-
বাস
শ্রীরামপুর বাগবাজার রুটের একটা তিন নম্বর বাস শ্রীরামপুর স্টেশন সংলগ্ন স্ট্যান্ড থেকে ছেড়ে নিজস্ব গতিতে এগিয়ে চলেছে। সামনের দিকে ড্রাইভারের সিটের পিঠোপিঠি লেডিস সিটের এক কোণে বসেছেন এক বৃদ্ধা মহিলা। মহিলার পরনে কিছুটা মলিন সাদা থান, হাতে একটি মানানসই পুঁটুলি। বোঝা যায় কোন নিম্নবিত্ত প্রান্তিক পরিবারের প্রবীণ সদস্যা। আমাদের মধ্যে যারা স্ট্যান্ড থেকেই বাসে উঠেছে […]
-
কয়েকটি গল্প
অপ্রয়োজনীয় ও তখন গবেষণা করছে। স্টাইপেন্ড যা পায় তাই দিয়ে দুজন কেন একজনেরও ঠিকমতো চলে না। আমার চাকরিটাই একমাত্র ভরসা। সেই ভরসাতেই বিয়েটাও হয়ে গিয়েছিল। ওর এখন অধ্যাপনা, শতরঞ্চি, কফিহাউস, সাহিত্যসভা। সংসারে যা কিছু প্রয়োজনীয় সব মোটামুটি আছে। শুধু আমার চাকরিটা অপ্রয়োজনীয় সাব্যস্ত হয়েছে। সাময়িক এখন আর ব্যথা নেই। শুধু মনে আছে আঘাতটা জোরেই […]
-
কী এমন কারণ যা শুধু পার্থই খুঁজে পেল ?
একবার জানালার সামনেটায় দাঁড়ালো পার্থ। আটতলার উপরের জানালা। সকাল থেকে নিম্নচাপ। জানালার কাঁচের পাল্লা খুলতে বেশ দাপুটে হাওয়া দিল। নীচে ঝুঁকে দেখলো অফিস ক্যাম্পাসের রাস্তার আলো জ্বলছে। এদিক ওদিক জল জমেছে অল্প অল্প। পিছনে ঘুরে দেখল পার্থ, অফিসের কিউবিকলগুলো। ফাঁকা। বসের ঘরে তখনও আলো আছে। বস হয়তো একমনে ফেসবুক করছে। একটা ক্ষণস্থায়ী, কিন্তু গভীর শ্বাস […]
-
বিকেলছোঁয়া বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপনটা আরতি দেখেনি। দেখলে কিছুতেই আজ আর শোভনকে বাড়ির বাইরে যেতে দিতনা সে। ভাঙনধরা গরাদের গ্রিলে মাথা রেখে অচেতনেই বলে উঠল তার ঠোঁটদুটো— “ভালো হোক”। মস্তিষ্ক চোখ বোজে। তার জমাট শূন্যতা জুড়ে শ্লেষের হাসি। “আর ভালো!” বিজ্ঞাপনটা নেহাতই সাদামাটা। একটা বাচ্চাছেলে বারবার পড়ে যাচ্ছে সাইকেল থেকে আর তার বাবা তাকে আবার তুলে দিচ্ছে সাইকেলে— যতক্ষণ […]
-
ফরমায়েসী নাটক লেখা আমার পক্ষে সম্ভব নয়-বাদল
প্রয়াত নাট্যকারের এই সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছিল অমৃতলোক বাদল সরকার সংখ্যায়। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছিলেন সুজাতা বন্দ্যোপাধ্যায় । ‘গল্পের সময়’-এর পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারটি তুলে আনলেন দেবাশিস মজুমদার। নাট্য আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকার সময়ই নেওয়া এই সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করা হল অপরিবর্তিত রেখেই। ……………………………… [নাট্যকার এবং অভিনেতা হিসাবেই তাঁর পরিচিতি। পেশায় যে কোন একদিন ছিলেন ইঞ্জিনিয়র সেকথা আজ ভুলে […]
-
বাংলা সাহিত্যে উৎসর্গ ভাবনার বিচিত্রা কথা
