Tag Archives: গল্প
-
শিশিরের জল
দমদম এয়ারপোর্ট থেকে বেরোবার আগে তার পাসপোর্ট দেখে বাঙালি ইমিগ্রেশন অফিসার হেসে বললেন, ‘আপনি অষ্ট্রেলিয়ান?’ ‘হ্যাঁ। পাসপোর্টই বলছে আমি অষ্ট্রেলিয়ার নাগরিক।’ ‘বহু দিন পরে এলেন! ভাল থাকুন।’ পাসপোর্টে স্ট্যাম্প মেরে ভদ্রলোক সেটা ফেরত দিলেন। কাস্টমসেও কোনও অসুবিধে হল না। স্যুটকেস নিয়ে প্রি-পেড ট্যাক্সির টিকিট কেটে সে যখন বাইরে এল, তখন রাতের অন্ধকার গাঢ় হয়েছে। ড্রাইভার […]
-
বাংলাদেশ
আমাদের এই মফস্বল শহর থেকে ভারতের সীমান্ত খুব কাছে। প্রচুর লোকজন প্রতিনিয়ত এপার-ওপার করে। তাদের অধিকাংশই এদেশের। চোরাকারবারি, বৈধ ব্যবসায়ী, চিকিৎসা ও লেখাপড়ার জন্য যায় এমন লোকজন, আর আছে সেইসব মানুষ, যাদের খুব কাছের আত্মীয়স্বজন ওপারে আছে। আমাদের এই শহর ও এর আশপাশের গ্রামগুলোতে এরকম মানুষের সংখ্যা এখনও অনেক। ওপারের লোকেরাও মাঝে মাঝে এপারে আসে। […]
-
এই তো বেশ আছি
দিনে ঘুমোলে রাতে ঘুম আসতে চায় না । এপাশ ওপাশ বড় যন্ত্রনা দায়ক ! আবার সারাটা দুপুর জেগে থাকাটাও প্রাণান্তকর অবস্থা ! রোজকার মতো দুটো কাগজ নিয়ে সমন্বয় আজ বিছনায় না শুয়ে চেয়ারে গিয়ে বসল । মনে মনে ঠিক করেছে যে সে আজ কিছুতেই ঘুমোবে না । দেখি ঘুমটা কোথা দিয়ে আসে । বড় পত্রিকাটা […]
-
স্বর্গসন্ধানী
চাঁদিফাটা রোদে ধানের নাড়াগুলো যেন এবার ঝলসে উঠবে– এমন এক প্রখর বেলায় একজন পথিকের ক্লান্ত ঘোড়া মাঠের উপর দিয়ে যেতে যেতে প্রাচীন একটি অশথ গাছের নিচে থামতে বাধ্য হল। সে শুনেছে কুরুক্ষেত্রের কাছাকাছি কোথাও একজন সাধুপুরুষ থাকেন, যিনি সেবাপরায়ণ। সেই ঠিকানা এখন খুব দরকার। ক্ষুধায় তৃষ্ণায় তিনি ও তাঁর বাহন ভয়ানক অবসন্ন। অশথের ডাল ধরে […]
-
কেউ কেউ এভাবেই হারিয়ে যায় নাগরিক কোলাহলে
সে রাতে পূর্নিমা ছিল না, বাতাসের গান ছিল না। শুধু নিরবতা রাতকে নিয়ে ডুবে ছিল কল্পনার অদৃশ্য সমুদ্রে। সেই অদৃশ্য সমুদ্রের সমস্ত দুঃখ গায়ে মেখে ছাদ থেকে শূন্যে ঝাঁপিয়ে পড়বার আগে-পর্যন্ত রুপু ভাবছিলো, ‘মরে গেলে মানুষের সাথে সম্পর্ক থাকে না তবুও মৃত সম্পকের ইতিহাস কেউ চাইলেও সহজে মুছে ফেলতে পারে না’। যে ভালোবাসার মায়াজাল থেকে […]
-
টাকা কামানোর মেশিন
অফিস বেরোনোর ঠিক আগে ওইরকম অশান্তি করা কখনোই পছন্দ করে না আশিস। তাও আবার বাবা-মার সাথে। সারাদিনের মত মেজাজটা খিটখিটে হয়ে যায়। একে কাজের চাপ, তার উপর সংসারের দায়-দায়িত্ব – সব মিলিয়ে নিজের জন্য নিঃশ্বাস ফেলার সময়টুকু যখন পায় না, তখনই এমনটা ঘটিয়ে ফেলে সে। “বাবা পুজো তো চলে এল, ফেরার পথে সরস্বতী ঠাকুর টা […]
