পুরানো সংখ্যা:

  1. ইরাবতী

    অত্যন্ত চিন্তিত থাকায় অন্যমনস্ক হয়ে হাঁটছিল ইমন। বাড়িতে টাকার টানটুন কিছুতেই যেন শেষ হবে না। বাবা ইদানীং প্রায়ই অসুস্থ থাকছে,  রোজগারের কিছু ধান্ধা এবার না করলেই নয়। রূপালিরর বাবাও সেদিন বলে দিল অন্তত দু’বিঘা জমি আর ব্যাঙ্কে পঞ্চাশ হাজার টাকা দেখাতে না পারলে সে ইমনের সাথে মেয়ের বিয়ে দেবে না। এইসব চিন্তায় ভাবনায় রাতে ঠিক […]

  2. সেই রাত

    পঞ্চাশ বছর আগের এই শহরটাকে যেন অচেনা লাগে অশীতিপর সত্যরঞ্জন চৌধুরীর। রিক্সা করে যেতে যেতে দুধারে যাই দেখেন তাই যেন অচেনা।তবু জীবনের প্রথম পঁচিশটা বছর তো কাটিয়ে ছিলেন এই শহরে। সেই স্মৃতি নিয়ে চলেছেন পুরোন এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে।গলির মুখে এসে একটু দোনামনা করে শেষে  ঢুকে পড়লেন।রিক্সা থেকে নেমে ভাড়া মিটিয়ে বাড়িটার দিকে তাকালেন। […]

  3. নিশি দারোগার বেত্তান্ত

    ব্যাপারটা ভালো তো নয়ই, বরং বেশ সন্দেহজনক। নিশিকান্ত গড়াই এই নিয়মপুরের দারোগা হয়ে বসে আছেন দীর্ঘদিন, কম করে দশ বছর তো হবেই। এলাকায় তিনি ‘নিশি দারোগা’ বলে পরিচিত। যথার্থ নামকরণ। নিশীথের মতই গায়ের রঙ তার। মোটামুটি শীর্ণ চেহারায় ছোট্ট একটা ভুঁড়ি স্পিড-ব্রেকারের মত নাতিদীর্ঘ শরীরটার ছন্দপতন ঘটিয়েছে। মাথার সব চুল সাদা এবং কদমছাঁট দেওয়া। বেশ […]

  4. অদূরে

    (১) ফোনটা পেয়ে একটু থমকে রইলেন অবিনাশবাবু। কি লিখবেন? ভেবে পেলেন না। সাধারন দু একটা ভাবনা যা মাথায় এল সব মামুলি পর্যায়ের। অথচ এতবড় পত্রিকার এত নামজাদা সম্পাদকের রিকোয়েস্ট। তার ওপর পত্রিকাটিও বেশ বড়। আজকাল পুরো পত্রিকা খুটিয়ে না পড়লেও কেনার অভ্যেস অনেকের আছে। ফলত না কিনে অনেকেই থাকতে পারেনা। তার ওপর স্ট্যাটাসের একটা ব্যাপার […]

  5. পাতালগড়ে রাত-বিরেতে

    ১ পাতালগড় মনে নেই! কি সব্বনেসে কথা!! হরিহরপুরের ছ্যাঁচড়াবাবু কথাটা বলেই লোমহীন ভ্রূ জোড়া কপালে তুললেন। হাসার কোন কারণ নেই, ছোট থেকেই মায়ের হাতের ছ্যাঁচড়া খেতে এতটাই ভালবাসতেন যে একবার গোটা থালাটাই চেঁটে হাফিস করে দিচ্ছেলেন; যাইহোক, এ হেন ছ্যাঁচড়াবাবু বলেই ফেললেন সেই রাতের কথা। ও হো, একটা কথা ছ্যাঁচড়া বাবুকে আমরা ছ্যাঁচড়া বলেই জানবো। […]