জন্মের প্রথম পদক্ষেপ থেকে আজ পর্যন্ত আমাদের বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস এক দীর্ঘ পথ পরিক্রমার বিচিত্র ইতিহাস। উপন্যাস-গল্প-কবিতা-প্রবন্ধ-জীবনী-আত্মজীবনী কত বিচিত্র অভিনবত্বে কত বিচিত্র আবহে আমাদের অস্তিত – বোধ-মেধা ও অনুভূতিকে জাগরিত করেছে তার সীমা-পরিসীমা নেই। এই সব বহু বিচিত্র লেখালিখি গ্রন্থবদ্ধ হয়ে যখন আমাদের হাতে আসে, তখন আমরা মূল লেখার সাথে পেয়ে যাই আরো এক অতিরিক্ত […]
-
প্যারাসিটামল
আরতি এই ছেলেটাকে একদম সহ্য করতে পারে না।অথচ সকাল হলে সবার আগে ওর মুখটাই দর্শন করতে হয়।ভোরের আলো ফুটলেই তাকে ধড়ফড় করে বিছানা ছেড়ে উঠতে হয়।রাতের কাপড়টা ছেড়ে অন্য একটা শুদ্ধ কাপড় পরে ঘরে-বাইরে কয়েকটা জায়গায় গোবর জল বুলোতে হয়।আর তখনই ছেলেটা পেপার নিয়ে হাজির হয়।ছেলেটার চোখের নজরটা বড্ড খারাপ। আগে এক দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ তার […]
-
ধাক্কা
দুপুরে বিছানায় শুয়ে ঘুম আসছিল না শোভনের । পাশ ফিরতেই চোখ পরে একটু দুরে রাখা ড্রেসিং টেবিলের আয়নাতে । বনলতা একমনে বসে বই পড়ছে, বিছানার পাশে রাখা টেবিল ল্যাম্প জ্বালিয়ে । শোভন জানে খানিকটা পড়ে তবে ও শুতে আসবে । নীল আলোতে লতার মুখের ওপর একটা আভা ফুটে উঠেছে । তবু বয়সের আঁকাজোকা যেন […]
-
দাদুভাই
-‘আচ্ছা দাদান, এই তারাগুলোর মধ্যে ঠাম্মা কোনটা?’ -‘ওইযে দাদুভাই সবচেয়ে বড়ো তারাটা দেখো, কী উজ্জ্বল, ওটাই তোমার ঠাম্মা’। -‘দাদান, সব মানুষই কি মরে গেলে আকাশের তারা হয়ে যায়?’ -‘না দাদুভাই, যারা ভালো কাজ করে, কক্ষনো মিথ্যেকথা বলে না শুধু তারাই তারা হয়ে আকাশের কালো বুকটাতে ঝিলমিল্ করতে থাকে’। -‘আচ্ছা দাদান, তারাদের কি কখনও ধরা যায়?’ […]
-
শোকের অধিকার
[যশপাল হিন্দি সাহিত্যের প্রখ্যাত প্রগতিশীল কথা সাহিত্যিক। সামাজিক বৈষম্য দূর করে সমাজে সকলের সমান অধিকারের দাবিতে সাহিত্যকে তিনি একটি হাতিয়ার হিসাবে গ্রহণ করেছিলেন। তাঁর লেখা উপন্যাস – দিব্যা, দাদা কমরেড, অমিতা, ঝুঠাসচ, মনুষ্য কে রূপ। অন্যান্য রচনা – ন্যায় কা সংঘর্ষ, গান্ধীবাদী কি শবপরীক্ষা ইত্যাদি। – অনুবাদক ননী শূর] পোশাক মানুষকে বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করার একটা […]
-
নতুন বছরে আসছে অণুগল্প সংখ্যা
বিশেষ অণুগল্প সংখ্যা প্রকাশিত হবে দুটি সংখ্যা( জানুয়ারি ২০১৮ এবং ফেব্রুয়ারি ২০১৮) অণুগল্প সংখ্যায় লেখা পাঠানোর নিয়ম ১। সকলেই গল্প পাঠাতে পারেন।ভাল গল্প প্রকাশ করাই আমাদের উদ্দেশ্য। ২। লেখা অভ্রতে বাংলা টাইপ করে ওয়ার্ড-ফাইলে পাঠান।পিডিএফ করে পাঠাবেন না। হাতে লেখা গল্প স্ক্যান করে পাঠাবেন না। ৩। কোথাও প্রকাশিত(ফেসবুক বা অন্য সোশ্যাল সাইট হলেও) […]
-
মাছি
