অণুগল্প
-
বন্দুক ও অন্য গল্প
বন্দুক রিভলবারটা হাতে তুলে নিলেন স্মৃতিময়। নেড়েচেড়ে দেখছেন। বেশ ছিমছাম। ছোটবেলা থেকেই এমন একটা বন্দুকের শখ ছিল। আসলে সেনেদের সুরজিৎ খেলার ঝগড়ার মুহূর্তে তার দিকে এয়ারগান তাক করে কর্কশ গলায় ওদের বাড়ি থেকে চলে যেতে বলেছিল। অপমানটুকু গিলে নেওয়া ছাড়া আর কিছু করার ছিল না। ইচ্ছেটা তখন থেকে, এতখানি বয়েস পর্যন্ত তা পূরণের কোনো উপায় […]
-
খিদে
আপনি মিথ্যে কখা বলছেন- গর্জে ওঠেন ডিউটি অফিসার নির্মল সেন উল্টো দিকে চেয়ারে বসা লোকটি ষেন আরো কুঁকড়ে যায়৷ মুখে বেশ কদিনের না কামানো দাড়ি, চোখে অসহায় করুণ দৃষ্টি না স্যার বিশ্বাস করুন আমি দাদাকে বালিশ চাপা দিয়ে মেরেছি….আমাকে জেলে দিন – ককিয়ে উঠে এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে লোকটি ৷ হতাশ অফিসার….পুলিশের চাকরী জীবনে নানা […]
-
বাইলাইন
– কি রে, পরীক্ষা কেমন হল? লকডাউনের এতদিন পর স্কুলে বসে পরীক্ষা দিলি — স্কুল ফেরত মেয়ের দিকে প্রশ্ন ছুঁড়লেন রুচিরা। – না, মা, অ্যাকচুয়েলি খুব প্রবলেম হচ্ছিল সবার। সবাই তো…অর্ধেক কথা থামিয়ে তার বাপির ঘরের দিকে তাকিয়ে ইশারায় মাকে কাছে ডেকে আদুরে গলায় জড়িয়ে নিচু স্বরে প্রশ্ন করল, – বাপি কোথায়? বাথরুমে? তারপর আরও […]
-
নিভৃত সংলাপ
অতসীপিসী আমার দূরসম্পর্কের পিসীমা ছিলেন। তাঁর ছোটভাইয়ের সংসারে তিনি প্রায় গোটা জীবনটাই কাটিয়েছিলেন । তাঁকে কোনোরকম অশ্রদ্ধা বা অসন্মান করার ক্ষমতা কারো ছিলনা। এই উচ্চাসন তিনি নিজের যোগ্যতায় অর্জন করেছিলেন। প্রখর ব্যক্তিত্বময়ী মৃদুভাষী এই মানুষটি আমার মাকে ভীষণ ভালোবাসতেন ।আমার মায়ের থেকে বয়সে অনেকটা বড়ো হলেও নিজের মনের সব কথা বলতেন। নব্বই বছর পেরিয়ে যখন […]
-
পরশুরাম ও অন্য গল্প
পরশুরাম সন্ধে থেকে ক্রমাগত গুঁড়ো গুঁড়ো বরফের বৃষ্টিতে চারিদিক সাদা হয়ে এসেছে । এখন বোধহয় রাত দশটা হবে। ডিসেম্বরের শীতের রাত, ঘোলাটে আলোয় আলোকিত রাস্তা নিঝুম । কিছুক্ষণ আগেই পলাশ ঘটনাটা ঘটিয়ে ফেলেছে। এমন নয় যে হঠাৎ উত্তেজনার বশে এমন কাজটা ও করে ফেললো । বরং উলটোটাই সত্যি। মাসের পর মাস পরম প্রিয়জনের রোগশয্যার পাশে […]
-
বিনোদন
সবে স্কুলের গণ্ডী পেরিয়েছি । সত্তর দশকের প্রথম ভাগ । বঙ্গে তখনও দূরদর্শনের পদার্পণ ঘটেনি । রেডিও ছিল অনেক বাড়িতে । সাত পড়ুয়ার পাঠে বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কায় রাহা বাড়িতে রেডিও স্থান পায়নি । সেই একান্নবর্তী বাড়ির দুই ক্ষুদেকে প্রাইভেট পড়াবার দায়িত্ব পেলাম আমি। ছাত্রদের পরিবারে ছিল তিন ভাই আর বাল্যবিধবা তাদের বড়দি। সঙ্গে তো ছিলই […]
