গল্প পড়ুন

এই মুহুর্তে বাংলা ভাষায় লেখালিখি করেছেন এমন গল্পকারের সংখ্যা কত? সত্যি বলতে কী ‘গল্পের সময়’ তা জানে না। কয়েকজন ব্যাক্তি ও কয়েকটি সংস্থা উদ্যোগ নিয়ে দুই বাংলায় লেখক-কবি-সাহিত্যিকদের নথিভুক্তকরনের উদ্যোগ নিয়েছেন। কিন্তু তা কোনও ভাবেই সম্পূর্ন নয় বা হওয়া সম্ভব নয়। কারন প্রতিনিয়তই লেখালিখির জগতে আসছেন বহু মানুষ। ইন্টারনেটে বাংলা গল্পের ম্যাগাজিন করতে গিয়ে আমরা লক্ষ্য করেছি অনেক লেখকই এখনও কম্পিউটার এড়িয়ে চলেন। কাগজ-কলমেই তাঁরা স্বচ্ছন্দ। চিরাচরিত ছাপা ম্যাগাজিন, লিটল ম্যাগ, শারদসংখ্যা বা সংবাদপত্রের সাময়িকীতেই তাঁরা লেখালিখি করেন। অন্যদিকে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কম্পিউটার ও ইন্টারনেটে স্বচ্ছন্দ একদল লেখককুল রয়েছেন। তারা ফেসবুকে পোস্ট করছেন, ব্লগ বানাচ্ছেন, ই-ম্যাগাজিনেও লিখছেন। ‘গল্পের সময়’ এই দুই পক্ষকেই চায়। নবীন ও প্রবীন গল্পকারদের গল্প পড়ুন এই পাতায়।


  • পরাজয়

      কবি যখন বনের পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন, ঠিক সেই সময়েই আকাশ লাল করে সূর্যাস্ত হচ্ছিল। অস্তরাগের সেই স্বর্গীয় সৌন্দর্যে মর্ত্যের কবি এতটাই অভিভূত যে, আর একটু হলেই এক নারীর সঙ্গে তাঁর দেহস্পর্শ ঘটে যেত। বনবাসী সমাজের সেই যুবতী তখন মাথায় জ্বালনের বোঝা নিয়ে সন সন করে হেঁটে আসছিল উলটো দিক থেকে। তার ঘাড় শুকনো ডালপালার […]


  • হোমওয়ার্ক

      সমাজের নানাবিধ দুরাচার, অনাচার, ব্যভিচার রুখবার জন্য ইদানিং আমাদের অনেককেই ভয়ংকর মরিয়া হয়ে উঠতে দেখছি। ভরদুপুরে মনের হরষে মোমের বাতি জ্বালানোর শুভ সংস্কৃতি কিছুদিন আগেও তেমন চোখে পড়েনি। চারপাশের এত অধঃপতন আর অবক্ষয়ের মধ্যে এটা নিঃসন্দেহে এক অতীব ইতিবাচক লক্ষণ বলা যেতে পারে। কাগজে দেখছিলাম ঝাড়গ্রাম না মাড়গ্রাম কোথায় যেন পুলিশ গ্রামবাসীদের ডেকেডুকে এনে […]


  • মেঘে ফোটা তারা

    বাস থেকে নেমে ময়েনউদ্দিন একেবারে ঘুটঘুটে অন্ধকার নিয়ে গ্রামে ঢুকলো। কালো পলিব্যাগে মোড়ানো হাতের ছোট পুটুলিটা অন্ধকারে মিশে একাকার হয়ে গেছে। অবশ্য বকের ডানার শাদাও গিলে খেতো এ অন্ধকার। বড় রাস্তা থেকে প্রায় হামাগুড়ি দিয়ে বাড়িমুখো আলপথে নেমে যেন সে অন্ধকার আরো গাঢ় করতে করতে ধীরলয়ে হেঁটে যাচ্ছে ময়েনউদ্দিন। পথ যেন তার পায়েই পেঁচিয়ে আছে। […]


