পুরানো সংখ্যা:

  1. স্নানযাত্রা

    দুম দুম করে পিঠে গোটা কতক কিল বসিয়ে দিল বিধু । তার সঙ্গে তারস্বরে চিৎকার – বার্লি জোটে না দুধ খেতে এসেছে । বেরো বলছি, বেরো, চোখের সামনে থেকে দুর হয়ে যা । দম আটকে যাওয়া কান্নাটা এবার তীক্ষ্ন স্বরে বেরিয়ে এলো ।  আবার মারবে বলে তেড়ে যেতেই দেড় বছরের বড় দিদি মতি দৌড়ে এসে […]

  2. ইনবক্স

    রাত আড়াইটা নাগাদ মোবাইলের স্ক্রিন জ্বলে উঠলো। পাশ ফিরে হাতে নেয়ার চেষ্টা করলাম। অচেনা নম্বর থেকে ম্যাসেজ, এতো রাতে। পড়ার জন্য বারান্দায় চলে যাওয়া দরকার। পাশেই মুন্নী ওপাশ ফিরে শুয়ে আছে। এয়ারকন্ডিশন চলছে ঘরটায়। তবু ঘেমে নেয়ে আছে মুন্নী। ও ভীষণ ক্লান্ত। মুন্নী আমার স্ত্রী। আমাদের বিবাহিত জীবনের প্রায় ছ’বছর আমরা পার করে ফেলেছি। ওর […]

  3. এক-ফালি চাঁদ

    বাইরের অন্ধকার বারান্দায় রেলিংয়ে কপোল ঠেকিয়ে নির্বাক, নিশ্চুপ পাথর হয়ে দাঁড়িয়ে আছে অনন্যা। তার বাষ্প ভরা চোখের কোন থেকে গাল বেয়ে নামছে জমাট বাঁধা কষ্টের ফল্গু ধারা। বারান্দার এদিকটায় রাত্রির এক টুকরো কালো আকাশটাকে খুব ভালো করে দেখা যায়, আর দেখা যায় কাস্তের মতো টানানো এক-ফালি চাঁদ। নীচের ড্রয়িং রুম থেকে বাংলা সিরিয়ালের বিরতির মাঝে […]

  4. রবীন্দ্রগানের পরম্পরায় – ২য় পর্ব

    [রবীন্দ্রসঙ্গীতের জগতে সুপরিচিত নাম সঞ্জয় গঙ্গোপাধ্যায়। রবীন্দ্রনাথের গানের গভীরে ডুবে থাকা মানুষটি এই সঙ্গীতের মধ্যেই খুঁজে পেয়েছেন জীবনের পথ চলার আনন্দ।রবীন্দ্রগানের আলোকমাখা পথ ধরে হাঁটতে গিয়ে তিনি  কিংবদন্তি শিল্পী সুবিনয় রায়কে  শিক্ষক  হিসাবে অনেক কাছ থেকে পেয়েছেন। সান্নিধ্যে এসেছেন রবীন্দ্রগানের স্বরলিপিকার শৈলজারঞ্জন মজুমদারের। আর এই ২০২১-এ সুবিনয় রায়ের জন্মশতবার্ষিকীতে আমরা ঋদ্ধ হয়েছি তাঁর সেই সংগীতময় […]

  5. আধুনিক ওডিসি

    লিও তলস্তয় মহৎ শিল্পের স্বরূপ আলোচনা প্রসঙ্গে বলেছিলেন, তা জ্ঞানী আর সাধারণ মানুষ সবাইকে সমানভাবে পরিতৃপ্ত করতে পারে। তবে তিনি বলেননি, মহৎশিল্পের আরেকটি লক্ষণ এই যে, তার বল্গাহীন অভিযান দেশ আর কালের বেড়াজাল ডিঙিয়ে যায় অনায়াসে। গ্রিকমহাকাব্য ‘ওডিসি’ তেমন মহৎশিল্পের অন্যতম দৃষ্টান্ত। রোমান কবি ভার্জিলের মহাকাব্য ‘ঈনিড’ অন্তরে ওডিসির সুগভীর প্রভাব গ্রহণ করে সম্পদশালী হয়ে […]

