Tag Archives: short story
-
অ্যাক্টিভিস্ট
১ ইস্যু ঘুরতে দেওয়া যাবে না। বার্নিং টপিককে আরও বার্নিং করে ধরে রাখতে হবে। ফোনের ওপারের কথা শুনতে শুনতে রাস্তার মোড়ের দোকান থেকে গোল্ড ফ্লেকটায় অগ্নিসংযোগ করল পঙ্কজ। তারপর দোকানের পেছনের দিকের ছায়াঘেরা বাবলা গাছটার নিচে বেঞ্চি পাতা সেফটি জোনে ঢুকে বাঁ হাতটা মোবাইলের নীচে ধরে ,কথা আড়াল করে, নিচু স্বরে বলতে শুরু করল – […]
-
ভেজা খড়ের গন্ধ
চামড়ার ওপর এসে পড়ে এক ফোঁটা ঠাণ্ডা জল। কেমন যেন কুঁচকে যায়। ঠিক কুঁচকে যাওয়া নয়, নিজেকে কেমন যেন গুটিয়ে নেয়। শুকনো বালির মধ্যে এক ফোঁটা জল এসে পড়লে যেমন হয়, চারপাশের পাড়ায় কেমন যেন একটা ধ্বস নামে। পাড়ায় পাড়ায় চাউর হয়ে যায় জল পড়ার খবর। তারপর শক্তির দিকে আস্তে আস্তে ঘেঁষে যাওয়া। কিছুতেই মুখ সরিয়ে […]
-
‘গল্পের সময়’ উৎসব সংখ্যা ২০২৩
[প্রকাশিত হল ‘গল্পের সময়’ উৎসব সংখ্যা ২০২৩। এই আয়োজনে সামিল হয়েছেন নবীন ও প্রবীণ গল্পকারেরা।]
-
সাত্যকি আর ফিরে আসে নি
(১) সেদিন বাজারে হঠাৎ পেছন থেকে কাঁধে হাত দিয়ে একজন বলল, আরে সিধু না ! কেমন আছিস । আমি ভাল করে দেখেও ঠিক চিনতে পারলাম না । আমার মতই দোহারা চেহারা । মুখে একটা ধুর্ত ধুর্ত ভাব । সে কিন্তু অতি পরিচিতের মত হাসতে লাগল । তুই-তোকারি করছে যখন – ছোট বেলার বন্ধু বা অতি […]
-
সরলাবালা হোম ডেলিভারি
নবাবহাট বাসস্ট্যান্ড বোধহয় এসে গেছে । লোক্যাল বাসের কন্ডাক্টর আর ক্লিনারদের শোরগোল আর চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে প্যাসেঞ্জার জোগাড় করার আওয়াজ হিরণ্ময় গাড়ির ভেতর থেকেই শুনতে পেলেন । এখানে ভলভো বাসের স্ট্যান্ডটা চালু লোকাল বাসের লেনগুলো ছাড়িয়ে সামান্য দূরে, বড়ো শেডটার শেষ প্রান্তে । যেন নীচুজাতের ছোঁয়াচ বাঁচিয়ে আলগা, দূরে দূরে থাকা ! ইউনিভারসিটির ড্রাইভার ছেলেটা লোকজন […]
-
জামতাড়া গ্যাং
(১) বেশিদিন নয়, এক বছর পুরতে আরও মাস চারেক বাকি ছিল। এই ক’মাসের খাপছাড়া সংসার। চুকিয়ে দিয়ে যখন বেরিয়ে আসে কেউ, টান পড়ে কি কোথাও। পড়লেও সে টান পোক্ত নয়। উপড়ে ফেলতে তেমন কষ্ট কিছু হবার কথা নয়। দুটো ট্রলি, বড় হাতব্যাগটা আর একটা ল্যাপটপ। বেরিয়ে এসে দরজাটা টেনে দিলেই খচ করে মসৃণ শব্দে একটা […]
-
নিশিযাপন
চোস্তা আর হাফ হাতা পাঞ্জাবি গায়ে গলাতে গলাতে কৌশিকের হঠাৎ চোখে পড়ল, এ দেয়াল সে দেয়ালে বড় বড় ফ্রেমে বাঁধানো একের পর এক ছবি। ফ্রেমগুলোর ফাঁকফোকর থেকে চুন সুরকি খসে খসে দাঁত-মুখ বেরিয়ে আসা দেখে তার মনে হল, এগুলো ঢাকার জন্যই বুঝি এই ফ্রেমগুলো এখানে টাঙানো হয়েছে। কিন্তু ছবিগুলো এ রকম কেন! ছবিতে গাছ আছে। […]
-
শেষের আগে
কোর্ট থেকে বেরিয়ে দুজন দুদিকে হাঁটা লাগালো। আর্য একবার মুখ ঘুরালো , বীথি উঠে যাচ্ছে সাদা বাসে। ও এখন চলে যাবে সলপ । আশা করেছিল আর্য একবার যদি তাকায় বীথি। কিন্তু না, বীথি সোজা উঠে গেল বাসে। ভীড় সাঁতরে বেরিয়ে যাচ্ছে বাসটা দক্ষ সাঁতারের মতো। চকিতে মনে পড়ে গেল কোচিংয়ের দিনগুলোর কথা। দুজনেরই মা জেনে […]
-
আজ মহালয়া
তার পদবি কি সে জানে না। তার বাপ কে সে জানেনা ! মায়ের নাম ছিল একটা, লোকে ডাকতো হেমা বলে। ধর্ম কি তাও সে জানে না। মন্দিরে সে যায় ফিরিতে পোসাদ খেতে আর না হয় সুযোগ বুঝে চুরি চামারি করতে, মসজিদে গেলে তাকে ভাগিয়ে দেয় – ‘ভাগ ! তুই তো মুসলমান না !’ বলে। সে […]
-
ওরা দুজন আলাদা মানুষ
যমজ ভাই নয়। দেখতে একই রকম নয়।উচ্চতা এক নয়।একজন বেশ ফরসা, একজনের গায়ের রঙ মাজামাজা।হেয়ার স্টাইলটাই যা খতিয়ে দেখা হয় নি, নচেৎ মনে পড়ছে না।সংশয়াপন্ন। কিন্তু ভুল নেই-একজনের বাস তিলাইয়ায়, অন্যজনের নিউটাউনে।স্বভাবও এক নয়, না, না !এতো দ্রুত সে কথাটা বলতে পারছি না। গোলমাল ঠিক এখানেই। হঠাৎ দেখা গেল দুজনের ভীষণ মিল। এমনকি দুজন না […]
-
রুই মাছের কালিয়া
নিতাই জ্যাঠা সন্ধ্যাবেলা যখন হাঁক পাড়লো “কইগো সব গেলে কোথায়?”, আমরা যত কচিকাঁচার দল ঘর থেকে ছুটে বেরিয়ে এলাম। তার ঠিক একটু আগেই ঝপ করে লোডশেডিং হয়ে চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার, যা সেইসময়ের নিত্য ঘটনা ছিল । মা তখন একহাতে মাথার ঘোমটা আরেকহাতে হ্যারিকেন সামলাতে সামলাতে বেরিয়ে এসেছে, পেছন পেছনে আমরা। দেখি নিতাইজ্যাঠা মাথায় বিরাট ছাতা […]