মার্চ, ২০২০, রাত তখন আড়াইটে। অর্ণবের ফোনটা বেজে উঠল। হ্যাঁ অঞ্জন বল। তুই জেগে ছিলিস? প্রতিবার তোকে মিডনাইটে উইশ করি। দু’ঘণ্টাও যায় না, সেই তোরই ফোন চলে আসে। হ্যাবিট হয়ে গেছে। বল, এবারের স্টোরি কী? স্টোরি? আমার কথাগুলো তোর বানানো গপ্প মনে হয়? আচ্ছা রাখ তাহলে! এই না না ! সরি সরি, […]
-
স্কিৎজোফ্রেনিক
বুড়ো আমার দিকে ফিরে, চোখ টিপে বুড়ির দিকে ইশারা করে রহস্যটা ভাঙলেন । বুড়ি, এক হাতে ছাতা আর অন্য হাতটা দিয়ে রেলিংটা ধরে ধীরে ধীরে সিঁড়ি বেয়ে যখন বেশ খানিকটা নেমে গেল, বুড়ো গণেশ পান্ধারকার একটা বেশ লাজুক লাজুক মুখে একটা ফাজিল টাইপের হাসি হেসে বললেন, “বুঝলেন কিনা, বাবুমশাই , বুড়ো বয়সে এই সব নাটক […]
-
কলমিক
এক শীতঘুমের আস্তানা থেকে উচ্ছেদ হয়ে সরীসৃপটা রাত থাকতেই এই জনপদ পার হয়ে গেছে। তার পুরোনো জংলী করিডরে এখন কংক্রীটের অবরোধ। আনুভূমে বিছিয়ে থাকা শিউলি ফুলের মাঝ দিয়ে পিচের রাস্তায় রেখে গেছে হিলহিলে শরীরের সর্পিল দাগ। নতুন গাছের শিউলি ফুল, পাঁপড়িগুলো টোপা টোপা, আর এই পাড়াটাও নতুন। ছ-সাত বছরের বেশি পুরোনো নয়। বিত্তশালী মানুষদের পাড়া। […]
-
বৈশালী পাড়ার প্রতিমারা
মফস্বলের ঝিম ধরা বিকেলের চলন্তিকা রোদ, প্রিজম তর্জনীর বর্ণালী ছাড়িয়ে, রাহুরেখা বেয়ে তির্যক ভাবে আলো আঁধারির মায়াজাল বুনেছে পাড়াটায়। আদুর গায়ের ছায়া শরীর আর গলনাঙ্কে ফুটতে চাওয়া তেঁতুল বিচির আঠার রং, যেন কুলহারী বেদব্যাসের স্বমেহ পিন্ডদানের আবহে, খড় –মাটি-রোদ-বৃষ্টির গল্প বলে চলেছে নিরন্তর। গলিটার গা বেয়ে তখন উদলা কাঠামো, নিটোল স্তন আর উর্বীমুখি নিতম্বের সারি। […]
-
বন্দুক ও অন্য গল্প
বন্দুক রিভলবারটা হাতে তুলে নিলেন স্মৃতিময়। নেড়েচেড়ে দেখছেন। বেশ ছিমছাম। ছোটবেলা থেকেই এমন একটা বন্দুকের শখ ছিল। আসলে সেনেদের সুরজিৎ খেলার ঝগড়ার মুহূর্তে তার দিকে এয়ারগান তাক করে কর্কশ গলায় ওদের বাড়ি থেকে চলে যেতে বলেছিল। অপমানটুকু গিলে নেওয়া ছাড়া আর কিছু করার ছিল না। ইচ্ছেটা তখন থেকে, এতখানি বয়েস পর্যন্ত তা পূরণের কোনো উপায় […]
-
প্রক্সি
ডোরবেল বাজার সঙ্গে সঙ্গে প্রক্সি প্রথমেই ছুটে মেইনডোরের সামনে গিয়ে কয়েকপাক ঘুরে নিয়েছে। তারপর বাথরুমের সামনে এসে দু-তিন বার ডাক দিয়েই আবার ছুটেছে মেইনডোরের কাছে। ইতিমধ্যে ডোরবেল আবার বেজেছে; ফলে প্রক্সির ছুটোছুটি আর হাঁকডাক আরও খানিকটা বেড়েছে; সুমি নির্ঘাৎ সুযোগ বুঝে বাইরে বেরিয়েছে! নিরালা স্নান অসম্পূর্ণ রেখেই কোনোরকমে হাউসকোর্টটা গায়ে চাপিয়ে বেরিয়ে এলো। প্রক্সি দ্বিগুণ […]