  6. সিদ্ধার্থ সান্যালের গল্প সংকলন

                                  সিদ্ধার্থ সান্যালের গল্প সংকলন                    বিংশতি কলকাতা বইমেলা ২০২০– নিউ এজ পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত          সংগ্রহের জন্য যোগাযোগ – আশিস সান্যাল ৯৮১০৩৯২৯৮৪                 […]

  7. ধনকুদরা

    জমির উপর উবু হয়ে বসে এক মনে ধান গাছের চারার মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করছিল বুধু সোরেন। পাতার দু’ধারে বেশ ধার । একটু অসতর্ক হলেই হাত কেটে যেতে পারে ! পাতাটা হঠাৎ ভারী হয়ে যাওয়ায় বুধু বুঝতে পারে ,সে এসে গেছে ! বুধু আলতো করে পাতাটা ছেড়ে দিয়ে মৃদু  হাসে । ধান গাছের চারা দুলতে […]

  8. মা

    ১ ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের হলঘরটার থেকে অনিরুদ্ধ বেরিয়ে আসতেই বিতান আর অচ্যুত প্রায় দৌড়ে গেলো ওর কাছে । দরজার পাশে রাখা  টুলটায় বসে জুতো পরতে পরতে অনিরুদ্ধ যে ইশারা করলো তার অর্থ হয়, এখানে নয় বাইরে গিয়ে সে সব বলছে । আইসিইউয়ের বাইরের এনক্লোজারের কাঁচের দরজাটা ঠেলে বেরিয়ে এসে তিনজনে  হাসপাতালের তিনতলার করিডোর দিয়ে হাঁটতে লাগলো । বিতানের বিহ্বল মুখচোখে রাত্রি জাগার ক্লান্তি আর অজানা […]

  9. দেওয়াল লিখন অথবা অন্য বসন্ত

    যা কিছু ঘটছে, ঘটে চলেছে তা যেন মণি বসাকের বিধবা বউয়ের মতোই সন্দেহজনক। আজকাল সব কিছুই কি সন্দেহের আশ্রয়েই বেড়ে উঠছে। প্রশ্নটা তারাপদকে করতে গিয়ে নিজের জড়তা টের পাচ্ছিল চৈতন্য। এই যে দিব্যি গেল ডিসেম্বরে একটা হাফসার্টে কাটিয়ে দিয়েছে সে – তা কি সন্দেহের বিষয় নয়? কী মাস এটা? মার্চ। ভোরে অনেককেই সে দেখেছে জ্যাকেট […]

  10. নন্দন

    পাড়ায় ঢোকার অনেক আগেই নন্দনের মাথা নিচু হয়ে গেল। অথচ এই ক’দিন আগেও পাড়ায় ঢোকার আগে গলির মুখে যে চায়ের দোকানটা  আছে, সেখানে বন্ধুদের সঙ্গে খানিকক্ষণ আড্ডা দিয়ে কয়েক প্রস্থ‌ চা খেয়ে তার পর বাড়ির দিকে পা বাড়াত। কিন্তু এখন! বিয়ে করাটাই ওর ঝকমারি হয়েছে। পাঁচ মাসও হয়নি বিয়ে করেছে, তার মধ্যেই এই! অষ্টমঙ্গলার গিঁট […]

  11. জীবন নদীর ওপারে

    মধ্য সপ্তকের কোমল নিশাদের মতন ঢেউ খাচ্ছিল সায়ন নদীর জল। তার ওপর ফুরিয়ে আসা দিনের আলো। ঘনিয়ে ওঠা রাতের ছায়া। কয়েকটা জেলে মানুষ নিজেদের ভাঙা নাও মেরামত করতে ব্যস্ত কেবল। আরসব ঘাট খালি করে ফিরে গেছে অনেকক্ষণ হল। অনসূয়া বসে আছে একা। তার যাবার তাড়া নেই। যায়গা আছে কী না কে জানে! সে বসে আছে […]

  12. বাংলা লোকসঙ্গীতের অসাম্প্রদায়িক চরিত্র

    বাংলা লোক সঙ্গীত সংহত সমাজের সৃষ্টি; শুধু সংহত সমাজের সৃষ্টি নয়, সংহত সমাজের জন্য‍ে সৃষ্ট।তাই বিষয়বস্তু নির্বিশেষে আমাদের লোক সঙ্গীত সংহত সমাদের দ্বারা আদৃতও হয়েছে। আমাদের সমাজের অন্তর্গত হলেন মুখ্যতঃ হিন্দু এবং মুসলমান।তাই সংহত সমাজের সৃষ্ট লোক সঙ্গীত হিন্দু এবং মুসলমান ধর্মসম্প্রদায়ের নিজস্ব কিছু কিছু বিষয় স্থান পেয়েছে সত্য; কিন্তু ততোধিক সত্য হল উভয় সম্প্রদায়ই […]