-
মাঝরাতে রাজপথে
বলাকা বলেছিল “বন্ধুর বিয়ে, অনেকটা দূর। পৌঁছে দেবে? ফেরার সময় আসতে হবে না, বন্ধুদের সঙ্গে চলে আসব।“ সুমন ‘হ্যাঁ’ ‘না’ কিছু বলেনি। কারণ বলাকা জানত এর উত্তর ‘না’ হয় না। রিকশা থেকে নেমে বলাকা উজ্জ্বল পোশাকে আলোকিত তোরণ দিয়ে বিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করলো। একটু গিয়ে পিছন ফিরে দেখলো, সুমন তখনও দাঁড়িয়ে, টিমটিমে ল্যাম্প পোস্টের আলোয়, […]
-
বাসে আলাপ
ট্রেনে নয় লাক্সারি বাসে চলেছি পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ের দিকে। সাথী ত্রিরিশ জন। কপালগুণে বাসের পেছনে পড়েছিল আমার সিট। আমার দুটো সিট আগে বসেছিল বছর কুড়ির এক তরুণী তার বাবার সঙ্গে। চা-জলখাবারের জন্যে মাঝে একবার বিরতি দেওয়ায় অন্যান্ন সহযাত্রী সহ ওই মেয়েটির সঙ্গে আলাপ হয়। মেয়েটি সবেমাত্র কম্পুউটার সায়েন্স নিয়ে পাশ করে টিসিএসে যুক্ত হয়েছে। কথাবার্তায় […]
-
বাই ডিফল্ট
– ইন্টারভিউ তো দিলেন। এবার বলুন কেমন লাগল আমার মতন বাচ্চা আনকোরা একটা মেয়ের প্রশ্ন? – দারুণ! ও না না, এখন তো এসব বাংলা বললে চলবে না। কি যেন চলছে শব্দটা! ও হ্যাঁ হ্যাঁ মনে পড়েছে অ-সাম! ঠিক বললাম তো? – একদম। আপনি এই বয়েসেও এত আপ টু ডেট থাকেন কি করে? আপনার ঐতিহাসিক উপন্যাস […]
-
হুঁ:! ন্যাকামি!
রাত আড়াইটে। ঘরে এসে বিল্টু খবর দিল, “ঠাম্মি, এইবার শিগগির চলো! লাইট নিভে গেছে।” শুনে সবাই হৈ হৈ করে উঠল। “চলো, চলো…এখনই চলো।” বিল্টুর ঠাম্মি, অর্থাৎ ঐন্দ্রিলা দেবী হাত তুলে শান্তভাবে চোখ, মুখ নাচিয়ে বললেন, “দাঁড়া বাছা! এখনই কী?! এখনও সময় হয় নি। আরও কিছুক্ষণ যাক। রস জমুক।” তারপর বিল্টুকে তাড়া দিয়ে বললেন,”তুই শুতে যা […]
-
আগুনওয়ালাদের চোখ কান
দুপুর গড়িয়ে গেলে বিষ্টুদের পুকুরঘাটে বাসন মাজতে বসে বহ্নি। আর এইসময় নিজের কথাকে কারুকাজ করে নিতে আসে কবি কৌরব। বহ্নির কারুকাজ বলতে লেখাগুলোকে বাইরের লোকের কাছে বরাত পাইয়ে দেওয়া। বাইরের মানুষের সাথে বহ্নির অনেক যোগাযোগ। আজ ওর এঁটো পাতিলের ওপর টুপ করে কী যেন একটা পড়ল। -“দলা পাকিয়ে কী ফেলছ দেখি?” দেখল তারই দেওয়া সাদা […]
-
এমনিই
|| ১ || সাবওয়ে দিয়ে চিরকালের অভ্যাসের মতো দুটো করে সিঁড়ি টপকে টপকে প্লাটফর্মে উঠে একটা ফাঁকা জায়গা পেয়ে বসে হাঁফাতে লাগলো শুভ | রবিবার সকালে ঘুমটা যেন ভাঙতেই চায় না | অগত্যা এই তাড়াহুড়ো ! নাহ্ ! লেট হয় নি | সাড়ে দশটার গ্যালোপিং বর্ধমানটা পেয়ে যাবো | – ভাবতে ভাবতে চশমাটা খুলে নিয়ে […]
-
নিছক গল্পকথা
