গল্প পড়ুন
এই মুহুর্তে বাংলা ভাষায় লেখালিখি করেছেন এমন গল্পকারের সংখ্যা কত? সত্যি বলতে কী ‘গল্পের সময়’ তা জানে না। কয়েকজন ব্যাক্তি ও কয়েকটি সংস্থা উদ্যোগ নিয়ে দুই বাংলায় লেখক-কবি-সাহিত্যিকদের নথিভুক্তকরনের উদ্যোগ নিয়েছেন। কিন্তু তা কোনও ভাবেই সম্পূর্ন নয় বা হওয়া সম্ভব নয়। কারন প্রতিনিয়তই লেখালিখির জগতে আসছেন বহু মানুষ। ইন্টারনেটে বাংলা গল্পের ম্যাগাজিন করতে গিয়ে আমরা লক্ষ্য করেছি অনেক লেখকই এখনও কম্পিউটার এড়িয়ে চলেন। কাগজ-কলমেই তাঁরা স্বচ্ছন্দ। চিরাচরিত ছাপা ম্যাগাজিন, লিটল ম্যাগ, শারদসংখ্যা বা সংবাদপত্রের সাময়িকীতেই তাঁরা লেখালিখি করেন। অন্যদিকে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কম্পিউটার ও ইন্টারনেটে স্বচ্ছন্দ একদল লেখককুল রয়েছেন। তারা ফেসবুকে পোস্ট করছেন, ব্লগ বানাচ্ছেন, ই-ম্যাগাজিনেও লিখছেন। ‘গল্পের সময়’ এই দুই পক্ষকেই চায়। নবীন ও প্রবীন গল্পকারদের গল্প পড়ুন এই পাতায়।
-
বসন্ত.com
যেদিন ‘গুগল’ সার্চ করতে করতে বসন্তকালেই যেন আক্ষরিক অর্থে ডুবে গেলাম। অজস্র মণিমুক্তোর ভেতর থেকে তুলে আনলাম টমাস হার্ডির কয়েকটি লাইন। “New cares may claim me / New lovers inflame me / She will not blame me / But suffer it so.” মন একটু উদাস হল কি? নতুন কোনো সম্ভাবনা নেই। জানি কোনো কোনো বিরল […]
-
বসন্ত পাঠ
গল্পের সময় ।। মার্চ ২০১৮ ।। বসন্ত.com লিখেছেন অনিলেশ গোস্বামী পাখি তোমাকে লিখেছেন প্রবন পালন চট্যোপাধ্যায় আবহমান লিখেছেন সিদ্ধার্থ সান্যাল হারায়ে সেই মানুষে… লিখেছেন অরিন্দম চক্রবর্তী পথ লিখেছেন রামকিশোর ভট্টাচার্য গল্প হলেও পার’ত লিখেছেন পূষন ঝরা পালকের কবি, আপনাকে… লিখেছেন ঋভু চৌধুরী পর্ব- মোহিনী লিখেছেন আত্মদীপ মহাশ্বেতা দেবীর গল্প ভাত সেলিনা হোসেনের গল্প মতিজানের […]
-
আবহমান
এ গাথা তো আমার হৃদয়ের…….অপরূপ নির্জনে শরীরে শরীর ছুঁয়ে দেওয়া খিন্ন হৃদয়ের কথা….বিপন্ন বাসনার দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা সুখ ও অসুখ…প্রসব যন্ত্রণার মতো গলাগলি হর্ষ ও বিষাদ….. যখন মন আমার হারিয়ে ফেলে তার দুর্লভ সম্পদ…….নির্জনতার গভীরে দেহ এসে সাজায় শত কারাকক্ষ তার…..চারদিকে ঘিরে থাকে বাসনার দুর্গম পরিখা…যদিও শরীরের জন্য আমার সঞ্চিত থাকে ভয়…….শরীরের গর্ভদ্বারে জুড়ে থাকে শতেক সংশয়…..সেই […]
-
হারায়ে সেই মানুষে…