  6. শব্দ-হরিণ

    অন্ধচোখে জল, বালি, আকাশ – কোনো কিছুকেই আলাদা করে বোঝা যায় না। অথচ স্পর্শে জল অথবা বালি – সবটাই আলাদা করে বুঝে নিতে অসুবিধা হয় না দৃষ্টিহীনের। এমনকি যদি বৃষ্টিও নামে, সেই আকাশজল ছুঁতে-ছুঁতে কী এক অলীক শিহর, মাথায়, গায়ে, ঠোঁটে – সর্বত্র জলেরই ছিটে। স্বাদ। বর্ধমান থেকে গো-গাড়িতে বীরভূম আসতে গেলে অজয় পেরোতে হয়। […]

  7. কুশল সংবাদ

    কিছুদিন আগে আমার স্ত্রী বাড়ির সামনে রাস্তার ওপর হোঁচট খেয়ে পড়ে গিয়েছিলেন। পরের দিন পাড়ার মোড়ে হারুবাবুর সঙ্গে দেখা হতেই জিজ্ঞেস করলেন। শুনলাম আপনার স্ত্রী নাকি পড়ে গিয়েছেন ? আজ্ঞে হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন। ওঃ কি সাংঘাতিক। আমার ভায়েরাভাইকে চেনেন তো ? ঐ যে জেমস ফিন্‌লের বড়বাবু, রির্টায়ার করতে এখনো বছর দশেক। আগে এদিকেই থাকতেন। এখন […]

  8. বোড়কি

    না। বোড়কিকে কোথাও খুঁজে পাওয়া গেল না। ছলছল চোখে শিবকুমার এ কথা বলতেই কান্নায় ভেঙে পড়ল তার বউ। আর তার কান্না শুনে বইপত্র ফেলে পাশের ঘর থেকে ছুটে এসে মায়ের কাছ ঘেঁষে দাঁড়াল তাদের বাকি দুই ছেলেমেয়ে— মেজকি আর ছোটকা। কান্না জড়ানো গলাতেই শিবকুমারের বউ বলল, তা হলে ও বোধহয় আবার পালিয়েছে। যাও, থানায় যাও। […]

  9. গাছতলা

    মাঠের মাঝখানে খানিকটা ঘাস জমি। জমিটায় একটা ডোবা কেটে ডাঙাটাকে উঁচু করা হয়েছে। একটা ছোট্ট মন্দির। জমিটায় ঝাউ,শিরীষ,পাকুড় আর তালগাছের ছায়া। জায়গাটা ঝাউতলা আশ্রম নামে পরিচিত। মন্দিরের মধ্যে দুটো কালো পাথর। একটি পাথর হল মা। অন্যটি বাবা। যে যার ভক্ত সে তার ইষ্ট অনুযায়ী পাথরে ফুল-জল দেয়। মাঝে মাঝে গ্রামের লোকেরা ঢাক ঢোল বাজিয়ে পুজো […]

  10. যখন দিগন্তে ফুটে ওঠে রামধনু রং

      এই শহরে আমি নতুন এসেছি। চাকরিতে বদলি হয়ে। আমার থাকবার একটা জায়গা চাই। কিন্তু পছন্দমত থাকার জায়গা আর পাচ্ছি না। আমি অবিবাহিত পুরুষ। একা পুরুষকে কেউ সহজে ঘর ভাড়া দিতে চায় না। আর আমিই বা এত তাড়াতাড়ি এক থেকে দুই হই কী করে? যতদিন না এক থেকে দুই হই ততদিন কি আমি ঘর ভাড়া […]

  11. আত্মীয়স্বজন ও অনান্য গল্প

    সেদিন আমি আর সুতপা সিনেমা দেখে ফিরছি, হঠাৎ রবির সঙ্গে দেখা। রবি আমার পিসতুতো ভাই। বাগুইআটিতে বড়সড় ফ্ল্যাট কিনেছে। ছোটোবেলায় আমরা একে অপরকে ছাড়া চলতেই পারতাম না। ও ছিল আমার ডাংগুলি, গুলি, গুলতি খেলার সঙ্গী। প্রতি মাসে একবার করে হয় পিসিরা আসত আমাদের বাড়ি, না হলে আমি-বাবা-মা-বোন সবাই মিলে যেতাম পিসির বাড়িতে। বাবা ছিল সকলের […]

