গল্প পড়ুন
এই মুহুর্তে বাংলা ভাষায় লেখালিখি করেছেন এমন গল্পকারের সংখ্যা কত? সত্যি বলতে কী ‘গল্পের সময়’ তা জানে না। কয়েকজন ব্যাক্তি ও কয়েকটি সংস্থা উদ্যোগ নিয়ে দুই বাংলায় লেখক-কবি-সাহিত্যিকদের নথিভুক্তকরনের উদ্যোগ নিয়েছেন। কিন্তু তা কোনও ভাবেই সম্পূর্ন নয় বা হওয়া সম্ভব নয়। কারন প্রতিনিয়তই লেখালিখির জগতে আসছেন বহু মানুষ। ইন্টারনেটে বাংলা গল্পের ম্যাগাজিন করতে গিয়ে আমরা লক্ষ্য করেছি অনেক লেখকই এখনও কম্পিউটার এড়িয়ে চলেন। কাগজ-কলমেই তাঁরা স্বচ্ছন্দ। চিরাচরিত ছাপা ম্যাগাজিন, লিটল ম্যাগ, শারদসংখ্যা বা সংবাদপত্রের সাময়িকীতেই তাঁরা লেখালিখি করেন। অন্যদিকে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কম্পিউটার ও ইন্টারনেটে স্বচ্ছন্দ একদল লেখককুল রয়েছেন। তারা ফেসবুকে পোস্ট করছেন, ব্লগ বানাচ্ছেন, ই-ম্যাগাজিনেও লিখছেন। ‘গল্পের সময়’ এই দুই পক্ষকেই চায়। নবীন ও প্রবীন গল্পকারদের গল্প পড়ুন এই পাতায়।
-
চন্দ্রমল্লিকার সৌরভ
‘একটু পেনটা দেবেন?আমার পেনটা আনতে ভুলে গেছি? কলেজ নোটিশ বোর্ড থেকে ক্লাশ রুটিনটা তুলে নেবো।’ – হ্যাঁ, হ্যাঁ, নিন না। বলেই সমরেশ পেনটা এগিয়ে দিল ভদ্রমহিলার দিকে। চোখে চোখ পড়তে একটু মৃদু হাসলো। অসম্ভব সুন্দরী। গায়ের রঙ দুধে আলতা। সেইসঙ্গে মানানসই শাড়ি আর ব্লাউজ। কপালে ছোট্ট একটা টিপ। চোখে পাওয়ার চশমা। বেশ বুদ্ধিদীপ্ত চোখ-মুখ। – […]
-
১০০% লাভ
তন্ময়কে সবাই বলে ‘আসলি খিলাড়ি’। খেলতে নামলে ড্র করে খেলা শেষ করা ওর ধাতে নেই। চেহারায় যে ধাতু থাকলে স্মার্ট বলা যায় সেগুলোর বাইরেও ইমেজ নামে একটা বস্তু ওর আছে যা থাকলে আগেকার দিনে রককালচারে বলত—-লেডিকিলার। যদিও এখনকার দিনে লেডিকে কিল করতে হয় না,শহরে বেশির ভাগ লেডিই কিল করে রাখে ছেলেদের।তাই শব্দটা অর্থে র অবকর্ষতায় […]
-
স্বর
একটা গলার স্বর ঘুরে বেড়াচ্ছে সারাক্ষণ। ঘুরে বেড়াচ্ছে গ্রাম-গঞ্জ-শহরে। অনেকেই হয়তো বুঝতে পারছে। আবার কেউ বুঝতে পারছে না। আমি কিন্তু বেশ বুঝতে পারছি, সেই স্বরের উজ্জ্বল উপস্থিতি।। সেই গলার স্বরটা বাইরে ঘুরতে ঘুরতে কখন যে কোন ফাঁকে, আমার ঘরে বেমালুম ঢুকে পড়েছে বুঝতে পারিনি। এখন মনে হচ্ছে, পারমানেন্ট জায়গা করে নেবে আমার ঘরে। যেন আমার […]
-
অ্যানিভারসারি