  • জলের ধর্ম

    ১ ওস্তাদের কাছ থেকে শিখে নেওয়া ম্যাজিকগুলো ধীরে ধীরে পুরনো হয়ে যাছে মানিক বুঝতে পারে।এই তো সেদিন কিশোরগঞ্জে একটা শো ছিল,দর্শকের আসন থেকে অভিযোগ উড়ে আসে-‘এসব পুরোনো খেলার বদলে নতুন কিছু দেখান’। নতুন কি আর দেখাবে মানিক। বছর দুই হল ওস্তাদ মারা গেছে। শহরে গিয়ে নতুন ওস্তাদের কাছ থেকে ম্যাজিক শেখার মতো ক্ষমতাও মানিকের নেই। […]


  • জীবন নামের মহাগ্রন্থ

    প্রায় দিনই মানুষটিকে একই সময়ে মেট্রো স্টেশনে দেখে চন্দ্রানী। সেই মানুষটিও চন্দ্রানীকে দেখে। একদিন সকালের মেট্রো রেলে অফিসের ব্যাগ্রতা ও ব্যস্ততার সময়ে নিজের সিট ছেড়ে দিয়ে সেই মানুষটি চন্দ্রানীকে বসতে দেয়। চন্দ্রানীর এক হাতে ব্যাগ অন্য হাতে মস্ত বড় এক প্যাকেট। বসতে পেয়ে সুবিধেই হল। বসে পড়ে কৃতজ্ঞ  হাসি হেসে চন্দ্রানী বলে, “ধন্যবাদ ! আজকাল […]


  • সুগন্ধি সাবান, শারুক খান ও শঙ্করী

    দুপুর প্রায় তিনটে নাগাদ এল শারুক খান। দীর্ঘদিন পর ফের তার স্বপ্নের মানুষটাকে দেখতে পেয়ে কুলকুল করে বয়ে চলা নদীতে ভোরের সূর্যের  আলো পড়লে যেমন হয়, মনের ভেতর তেমনই ঝিলমিল করতে লাগলো  শঙ্করীর। কয়েক ঘন্টা ধরে সামনের খোয়া ওঠা মলিন রাস্তাটার দিকে তাকিয়ে সে ভাবছিল আজও বোধ হয় শারুক খান আসবে না। ও এলেই এক […]


  • সন্ধ্যাবেলার গল্প

    ওরা দুজন মুখোমুখি বসে আছে । বহুদিন পর আজ দেখা হলো দুজনের । ঠিক এই দিনটার জন্য ওরা অপেক্ষা করে ছিল এতদিন । ওরা পার্কের যে কোণটাতে বসে আছে সেখানটা খুব নির্জন । ওদের দুজনেরই এই নির্জনতাটার খুব দরকার ছিল । ওদের মুখে কোন কথা নেই । মনের ভেতর অনেক কথা জমে থাকলে কি এরকম […]


  • রঙিন দারিদ্ররেখা

    উইয়ের ঢিবি থেকে মাটি ভেঙে টিনের বালতিতে বোঝাই করতে করতে সুধাকৃষ্ণ বুঝে উঠতে পারছিল না কটা বাজে। গ্রাম–ভারতের যে মানুষেরা রোদের এগনো–পেছনো, তারা আর চাঁদের অবস্থানে বেলা রাত মাপে সুধাকৃষ্ণ তাদেরই একজন। অথচ আষাঢ়ের এই থমধরা মেঘলা সকালে এই বৃষ্টি, বৃষ্টি নয়, মেঘভাঙা ধারালো রোদ, কখনও আগলা–পাগলা হাওয়া – এমনই যখন চারপাশের প্রাকৃতিক খেলা; তখন […]


  • এই প্রজন্ম

    সিমিভ্যালিতে চমৎকার বাড়ি কিনেছে সম্বিৎ। কাঠের দোতলা বাড়ি। ক্যালিফোর্নিয়ায় ভূমিকম্প হয় বলে সব বাড়িই কাঠের তৈরি। বাড়িটার বাঁদিক দিয়ে বোধহয় গেছে পাঁচ নম্বর নর্থ ফ্রি ওয়ে। খানিকটা এগোলেই পাহাড়। সেই পাহাড়ের গা বেয়ে এঁকেবেঁকে চলে গেছে চওড়া ফ্রি ওয়ে। চৌষট্টি মেইল এগনোর পর তবে সমতলে গিয়ে মিশেছে রাস্তাটা। সম্বিতের বাড়ির সামনে এক টুকরো বাগান। বাগানে […]