  12. ও রকম মনে হয়

      খবরের কাগজটা মুড়ে পাশ ফিরে শুল রবি। জানলাটা বন্ধ করাই ছিল। এসিটা দু পয়েন্ট বাড়িয়ে দিল। মাইকটা গান শোনাবেই প্রতিজ্ঞা নিয়ে চিৎকার আর বাড়িয়েছে – ‘চক্ষে আমার তৃষ্ণা’। ভর দুপুরেও ইচ্ছা থাক বা না থাক, বছরের কয়েকটা দিন, গৃহবাসীদের দ্বার খুলতেই হবে। অর্থাৎ কান খুলতেই হবে। পুজো, ভোটপুজো, রক্তদান মিলিয়ে দিনের সংখ্যা বাড়ছেই। ভাল […]

  13. পঁচিশে বৈশাখ ১৪২৫

    কাল মাঝরাতের দিকে কালবৈশাখীর অনেকটাই  আভাস ছিল ! গলিরমোড়ে গতসন্ধ্যায়  চট-জলদি তৈরী করা  ছোট প্যান্ডেলটার চালটা তাই কিছুটা বেচাল, দুয়েকটা খুঁটিও বেহাল হয়েছে ! ভোরের আলো ফুটে গেছে বেশ কিছুক্ষন আগে, তেরছা রোদ এসে পড়েছে ভেজা মাঠের ঘাসের নরম চাদরের ওপর ! প্যান্ডেলের কোণে ছোট সুজনি ঢাকা চেয়ারের ওপর ছবিটাতে মালা দেওয়া ! শান্ত নিস্তরঙ্গ সকালে আড়ম্বর কম, ছবির সামনে কিছুফুল, দু-তিনটে  ধূপের ধোঁয়া, অর্বাচীন […]

  14. গুরুদেব দয়া করো দীনজনে

    কতজন কতভাবেই যে রবি ঠাকুরকে নিয়ে ভেবেছেন, বলেছেন, লিখেছেন তার সবকিছু লেখাজোকা নেই। এত বছর পরেও থামার তো লক্ষণ নেই-ই, বরং উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে। ভেবে চলেছেন, বলে চলেছেন এবং লিখে চলেছেন। হবেনা-ই বা কেন ! প্রাজ্ঞ জনেরা বলেন, এত বড় বিস্ময় আমাদের জাতীয় জীবনে আসেনি। যাঁরা বেশি প্রাজ্ঞ তাঁদের মতে আর আসবেওনা। আমি প্রাজ্ঞ নই, […]

  15. রবীন্দ্রনাথের শিক্ষাচিন্তা

    [ইংরেজি শিক্ষার পক্ষেই ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তবে তা মাতৃভাষাকে দূরে ঠেলে নয়। তিনি লিখেছেন, মাতৃভাষায় রচনার অভ্যাস সহজ হয়ে গেলে তারপরে যথাসময়ে অন্য ভাষা আয়ত্ত ক’রে সেটাকে সাহসপূর্বক ব্যবহার করতে কলমে বাধে না। আমাদের মত বহু ভাষার দেশে ভাষা শিক্ষা কেমন হওয়া উচিত তা নিয়ে রবীন্দ্রনাথের ভাবনা বিষয়ে ‘রবীন্দ্রনাথের শিক্ষাচিন্তা’ নামে মূল্যবান বই লিখেছিলেন প্রবোধচন্দ্র […]

  16. বিশেষ পাঠ : রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল

    বিশেষ পাঠ : রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল   রবীন্দ্রনাথের শিক্ষাচিন্তা  লিখেছেন:প্রবোধচন্দ্র সেন নজরুল ইসলাম  লিখেছেন:অন্নদাশঙ্কর রায় রবীন্দ্রনাথের চিকিৎসা ভাবনা  লিখেছেন:ডা. পি কে দাস রবীন্দ্রনাথের ছবি, গল্প এবং সত্যি লিখেছেন:দেবরাজ গোস্বামী নজরুল ইসলামের পত্র  লিখেছেন:নজরুল ইসলাম 