“ টু রেগুলার চিকেন পিজ্জা” – অর্ডারটা দিয়েই আবার মোবাইলে মনোযোগ করল অমিত। ওপারের কণ্ঠস্বর একটানা কোণও এক কাহিনি বর্ণনা করে চলেছে ক্ষণিকের হাসির বিরতি সহকারে। অমিতের মুখটাও খুশির এক মায়াবী আভায় উজ্বল হয়ে উঠতে লাগল। রেস্তোরা থেকে বেরিয়ে এসে পারকিং লট থেকে গাড়িটা বার করে অমিত সোজা চলে গেল একটা আইসক্রিম পার্লারে। সেখানেও দুজনের […]
-
প্রথম অনুভূতি
সকাল থেকেই মিষ্টির আজ মন খারাপ। আজ কলেজ যাওয়া নেই। মোবাইলে দেখলো সাতটা বাজে। আবার লেপ মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়লো। হোয়াটস অ্যাপে মেসেজ ঢুকেই যাচ্ছে। বিরক্ত হয়ে নেট কানেকশনটা অফ করে রাখলো। কিন্তু ঘুমটা এখন আর হবে বলে মনে হচ্ছে না। বাইরে মায়ের হাঁকডাক শোনা যাচ্ছে। “কি রে আর কতক্ষন বিছানায় পরে থাকবি? আমাকে তো […]
-
ইহলোক
সম্প্রতি মা’র কিছু চিঠি আমাকে ভারি অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে। চিঠিতে আর আগের মতো অনিয়মিত টাকা পাঠানোর অভিযোগ থাকে না। মাসের এক দু তারিখে ডাকযোগে টাকা না পাঠালে ক্ষোভে দুঃখে চিঠি – আমি মরি না কেন, মরলে তোমরা বেঁচে যাও, মা’র এমনতর আক্ষেপ থাকে চিঠিতে। কিন্তু সম্প্রতি সব চিঠিতে কেবল বাবার নামে অভিযোগ – তোমার বাবা […]
-
প্রাক্তন প্রেমিক
মিনিবাসে উঠে আর একবার চিঠিটা পড়ল অশোক। ‘তুমি পাঁচটার আগেই চলে এসো। আজ তোমার জন্মদিন। দেখেছ, আমার কেমন মনে আছে !’তারপর আবার ভাঁজ করে রেখে দিল পকেটে। গোটা চিঠির কয়েকটি মাত্র লাইন, এর বেশি আর পড়বার দরকার হল না। মনে আছে, সবই মনে আছে মাধুরীর। এই ছ’বছরে, এত দীর্ঘ একটা সময়ে, অসংখ্য ফুল ঝরে গেছে, […]
-
অন্তঃসলিলা
বহুদিন পরে দেবব্রত আজ আবার ধীরে ধীরে পা চালায় কফি হাউসের দিকে। ঝাড়াপোঁছা ঝকঝকে পরিচিত সিঁড়িটার মাথায় পা দিতে না দিতেই ভিতর হতে প্রসন্ন চোখে আহ্বান আসে, “এই যে দেবব্রত। খবর কি। আজকাল যে তোমার দেখাই পাওয়া যায় না।” একটা চেয়ার মৃদু ঠেলে দেয় পুরানো লেখকবন্ধু, শিবনারায়ণ ব্যানার্জী। “তারপর, তোমাদের কাগজের কদ্দুর। নূতন কোনও বই […]
-
বোঝা
পরীক্ষার হলে বসবার যুগ শেষ হয়ে যাবার পরে এমন করে আর কারুর প্রশ্নের জবাব দিতে হয়নি। প্রশ্নতালিকার সহজ-শক্ত বেছে নিয়ে উত্তরের সুযোগ পাইনি। কফি হাউসের দোতলার বারান্দার মুখোমুখি বসে মূর্ত্তিমতী কৌতুহলের প্রশ্নের জবাব দিতে দিতে নিজের অবিমৃষ্যকারিতায় অনুশোচনার অন্ত ছিল না। আমার মধ্যে কেমন একটা খেলো সামাজিকতার আধিক্য আছে দেখেছি। হঠাৎ পথে চেনা-লোক কুড়িয়ে তাকে […]