-
ভাত
লোকটার চাহনি বড়বাড়ির বড়বউয়ের প্রথম থেকেই ভালো লাগেনি। কী রকম যেন উগ্র চাহনি। আর কোমর পর্যন্ত ময়লা লুঙ্গিটা অত্যন্তই ছোট। চেহারাটা বুনো বুনো। কিন্তু বামুন ঠাকুর বলল, ভাত খাবে কাজ করবে। -কোথা থেকে আনলে? এ সংসারে সব কিছুই চলে বড়পিসিমার নিয়মে। বড়পিসিমা বড়বউয়ের পিসি-শাশুড়ী হন। খুবই অদ্ভুত কথা। তাঁর বিয়ে হয়নি। সবাই বলে, সংসার ঠেলবার […]
-
মতিজানের মেয়েরা
বিয়ে হলে নতুন সংসারে মেয়েদের একটি অবস্থান নির্ধারণ হয়, সে বাড়ির বউ হয়, বউ হওয়া মানে একটি নতুন জন্ম সুখ দুঃখ অনেক কিছু মিলিয়ে আপন ভুবন-সংসারের কর্তৃত্ব-এমন একটি ধারণা ছিল মতিজানের। কিন্তু এই সংসারে ওর অবস্থানটা যে কোথায় তা ও বুঝতে পারে না। এই সংসারের ওর কি প্রয়োজন সেটাও জানে না। মাথার ওপর আছে শাশুড়ি, […]
-
আত্মহত্যা
বিছানাটা ময়লা; বালিশটা তেলচিটে, তোশক থেকে বিশ্রী একটা ভ্যাপসা গন্ধ উঠছে … সারা বর্ষা রোদে পড়েছে কি না সন্দেহ। … এ বিছানায় শুয়ে বরং লাখ টাকার স্বপ্ন দেখা যায়, কিন্তু স্বপ্ন দেখা যায় না সুদুর্লভ প্রিয়ার। মেসের বিছানা নয় – বাড়িরই, তবে বাড়িতেও, মানে মোহনদের মতো বাড়িতে এর চাইতে ভাল কিছু আশা করা যায় না। […]
-
বসন্ত.com
যেদিন ‘গুগল’ সার্চ করতে করতে বসন্তকালেই যেন আক্ষরিক অর্থে ডুবে গেলাম। অজস্র মণিমুক্তোর ভেতর থেকে তুলে আনলাম টমাস হার্ডির কয়েকটি লাইন। “New cares may claim me / New lovers inflame me / She will not blame me / But suffer it so.” মন একটু উদাস হল কি? নতুন কোনো সম্ভাবনা নেই। জানি কোনো কোনো বিরল […]
-
পাখি তোমাকে
পাখী, বহুদিন তোমার কোন সংবাদ নেই। উড়ানে বিভোর তুমি, হয়তো সময় নেই অথবা সময় তুমি খুঁজবে না – এ তোমার সিদ্ধান্ত। আমি এখন দরিয়ার পানসি নৌকায় বসে নির্জনতা অনুভব করি। চারিদিকে নদীর কলরোল একই ভাবে উচ্চারিত, একই ভাবে বহমান। কেন জানি না আমার মনে হয় এই বিস্তীর্ন জলরাশি আমাকে বিদ্রুপ করছে। তুমি বোধহয় আমাকে […]
-
আবহমান
এ গাথা তো আমার হৃদয়ের…….অপরূপ নির্জনে শরীরে শরীর ছুঁয়ে দেওয়া খিন্ন হৃদয়ের কথা….বিপন্ন বাসনার দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা সুখ ও অসুখ…প্রসব যন্ত্রণার মতো গলাগলি হর্ষ ও বিষাদ….. যখন মন আমার হারিয়ে ফেলে তার দুর্লভ সম্পদ…….নির্জনতার গভীরে দেহ এসে সাজায় শত কারাকক্ষ তার…..চারদিকে ঘিরে থাকে বাসনার দুর্গম পরিখা…যদিও শরীরের জন্য আমার সঞ্চিত থাকে ভয়…….শরীরের গর্ভদ্বারে জুড়ে থাকে শতেক সংশয়…..সেই […]
-
হারায়ে সেই মানুষে…