  17. নজরুল ইসলাম

    পনের বছর বয়সে আমি ‘প্রবাসী’র গ্রাহক হয়ে দেখি, প্রথম সংখ্যাতেই প্রকাশিত হয়েছে দু’পঙক্তির একটি কবিতা, পৃষ্ঠার একেবারে তলায়। কবির নাম হাবিলদার কাজী নজরুল ইসলাম। কবিতার দ্বিতীয় পঙক্তির শেষ অংশ ছিল – ‘পশবে তোর ও নাসায়।’ তারপর কেটে গেছে আশি বছর। যতদূর মনে পড়ছে, কবিতাটি ছিল হাফিজের কোনও প্রেমের কবিতার মর্মানুবাদ। এর আগে কাজী নজরুল ইসলামের […]

  18. রবীন্দ্রনাথের চিকিৎসা ভাবনা

    জোড়াসঁকোর ঠাকুর পরিবারের অন্দরমহলের বৈঠকখানায় ঝোলানো একটা পূর্ণাবয়ব মানব স্কেলিটন। গাঢ় অন্ধকারে গা ছমছম করে। এক অজানা ভয়ে হিম হয়ে যায় সারাটা দেহ। তবুও ভয়ডর নেই  সদ্য যুবক রবীন্দ্রনাথের। গৃহশিক্ষক একজন মেডিকেল কলেজে পড়া ছাত্র। তার কাছে জানার অন্ত নেই অল্প বয়সী যুবকের। ওই বয়সেই মুখস্থ মানবদেহের সব হাড়গোড়ের নাম। এমন কি দেহের মধ্যে হাতে […]

  19. রবীন্দ্রনাথের ছবি, গল্প এবং সত্যি

    ১৯৯২ সালের শেষের দিকে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃশ্যকলা বিভাগ বা ভিস্যুয়াল আর্টস ফ্যাকাল্টিতে ছাত্র হিসেবে যোগ দিয়েছিলাম। তখন আমাদের ক্যাম্পাস এবং স্টুডিও ছিল জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ির মূল ভবনের ভিতরেই। ফলে ছবি আঁকার সাথে সাথেই চিনে ফেলছিলাম ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহলের প্রতিটি অলিগলি পাকস্থলি। গগনেন্দ্রনাথের ছবিতে যে আশ্চর্য আলোছায়ার খেলা, তা আমরা নিত্যদিন দেখতে শুরু করলাম সকাল থেকে সন্ধ্যে। দিনের […]

  20. নজরুল ইসলামের পত্র

    [বাংলা ১৩৩২ সন বা ইংরাজি ১৯২৫ সালে প্রকাশিত হয় নজরুল ইসলামের ‘লাঙল’ পত্রিকা। শ্রমিক-প্রজা-স্বরাজ সম্প্রদায়ের এই সাপ্তাহিক মুখপত্রের প্রধান পরিচালক বা সর্বপ্রধান সম্পাদক ছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম। এই পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন মণিভূষণ মুখোপাধ্যায়। সে সময় ‘লাঙল’ পত্রিকায় নিয়মিত কবিতা লিখেছেন নজরুল ইসলাম। এছাড়াও এই পত্রিকায় লিখতেন মুজফফর আহমেদ, সৌমেন্দ্রনাথ ঠাকুর, দেবব্রত বসু প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। […]

  21. রাহুল সাংকৃত্যায়ন – একটি বর্ণময় জীবন

    [রাহুল সাংকৃত্যায়ন ছিলেন ভারতের একজন স্বনামধন্য পর্যটক, বৌদ্ধসহ বিভিন্ন শাস্ত্রে সুপণ্ডিত, মার্কসীয় শাস্ত্রে দীক্ষিত । তিনি তাঁর জীবনের ৪৫ বছর ব্যয় করেছেন বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করে। তিনি বৈজ্ঞানিক বস্তুবাদের তাত্ত্বিক ব্যাখ্যাদাতা হিসাবেও প্রসিদ্ধ ছিলেন। বলা হয়েছে তিনি হিন্দি ভ্রমণ সাহিত্যের জনক। ভোলগা থেকে গঙ্গা তাঁর অন্যতম বিখ্যাত গ্রন্থ। বৌদ্ধ দর্শনে তাঁর পাণ্ডিত্য ছিল অসামান্য। কাশীর […]