  13. রবীন্দ্রগানের পরম্পরায়

    [রবীন্দ্রসঙ্গীতের জগতে সুপরিচিত নাম সঞ্জয় গঙ্গোপাধ্যায়। রবীন্দ্রনাথের গানের গভীরে ডুবে থাকা মানুষটি এই সঙ্গীতের মধ্যেই খুঁজে পেয়েছেন জীবনের পথ চলার আনন্দ।রবীন্দ্রগানের আলোকমাখা পথ ধরে হাঁটতে গিয়ে তিনি  কিংবদন্তি শিল্পী সুবিনয় রায়কে  শিক্ষক  হিসাবে অনেক কাছ থেকে পেয়েছেন। সান্নিধ্যে এসেছেন রবীন্দ্রগানের স্বরলিপিকার শৈলজারঞ্জন মজুমদারের। আর এই ২০২১-এ সুবিনয় রায়ের জন্মশতবার্ষিকীতে আমরা ঋদ্ধ হয়েছি তাঁর সেই সংগীতময় […]

  14. স্রোতের উল্টো দিকে হাঁটতেন তিনি

    [অমিয়ভূষণ মজুমদার যত বড়মাপের কথাশিল্পী,ঠিক ততখানিই অবহেলিত বলে অভিযোগ।অমিয়ভূষণ মজুমদার ছিলেন আদ্যপ্রান্ত উত্তরবঙ্গের মানুষ।সারাজীবন লিটল ম্যাগাজিনে লিখে যাওয়া বাংলা সাহিত্যের এই রত্ন সাহিত্যের টানে কখনও স্বভূমিচ্যুত হননি।ধারাবাহিক অবহেলার শিকার এই সাহিত্যিককে নিয়েই লিখেছেন আর এক সাহিত্যিক কিন্নর রায়।পূর্ব প্রকাশিত এই লেখাটি সংগ্রহ করে ফের প্রকাশ করল ‘গল্পের সময়’]   নিজের গদ্যভঙ্গি, শব্দচয়ন, বিষয় নির্বাচনে অমিয়ভূষণ […]

  15. ভারতীয় সাহিত্যঃ ভাষা-বন্ধন

    ভারতবর্ষের নানা ভাষার আধুনিক সাহিত্য গড়ে উঠেছে বিদেশী ও বিভাষী ইংরেজের রাজত্বকালে। সে রাজত্বের দু-দশ বছর ভারতবর্ষের ইতিহাসে অতি আধুনিক কাল। কিন্তু এই কালসাম্যই সে সাহিত্য ও রাজত্বের একমাত্র যোগ নয়। ইংরেজ রাজত্বের আনুষঙ্গিক রাজভাষা ইংরেজির প্রচারেতার মাধ্যমে ভারতবাসীর পরিচয় হল আধুনিক ইউরোপের জ্ঞান ও চিন্তা, সাহিত্য ও ভাবের সঙ্গে। এ আধুনিক ইউরোপকে ইউরোপীয়ের বলে […]

  16. হাঁদা,ভোঁদা ও নন্টে,ফন্টে/ফিরে দেখা

    যারা বই পড়তে ভালোবাসে, বইয়ের অনেক চরিত্রই তাদের কাছে রক্তমাংসের মানুষ হয়ে ওঠে। রাস্তায় চলার পথে অনেককে দেখলেই মনে হয় – ” দ্যাখ, একদম অমুক চরিত্রের মত ” ; কিংবা কাউকে উপহাস করে আমরা বলি – ” এই হাঁদা শোন ” বা ” হাঁদা নাকি! মাথায় গোবর পোরা আছে? ” আবার কেউ মোটা হলেই পাড়ায় […]