সে হেসেছিল যখন তখন হাওয়ায় মঞ্জরীর বাস। ফাগুয়ায় রাঙা মধ্যদিন। পুকুরের জলে নিদাঘের ছায়া। সারা গায়ে তাপ নিয়ে ঘুরেছি পথে পথে, আর সেই পথ এমন করে রূপনগরে এসে মিলবে যদি জানতেম! অজানাকে জানব বলেই তো মনভাসির টানে পাড়ি দিয়েছি অচেনায়। দিনের আরশিতে নিশুতরাতের শোভা দেখলে এক জীবনে পরম রতন মেলে, মানুষ রতন গো, তাই তো […]
-
পথ
পথ চলছিল একা। আধা শহরের মধ্যবিত্ত পথ। আধা শহরের মধ্যবিত্ত পথ। রাজপথ তাকে পাত্তাই দেয় না। গলি পথেরা তাকে হতচ্ছেদ্দা করতে পারেনা। এঁকে বেঁকে বড় মেজ ছোটো বাড়ির পাশ দিয়ে চলতে চলতে এই রোদে বড় কষ্ট হচ্ছিল। সেই সকাল থেকে আকাশটা বদলে যাচ্ছে বারবার। এরকম চোখ পাকানো আকাশটাকে একদমই সহ্য করতে পারেনা সে। অথচ ভোরবেলায় […]
-
গল্প হলেও পার’ত
আমার কথা ১) “… উদ্যানে ছিল বর্ষাপীড়িত ফুল আনন্দভৈরবী। ” ভালোবেসে ফুলের মাথায় ধরতে গেলাম ছাতা, বস’ল বেঁকে; মৃদু বক’ল গাঢ় স্বরক্ষেপে— ‘কোন অধিকার তোমার? এই তো আমার বর্ষা প্রিয়তম! … যাও, সরো, সরো; প্রয়োজন নেই ছাতার। তাছাড়া, কোন অধিকার তোমার? …ব’ল, কোন অধিকার তোমার?’ ২) পেলব সন্ধ্যে নামার কথা ছিল অন্য সে’এক শেষ-বিকেলে। হঠাৎ […]
-
ঝরা পালকের কবি, আপনাকে…
“তুমি তো জানো না কিছু – না জানিলে, আমার সকল গান তবুও তোমারে লক্ষ্য করে; যখন ঝরিয়া যাবো হেমন্তের ঝড়ে – পথের পাতার মতো তুমিও তখন আমার বুকের ‘পরে শুয়ে রবে? অনেক ঘুমের ঘোরে ভরিবে কি মন সেদিন তোমার! তোমার এ জীবনের ধার ক্ষ’য়ে যাবে সেদিন সকল? আমার বুকের ‘পরে সেই রাতে জমেছে যে শিশিরের […]
-
পর্ব- মোহিনী
আঁখিকোণে কাজলের রেখা কী কেঁপে গেল? ম্লান হয়ে আসা শেষ দিবসের আলোতে মুকূরের দিকে চেয়ে থাকেন কৃষ্ণ, একটু অস্থির লাগে, কেমন জানি অচেনা একটা সুখে বুক-মন শূন্য হয়ে আসে। গোধূলির শেষ আলোকে বাইরের ধুলিপ্রান্তর কেমন মায়াময় মনে হয়। কে বলবে,এই প্রান্তরে রক্ত প্রবাহ একদিন সিক্ত করে দেবে প্রতিটি ধুলিকণা, কে বলবে এ এক যুদ্ধক্ষেত্র, একমাত্র […]
-
লেপ
বউ ব্যাপক সুন্দরী; যাকে বলে ছম্মকছল্লু সুন্দরী। শ্বশুরমশাই মালদার; দিয়েছে থুয়েছে অনেক। মোটা ক্যাশ, ভারি গয়না, দেদার আসবাবপত্র। ফুলশয্যার রাতে বরের মনে তবুও একটা খিঁচখিঁচ – কী একটা নেই, কীসের একটা অভাব। পালঙ্ক এসেছে পালিশ করা। নরম ফেনার মতো গদি মাথার বালিশ, কোল বালিশ। বাজারের সেরা ব্র্যান্ডের টিভি, সোফা। সবই তো আছে। তবু কেন বরের […]
-