-
শীতের মানচিত্র
সারা শীতকাল মহিমের ঘুমিয়ে পড়াটা এরকম। কাঁথার ভিতরে তার বাবার সঙ্গে পাশাপাশি শুয়ে, অন্ধকার ঘর, ঘরের উপরের কড়িকাঠ দেখা যায় না, এক সময় বাবা বিড়ি ধরায়, মহিম এক ঝলকে দেখতে পায় গোটা ঘরটা। দেয়ালে গৌরনিতাইয়ের ছবি, বাঁশের আলনায় থাক থাক সার দিয়ে রাখা কাঁথা-বালিশ। দেশলাইয়ের কাঠি নিবে গেলে ফের অন্ধকার, চুপচাপ ঘর। শুধু বাবা যখন […]
-
যে বছর শীত কম পড়ায় আমরা খুব চিন্তিত হয়ে পড়েছিলাম
পৌষ ও মাঘ এই দুইমাস শীতকাল। শীতকাল উৎসবের ঋতু। আমাদের শহর জুড়িয়া মেলা বসিয়া যায়। চর্মশিল্প মেলা, হস্তশিল্প মেলা, সুখাদ্য মেলা, পুস্তক মেলা প্রভৃতির সমারোহে সকলে মাতিয়া ওঠে। ময়দানে সার্কাস আসে। শিশুরা সার্কাস দেখিতে বড় ভালোবাসে। শীত পিকনিকের ঋতুও বটে। বাস ট্রাক ম্যাটাডোর লইয়া পিকনিক পার্টির লোকেরা হৈ হৈ করিয়া দূরদূরান্তে রওনা দেয়। তাহাদের কলধ্বনি […]
-
শীত বিষয়ক একটি গল্প
বড়দিন, বর্ষশেষ আর ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষে ইন্টারনেটে বিভিন্ন শপিং সাইটে ছাড়ের ছড়াছড়ি। কেউ পঞ্চাশ শতাংশ ছাড় দেয় তো কেউ দুটো কিনলে সত্তর। কেউ আবার বলছে যদি লাকি হন তাহলে হানড্রেড পারসেন্ট ক্যাশব্যাক – অর্থাৎ পুরোটাই ফ্রি। নেট দুনিয়া জুড়ে এ এক আজব দোকানদারি। কে লাভ করছে, কার ক্ষতি হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারে না আলোকপর্ণা। আগে […]
-
এম সি কিউ ও অন্য গল্প
এম সি কিউ কোন দেশ ২০১৮ সালে শ্রেষ্ঠ উপস্হাপকের পুরস্কার পেয়েছে মউলী? অপশন দিন স্যার অপশন না দিলে এগোতে পারছো না? কী করব স্যার, দিনরাত মাল্টিপল চয়েস ঘাঁটতে ঘাঁটতে জীবনটাই এম সি কিউ হয়ে গেছে। ঘুমে,জাগরণে,স্বপ্নে… ওভার স্মার্ট? একটু তো হতেই হবে স্যার। ওক্কে,ইন্ডিয়া,চায়না,ক্যানাডা, ব্রাসিলিয়া- হু? স্যার, প্রদর্শক বা উপস্হাপক মানে কী? বাংলাটাও গেছে? শোন, যে […]
-
উৎসব সংখ্যা’২০১৮
প্রকাশিত হল ‘গল্পের সময়’ উৎসব সংখ্যা। পড়ুন নবীন ও প্রবীন গল্পকারদের নানা স্বাদের গল্প। সব সময় গল্পের সময়।
-
অস্তু