সে হেসেছিল যখন তখন হাওয়ায় মঞ্জরীর বাস। ফাগুয়ায় রাঙা মধ্যদিন। পুকুরের জলে নিদাঘের ছায়া। সারা গায়ে তাপ নিয়ে ঘুরেছি পথে পথে, আর সেই পথ এমন করে রূপনগরে এসে মিলবে যদি জানতেম! অজানাকে জানব বলেই তো মনভাসির টানে পাড়ি দিয়েছি অচেনায়। দিনের আরশিতে নিশুতরাতের শোভা দেখলে এক জীবনে পরম রতন মেলে, মানুষ রতন গো, তাই তো […]
-
পথ
পথ চলছিল একা। আধা শহরের মধ্যবিত্ত পথ। আধা শহরের মধ্যবিত্ত পথ। রাজপথ তাকে পাত্তাই দেয় না। গলি পথেরা তাকে হতচ্ছেদ্দা করতে পারেনা। এঁকে বেঁকে বড় মেজ ছোটো বাড়ির পাশ দিয়ে চলতে চলতে এই রোদে বড় কষ্ট হচ্ছিল। সেই সকাল থেকে আকাশটা বদলে যাচ্ছে বারবার। এরকম চোখ পাকানো আকাশটাকে একদমই সহ্য করতে পারেনা সে। অথচ ভোরবেলায় […]
-
গল্প হলেও পার’ত
আমার কথা ১) “… উদ্যানে ছিল বর্ষাপীড়িত ফুল আনন্দভৈরবী। ” ভালোবেসে ফুলের মাথায় ধরতে গেলাম ছাতা, বস’ল বেঁকে; মৃদু বক’ল গাঢ় স্বরক্ষেপে— ‘কোন অধিকার তোমার? এই তো আমার বর্ষা প্রিয়তম! … যাও, সরো, সরো; প্রয়োজন নেই ছাতার। তাছাড়া, কোন অধিকার তোমার? …ব’ল, কোন অধিকার তোমার?’ ২) পেলব সন্ধ্যে নামার কথা ছিল অন্য সে’এক শেষ-বিকেলে। হঠাৎ […]
-
ঝরা পালকের কবি, আপনাকে…
“তুমি তো জানো না কিছু – না জানিলে, আমার সকল গান তবুও তোমারে লক্ষ্য করে; যখন ঝরিয়া যাবো হেমন্তের ঝড়ে – পথের পাতার মতো তুমিও তখন আমার বুকের ‘পরে শুয়ে রবে? অনেক ঘুমের ঘোরে ভরিবে কি মন সেদিন তোমার! তোমার এ জীবনের ধার ক্ষ’য়ে যাবে সেদিন সকল? আমার বুকের ‘পরে সেই রাতে জমেছে যে শিশিরের […]
-
পর্ব- মোহিনী
আঁখিকোণে কাজলের রেখা কী কেঁপে গেল? ম্লান হয়ে আসা শেষ দিবসের আলোতে মুকূরের দিকে চেয়ে থাকেন কৃষ্ণ, একটু অস্থির লাগে, কেমন জানি অচেনা একটা সুখে বুক-মন শূন্য হয়ে আসে। গোধূলির শেষ আলোকে বাইরের ধুলিপ্রান্তর কেমন মায়াময় মনে হয়। কে বলবে,এই প্রান্তরে রক্ত প্রবাহ একদিন সিক্ত করে দেবে প্রতিটি ধুলিকণা, কে বলবে এ এক যুদ্ধক্ষেত্র, একমাত্র […]
-
লেপ
বউ ব্যাপক সুন্দরী; যাকে বলে ছম্মকছল্লু সুন্দরী। শ্বশুরমশাই মালদার; দিয়েছে থুয়েছে অনেক। মোটা ক্যাশ, ভারি গয়না, দেদার আসবাবপত্র। ফুলশয্যার রাতে বরের মনে তবুও একটা খিঁচখিঁচ – কী একটা নেই, কীসের একটা অভাব। পালঙ্ক এসেছে পালিশ করা। নরম ফেনার মতো গদি মাথার বালিশ, কোল বালিশ। বাজারের সেরা ব্র্যান্ডের টিভি, সোফা। সবই তো আছে। তবু কেন বরের […]
-
স্বাদ
চতুর্দিকে গড়াগড় উঁচু হয়ে আছে পাঁচিল, শুধু পুবপানে সূর্য ওঠার জায়গাটা শূন্য করে দিতে অল্প ইরেজারের কাজ একদম কাঁটায় মাপা। ওই ফাঁক দিয়ে সে বাইরে যায় না কখনো, কুকুর এক্তিয়ার মানে। প্রায় এক বর্গমাইল তার সাম্রাজ্য। চৌকো জমিখানার ঠিক মধ্যে তার বাংলো। যার পাথরের মেঝে, কাচের জানালা, মসৃণ ছাদে ঝুলছে ঝাড়বাতি। জন্মাবধি সে এখানেই। তার […]