অণু গল্প পাঠ
দুটি গল্প লিখেছেন: সিদ্ধার্থ সান্যাল গুরুগ্রামের গ্রেগর সামসা সকালে রোজকার প্রথামতো গুরুগ্রামের সেক্টর ৫৬-এর নির্জন রাস্তায় দুজনে হাঁটছি….বেশ ফুরফুরে হাওয়া দিচ্ছে…. মেজাজটাও বেশ মানানসই…..সপ্তাহান্তটা কিভাবে সুভালাভালি কাটানো যায় তাই নিয়ে দুজনের মধ্যে একটা মতান্তর প্রায় পেকে উঠেছে……এমন সময় হঠাৎ রাস্তার পাশের রাধাচূড়া গাছ থেকে আমাদের পূর্বপুরুষদের একজন খ্যাঁচম্যাচ মুখভঙ্গি করে নেমে এসে আমার বাঁহাত ধরে ঝুলে […]
-
স্বাদ
চতুর্দিকে গড়াগড় উঁচু হয়ে আছে পাঁচিল, শুধু পুবপানে সূর্য ওঠার জায়গাটা শূন্য করে দিতে অল্প ইরেজারের কাজ একদম কাঁটায় মাপা। ওই ফাঁক দিয়ে সে বাইরে যায় না কখনো, কুকুর এক্তিয়ার মানে। প্রায় এক বর্গমাইল তার সাম্রাজ্য। চৌকো জমিখানার ঠিক মধ্যে তার বাংলো। যার পাথরের মেঝে, কাচের জানালা, মসৃণ ছাদে ঝুলছে ঝাড়বাতি। জন্মাবধি সে এখানেই। তার […]
-
দুটি গল্প
সময় আমার বাবার একটা পুরোনো রঙচটা বাক্স ছিল। সারা গায়ের জংগুলোতে – পৃথিবীর মানচিত্র। বাবার জীবিতকালে ও বাক্স খোলার অনুমতি ছিল না কারো। বাবা মাঝে মাঝে বাক্সটি আমাদের আড়াল করে খুলতেন আর ম্যাজিসিয়ানের মত অন্যদিকে তাকিয়ে হাত দিয়ে ভেতরের জিনিষগুলো স্পর্শ করতেন। মুখে থাকত অদ্ভূত এক সন্তুষ্টি – আবেশে তাঁর চোখ বুজে আসতো। বাক্সটা রাখাও […]
-
দুটি অণু গল্প
খবর রাত ন’টার ‘দেশের খবর’ পড়ে নিউজ ফ্লোর থেকে চিফ অ্যাংকার হন্তদন্ত হয়ে সোজা চলে গেলেন নিউজ এডিটরের রুমে। হাতে ধরা এক তাড়া প্রিন্টেড নিউজ স্ক্রিপ্ট। সেগুলো কিছুটা ক্ষোভের সঙ্গে টেবিলে আওয়াজ করে রেখে দিয়ে বললেন – সেই একই খবর রোজ রোজ। খুন – শ্লীলতাহানি – ধর্ষন আর অনার কিলিং। একটাও ভাল নিউজ নেই ? […]
-
মা
মাটিতে হাত দিয়ে খেতে নেই, খেতে বসে হাঁচলে মাটি থেকে একটা ভাত কুড়িয়ে খেতে হয়। কাউকে যাবার সময় পেছু ডাকতে নেই।খেয়ে উঠে আঁচিয়ে গোড়ালি ভিজিয়ে পা ধুতে হয়।তখন বড় হচ্ছি, সব কিছুতেই ‘কেন’ বলাটা যেন বাহাদুরি। মা বলত অত কেন বলতে নেই। বারণ করছি শোন। দুধ মুড়ির বাটিতে কলা ছাড়িয়ে দেবার সময় মা কলাটা ভেঙে […]
-
ক্ষুধিত পাষাণ
আমি এবং আমার আত্মীয় পূজার ছুটিতে দেশভ্রমণ সারিয়া কলিকাতায় ফিরিয়া আসিতেছিলাম, এমন সময় রেলগাড়িতে বাবুটির সঙ্গে দেখা হয়। তাঁহার বেশভূষা দেখিয়া প্রথমটা তাঁহাকে পশ্চিমদেশীয় মুসলমান বলিয়া ভ্রম হইয়াছিল। তাঁহার কথাবার্তা শুনিয়া আরো ধাঁধা লাগিয়া যায়। পৃথিবীর সকল বিষয়েই এমন করিয়া আলাপ করিতে লাগিলেন, যেন তাঁহার সহিত প্রথম পরামর্শ করিয়া বিশ্ববিধাতা সকল কাজ করিয়া থাকেন। বিশ্বসংসারের […]