‘ মধু, এতো তাড়া করছো কেন, বোসো ? আজ রবিবার, এই তো এলে ! এসো, একত্রে চা পান করতে করতে প্যারাডাইজ লস্ট পড়া যাক !’ গৌরদাস আলমারী হইতে একটি চামড়ার বাঁধাই ক্ষুদ্র বহি বাহির করিতে করিতে কহিলেন ! যাহাকে বলা হইলো, তিনি শ্যামবর্ণ, অতি উজ্জ্বল চক্ষুবিশিষ্ট, ইউরোপিয়ান পোশাকে সুসজ্জিত এক বয়োত্তীর্ণ কিশোর, গুচ্ছ গুচ্ছ ঘনকেশ তাহার মস্তকের উপর হইতে […]
-
ঘা
তোমার জিভের দুপাশে ঘা ঘা ভরে গেছে শান্তাপমা। এসো আরো নিকটস্থ দেখি উহ তোমার শ্লেষা ধারালো দ্বিপাক্ষিয় ।। আমরা বরং ফেবিকুইক এনে আমাদের জিভ গুলো জুড়ে ফেলি ।।। এখন আমাদের জিভেদের জুড়ে গেছে । শান্তাপমা আর আমি তাজমহল মাঝে মাঝেই দুপাশ সংক্রান্ত হাঁটছি। আমাদের মধ্যে দিয়ে বিধানসভা রাষ্ট্রীয়শোক সংবিধানসভা পেরিয়ে যাচ্ছেন সুরঞ্জিত ।। শান্তাপমা এই […]
-
কাগজের নৌকো
মাঝে মাঝে লক্-আউট , লে অফ্ , সাসপেনশন অফ ওয়ার্ক – এইসব নিয়েই এখানে বেশিরভাগ চটকল চলে অথবা চলেনা । দেখলেই বোঝা যায় । শ্রমিকদের কোয়ার্টারগুলো নোনাধরা , দেয়ালে কোথাও কোথাও ইঁট বেরিয়ে গেছে । এখানেই শ্রমিক ইউনিয়নের অফিস । তার অদূরে লম্বা ড্রেনটা পেরোলেই একটা বিরাট বটগাছ । তার একদিকে মুদির দোকান আর অন্যদিকে […]
-
অণুগল্প সংখ্যা
করোনাভাইরাসের হানা মানবসভ্যতাকে এক বিশাল সঙ্কটের মধ্যে ফেলেছে। গোটা পৃথিবী জুড়ে এমন সঙ্কট এর আগে আসে নি। ভারত সহ অধিকাংশ দেশেই আজ লকডাউন। ভবিষ্যৎ পৃথিবীর ছবিটা কেমন হবে তার দিশা পাওয়াটাও সহজ হচ্ছে না আজ। এমন এক অন্ধকার সময়ে আগামীদিনে ঝড় থেমে যাবে এমন আশা বুকে বেঁধে রেখেই ঘরবন্দি আমরা। মৃত্যু আর ধারাবাহিক আতঙ্কের বিবরণ […]
-
মেরুদন্ড ও অন্য গল্প
মেরুদন্ড গান্ধীজীকে অসম্ভব শ্রদ্ধা করতেন আমার দাদু ! আমাকে বললেন, ‘দ্যাখ, সেই পরাধীন যুগে, অত্যাচারী ব্রিটিশের সামনে আমাদের সকলকে, সব ভারতবাসীকে, মেরুদন্ড সোজা করে চলতে শিখিয়েছেন !’ আমার দুষ্টুবুদ্ধির বয়েস ! তর্কের গলায় বললাম , ‘কোথায় দাদু, ছবিতে দেখেছি, হাতে লম্বা লাঠি নিয়ে সামনে একটু ঝুঁকে হাঁটছেন ! বরং পেছনের লাইনের লোকগুলো ঘাড় মাথা সোজা করে ফলো করছে !’ বিচলিত না হয়ে দাদু উত্তর দিলেন, ‘ওঃ, ওই […]
-
বানপ্রস্থ
অবসর মুহূর্তে অরিত্র ভাবে জীবনটা অন্য খাতে বইত কি? কৈশোরের চৌকাঠ পেরিয়ে যৌবনে ভাবতো কাকে জীবন সঙ্গিনী হিসেবে বেছে নেবে? স্নাতকোত্তর পর্বে অরিত্রর চারজন সুন্দরীকে দুই অক্ষরী নাম ও ব্যাবহারের জন্য পছন্দ। তাদের নিয়েই কল্পনা ভবিষ্যতে জীবন কাটাবার … নিভা, প্রিয়া, প্রীতি, নাকি লিপি। নিভার বিয়েতে গায়ে গতরে খেটেও ছিল ওর বাবার অনুরোধে। গায়েহলুদের আগের […]
-
দুটি অণু গল্প