  17. ফুল ফোটার সময়

    বেশ কিছুদিন হলো টের পাচ্ছি আবহাওয়ার পরিবর্তন। বাতাস দিক পরিবর্তন করতে শুরু করেছে। উত্তরের পরিবর্তে দক্ষিণ থেকে আসছে মনকেমন করা বাতাস। তাহলে কি শীত গিয়ে বসন্তের আগমন ঘটতে শুরু করেছে । হয়তো তাই হবে। শিমুল পলাশের শাখা – প্রশাখায় কুঁড়ি আসতে শুরু করেছে। গাছে গাছে আমের মুকুলে মৌমাছিদের আনাগোনা শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে কোকিলের কুহু […]

  18. সহজ টানাপোড়েন

    (১) ডক্টর কেভিন সব রিপোর্টগুলো জড়ো করে বললেন, “সারোগেসি করাতে পারেন কিন্তু এখনই করাবেন কিনা সেটা আপনাদের ওপর।” কলেজের প্রথম দেখায় প্রেম এবং তারপর দুই পরিবারের সম্মতিতে,দশ বছর আগে,বিয়ে হয় অভিরুপ আর শ্রাবস্তীর।বন্ধুরা ঠাট্টা করে বলতো, “একটু ট্র্যাজেডি না থাকলে প্রেমকাহিনী ঠিক জমে না বুঝলি”। কলেজ জীবনের চারবছর অগুন্তি প্রেমের প্রস্তাব পায় ওরা দুজনেই।কিন্তু শ্রাবস্তীর […]