  • চোর

    তুমুল শোরগোলে ঘুম ভেঙে গেল কামিনীর, এত চিৎকার-চেঁচামেচি কীসের? যারাই করুক, পরে দেখা যাবে, আগে তো ওকে ডাকি। পাশেই শুয়েছিলেন তাঁর স্বামী বিবিধান। রিটায়ার হতে আর বেশি দেরি নেই। এক মেয়ে ছিল। তারও বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন মাসখানেক আগে। জামাইটাও খুব ভাল পেয়েছেন। যেমনি ভাল পরিবার। তেমনি দেখতে-শুনতে ভাল। তার উপর চাকরিও করে আরও ভাল। দমকলের […]


  • তু…চ্ছ

    ‘গেহ্‌রায়ি কিতনা হোগা …’ ‘করিব, হাজার ফিট তো হোগা …’ ‘আগার গিরতা তো …’ ‘কিমা বন যাতা …’ হেডলাইটের হলুদ সমান্তরাল দুটো রেখা সামনের সরলবর্গীয় জঙ্গল ভেদ করবার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে এখনও। অরণ্যরাজির দেওয়ালে পৌঁছানোর আগেই জড়িয়ে গেছে কুয়াশার মরণ-জালে। আমাদের সামনে খাদের গা বেয়ে উঠে আসা সুউচ্চ দেবদারু, ওক, বার্চ, ম্যাপ্‌লের জঙ্গলের ভগ্নাংশ। পিছনে […]


  • রানওয়ে

    এল. এ এয়ারপোর্টের ফ্লোরিস্ট সিলভিয়া মিষ্টি হেসে অভ্যাসবশত জিজ্ঞেস করল, “হলুদ গোলাপ তো”? উত্তর না দিয়ে গোলাপের তোড়া টা নিয়ে দাম মিটিয়ে  অ্যারাইভ্যাল এর দিকে এগিয়ে চলে মুরশেদ। আগমনের অপেক্ষারত মানুষদের দাঁড়াবার জায়গাটার মুখেই যে ক্যাফে টা সেখানকার ছোকরা কর্মচারি মেক্সিকান মারিও হিস্পানিক টোনে বলল “তুদে ফ্লাইত অন রাইত তাইম?” হ্যাঁ, না বা হতেও পারে […]


  • শুভ পরিণয়

    নব বিবাহিত দম্পতিকে নিয়ে সাজানো গাড়িটা রোড থেকে ষ্ট্রিটে ঢুকতেই সীমন্তিনীর চোখে পড়ল – “Men At Work” এর বোর্ডটা। সামনে তাকাতেই দেখা গেল কালো ধোঁয়া পাকিয়ে পাকিয়ে উঠছে আর তার সঙ্গে বিরক্তিকর ঘড়র ঘড়র আওয়াজ – রাস্তায় পিচ হচ্ছে। বোশেখের এই আগুনঝরা দুপুরে কতগুলি ভগবানের দূত দুইপায়ে এবং মাথায় মোটা চট বেঁধে কর্তব্যে রত। নিবেদিত […]


  • দুই অকিঞ্চিতের গল্প

      ………… হরিপদদা হরিপদদাদার কথা বলতে গেলে মানসিক ভারসাম্যহীনতার অনেক দৃশ্য আর তার পরেই আমার কিশোর বয়সের অনেক টুকরো টুকরো ঘটনা চোখের সামনে ভেসে আসে – আর তখনই চৈতালির কথা মনে পড়বেই, আর চৈতালির কথা মনে পরার অর্থই হল একরাশ মনখারাপের মেঘ মনের মধ্যে থম মেরে থাকা, রজত জয়ন্তী অতিক্রম করা বউ’এর সঙ্গে অহেতুক দ্বন্দ্বে […]