পোড়ামুখ দোলের দিনে শ্যামসুন্দর-শ্রীরাধিকাকে ফাগ মাখাতে আজ সকলের সাথে চন্দ্রিমাও হাজির হয়েছে দোলমন্দিরে। চাতরার দোলমন্দির পাঁচশত বছরের পুরানো। ভগবান শ্রীচৈতন্যদেবের পবিত্র পাদস্পর্শ পড়েছিল ওই দোলমন্দিরে। নবদ্বীপ থেকে পুরিতে যাওয়ার পথে চাতরার দোলমন্দিরে এক রাত কাটিয়ে গিয়েছিলেন। সেই থেকে ভক্তরা দোলউৎসবের দিনে শ্যামসুন্দরের সঙ্গে রঙের খেলায় মাতোয়ারা হন। শ্যামসুন্দর তাঁর শ্রীরাধিকা সনে ভক্তদের নিয়ে সকাল থেকে […]
-
সাগর মেলার কিশোর ও অন্য গল্প
সাগর মেলার কিশোর সাগর মেলায় লক্ষ মানুষের ভীড়।বেশীর ভাগেরই উদ্দেশ্য পূণ্যস্নান, কপিল মুনির মন্দিরে পুজো দেওয়া।তার মধ্যে বহু মানুষ হাজির রোজগারের তাড়নায়।দোকানী, ফেরিওয়ালা, মালিশ ওয়ালা, জ্যোতিষী, টোটকা ওষুধ বিক্রেতা, আরও কত পেশার মানুষ হাজির মেলাপ্রাঙ্গনে কিছু রোজগারের আশায়।ভিখারীরাও সার দিয়ে বসে থাকে প্রাপ্তির আশায়।মানুষ পূণ্য সঞ্চয় করে সাগরে স্নান ক’রে, মন্দিরে পুজো দিয়ে, ভিখারীকে ভিক্ষে […]
-
ঘরে ফেরা
বুড়ো বাড়িতে অশান্তি করে রাস্তায় বেরিয়ে পড়লেন এই প্রতিজ্ঞা করে যে তিনি আর ঘরে ফিরবেন না।হাঁটছেন তো হাঁটছেন। মাথার উপর খর সূর্য। চেনা রাস্তা শেষ হল। সঙ্গে আনা শুকনো চিড়ে শেষ হল। সূর্য পশ্চিমে ঢলে ঘরে ফেরার বার্তা দিল। পশ্চিমের লাল অনুরাগ গায় মেখে পাখিরা কলকাকলিতে দিনকে বিদায় দিয়ে নীড়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিল। জলাশয়ে তাদের […]
-
চিলেকোঠা
চিলেকোঠার এই ঘরটা পুকাইয়ের সাম্রাজ্য ৷ এখানে সে এলোমেলো থাকার স্বাধীনতা পায় ৷ তা নইলে নীচের তিনখানা ঘরই যা সাজানো গোছানো, তাতে পান থেকে চুন খসবার জো নেই ৷ এই চিলেকোঠার ঘরে এলে পুকাই যেন নতুন করে অক্সিজেন পায় ৷ ঘরে মেসির বিরাট বড়ো পোষ্টার ৷ জানালা খুলে দিলেই সামনের রাস্তা দিয়ে লোকেদের চলাচল নজরে […]
-
স্টাইল
কি হল পেলে? – স্ত্রীর উত্তেজিত কন্ঠের প্রশ্নের উত্তরে নীরব রইলেন ধূর্জটিবাবু। ” না”,বলছে- “অল দি রুট্স ইন দিস লাইনস আর বিজি,প্লিজ ডায়াল আফটার সামটাইমস।” ইস্- এই এক ঢং এর কথা – কত মানুষ নিরুপায় হয়ে আর একটা মানুষকে খোঁজে, সেটা একদলের কোন হুঁশ থাকলে হয়।- স্ত্রীর অকাট্য যুক্তি আর ধীরাজকে না পাওয়ার উত্তেজনা এবং […]
-
ফ্ল্যাশব্যাক ও অন্যান্য গল্প
ফ্ল্যাশব্যাক ইনটলারেবল! এভাবে আর থাকা যায় না। আস্তে! কেন, আস্তে কেন! সবাই জানুক। তোমার গুণধর বোনের কথা! কেন, কী হয়েছে! আচ্ছা, আমি কী দোষ করেছি বল তো! সবের মধ্যেই দোষ ধরে আমার। হ্যাঁ, দোষের মধ্যে বিয়ে করেছি তোমায়। আস্তে। সেদিন বাড়িতে ঢোকামাত্র জেরা! এত দেরি কেন? কোথায় গেছিলে? ওকে কৈফিয়ত দিতে যাবো কেন! চুপচাপ […]