  19. মাঘ ফাগুনের গল্প

    (১) আজ তিরিশে। তিরিশে জানুয়ারি।আসছে মাসের  চোদ্দই ভ্যালেন্টাইন ডে। সেই সুবাদেই সাত তারিখের মধ্যে একটা প্রেমের গল্প জমা দিতে হবে। আজই চোখে পড়ল বিজ্ঞপ্তি। এর মধ্যে তিন তারিখ আমাকে দেখতে আসবে। সেটা অবশ্য নতুন কথা নয়। রবিবারের কাগজ দেখে মা পাত্রী চাই এর ছোট বিজ্ঞাপনগুলো দাগিয়ে রাখে প্রথমে। তারপর মোটা আট নম্বর খাতায় ফোন নম্বরগুলো টুকে রাখে। এক একটা নম্বর লিখে মাঝে খানিকটা করে জায়গা ছেড়ে রাখে। শেষে একটার পর একটা নম্বরে ফোন। মা’র উৎসাহে একটু কি ঘাটতি পড়ছে সম্প্রতি? দুটো ফোন নম্বরের মধ্যে রাখা জায়গা কমছে। আগে ছিল একটা পুরোন ডায়রি, এল. আই . সি.’র। শেষ হতে চার নম্বর রুলটানা খাতা। এখন আট নম্বর সাদা খাতা। সাদা পাতায় লেখা অভ্যেস নেই তেমন মা’র। লাইন বেঁকে যায়। পাতার শেষ দিকে পৌঁছে নম্বরের সঙ্গে লেখার মিল থাকেনা। ফোন করে বেইজ্জতিও হয়ে যায়।  তার আগে শুক্রবার থেকে তাগাদা মেরে দাদাকে দিয়ে ফোনে পয়সা ভরায়। মা স্নানে যায় যখন, মঝেমাঝে আমি ছেলেদের ছবিগুলো লুকিয়ে দেখি। এসব লুকোচুরির দরকার ছিলনা আগে। আমি, দাদা, মা সকলে মিলে হুমড়ি খেয়ে ছবি দেখতাম। হাসাহাসি। কেউ টেকো তো কেউ মোটু। বুড়োটে বা অসভ্য টাইপ। এখন আর কাউকেই বাতিল করা হয়না। আর মা ছবি লুকিয়ে রাখে। প্রথমেই সাত পাঁচ ভেবে নিয়ে পরে কান্নাকাটি, মন খারাপ। – আগে কথাবার্তা এগোক খানিক, তারপর ছবি টবি। চুপচাপ মেনে নিই। আর সুযোগমতো টুক করে দেখে নিই। তবে কোন  তাবনাকে ঘেঁষতে দিই না মনের চৌহদ্দিতে। এবার বেশ অনেকদিন পর দেখতে আসা অব্দি এগোল। করোনা, ভাদ্র মাস হ্যানাত্যানা। তবে এসব ভাবের ঘরে চুরি। বয়স বাড়ছে, মুখে তার ছাপ পড়ছে। যতই কায়দা করে ছবি তুলে দিক দাদা পাত্রপক্ষ ভোলেনা। বলেই দেয় মুখের ওপর, আরএকটু স্পষ্ট ছবি পাঠান, অথবা কেউ বলে আরও দুচারটে ছবি, ঘরের বাইরে, ন্যাচারাল ছবি নেই? ছবি পছন্দ হল যদি তখন স্কুল, কলেজ, অনার্স না পাস কোর্স, মাস্টার্স  করেনি ? গান জানা টানা, সেলাইফোঁড়াই,হাতের কাজ, যেমন মা বলে তখনকার সময়ে ছিল, এখন আর তা নিয়ে অত কেউ মাথা ঘামায় না। এর পর চাকরি। চাকরি শুধু করলে হবেনা, যখন খুশি ছাড়ব কিনা। এটাতে মাস্টার স্ট্রোক হাঁকাতে পারে মা। – ওর চাকরি নিয়ে কোন প্রবলেম হবেনা দিদি। ইচ্ছে হলে ঘরে বসেও…..। এই করোনার সময়ে তো পুরো ঘরে কম্পিউটারেই কাজ করে যাচ্ছে। কোন অফিস? – প্রাইভেট কোম্পানি। এর পর প্রসঙ্গান্তরে যাবার জন্যে মা সামান্য তাড়াহুড়োয়। সোজা একটা উপায় শিখিয়ে দিয়েছি আমিই। – পরীক্ষা টরীক্ষা তো দিচ্ছে। বেটার পেলেই … আজকাল আর বুক ধুকপুকটুকুও করেনা। মা আর দাদাটার জন্যেই কষ্ট হয়। জানি মুখে যাই বলুক, প্রত্যেকবার একটা আশায় কেমন অধীর হয়ে থাকে।শুধু ওদের কথা ভেবেই আপ্রাণ চেষ্টা করি একটা পণ্যের মতো সত্যি মিথ্যে মেশান বিজ্ঞাপন দিয়ে  ক্রেতার  মন জিতে নিতে। দাদা বরাবর কুল থাকে। এবারই দেখছি বড্ড ছটফট করছে। (২) যা বলছিলাম, তিরিশ থেকে সাত। এই সাতটা দিন, না আট দিন। জানুয়ারিতে একতিরিশ দিন বলে বাড়তি আরেকটা দিন। ম্যাডাম বলে দিয়েছেন, এই এক  সপ্তাহ তোমাকে সময় দিলাম তনু। স্যার বলছিলেন এক তারিখেই তোমার হাতে চিঠি ধরাতে। আমি বলে কয়ে সাতটা দিন চেয়ে নিয়েছি। বরাবরই আমি ম্যাডামের  এই বাড়তি স্নেহটুকু বুঝতে পারি। তনুশ্রী থেকে কদিনের মধ্যেই তনু হয়ে গেছি বলে শুধু নয়। গম্ভীর হয়ে থাকলে তুমি , নাহলে তুই হয়ে গেছি সেই কবেই। টি. এ. বিল টিল… ঝামেলা হয়নি কখনই, যেমন রাকেশ কি বাণীদিদের । – ভীড় বাসে টাসে উঠতে যেওনা। টোটো কি অটো করে নিও। আমি থ্রু করিয়ে দেব। তবে আমি বাড়তি সুযোগ নিই নি কখনও এর চেয়ে বেশি। সেরকম হলে তো অ্যাপ ক্যাবের ভাড়াও চেয়ে বসতাম। কিন্তু পরিস্থিতি এখন ঘোরালো হয়ে উঠছে। কোভিডের জন্যে বাজার ডাউন। অনেককেই বসিয়ে দিয়েছে। – একটা কিছু করে দেখা এবার তনু। প্রীতি, মিলনী স্যারের কাছে এসে তোর কথা তুলে ঝামেলা করে গেছে। একটা ক্লায়েন্টও দিতে পারিসনি ….. ছ`মাসের জায়গায় সাড়ে ন`মাস গড়িয়ে গেল। শুধু আমার কথায় তোকে কাগজ ধরায়নি। – বিয়ে হয়ে বাচ্চা ভি পয়দা হবার টাইম পার হয়ে গেল, তনুশ্রী তো এনগেজমেন্ট তকই পৌঁছল না। ঢপ মেরে যাচ্ছি তোর হয়ে এটা ওটা। ওরই লাকটা খারাপ প্রদীপদা। একটা তো প্রায় ফাইনাল হয়ে গেল তখন ছেলের জেঠু করোনায় গেল। তোর ঐ ফরেনের কেসটার কথা জিগ্যেস করছিল। বলে দিলাম ফ্লাইট চালু হলেই ওটা ধরে নেবে তনু। প্রায় ফাইনাল। চোদ্দই ভ্যালেন্টাইন। সাত তারিখের মধ্যে ফাইনাল করতে হবে। একটা একটা করে দিন চলে যাচ্ছে । প্রেসার বাড়ছে,ঘাড়ের কাছে  কন্টিনিউয়াস দপদপানি, […]