মাসে একবার এই শনিবারের কিটি পাৰ্টিটাতে আসতে নন্দিতার বেশ ভালোই লাগে ! ঠিক করে বলতে গেলে আসবার জন্যে ও প্রায় মুখিয়ে থাকেই বলা যায় ! দক্ষিণ কলকাতার অভিজাত পাড়ার এই ‘ঘরোয়া’ নামের আবাসনে ফ্ল্যাটভাড়া নিয়ে ওরা এসেছে মাসতিনেক হলো ! ওরা মানে নন্দিতা আর ওর স্বামী সুপ্রতিম ! তা আবাসনের নামটা যেমন ‘ঘরোয়া’ তেমনি মানুষগুলোও বেশ হাসিখুশী আর মিশুকে ! অন্তত নন্দিতার […]
-
গোঁফেশ্বরের জাদু
গলায় গামছা লাগিয়ে একটা লোককে টেনে আনছে-গরু টানার মত। তার আসার মোটেই ইচ্ছে নেই। রীতিমত ছ্যাঁচড়াচ্ছে। কিন্তু, পেছনে ভেঙে পড়েছে হাটুরে সমস্ত লোক। হৈ হৈ শব্দ। যেন একটা বিজয় মিছিল! সকাল দশটা। থানার পাশেই বাজার। এমনিতেই এই সময় বাজারে যথেষ্ট লোকজনের সমাগম হয়। তার উপরে আজ হাটবার। সকাল থেকেই দূর দূরান্ত থেকে মানুষ সব এসে […]
-
ঘেরাও
এ ঘটনা ষাটের দশকের শেষের দিকে । এ রাজ্যের কলকারখানায় তখন মাঝে মাঝেই চলছে ‘ ঘেরাও’ । শ্রমিক অসন্তোষ এবং দাবী আদায়ের এক নতুন অস্ত্র। কখনো জেনারেল ম্যানেজার , কখনো ডাইরেক্টর অর্থাৎ সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা যাদের কিছুটা আছে বেছে বেছে শুধু তাদের ওপরই এই অস্ত্রের প্রয়োগ চলছে । উত্তাল সময় । উচ্চপদের অফিসাররা তটস্থ । […]
-
ঋকের সেতু
তাজপুরে পৌঁছাতে বেলা এগারোটা বেজে গেল। নন্দকুমার থেকে দীঘা পর্যন্ত রাস্তা চওড়া হচ্ছে। তার জের। প্রচণ্ড জ্যাম। ভোর ছটায় বেরিয়েও লাভ হল না। আজকের দিনটাকে পুরোপুরি এনজয় করা গেল না, ঋক বেশ জোরেই কথাটা বলে ফেলল। কথাটা শুনেই তুলি বলল, কেন জারনিটা তো বেশ এনজয় করা গেছে – কোলাঘাটে অতক্ষণ ধরে টিফিন করার কি ছিল। […]
-
চুয়াল্লিশটি গোলাপ
১ খবরটা পড়েই আনমনা হয়ে গেলেন অনিরুদ্ধ। বিবাহিত জীবনে বিচ্ছেদের ঘটনা হামেশাই ঘটছে। না পোষালে একসাথে থাকার কোনও যুক্তি নেই। কিন্তু তাই বলে এই বয়সে! এখন তো আরও বেশি করে একে অন্যকে আঁকড়ে ধরার সময়। খবরটা দুঃখ দিলেও অনিরুদ্ধের স্মৃতি রোমন্থনের নেশাকে একটু তা দিয়ে দিল। তাঁর ও শাঁওলীর এতগুলো বছরের সম্পর্কের স্মৃতি জমতে জমতে […]
-
পিং-পং
সন চোদ্দোশো পঁচিশের গ্রীষ্মসন্ধ্যা। পিয়ালী আর অনিন্দ্য নিমন্ত্রণরক্ষার জন্য প্রায় তৈরি। পিয়ালী আয়নার সামনে চুল আলতো জড়িয়ে ঘাড়ের ওপর তুলে ফ্রেঞ্চ নট বাঁধছে- দু এক গুছি রুপোলি রেখা সিঁথির পাশে। অনিন্দ্য রেডি অনেকক্ষণ – তাড়া দিচ্ছে। পিয়ালী শাড়ি ঠিক করতে করতে বলল-‘এত কিসের তাড়া! যাচ্ছ তো হস্টেলের রুমমেটের বাড়ি, মানে আমাদের মতই বুড়ো আর বুড়ি।এক্স […]