-
একাদশী বৈরাগী
কালীদহ গ্রামটা ব্রাহ্মণ-প্রধান স্থান। ইহার গোপাল মুখুয্যের ছেলে অপূর্ব ছেলেবেলা হইতেই ছেলেদের মোড়ল ছিল। এবার সে যখন বছর পাঁচ-ছয় কলিকাতার মেসে থাকিয়া অনার্স-সমেত বি.এ. পাশ করিয়া বাড়ি ফিরিয়া আসিল, তখন গ্রামের মধ্যে তাহার প্রসার-প্রতিপত্তির আর অবধি রহিল না। গ্রামের মধ্যে জীর্ণশীর্ণ একটা হাইস্কুল ছিল—তাহার সমবয়সীরা ইতিমধ্যেই ইহাতেই পাঠ সাঙ্গ করিয়া, সন্ধ্যাহ্নিক ছাড়িয়া দিয়া দশ-আনা ছ-আনা […]
-
পুঁই মাচা
সহায়হরি চাটুয্যে উঠানে পা দিয়েই স্ত্রীকে বলিলেন-একটা বড় বাটি কি ঘটি যা হয় কিছু দাও তো, তারক খুড়ো গাছ কেটেছে, একটু ভালো রস আনি। স্ত্রী অন্নপূর্ণ খড়ের রান্নাঘরের দাওয়ায় বসিয়া শীতকালের সকালবেলা নারিকেল তেলের বোতলে ঝাটার কাটি পুরিয়া দুই আঙুলের সাহায্যে কাটার কাটিলগ্ন জমানো তৈলটুকু সংগ্ৰহ করিয়া চুলে মাখাইতেছিলেন। স্বামীকে দেখিয়া তাড়িতাড়ি গায়ের কাপড় একটু […]
-
বেদেনী
শম্ভু বাজিকর এ মেলায় প্রতি বৎসর আসে। তাহার বসিবার স্থানটা মা কঙ্কালীর এস্টেটের খাতায় চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মতো কায়েমি হইয়া গিয়াছে। লোকে বলে, বাজি; কিন্তু শম্ভু বলে ‘ভোজবাজি-ছারকাছ’। ছোট তাঁবুটার প্রবেশপথের মাথার উপরেই কাপড়ে আঁকা একটা সাইনবোর্ডেও লেখা আছে ‘ভোজবাজি-সার্কাস’। লেখাটার একপাশে একটা বাঘের ছবি, অপরদিকে একটা মানুষ, তাহার এক হাতে রক্তাক্ত তরবারি, অপর হাতে […]
-
টিচার
রাজমাতা হাইস্কুলের সেক্রেটারি রায়বাহাদুর অবিনাশ তরফদার ভেবেচিন্তে শেষ পর্যন্ত টিচারদের কিছু সদুপদেশ দেওয়া স্থির করল। বুড়ো বয়সে এমনিতেই তার ঘুম হয় কম, তার ওপর এইসব যাচ্ছে তাই খাপছাড়া ব্যাপারে মাথা গরম হয়ে যাওয়ায় কদিন আর ঘুম হয় নি। টিচাররা ধর্মঘট করবে বেতন কম বলে, বেতন বাকি থাকে বলে, এটা সেটা হরেকরকম অসুবিধা আছে বলে চাকরি […]
-
রস
রস নরেন্দ্রনাথ মিত্র কার্তিকের মাঝামাঝি চৌধুরীদের খেজুর বাগান ঝুরতে শুরু করল মোতালেফ। তারপর দিন পনের যেতে না যেতেই নিকা করে নিয়ে এলো পাশের বাড়ির রাজেক মৃধার বিধবা স্ত্রী মাজু খাতুনকে। পাড়া-পড়শি সবাই তো অবাক। এই অবশ্য প্রথম সংসার নয় মোতালেফের। এর আগের বউ বছরখানেক আগে মারা গেছে। তবু পঁচিশ-ছাবি্বশ বছরের জোয়ান পুরুষ মোতালেফ। আর […]