[ক্যাথরিন ম্যানসফিল্ড-এর জন্ম, ১৮৮৮ সালে নিউজিল্যান্ডের ওয়েলিংটন শহরে। তাঁর শিক্ষাজীবনের বেশ কিছুটা লন্ডনে, এবং সেখান থেকেই তাঁর সাহিত্য জীবনের শুরু। ১০১২ সালে বিখ্যাত সমালোচক এবং সম্পাদক মিডলটন মারির সঙ্গে তাঁর পরিচয় এবং পরে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হন। ইতিমধ্যে শুরু হয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধ। এই যুদ্ধে তাঁর ভাই লেসলি মারা যান। এই ঘটনা তাঁর সাহিত্য জীবনকে নানাভাবে প্রভাবিত […]
-
লাল জুতো
গৌরীর সঙ্গে ঝগড়া হওয়ার দরুন কিছু ভাল লাগছিল না। মনটা বড় খারাপ,–নীতীশ ভাবতেই পারছে না, দোষটা সত্যিই কার। অহরহ মনে হচ্ছে–আমার কি দোষ? জীবনে অমন মেয়ের সঙ্গে সে কখনই কথা বলবে না। দক্ষিণ দিককার বারান্দা দিয়ে যতবার যায় ততবারই দেখে, গৌরী পর্দ্দা সরিয়ে এদিক পানে চেয়ে আছে, ওকে দেখলেই পলকে পর্দ্দা ফেলে দেয়। এ চিন্তা […]
-
একটি তুলসীগাছের কাহিনী
ধনুকের মতো বাঁকা কংক্রিটের পুলটার পরেই বাড়িটা। দোতলা, উঁচু এবং প্রকাণ্ড বাড়ি। তবে রাস্তা থেকেই সরাসরি দণ্ডায়মান। এদেশে ফুটপাত নাই বলে বাড়িটারও একটু জমি ছাড়ার ভদ্রতার বালাই নাই। তবে সেটা কিন্তু বাইরের চেহারা। কারণ, পেছনে অনেক জায়গা। প্রথমত প্রশস্ত উঠান। তারপর পায়খানা-গোসলখানার পরে আম-জাম-কাঁঠালগাছে ভরা জঙ্গলের মতো জায়গা। সেখানে কড়া সূর্যালোকেও সূর্যাস্তের ম্লান অন্ধকার এবং […]
-
জননী
আমরা ভাইবোন মিলে মায়ের পাঁচটি সন্তান। বাবা বলত, মায়ের হাতের পাঁচটি আঙুল। সবার বড় ছিল বড়দা, মায়ের ১৯ বছর বয়সের ফল। প্রথম বলে বড়দা মায়ের সেই বয়সের রূপ যতটা পেয়েছিল পুঁটলি বেঁধে নিয়ে জগতে এসেছিল। শুনেছি, ঠাকুরমা বলত, অত রং অমন চোখ নিয়ে যদি এলি, তবে দাদু, মেয়ে হয়ে এলি না কেন? ঠাকুরমার ক্ষোভ বছর […]
-
স্থিরবিন্দু
চন্দনা বলেছিল এই শরীর নিয়ে বেরুবে? ‘না বেরিয়ে উপায় কি? আমাকে নিয়ে এই কটা দিন তুমি কতো কষ্ট করে সংসার চালিয়েছো।এভাবে ঘরে থাকাটা আরো যন্ত্রণার। হরিপদর গায়ে হাত রেখে চন্দনা বলে জ্বরটা এখনো আছে। এই শরীর নিয়ে বেরুলে আমি খুব দুশ্চিন্তায় থাকবো। হেসে উঠেছিল হরিপদ। আমাদের আবার দুশ্চিন্তা? চিন্তা করলে তার কিছু না কিছু একটা […]
-
ক্যাক্টাস
রমনীমোহনের প্রাসাদোপম বাড়ির কারুকার্য করা বিশাল লোহার গেট, সেটা খোলা। তারপরে আবার একটা কোলাপসিব্ল গেট। তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে চাঁদু, অর্থাৎ চন্দ্রনাথ। অবশ্য সেটা এখন আর বোধহয় কেউ মনে রাখেনি। সবাই বলে চাঁদু। চাঁদু নিজেও জানে তাকে ঐ নামে সম্বোধনের সময় সবাই একটা তাচ্ছিল্যের ইঙ্গিত ছুড়ে দেয়। এটাও জানে পাড়ায় যে কোনো বাড়িতে সে […]
-
ঋকের বড় হওয়া এবং তারপর…