-
ভালোবাসা কারে কয়
রোদটা একটু পড়ে যেতেই মনীষা হাতড়ে হাতড়ে একটা চেয়ার টেনে এনে বসলো দোতলার ঝুল বারান্দাটায়। আগে আগে বেশ অসুবিধা হতো। সন্দীপ তখন সাহায্য করতো। হাত ধরে নিয়ে গিয়ে চেয়ারে বসাতো। মনীষা চোখে দেখতে পায় না। সব সময় চোখে একটা কালো চশমা পরে থাকে। এক এক করে ৩৫টা বছর কেটে গেছে এভাবে। ওর এখন বয়স ৫০ […]
-
ক্যানসার
এক এখন মনে হচ্ছে পৃথিবীটা বড্ড ছোট আর গোল। ওই ডাক্তারবাবুর সঙ্গে ঠিক দেখা হয়ে যাচ্ছে। কোনভাবে আবিরার শ্বশুরবাড়িতে কথাটা জানাজানি হলে সমাজে মুখ দেখানো বন্ধ হয়ে যাবে। লালা! মেরে গোপাল! রক্ষা করো। পরিবারের সম্মান তোমার হাতে! আজ বেশী করে লাড্ডু বানিয়েছেন আবিরার মা আশাদেবী। তার গোপালকে সন্তুষ্ট করার জন্য ঘুষ দিচ্ছেন। বিয়ের আগেই আবিরার একটা ভয়ানক […]
-
অচেনা অরণ্যে
লাল রঙের ঝুঁটিওয়ালা মোরগটা সারা মাঠ জুড়ে দৌড়ে বেড়াচ্ছে। আসে পাশে তার সঙ্গী সাথী বাকি মোরগ মুরগিগুলি একটাও নেই। মোরগটা মাঠের এমাথা থেকে ওমাথা দৌড়াচ্ছে, বোধহয় মৃত্যুভয়ে। নিশ্চই বুঝতে পেরেছে যে ওর মৃত্যু আসন্ন। তুলনায় শক্তিশালী এবং উর্বর মস্তিষ্কের প্রাণী মানুষের উৎকৃষ্ট মানের খাদ্য হতে চলেছে সে। ফাঁকা মাঠটার কোনার দিকে রয়েছে একটা খড়ের ছাউনি […]
-
গুড টাচ ব্যাড টাচ
বালি স্টেশনে ব্যান্ডেল লোকালটা ঝমঝম করে ঢুকে পড়ে একটু স্থির হতেই, হুড়মুড়িয়ে উঠে পড়ল সুরমারা। আর্য চেঁচিয়ে বলল সবাই উঠেছো তো? ওদিক থেকে মিতালি উত্তর করলো, হ্যাঁ হ্যাঁ আমরা সবাই উঠেছি,তোমরা? আবির জিজ্ঞাসা করল, মা কোথায়? রিঙ্কিতা তোমাদের ওখানে আছে তো? হাওড়া থেকে ছাড়া রাত্রি নটা ত্রিশের ব্যান্ডেল লোকাল বালি এল প্রায় দশটায়। ট্রেনে আজ […]
-
মুন্নারের সেই রাত
গল্পটা আমি শুনেছিলাম আমার এক বন্ধু পৃথ্বীশের কাছে। সে আজ থেকে প্রায় বছর দশেক আগের কথা। পৃথ্বীশ সদ্য বিবাহিত তখন, কাছাকাছি সময়ে ওর আর এক বন্ধু, অরিত্রর ও বিয়ে হয়েছিল। পৃথ্বীশ-মৌমিতা আর অরিত্র-সোহিনী, দুই দম্পতি একসাথে বেড়াতে গেছিল কেরালা। মানুষের হনিমুনের মেয়াদ ঠিক কতদিন? জানা নেই বোধহয়, হীরকরাজের গণৎকার এর মত বলা যায়, “যদ্দিন তদ্দিন”! […]