-
বনফুলের কয়েকটি গল্প
বেচারামবাবু হরিশ মুদী সন্ধ্যাবেলা হিসাব বুঝাইয়া গেল যে গত মাসের পাওনা, ২৭’৭০ পাইয়াছে এবং তাহা অবিলম্বে মিটাইয়া দেওয়া দরকার। সদ্য-অফিস-প্রত্যাগত বেচারামবাবু বলিলেন—‘আচ্ছা মাইনেটা পেলেই—!’ অতঃপর কাপড়-চােপড় ছাড়িয়া বেচারাম বাহিরের রোয়াকটিতে বসিয়া হাঁক দিলেন—‘ওরে চা আন—।’ চা আসিল। চা আসিবার সঙ্গে সঙ্গে পাড়ার হরিবাবু, নবীন রায়, বিধু ক্লার্ক প্রভৃতি চার পাঁচজন ভদ্রলোকও সমাগত হইলেন এবং […]
-
সাদাত হাসান মান্টোর গল্প
[সাদাত হাসান মান্টো উর্দু সাহিত্যের ব্যতিক্রমী লেখক অথচ অবশ্যম্ভাবী উপস্থিতি। মৃত্যুর এত বছর পরেও অমরত্বের দাবিদার হতে পারেন স্রেফ দৃষ্টিভঙ্গির জন্য। জীবনের কিছু সময় কাটিয়েছেন ভারতে আর বাকিটা পাকিস্তানে। দেশ বিভাগের জ্বালা সাহিত্যের ভাষায় মুক্ত করছেন। আর জীবন যন্ত্রণার জ্বালাকে মুক্তি দিয়েছেন কলমের শক্তিতে। জীবনের তাপকে সমাজ থেকে নিয়েছেন নিজের জীবনকে বাজি রেখে। ছিন্নভিন্ন হয়ে […]
-
দুটি গল্প
গুরুগ্রামের গ্রেগর সামসা সকালে রোজকার প্রথামতো গুরুগ্রামের সেক্টর ৫৬-এর নির্জন রাস্তায় দুজনে হাঁটছি….বেশ ফুরফুরে হাওয়া দিচ্ছে…. মেজাজটাও বেশ মানানসই…..সপ্তাহান্তটা কিভাবে সুভালাভালি কাটানো যায় তাই নিয়ে দুজনের মধ্যে একটা মতান্তর প্রায় পেকে উঠেছে……এমন সময় হঠাৎ রাস্তার পাশের রাধাচূড়া গাছ থেকে আমাদের পূর্বপুরুষদের একজন খ্যাঁচম্যাচ মুখভঙ্গি করে নেমে এসে আমার বাঁহাত ধরে ঝুলে পড়লো…..হঠাৎ একিরে বাবা !! […]
-
অণুগল্প সংখ্যা
দুটি গল্প লিখেছেন: সিদ্ধার্থ সান্যাল গুরুগ্রামের গ্রেগর সামসা সকালে রোজকার প্রথামতো গুরুগ্রামের সেক্টর ৫৬-এর নির্জন রাস্তায় দুজনে হাঁটছি….বেশ ফুরফুরে হাওয়া দিচ্ছে…. মেজাজটাও বেশ মানানসই…..সপ্তাহান্তটা কিভাবে সুভালাভালি কাটানো যায় তাই নিয়ে দুজনের মধ্যে একটা মতান্তর প্রায় পেকে উঠেছে……এমন সময় হঠাৎ রাস্তার পাশের রাধাচূড়া গাছ থেকে আমাদের পূর্বপুরুষদের একজন খ্যাঁচম্যাচ মুখভঙ্গি করে নেমে এসে আমার বাঁহাত ধরে […]
-
নদী
একধারে জঙ্গল। তারপাশে ছোট্ট একটা নদী। ছোট বড় পাথরের গা দিয়ে বয়ে চলেছে তিরতির করে। পূব দিকে যখন সূর্য ওঠে, ভোরের ঝিরঝিরে বাতাস জাগে, গাছগুলোর পাতায় পাতায় কাঁপন ধরে। পাখীদের চিকিরমিচির শুরু হয়। তখন সে নদীতে কোথাও হাঁটুজল, কোথাও গোড়ালী পর্যন্ত। নদীটার সঙ্গে তার খেলা চলে কিছুক্ষণ। লাফাই ঝাঁপাই খেলা। নদীটাও যেন খুশীতে ঝিলমিল করে। […]