-
দুটি অণু গল্প
খবর রাত ন’টার ‘দেশের খবর’ পড়ে নিউজ ফ্লোর থেকে চিফ অ্যাংকার হন্তদন্ত হয়ে সোজা চলে গেলেন নিউজ এডিটরের রুমে। হাতে ধরা এক তাড়া প্রিন্টেড নিউজ স্ক্রিপ্ট। সেগুলো কিছুটা ক্ষোভের সঙ্গে টেবিলে আওয়াজ করে রেখে দিয়ে বললেন – সেই একই খবর রোজ রোজ। খুন – শ্লীলতাহানি – ধর্ষন আর অনার কিলিং। একটাও ভাল নিউজ নেই ? […]
-
মা
মাটিতে হাত দিয়ে খেতে নেই, খেতে বসে হাঁচলে মাটি থেকে একটা ভাত কুড়িয়ে খেতে হয়। কাউকে যাবার সময় পেছু ডাকতে নেই।খেয়ে উঠে আঁচিয়ে গোড়ালি ভিজিয়ে পা ধুতে হয়।তখন বড় হচ্ছি, সব কিছুতেই ‘কেন’ বলাটা যেন বাহাদুরি। মা বলত অত কেন বলতে নেই। বারণ করছি শোন। দুধ মুড়ির বাটিতে কলা ছাড়িয়ে দেবার সময় মা কলাটা ভেঙে […]
-
ক্ষুধিত পাষাণ
আমি এবং আমার আত্মীয় পূজার ছুটিতে দেশভ্রমণ সারিয়া কলিকাতায় ফিরিয়া আসিতেছিলাম, এমন সময় রেলগাড়িতে বাবুটির সঙ্গে দেখা হয়। তাঁহার বেশভূষা দেখিয়া প্রথমটা তাঁহাকে পশ্চিমদেশীয় মুসলমান বলিয়া ভ্রম হইয়াছিল। তাঁহার কথাবার্তা শুনিয়া আরো ধাঁধা লাগিয়া যায়। পৃথিবীর সকল বিষয়েই এমন করিয়া আলাপ করিতে লাগিলেন, যেন তাঁহার সহিত প্রথম পরামর্শ করিয়া বিশ্ববিধাতা সকল কাজ করিয়া থাকেন। বিশ্বসংসারের […]
-
একাদশী বৈরাগী
কালীদহ গ্রামটা ব্রাহ্মণ-প্রধান স্থান। ইহার গোপাল মুখুয্যের ছেলে অপূর্ব ছেলেবেলা হইতেই ছেলেদের মোড়ল ছিল। এবার সে যখন বছর পাঁচ-ছয় কলিকাতার মেসে থাকিয়া অনার্স-সমেত বি.এ. পাশ করিয়া বাড়ি ফিরিয়া আসিল, তখন গ্রামের মধ্যে তাহার প্রসার-প্রতিপত্তির আর অবধি রহিল না। গ্রামের মধ্যে জীর্ণশীর্ণ একটা হাইস্কুল ছিল—তাহার সমবয়সীরা ইতিমধ্যেই ইহাতেই পাঠ সাঙ্গ করিয়া, সন্ধ্যাহ্নিক ছাড়িয়া দিয়া দশ-আনা ছ-আনা […]
-
পুঁই মাচা
সহায়হরি চাটুয্যে উঠানে পা দিয়েই স্ত্রীকে বলিলেন-একটা বড় বাটি কি ঘটি যা হয় কিছু দাও তো, তারক খুড়ো গাছ কেটেছে, একটু ভালো রস আনি। স্ত্রী অন্নপূর্ণ খড়ের রান্নাঘরের দাওয়ায় বসিয়া শীতকালের সকালবেলা নারিকেল তেলের বোতলে ঝাটার কাটি পুরিয়া দুই আঙুলের সাহায্যে কাটার কাটিলগ্ন জমানো তৈলটুকু সংগ্ৰহ করিয়া চুলে মাখাইতেছিলেন। স্বামীকে দেখিয়া তাড়িতাড়ি গায়ের কাপড় একটু […]
-
বেদেনী