  22. ‘লেখালিখি’ জীবনের গল্প

    [সাহিত্যের সাধক সাধিকাদের জীবন চিরকালই অন্যরকম, কখনও কখনও বিচিত্র। সাহিত্যের কারবারি হবেন বলে অনেকে যেমন কাগজ-কলমকে আপন করে নিয়েছেন আবার অনেকেরই সাহিত্য জীবনে প্রবেশ অকস্মাৎ, নাটকীয়তায় ভরা। এক-একজন লেখকের লেখায় যেমন সমাজ জীবন আলোড়িত হয়েছে তেমনই সামাজিক ঘটনার তীব্র প্রভাবে সাহিত্য শ্রষ্ঠার কলম গতি পেয়েছে এমন ঘটনাও কম নেই। জীবনের এইরকম নানা ঘটনার কথা নানা […]

  23. বাংলার বিস্মৃত কথাকার সাবিত্রী রায়

     [সাবিত্রী রায়ের জন্ম ১৯১৮ সালের ২৮ এপ্রিল। চল্লিশের দশকের নানা রাজনৈতিক আন্দোলন, বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী অর্থনৈতিক সংকট,দুর্ভিক্ষ, কৃষক আন্দোলন, দাঙ্গা, দেশভাগ ইত্যাদির পাশাপাশি পল্লীজীবন ও প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যকে লেখিকা পরম মমতায় অঙ্কন করেছেন। বাম রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকায় তাঁর লেখায় বারবার উঠে এসেছে সমসাময়িক যুগ ও জীবনের চিত্র। তাঁর সৃষ্ট নারী চরিত্রগুলোও শুধুমাত্র প্রেম, পারিবারিক দাম্পত্য […]

  24. অতনু ফিরে যাবে

     এটা কি আগে এখানে ছিল, না ছিল না? একটা বেঁটে মতো গম্বুজ, তার সবদিকই নানারকম পোস্টারে মোড়া, একটা বড় ফিল্মের পোস্টারে এক যুবতী দু’চোখ দিয়ে হাসছে। এক পাশে ছিল ধানক্ষেত আর জলা, রাস্তার অন্যপাশে দোকানপাট। হ্যাঁ, স্পষ্ট মনে আছে অতনুর, ধানক্ষেতের পাশে যে অগভীর জলাভূমি, সেখানে গামছা দিয়ে মাছ ধরত কয়েকটি কিশোর, মাছ বিশেষ পাওয়া […]

  25. দেখা হবে

    নকশি কাঁথার মতো বিচিত্র এক পৃথিবী ছিল আমাদের শৈশবে। এখনও পায়ের তলায় পৃথিবীর মাটি, চারিদিকে গাছপালা, মাথার ওপর আকাশ। বুক ভরে শ্বাস টেনে দেখি। না, শীতের সকালে কুয়াশায় ভেজা বাগান থেকে যে রহস্যময় বন্য গন্ধটি পাওয়া যেত তা আর পাওয়া যায় না। আমাদের সাঁওতাল মালি বিকেলের দিকে পাতা পুড়িয়ে আগুন জ্বালত। সেই গন্ধ কতবার আমাকে […]