-
প্রিয়সঙ্গ
রবিবার আমাদের কাজের ছুটি। কী করব ভাবছি ,বিশাখার ফোন এল, চলে এস শান্তিনিকেতনে। বিশ্বভারতী কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়। রবিবার খোলা থাকে। বুধবার ছুটির দিন। বিশাখা সংগীত বিভাগের অধ্যাপক। গানের গলাও বেশ চমৎকার । বিশেষ করে রবীন্দ্রসংগীত যখন গায়,বিভোর হয়ে যায় গানের মধ্যে। চারপাশের শ্রোতারাও তখন তার গানের মধ্যে ডুব দেয়। বিশাখার সঙ্গে আমার আলাপ হয়েছিল একটা ম্যানেজমেন্ট […]
-
ফুটবলার
আমাদের পাড়ার কানাইদা ছিল স্টার ফুটবলার। তখন প্রখ্যাত ফুটবলার মেওয়ালাল সবে অবসর নিয়েছেন। কানাইদা দেখতে যেমন মেওয়ালালের মত ছিল, তেমনি ভাল ফুটবলও খেলত। মেওয়ালালের মতই খেলার সময় পরত লাল হাফ প্যান্ট, আর গায়ের রঙটাও ছিল তার কুচকুচে কালো। মাঠের রেলিঙে পা ঝুলিয়ে বসে আমরা স্কুল পড়ুয়া ছেলের দল খেলা দেখতাম। আমাদের কাছে কানাইদা ছিল সেদিনের […]
-
দুটি অণু গল্প
মাতৃরূপেন অফিসার চমকে উঠলেন, — ভেবে বলছেন ? মেয়েটা কিন্তু বলেছে ,অন্ধকারে চিনতে পারেনি । নিবেদিতার কঠিন স্বর, দেরি না করে চলে আসুন । ততক্ষণ আটকে রাখবো । দরজায় বেল বাজলো । বাড়িতে পুলিশ দেখেই সজলের রক্ত হিম হয়ে গেলো । দেখলো রুদ্রানীর মতো তেজে জ্বলন্ত দৃষ্টিতে তার দিকে অঙ্গুলিনির্দেশ করলেন মা । তাঁর প্রসারিত হাতটা যেন উদ্যত […]
-
খোলা হাওয়া
বিয়ের পাঁচ বছরপর তানিয়াকে নিয়ে এই প্রথম বেড়াতে আসা। মেঘ পাহাড়ের সহবাসে পশ্চিম ঘাটের অপূর্ব সৌন্দর্যমন্ডিত জায়গা এই “খান্ডালা ” । বৃষ্টিতে ধুলোমাখা পাহাড়ি শহরটা ধুয়ে ঝকঝকে পরিষ্কার হয়ে গেছে ,পাহাড়ের গায়ে যেন ঘন সবুজাভ চাদর । মনে হচ্ছে যেন নতুন বিয়ের পর হানিমুনে এসেছে ওরা । তানিয়াকেও আজ বড় সুন্দর দেখাচ্ছে । গরম গরম […]
-
অবিশ্বাস
অন্যদের মতো সিনেমা, স্বভূমি বা গঙ্গার ধারে নয়, সপ্তর্ষি আর লাবণী সাধারণত দেখা করে কাছাকাছি কোনও রেলস্টেশনে। টিকিট কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে ভাড়ার তালিকায় চোখ বোলাতে বোলাতে যে স্টাশনের নামটা ভাল লাগে, মনে হয়, এখানে গাছ আছে, আকাশ আছে, ফুরফুরে হাওয়া আছে, সেখানকার টিকিট কেটে ট্রেনে উঠে পড়ে। আজও ওরা এসেছিল তেমনই একটি জায়গায়। ফেরার জন্য […]