  • হিসেবনিকেশ

    আমাদের ইস্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাই ছিলেন বিজন বাবু । আমরা আড়ালে ওঁকে বলতাম মিসটেক । জ্যামিতি ক্লাসে বোর্ডে উপপাদ্য পড়াতে গিয়ে বইয়ের কথা ওঁর খেয়াল থাকতো না । ফলে প্রায়শই উনি যেটা প্রমাণ করবার কথা তার পরিবর্তে অন্য আর একটা কিছু প্রমাণ করে বসতেন । পরে বইটা দেখে নিয়ে বলতেন “ এতক্ষণ যেটা করলাম সেটা ভুল […]


  • মেটামরফোসিস

    ফুটফুটে মেয়ের নাম মঞ্জু । যে পড়শী পরিবারে সে মানুষ হল তাদের পদবীই বসেছে তার নামের শেষে। সে মেয়ে এখন মঞ্জু তামাং। তবে মঞ্জু তা মানতে নারাজ। সে বলে আমি মঞ্জু চুডৈল। নেপালী ভাষায় চুডৈল এর অর্থ ডাইনি। কালে কালে বাড়তে থাকল সে। সেই মেয়ে যখন বছর পাঁচেকের পাহাড়ি ঝোরার সামনে দাঁড়িয়ে কলকল করে সে […]


  • সুজাতা

    কলেজের পত্রিকা-বিভাগে কান পাতলে শোনা যায়,’এই সংখ্যায় রবিনের কবিতাটা দেখেছ? just অসাধারণ!! প্রেমের যে এরকম একটা dimension হতে পারে ভাবাই যায় না… আচ্ছা,ওটা নাকি সুজাতাকে উদ্দেশ্য করে লেখা?…ওই যে, psychology-র সুজাতা আছে না… ‘ খেলার মাঠ বলে, ‘ না, কথা রেখেছে বটে ক্যাপ্টেন মৈনাক !! এবারও trophy দিয়েছে কলেজকে! winning stroke-টা কী মারল extra-cover দিয়ে […]


  • ঘরভাঙা ঘর

    ঘরে ফিরতে কবিরুলের পা জড়িয়ে আসছিলো। কবিরুল চাকরি করে একটা বেসরকারি ব্যাংকে। মতিঝিলে অফিস। বেতন ভালো।  বেতন ভালো বলে এখনো সে নিজের জন্য ভালো একটা বাসা ভাড়া নেয়নি। দেশে বাড়িঘরের চেহারা আগে পাল্টাতে হবে। বাড়ির ছেলে পাস করে চাকরি পাওয়ার সাথে সাথে গ্রামের মানুষ আগে তাদের ঘরখানার জৌলুস দেখতে চায়। এটা বাদ রেখে আর কোনো […]


  • অমানুষ

    আপনার নাম? স্যার বাবার দেয়া নাম মোসলেম উদ্দিন। এখন সবাই ‘অমানুষ’ নামে ডাকে। ডাক্তার মাহমুদ রোগীর চোখের দিকে তাকালেন। মানুষটার ভেতর কোনো অস্বাভাবিকতা আছে বলে তার মনে হলো না। আর দশটা সাধারণ মানুষের মতই। তবে চোখের ভেতর কি যেন একটা আছে, যেটা চট করে ধরা যায় না। ডাক্তার চোখ নামিয়ে নিলেন। _ ‘অমানুষ’ তো কোনো […]


  • পিরানদেল্লো ও একটি আত্মহত্যা

    মৃণালিনী, আমিই তোমার ‘শব’ আঃ আবার। ‘শব’ নয় ‘শব’ নয় অনুপম ‘সব’ ‘সব’। আবার বলো। মৃণালিনী আমিই তোমার ‘শব’ ‘সব’ ‘শব’ ‘সব’ ‘সব’ … আরে বাবা everything … মানে ‘সব’… …dead body নয়। বলছি তো রাজীবদা, please শুনুন… ‘শব’ অনুপম এই নিয়ে তিনদিন হয়ে গেলো। বলেছিনা দাঁতের ফাঁক দিয়ে আওয়াজটা বার করো … ‘সব’ … […]