-
সামন্তবাড়ির পাখি
[১] শীতের পড়ন্ত বেলা। বেলা প্রায় তিনটে। সোনার রঙের একটা আলো সামনে পেয়ারা,কৃষ্ণচূড়া আরও নানান সব ছোট-বড় গাছের ফাঁক দিয়ে গলে এসে পরেছে শতবর্ষ পুরনো সামন্তবাড়ির আঙিনায়। নারায়ণ সামন্ত দাওয়ায় বসে এই বাড়ির দলিল আর প্ল্যান পর্যবেক্ষণে প্রচণ্ড ব্যস্ত। এমন সময় এসে হাজির তার জ্ঞাতিভাই হরিহর। জ্ঞাতিভাই হলে কি হবে, দুজনের স্বভাবের মধ্যে বিশাল পার্থক্য। […]
-
আনন্দ নিকেতন
আনন্দ নিকেতনে আজ খুশির হাওয়া সকাল থেকেই। প্রতিদিনের তুলনায় আজ সবার মনে একটু বেশি খুশি। আর এক সপ্তাহ বাদেই পুজো। অন্যদিন অনেকেই পাঁচটার সময়ে উঠে মাঠে মর্নিং ওয়াক করে। কিন্তু আজ সবাই মহালয়া শোনার তাগিদে ঘড়ি ধরে চারটে বাজতেই উঠে পড়েছে। প্রতিবার এই দিনটাতে জলখাবার খেতে খেতে হলঘরে বসে সবাই প্রি পুজো বৈঠক করে পুজোর […]
-
বুনোহাঁস
ঠা-ঠা দুপুরে আমরা ধরেছি রানীহাঁস দিঘির পথ। আমি আর কল্পনাথ। কল্পনাথ আমার দূর সম্পর্কের জেঠতুতো ভাই। ওই বয়েসে, যারপরনাই বাউন্ডুলে। সব অর্থেই ভবঘুরে। চতুর্দিকে চষে বেড়ানোর যেসব গল্প শোনায়, কেমন জানি মনে হয়, এই ছোট্ট বয়েসেই না-হোক আধখানা দুনিয়া চক্কর মেরে ফেলেছে। জেঠারা থাকে গ্রামের অন্য প্রান্তে। কল্পনাথের সঙ্গে তাই রোজ দুবেলা দেখা হওয়ার উপায় […]
-
মানসের বোন
হাঁটছিলাম। খান্না থেকে শ্যামবাজদার পাঁচমাথা কতোটুকুই আর পথ, সেখান থেকে বাসে উঠবো। পাঁচ মাথার মোড়ে গিয়ে রাস্তা পার হয়ে ওপারে বাস ধরবো, সিগন্যাল লাল হওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে আছি, দেখি স্টার্ট নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা একটা ট্যাক্সির দরজা খুলে একটা ছেলে উঠতে উঠতে ব্যস্তসমস্ত হয়ে চারদিকে তাকাচ্ছে সিগন্যাল খোলা পেয়ে যেতে না পেরে পিছনের গাড়িগুলো হর্ন দিচ্ছে […]
-
হার্মাদ ও চাঁদ
মহানন্দার বুকে চাঁদ ডুবকি লাগালে চন্দ্র দেবের চেহারাও কেমন একটু যেন বদলে যেতে থাকে। জিনস প্যান্ট, জিনস জ্যাকেটের অবশ্য এত কিছু দেখার সময় নেই। কাঁধে টাঙানো কাঁধঝোলা এই শীতের বাতাসে কেমন যেন একটু ঠকঠকিয়ে উঠতে আকাশে ঝোলা রোহিণীপতির মনে হলো, আরে বাপ রে বাপ, শীতের মহানন্দায় একটা রাতে যে সরাসর ডুব দিলাম, তাতে তো এতটুকুও […]