(১) সিঞ্চিনি বাথরুম থেকে বেরিয়ে দেখল ব্রেসিয়ারটা নেই। সিঞ্চিনি বরাবরই বাথরুমে স্নান করতে ঢোকার আগে খাটের ওপর ম্যাক্সি, পেটিকোট, প্যান্টি আর ব্রেসিয়ারটা রাখে। প্রথমে পেটিকোট। তারপর ব্রেসিয়ার আর প্যান্টি। ব্রেসিয়ার-প্যান্টির ওপর ম্যাক্সিটা চাপা দিয়ে রাখে। অনেক দিনের অভ্যাস। গা মুছে গামছাটা পেঁচিয়ে বাথরুম থেকে বেরিয়ে ঘরে এসে ওগুলো পরে নেয়। আজ বাড়িতে কেউ নেই। বিতানের […]
-
ভোঃ
‘ক’ আর ? আর কি নেব বল্ ? ফোনের এপারে মেয়ের মানে আমার গলা- একটা স্বপ্ন, দু’চারটে ভাল চিন্তা, দু’চারটে দুশ্চিন্তা,আর ভরসা। যা নিয়ে সকালে উঠবি। হ্যাঁ তা নিভ্ভরসা হ’য়ে যাওয়া নয় বলেই তোরা তিন তিনটে ভরসা বলিস্ ,আস্থা বলিস , না তো বোন্ বোনধ্ , হ্যাঁ তা বোনন- ধ-উ – ইচ্ছে করে তোত্লাচ্ছিস কেন? […]
-
মেঘ বালিকা
ঠিক পাঁচটায় টয়েটো গাড়িটা এসে দাঁড়ালো এয়ারপোর্টের গেটের সামনে। নেমে পড়লাম তিন বন্ধু। গাড়ি থেকে লাগেজ নামিয়ে ট্রলি-গাড়িতে চাপিয়ে আস্তে আস্তে এগোতে থাকলাম। ‘সেলাম সাব’ , ড্রাইভারের গলা শুনে হঠাৎই খেয়াল হল তাকে কিছু বকশিশ দেওয়া হয়নি। সঙ্গে সঙ্গে বললাম, ‘দেবাশিস ,আমরা ট্রলিটা দেখছি। তুই ড্রাইভার দাদাকে কিছু টাকা দিয়ে আয়’। আমার কথা শুনে দেবাশিস […]
-
আমার ছেলে কিচ্ছু খায় না
ডাক্তারের উল্টো দিকের চেয়ারে বসে মুখ কাঁচুমাচু করে কাজরী বললেন, ডাক্তারবাবু, আমার ছেলে কিচ্ছু খায় না। এর আগেও দু’জন চাইল্ড স্পেশালিস্টকে দেখিয়েছিলাম। এই যে তাঁদের প্রেসক্রিপশন… বলেই, আগে থেকে বের করে রাখা তিন-চারটে কাগজ উনি এগিয়ে দিলেন ডাক্তারবাবুর দিকে। ডাক্তারবাবু সেগুলিতে চোখ বোলাতে লাগলেন। কাজরী আবার বললেন, ও কিচ্ছু খাচ্ছে না, কী করা যায় বলুন […]
-
একজন সামান্থার গল্প
বহু রাত পর আজ সামান্থা ঘু্মোতে পেরেছে। বহুদিন পর আজ সে সকালের স্নিগ্ধ নিষ্পাপ আলোর বিচ্ছুরণ দেখেছে অন্য রকম এক ভাল লাগায় নিজেকে ঢেলে দিয়ে। আজ সকালের কফি তাকে মিষ্টি করে শুভাশিস জানিয়েছে। সরে গেছে তার জীবন থেকে কালো রাহুর গ্রাস। কাল রাতে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে ফ্রেডিকে। অনেকগুলো দিন সহ্য করেছে সে দাঁতে দাঁত […]
-
মিষ্টি কুমড়ো ও এক ভালোমানুষের গল্প
‘মিষ্টি কুমড়ো যে কোনোদিন কিনে খেতে হবে এ কখনো ভাবিনি বাবু ! ছোটবেলা থেকে দেখে এসেছি এ তো গরুতে খায়” ! কানাইদার কাঁচি আমার মাথার মধ্যে চলতে চলতে থেমে গেলো ! পঞ্চদশবর্ষীয় আমি, খালিগায়ে, ডবল পেজ খবরের কাগজের মধ্যে ফুটো করা মাথা-গলানো মেক-শিফট কাগজ-জামা থেকে ঘাড় তুলে বললাম ” সে কির’ম, কানাইদা ?” কানাইদাকে নিয়ে […]
-
সেফ কাস্টডি