  • নাড়ায় আগুন ছিল

    চৈত্রের দুপুরে দখিনা হাওয়া বইছে ধীর। হলুদ পাতা পড়ছে টুপটাপ।  কতগুলো মেয়ে ঝুড়ি নিয়ে ভাঙা রাস্তার কোলে পাতা কুড়োচ্ছে। খালের ওপারে শিরিষগাছে কোকিল ডাকছে। রঞ্জনের ভাঙা সাইকেল ঝনঝন করে চলেছে দুপুরের নিস্তব্ধতা ভাঙতে ভাঙতে। রাস্তায় একহাঁটু ধুলো। ঠেলতে ঠেলতে সাইকেলের চাকা মলিন। সে যাবে দক্ষিণের আবাদ। সেখানে আগুন জ্বলেছিল একদিন। তার কিছু দাগ ফসিলের মত […]


  • বসন্ত উৎসব

    কোপাই পাড়ের নিরিবিলি শাল বন – গতকাল গোধূলিতে এই শালতরু গুলিকে ঘিরে অবিরাম বৃষ্টি পড়েছে , ফাল্গুনী রৌদ্রগন্ধ ধুয়ে মিশেছে মাটিতে – আজ সারাদিনই শালতরুর নতুন করে চৈতি রৌদ্রস্নান দেখে এখনও মেদুরতায় ভুগছে কোপাই পাড় – সন্ধ্যা সলজ্জিত নববধূর মতো এইমাত্র আলতো স্পর্শ করেছে কোপাইয়ের জল , দিগন্ত ছুঁয়ে একটা কালো পাখি উড়ছে – আকাশের […]


  • বোমাতঙ্ক

    দিল্লির সানরাইজ হোটেল থেকে বেরিয়ে পড়লাম সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ। রাস্তার মোড়ে এসে একজন অটোওয়ালাকে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘ভাই, এয়ারপোর্টে যাবে ?’ প্রতুত্তরে জানাল, ‘সাব, আপ কৌন এয়ারপোর্টে যায়েঙ্গে ? ইন্টারন্যাশানাল অর ডোমেস্টিক ?’ ‘ডোমেস্টিক’ বলতে জানাল, আইয়ে সাব। আমার সঙ্গে ছিল ডাঃ কল্যাণ মুখার্জী। আমরা চন্দননগর থেকে এসেছিলাম দিল্লিতে আইএমএ-র ন্যাশনাল কনফারেন্সে যোগ দিতে। দুদিনের […]


  • ঠিকানা

    বৈরাগীটি দৌড়ে এসে ট্রেনে উঠলেন । কম্পার্টমেন্ট ফাঁকা, দূরে দু একটা লোক দাঁড়িয়ে । ঠান্ডাও পড়েছে জব্বর , ডিসেম্বরের রাত বলে কথা। ট্রেনের বগিও ফাঁকা । বৈরাগী একটা সিটে বসে হাঁফ ছাড়লেন। আজকে খুব খাটনি গেছে , পয়সা কামিয়েছেনও বেশী। হঠাৎ তিনি লক্ষ করলেন যে বগি পুরোপুরি খালি নয় । দুটো সিট পরে এক বৃদ্ধ […]


  • জুঁইফুল পনের বছর

    আকাশে প্লেন ওড়া দেখলেই মনে পড়ে তোমায়। সময় বদলে যায়। মানসিকতার পটটাও। একটা দূরত্বের বলয় তৈরি করে। একরাশ জুঁইফুল পনের বছর বয়সটার ছবি আঁকে। সেই আমার পনের বছর, সেই আমার ভালবাসার আকাশ। কুঁড়ির মধ্যে যৌবনের কান্নাটা যেন ধাক্কা মারতে থাকে। যদিও এখন সবই ফসিল। তবু এরোপ্লেনের শব্দটা অনেকবছর আগের পাতা উল্টেযায়। চিঠি লিখতে বসেছি তোমায়। […]