  26. শিশিরের জল

    দমদম এয়ারপোর্ট থেকে বেরোবার আগে তার পাসপোর্ট দেখে বাঙালি ইমিগ্রেশন অফিসার হেসে বললেন, ‘আপনি অষ্ট্রেলিয়ান?’ ‘হ্যাঁ। পাসপোর্টই বলছে আমি অষ্ট্রেলিয়ার নাগরিক।’ ‘বহু দিন পরে এলেন! ভাল থাকুন।’ পাসপোর্টে স্ট্যাম্প মেরে ভদ্রলোক সেটা ফেরত দিলেন। কাস্টমসেও কোনও অসুবিধে হল না। স্যুটকেস নিয়ে প্রি-পেড ট্যাক্সির টিকিট কেটে সে যখন বাইরে এল, তখন রাতের অন্ধকার গাঢ় হয়েছে। ড্রাইভার […]

  27. শময়িতার কাছে সীমায়িত

    মেট্রো ধরে রবীন্দ্রসদন যাওয়া আমার সুবিধে হয় আজকাল। দমদম মেট্রো স্টেশনের লাগোয়া সন্দীপের গ্যারাজ। মোটর-বাইক রেখে দিয়ে নিশ্চিন্তে গড়িয়া পেরিয়ে অনেকদূর যাতায়াত করতে পারি।গত সপ্তাহে সন্দীপের কাছে বাইক রেখে, লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটছি রবীন্দ্রসদন। জীবনানন্দ সভাগৃহে “ফটোগ্রাফিচর্চা” সংস্থার একটা এগজিবিশন এবং আলোচনা সভা হচ্ছে। দেরি হয়ে গেছে অফিস থেকে বেরোতে। লাইনটা এগোচ্ছে না কেন দেখার […]

  28. বাংলাদেশ

    আমাদের এই মফস্বল শহর থেকে ভারতের সীমান্ত খুব কাছে। প্রচুর লোকজন প্রতিনিয়ত এপার-ওপার করে। তাদের অধিকাংশই এদেশের। চোরাকারবারি, বৈধ ব্যবসায়ী, চিকিৎসা ও লেখাপড়ার জন্য যায় এমন লোকজন, আর আছে সেইসব মানুষ, যাদের খুব কাছের আত্মীয়স্বজন ওপারে আছে। আমাদের এই শহর ও এর আশপাশের গ্রামগুলোতে এরকম মানুষের সংখ্যা এখনও অনেক। ওপারের লোকেরাও মাঝে মাঝে এপারে আসে। […]

  29. এই তো বেশ আছি

    দিনে ঘুমোলে রাতে ঘুম আসতে চায় না । এপাশ ওপাশ বড় যন্ত্রনা দায়ক ! আবার সারাটা দুপুর জেগে থাকাটাও প্রাণান্তকর অবস্থা ! রোজকার মতো দুটো কাগজ নিয়ে সমন্বয় আজ বিছনায় না শুয়ে চেয়ারে গিয়ে বসল । মনে মনে ঠিক করেছে যে সে আজ কিছুতেই ঘুমোবে না । দেখি ঘুমটা কোথা দিয়ে আসে । বড় পত্রিকাটা […]

  30. স্বর্গসন্ধানী

    চাঁদিফাটা রোদে ধানের নাড়াগুলো যেন এবার ঝলসে উঠবে– এমন এক প্রখর বেলায় একজন পথিকের ক্লান্ত ঘোড়া মাঠের উপর দিয়ে যেতে যেতে প্রাচীন একটি অশথ গাছের নিচে থামতে বাধ্য হল। সে শুনেছে কুরুক্ষেত্রের কাছাকাছি কোথাও একজন সাধুপুরুষ থাকেন, যিনি সেবাপরায়ণ। সেই ঠিকানা এখন খুব দরকার। ক্ষুধায় তৃষ্ণায় তিনি ও তাঁর বাহন ভয়ানক অবসন্ন। অশথের ডাল ধরে […]

যোগাযোগ


email:galpersamay@gmail.com

Your message has been sent. Thank you!

গল্পের সময় পরিবার
সমীর
অগ্নীশ্বর
দেবাশিস
চিন্ময়
পার্থ
মিতালি
জাগরণ
দেবব্রত

© 2016 - 2025 গল্পের সময়। ডিজাইন করেছেন অগ্নীশ্বর। নামাঙ্কন করেছেন পার্থ