-
লকডাউনের গল্প
লকডাউনের গল্প – এক করোনার জন্য লকডাউনে ঘরের অনেকগুলো পড়ে থাকা কাজ সামলে নিচ্ছে অনুমিতা। আজ রান্নাঘরের র্যাকগুলো ঝেড়েমুছে পরিস্কার করে নেওয়ার দিন। তাকের ময়লা কাগজগুলো ফেলে দিয়ে নতুন কাগজ পাততে গিয়ে হঠাতই ওর হাতে উঠে এল সেই কাগজটা। গত ফেব্রুয়ারি মাসে কলকাতা থেকে প্রকাশিত খবরের কাগজে বের হয়েছিল চিনের এক অসহায় বাবা ও তাঁর […]
-
কয়েকটি গল্প
হাত শরীর মানেই কি আড়াল-আবডাল? শরীর মানেই কি অন্ধকার গলি-ঘুঁজি? শরীর মানেই কি ঘরের জানলায় ফুটো? শরীর মানেই কি কাপড়ের ফাঁক-ফোকর? পুকুরে ডুব দিতে গিয়ে বাসন্তী পুকুরের জলে নিজের শরীর দেখে। শরীর তো নয়, যেন একটা ভাঙা নৌকো। তবুও দেখে। পুকুরের পাড়ে দাঁড়িয়ে দেখে। বাসন্তী আজ আর নিজেকে আড়াল করে রাখে না। না, লজ্জা হয় […]
-
অসভ্য
তিনদিন হলো তনিমারা এ পাড়ায় ভাড়া এসেছে । বেশ ভালো এলাকাটা, কোনো ঝুট ঝামেলা নেই । কিন্তু উল্টো দিকের ফ্ল্যাটের ওই ছেলেটা এমন ড্যাব ড্যাব করে তাকায় বিরক্ত লাগে!! এতো ছিঁচকে যে রাগী চোখে তনিমা ওর দিকে তাকিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করলেও অসভ্যের মতো আরো বেশি করে যেন দেখে ..বোধহয় মিচকি হাসিটাও সংগে থাকে । এতটা […]
-
মনের ডায়েরি ও অন্য গল্প
মনের ডায়েরি মনের কথা প্রকাশ করার দুটো জায়গা ছিল তিন্নির।মা আর ডায়েরি।মাকে মুখে বলতে হতো না।মনখারাপে হাসি মুখে থাকলেও জাদুবলে ঠিক ধরা পড়তো অভিনয়। আর ডায়েরি লেখাটাও মার থেকেই পাওয়া। আজ তিন্নিও মা। মায়ের মৃত্যুর পর মায়ের ডায়েরিটা পড়ে কতবার কেঁদেছেও। কত কষ্ট করেছে মা সংসারে সবাইকে ভালো রাখতে গিয়ে।হাসিমুখে নিজের সব ইচ্ছা জলাঞ্জলি দিয়েছে, […]
-
শর্ট-সার্কিট
চি চি চি। লোডশেডিং না শর্ট সার্কিট ? এমন অন্ধকার হয়ে গেল কেন? আগেও একদিন হয়েছিল। কিন্তু আজকের অন্ধকারটা খুব অন্যরকম। পাখিগুলো অমন চিৎকার করেই বা উঠল কেন? গত চারমাস ধ’রে ঝকঝকে ফ্ল্যাটের সুন্দর জানালাটা দিয়ে ঈশান সবসময় পাখির বাসাটাকে দেখে। ইলেকট্রিক তারে ছোট্ট পাখির নিপুন চঞ্চুতে বোনা বাসা। দিন পনেরো হল আরও দুটো ক্ষুদে […]
-
নো এন্ট্রি
নো এন্ট্রি – ১ “তাই বলছিলাম, মানুষের ভালোবাসায় আমাদের দল চলে, কর্পোরেট এর টাকায় নয়,আজকের এই সমাবেশে জনগণের উপস্থিতি সেকথা প্রমাণ করছে, সবসময় আপনারা এভাবেই আমাদের পাশে থাকবেন, আপনারাই পারেন আগামী নির্বাচনে আমাদের দলের মতামতকে সারা দেশের মানুষের সামনে তুলে ধরতে, —–, তাই আজকের মত আগমী নির্বাচন এর দিনগুলিতে এভাবেই উপস্থিত থেকে ভোট বাক্সে […]