শম্ভু বাজিকর এ মেলায় প্রতি বৎসর আসে। তাহার বসিবার স্থানটা মা কঙ্কালীর এস্টেটের খাতায় চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মতো কায়েমি হইয়া গিয়াছে। লোকে বলে, বাজি; কিন্তু শম্ভু বলে ‘ভোজবাজি-ছারকাছ’। ছোট তাঁবুটার প্রবেশপথের মাথার উপরেই কাপড়ে আঁকা একটা সাইনবোর্ডেও লেখা আছে ‘ভোজবাজি-সার্কাস’। লেখাটার একপাশে একটা বাঘের ছবি, অপরদিকে একটা মানুষ, তাহার এক হাতে রক্তাক্ত তরবারি, অপর হাতে […]
-
টিচার
রাজমাতা হাইস্কুলের সেক্রেটারি রায়বাহাদুর অবিনাশ তরফদার ভেবেচিন্তে শেষ পর্যন্ত টিচারদের কিছু সদুপদেশ দেওয়া স্থির করল। বুড়ো বয়সে এমনিতেই তার ঘুম হয় কম, তার ওপর এইসব যাচ্ছে তাই খাপছাড়া ব্যাপারে মাথা গরম হয়ে যাওয়ায় কদিন আর ঘুম হয় নি। টিচাররা ধর্মঘট করবে বেতন কম বলে, বেতন বাকি থাকে বলে, এটা সেটা হরেকরকম অসুবিধা আছে বলে চাকরি […]
-
রস
রস নরেন্দ্রনাথ মিত্র কার্তিকের মাঝামাঝি চৌধুরীদের খেজুর বাগান ঝুরতে শুরু করল মোতালেফ। তারপর দিন পনের যেতে না যেতেই নিকা করে নিয়ে এলো পাশের বাড়ির রাজেক মৃধার বিধবা স্ত্রী মাজু খাতুনকে। পাড়া-পড়শি সবাই তো অবাক। এই অবশ্য প্রথম সংসার নয় মোতালেফের। এর আগের বউ বছরখানেক আগে মারা গেছে। তবু পঁচিশ-ছাবি্বশ বছরের জোয়ান পুরুষ মোতালেফ। আর […]
-
দুটি গল্প
গুরুগ্রামের গ্রেগর সামসা সকালে রোজকার প্রথামতো গুরুগ্রামের সেক্টর ৫৬-এর নির্জন রাস্তায় দুজনে হাঁটছি….বেশ ফুরফুরে হাওয়া দিচ্ছে…. মেজাজটাও বেশ মানানসই…..সপ্তাহান্তটা কিভাবে সুভালাভালি কাটানো যায় তাই নিয়ে দুজনের মধ্যে একটা মতান্তর প্রায় পেকে উঠেছে……এমন সময় হঠাৎ রাস্তার পাশের রাধাচূড়া গাছ থেকে আমাদের পূর্বপুরুষদের একজন খ্যাঁচম্যাচ মুখভঙ্গি করে নেমে এসে আমার বাঁহাত ধরে ঝুলে পড়লো…..হঠাৎ একিরে বাবা !! […]
-
নদী
একধারে জঙ্গল। তারপাশে ছোট্ট একটা নদী। ছোট বড় পাথরের গা দিয়ে বয়ে চলেছে তিরতির করে। পূব দিকে যখন সূর্য ওঠে, ভোরের ঝিরঝিরে বাতাস জাগে, গাছগুলোর পাতায় পাতায় কাঁপন ধরে। পাখীদের চিকিরমিচির শুরু হয়। তখন সে নদীতে কোথাও হাঁটুজল, কোথাও গোড়ালী পর্যন্ত। নদীটার সঙ্গে তার খেলা চলে কিছুক্ষণ। লাফাই ঝাঁপাই খেলা। নদীটাও যেন খুশীতে ঝিলমিল করে। […]
-
প্রিয়সঙ্গ
রবিবার আমাদের কাজের ছুটি। কী করব ভাবছি ,বিশাখার ফোন এল, চলে এস শান্তিনিকেতনে। বিশ্বভারতী কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়। রবিবার খোলা থাকে। বুধবার ছুটির দিন। বিশাখা সংগীত বিভাগের অধ্যাপক। গানের গলাও বেশ চমৎকার । বিশেষ করে রবীন্দ্রসংগীত যখন গায়,বিভোর হয়ে যায় গানের মধ্যে। চারপাশের শ্রোতারাও তখন তার গানের মধ্যে ডুব দেয়। বিশাখার সঙ্গে আমার আলাপ হয়েছিল একটা ম্যানেজমেন্ট […]