আজকেই শেষ হয়ে যেত তরকা। শেষ মানে একেবারে খতম। এ তল্লাটে আর চুরবুড়ি মারাতে হত না। দাগী স্বপনের ভাই কেলেজনা গতরাতে খতম হয়ে যাওয়ার খরবটা শোনার পর থেকেই ব্যাপারটা একটু একটু করে অনুভব করতে পারছিল তরকা। চারপাশেই স্বপনের দলের ছেলেগুলো ওকে নজরে রাখছিল। অর্থাৎ সুযোগ খুঁজছিল। তরকাও এখান থেকে পালাবার তাক করছিল। কিন্তু পালানো ব্যাপারটা […]
-
প্রত্যাবর্তন
ঝাঁ-চকচকে পিচরাস্তাটা ধরে যেতে যেতে কুড়ানী ভাবল,সত্যিই দেশটার কি উন্নয়ন! আর মানুষ গুলোর কোনো ভাবনা নেই।বর্ষাতে আর ছ্যাপ-ছ্যাপে কাদা মাড়িয়ে,লুঙি-কাপড় গুটিয়ে খালি পায়ে হাঁটতে হবে না কাউকে।গ্রামের ছেলে-মেয়ে গুলোকে আর ঠেলে-ঠেলে সাইকেল পার করে স্কুলে যেতে হবে না—এখন পাকা রাস্তা!লোকের কথা চিন্তা করলে কি হবে,কুড়ানী নিজে কখনও জুতো পরে না।জুতো থাকবে কি করে ওর পায়ে?খালি […]
-
কবিরাজ
সকাল থেকে ঝিরঝির বৃষ্টি হচ্ছে । কয়েকদিনের গুমোট গরমের মধ্যে এই বৃষ্টিটুকু যেন খোদার আশির্বাদ । সারাদিন ঘরের মধ্যে বসে থেকে হামজা মোল্লার মন উসখুস শুরু হয়েছে । হামজা মোল্লা গ্রামের একমাত্র নামকরা কবিরাজ । সংসার খুবই ছোট । কিন্তু মনে সুখ নেই , সংসারে নেই শান্তি । হামজা সহজে হাল ছাড়ার লোক না । […]
-
হ্যালুসিনেশন
আবার সেই ছাতিম ফুলের সুঘ্রান। এই গন্ধটা নাকে এলেই আমি আর নিজেকে নিজের ভেতর পুরে রাখতে পারিনা। আমার ভাবনাগুলোতে কেমন জট পাকিয়ে যায় সুগন্ধী বাতাসে। বাস্তব জগত থেকে কেমন একটা স্বপ্নিল কল্প রাজ্যে ঢুকে পড়ি আচমকা।আমার অবস্থানটাই বদলে যায় দ্রুত। তখন নিজের পরিচয় সম্পূর্ণ ভুলে যাই আমি। কোথায় আছি, কোথায় যেতে চাই কিছুই বুঝতে পারিনা। […]
-
নজরদারি
হুমদোমুখো লোকগুলো জেরা করেই চলেছে। কঠিন সব প্রশ্নের জালে ক্রমশ পেরে ফেলছে স্বপ্ননীলকে। স্বপ্ননীল ভাবছে, তাহলে গোপনীয় বলে কিছুই নেই। সে কবে ওলা বা উবরে কোথায় গিয়েছিল, ওহো! ক্যালকাটায় কবে কার সঙ্গে গিলে কত টাকা ডিজিটালে পেমেন্ট করেছে, সবই ওদের জানা। এমনকি পাতি হলুদ ট্যাক্সিতে হাওড়া স্টেশনে গিয়ে বেঙ্গালুরু থেকে আসা কয়েকজনের সঙ্গে সে যে […]
-
চলচ্চিত্র
ছবি অনেকটাই প্রতীকী। এক একজনের ছবি এক এক রকমের। প্রতিটি ছবির মধ্যে একটা সময় ঢুকে থাকে নিজের মত করে। তবে ছবিও যে হেঁটে যায় তার ছবি না দেখলে বিশ্বাস করা শক্ত। পাশের গ্রামের ছবি পিসি। হ্যাঁ ওই নামে বেশী চিনি। টাইটেল টা বলা শক্ত, আসলে পাগলদের টাইটেল কোনোকালেই ছিল না। অবশ্য ঠিক কি কারণে পাগল […]
-
তৃতীয় নয়ন
১ তীব্র শীতের মতো এক দেশ। খাঁ খাঁ প্রান্তর, কুয়াশা মোড়া, নিঃস্তব্ধ, কোলাহলহীন। সে কি আগে এসেছে এখানে ? কখনো ? কই চিনতে পারছে না তো কাউকে। কেমন সব অলীক মুখ চোখের মানুষজন, অচেনা অঙ্গভঙ্গি, অদেখা পরিবেশ! অনুভূতিহীন চোখ মেলে সে তার চারপাশ দেখে নেয়। না তার ভয় করছে না। […]