  • ঘুমকাতুরে

    শময়িতার সন্দেহটা এখন আর সন্দেহের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। সে বুঝে গেছে, তার কপাল পুড়তে চলেছে। না-হলে যে শ্রয়ন সন্ধে গড়াবার সঙ্গে সঙ্গে ঘুমে ঢলে পড়ত। বিছানাটা পর্যন্ত ঝাড়তে দিত না। একটু উঠতে বললে কোন ঘরে গিয়ে যে শুয়ে পড়ত বোঝা যেত না। খুঁজতে খুঁজতে ওর দম বেরিয়ে যেত। সেই শ্রয়নই কিনা এখন রাত এগারোটাতেও বাড়ি […]


  • ফিরে এসো মুখ

    রিয়া প্রতিদিনের মত হাঁপাতে হাঁপাতে অফিসে ঢুকলো। তারপর যা কথার তুবড়ি – যা জ্যাম – কন্ডাকটারের সঙ্গে কথা কাটাকাটি – মা কেন খেতে দিতে দেরি করেছে – আসলে বড় মামা- অজন্তা এই ব্রাঞ্চে আসার পর থেকে সবার আগে আসে। এসে নিজের ডেস্কে একটু বিশ্রাম নেয়। এই প্রজন্ম কথায় কথায় গুডমর্নিং ম্যাম – থ্যাঙ্ক য়্যু ম্যাম […]


  • দু প্রস্থ আকাশ

    শেষ কার্তিকের জ্যোৎস্না ডোবা রাতে বাড়ি ফিরছেন হরিপ্রসন্ন। রাত দশটার এদিক–ওদিক। উত্তর চব্বিশ পরগণার এ অঞ্চলের প্রায় সবাই ঘুমের তলায়। রাস্তায় এখনও লাইট আসে নি। বাজার ছাড়ানোর পর দুপাশে শুধু শাল খুঁটি। কলকাতা যাওয়া শেষ বাসের লাল আলো মিলিয়ে যেতে দেখেছেন একঘণ্টা আগে। তখনও নিমের চায়ের দোকানে উনুন নিভু আঁচ, হাঁড়িতে ফুটন্ত জল। হাওয়ায় ফিকে […]


  • একটি তেজস্ক্রিয় কাব্যগ্রন্থ

    কবি দেবজীবন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আমার যে খুব একটা আলাপ ছিল, তা নয়। কিন্তু সে ছিল, সেই ধরনের মানুষ, যারা জোটের ভেতর, জমায়েত হট্টমেলার মধ্যে বসে, একটিও কথা না-বলে, হাসি হাসি মুখে, শান্ত ব্যাক্তিত্বে হয়ে ওঠে লক্ষণীয়। হয়তো সে আমাদের সকলকেই বন্ধু বলে মনে করত, আমরা, অন্তত আমি তাকে স্রেফ পরিচিত মনে করতাম। তুমুল আড্ডার মধ্যে […]


  • হরিদাস পাল

    হরিদাস দৌড়াচ্ছে। আমোদপুরের হরিদাস। খেঁচে দৌড়। মাঝে মাঝে মনে হচ্ছে বাতাসকেও টেক্কা দিচ্ছে বুঝি। দৌড়াতে দৌড়াতে পরনের লুঙ্গিটার দিকে দ্রুত একবার তাকিয়ে নিচ্ছে সে। শতছিন্ন লুঙ্গিটা মালকোঁচা মেরে দৌড় শুরু করেছিল। আছে তো এখনও কোমরে? আছে বলেই মনে হচ্ছে যেন। অবশ্য না থাকলেও থামার উপায় নেই, ল্যাংটো হয়েই দৌড়ে যেতে হবে তাকে। দৌড়াতে দৌড়াতে নিজেই […]


যোগাযোগ


email:galpersamay@gmail.com

Your message has been sent. Thank you!

গল্পের সময় পরিবার
সমীর
অগ্নীশ্বর
দেবাশিস
চিন্ময়
পার্থ
মিতালি
জাগরণ
দেবব্রত

© 2016 - 2024 গল্পের সময়। ডিজাইন করেছেন অগ্নীশ্বর। নামাঙ্কন করেছেন পার্থ