  20. পুকুর

    বাঃ, পুকুরের জলটা তো তেমনিই টলটলে আছে! ঠিক যেন আয়না। টিফিনে ঐ জলে আমরা  মুখ দেখে চুল ঠিক করে নিতাম।  ওপাড়ের তালসারিতে কত বাবুই পাখির বাসা ছিল। যাঃ, বাবুইগুলো কোথায় গেল, তালসারিটা তো একইরকম আছে। ও পাশের ঐ রাধাচূড়া গাছটাও তেমনিই ঝুঁকে দাঁড়িয়ে আছে। হলুদ ফুলে ছেয়ে থাকত গাছটা। ঝরা ফুলে পুকুরের জলটাও হলুদ হয়ে […]

  21. অমৃতরস

    “দিন রজনী কত অমৃতরস…” পরিচিত ধীর পায়ের চলনে নীলাদ্রির গুনগুনানিতে ছেদ পড়ে। শব্দটা যেন ইতস্তত করেও শেষমেশ ওর পিঠ ঘেঁষে দাঁড়ালো,আস…..আসবো? – এসেই তো পড়েছো। ঘাড় না ফিরিয়েই জবাব দেয় নীলাদ্রি। – দাদা। আগন্তুকের স্বরটা কেমন কাঁদো কাঁদো ঠেকলো।। এবার খানিকটা বাধ্য হয়েই নীলাদ্রিকে মুখ ফেরাতে হলো…. না এতো তার পরিচিত কেউ নয়। দরজার সামনে […]

  22. তৃষিতকাল

    আমি যদি কোন চিত্রকর হতাম তাহলে পটে তার ছবি আঁকতাম। তারপর সে ছবি হয়তো ফেসবুকে আপলোড করে,পত্রিকার পাতায় ছাপিয়ে কিংবা পোস্টার বানিয়ে দেয়ালে দেয়ালে সাটিয়ে দিয়ে সবাইকে জানিয়ে দিতাম- এই সেই মেয়ে, এই সেই মেয়ে যাকে আমি খুঁজছি। যদি আমি আত্রেয়ি তীরের মৃৎশিল্পী শ্যামাঙ্গের মতো হতাম, তাহলে তার পুত্তলি বানিয়ে লগে নিয়ে ঘুরতাম আর লোকজনকে […]

  23. যে গল্পটা লেখা হলনা

    নাছোড়বান্দা মেয়েটা প্রায়ই বলে কথাটা। —  একটা কিছু করুন স্যার —  কী করবো বল্ ? আমি বললেই কি শুনবে ?    তাছাড়া আমি তো তাকে চিনিনা , দেখিইনি    কখনো। —  শুনবে , ঠিক শুনবে । আপনার কথা ফেলতে    পারবেনা। যদি আপত্তি না থাকে তাহলে    আপনার কাছে একদিন নিয়ে আসবো ? এইরকম কথোপকথন […]

  24. কখন তোমার আসবে টেলিফোন

    -হ্যালো – -হ্যাঁ- বল…। – ফোন করনি কেন ? -আমিতো ভাবছিলাম তুমি করবে । -আগের দিন আমি করেছিলাম, এবার তো তোমার করার কথা ছিল । -তাই- না ? আমার একদম মনে ছিল না যে এবার আমার পালা । তবে ফোন করার আবার পালাপালি কিসের ? -তুমি  সেই একই রকম আছ । । পাঁচটায় আসার কথা, […]

  25. একটি প্রেমের গল্প

    ১ পার্কে ঢোকবার ঘোরানো গেটটার দিকে একনাগাড়ে তাকিয়ে তাকিয়ে অপরাজিতার চোখে প্রায় ব্যথা হওয়ার জোগাড় । এদিকে ওর ভীষণ দেরী হয়ে যাচ্ছে, সূর্য্য ধীরে ধীরে ঢলে পড়ছে পশ্চিমে । একে তো  বিকেলবেলায় এই পার্কটায় এসে মানসদার সঙ্গে দেখা করায় বেশ রিস্ক আছে । একটু দূরে মোড়ের মাথায় বাড়িটার তিনতলার একটা ফ্ল্যাটে মেজোমাসী থাকে । কাজে অকাজে এই বিকেলে মেজোমাসী বেরিয়ে এসে […]

  26. খোয়াই

    তুমি অঞ্জলি ভরে আমাকে দিয়েছ ক্ষয় আমি গ্রহন করেছি ক্ষয়েছি একটু একটু করে… দেখো শিলাবতী নদীতীরে ক্ষয়ে ক্ষয়ে রাঙা ফুল হয়ে ফুটে আছি… শিলাবতী নদী। সেদিন সুশান্ত অত করে না বললে হয়তো পরিচয় হোত না নদীটির সঙ্গে । আমার তখন পূর্ণ যৌবন, চোখে সানগ্লাস। যা দেখি তাতেই ভালোলাগার রঙ। মেদিনীপুরের গড়বেতায় আমাদের প্রতি শনিবার বসতো চক্ষুশিবির । আমি বাঁকুড়া মেডিকেল থেকে আসতাম। দুপুর থেকে […]

  27. আলোক শিখা

    মঞ্জু অনেকক্ষণ ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে। ভোর থেকে বিছানা ছেড়ে ঘরের কাজকর্ম কোনমতে কিছুটা শেষ করে এসে দাঁড়িয়েছে লাইনে। তার সামনে অনেকে লাইনে দাঁড়িয়েছে। কলকাতা থেকে নামকরা ডাক্তারবাবুরা আসবেন তাদের গাঁয়ের স্বাস্হ্য শিবিরে। গাঁ বলতে ছিটমহল। চলমেঘা। বাংলাদেশের গা ঘেঁসা বর্ডারে। জমিদারি দখলটা বাংলাদেশের। তবে ভারতীয় আইনযুক্ত সুযোগ-সুবিধেগুলো পায় তাদের গাঁয়ের লোকেরা। লোকজন বলতে মেরেকেটে দুশোর […]

  28. মনের মানুষটা

    অর্পির আজ মনটা ভীষণ খারাপ। ভেবেছিল আজ ওর একত্রিশতম জন্মদিনে শুভম অন্যন্য বারের মত ওকে বিছানায় থাকতেই ভোরবেলা ‘হ্যাপি বার্থ ডে’ বলে উইশ করবে। কিন্তু বিছানায় তো দুরের কথা, অফিস যাবার আগে বাড়িতে বা অফিস গিয়েও যে কমপক্ষে ফোনে উইশ করবে, সারাদিনে তার কোন লক্ষনই নেই। অর্পি, মানে অর্পিতাকে, যাকে শুভমই বিয়ের পর থেকেই আদর […]

  29. ধর্ষিতা

    ফোনটা দুবার বেজে থেমে গেল। ঋষিতা ফোনের সামনে বসেছিল। সে ইচ্ছে করে রিসিভ করেনি।  যত সব বাজে ফোন।  কাকে দিচ্ছি , বয়স কত ,কত দেবেন – এরকম হাজার প্রশ্ন । একজন তো বলেই ফেলল ,না হয় দিলাম । আপনার উপকার হলো। তাহলে ও তো অর্থ দিয়ে দায়মুক্ত হতে পারবেন না। শুধু অর্থ দিয়ে কি অমূল্যধন […]

যোগাযোগ


email:galpersamay@gmail.com

Your message has been sent. Thank you!

গল্পের সময় পরিবার
সমীর
অগ্নীশ্বর
দেবাশিস
চিন্ময়
পার্থ
মিতালি
জাগরণ
দেবব্রত

© 2016 - 2024 গল্পের সময়। ডিজাইন করেছেন অগ্নীশ্বর। নামাঙ্কন করেছেন পার্থ