গল্প পড়ুন
এই মুহুর্তে বাংলা ভাষায় লেখালিখি করেছেন এমন গল্পকারের সংখ্যা কত? সত্যি বলতে কী ‘গল্পের সময়’ তা জানে না। কয়েকজন ব্যাক্তি ও কয়েকটি সংস্থা উদ্যোগ নিয়ে দুই বাংলায় লেখক-কবি-সাহিত্যিকদের নথিভুক্তকরনের উদ্যোগ নিয়েছেন। কিন্তু তা কোনও ভাবেই সম্পূর্ন নয় বা হওয়া সম্ভব নয়। কারন প্রতিনিয়তই লেখালিখির জগতে আসছেন বহু মানুষ। ইন্টারনেটে বাংলা গল্পের ম্যাগাজিন করতে গিয়ে আমরা লক্ষ্য করেছি অনেক লেখকই এখনও কম্পিউটার এড়িয়ে চলেন। কাগজ-কলমেই তাঁরা স্বচ্ছন্দ। চিরাচরিত ছাপা ম্যাগাজিন, লিটল ম্যাগ, শারদসংখ্যা বা সংবাদপত্রের সাময়িকীতেই তাঁরা লেখালিখি করেন। অন্যদিকে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কম্পিউটার ও ইন্টারনেটে স্বচ্ছন্দ একদল লেখককুল রয়েছেন। তারা ফেসবুকে পোস্ট করছেন, ব্লগ বানাচ্ছেন, ই-ম্যাগাজিনেও লিখছেন। ‘গল্পের সময়’ এই দুই পক্ষকেই চায়। নবীন ও প্রবীন গল্পকারদের গল্প পড়ুন এই পাতায়।
-
রূপ কথা
টেবিলে মাথা ঠেকিয়ে বসে আছে রূপ। বড়ো সাধের টেবিল ওর। বিছানায় ছড়ানো আছে কিছু শাড়ি আর রাশিকৃত গয়না। মাটির,, পুঁতির,টেরাকোটার ,আরো কত যে রকমের .. সব গহনা ওর দেওয়া ও বলতে শুভ কাকুর। খুব সৌখিন মানুষ । আলাপ হয়েছিল বেড়াতে গিয়ে শিলং পাহাড়ে।এমনিতেই শিলং পাহাড়ের সাথে সেই যে রবীন্দ্রনাথ অমিত আর লাবণ্যের রোমান্টিকতা যোগ করে […]
-
রাজবাড়িতে নুপুরের শব্দ
ক্রিং….ক্রিং… ক্রিং টেলিফোনটা বেজে উঠতেই মাথার কাছে রাখা টেলিফোনটা ঘুম জড়ানো চোখে হাতে নিয়ে বলে উঠলেন ডা. ধনঞ্জয় দত্ত… হ্যালো… কে বলছেন? ডাক্তারবাবু! আমি বিদ্যুৎ, রাজবাড়ির কেয়ার বলছি, এত রাতে আপনার ঘুমের বিঘ্ন ঘটানোর জন্যে আমি দুঃখিত। নিরূপায় হয়ে আপনাকে ফোন করছি। কেন কি হল? আমাদের রাজবাড়িতে কয়েকদিন আগে জমিদারবাবুর মেয়ের এক বান্ধবী এসেছিলেন নেদারল্যান্ড […]
-
বাকি দু’আনা
১ “মাআআআছ….মাআআআছ লাগবে…ভাল মাআআআছ…জ্যান্ত ইলিশ আছে, পাকা রুই আছে, কথা বলা কাতলা আছে….মাআআআছ লাগবে…মাআআআছ।” শহরাঞ্চলে কিছু কম…কিন্তু গ্রাম বাংলায় মনসা পুজোর প্রচলন খুবই। সেই উপলক্ষেই আজ বিশ্বকর্মা পুজোর আগের দিনের রান্নাপুজো। ভাদ্র মাসের অরন্ধন। বাড়ির সবাইকে নিয়ে সারা রাত ধরে নানারকম রান্না। পরদিন মা মনসাকে নিবেদন করে প্রসাদী খাওয়াদাওয়া। এর পর যা কিছু উৎসব, সবটাই […]
-
গিরিডিতে ফেলুদা
।। ১ ।। গ্রেট ম্যাজেস্টিক সার্কাসে কারান্ডিকারের বাঘের খেলা দেখে বেরিয়ে ফিরতে ফিরতে ফেলুদা জটায়ুকে বলল- আপনার কি কলকাতায় ফেরার খুব তাড়া আছে? লালমোহনবাবু প্রায় অন্ধকার রাস্তায় খানাখন্দ বাঁচিয়ে হাঁটতে হাঁটতে তখন নিচুস্বরে ‘আজ ধানের ক্ষেতে রৌদ্র ছায়ায়’ গানটা গুনগুন করছিলেন। ফেলুদার প্রশ্নে […]
-
মেঘ-মুক্তি
আজকাল সব সময় লিখতে ভালো লাগেনা বৈভব সেনের।আগে লেখার আনন্দে লিখতেন। এখন যেন লেখাটাও ধরাবাঁধা কাজের পর্যায়ে চলে গেছে। সব সময় যন্ত্রের মতো কাজ করায় তাঁকে। অনেকে প্রশংসা করলেও, নিজের ক্ষমতা সম্পর্কে মাঝে মাঝে সংশয় জাগে মনে! বৈভব লক্ষ্য করেছেন বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সকলেই প্রায় ধরাবাঁধা চাকরী, বাড়ি, ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স নিয়ে নিশ্চিন্ত জীবন কাটাতে […]
-
মুখোশ
মেয়ের সামনে মাধ্যমিক। সারাজীবন অন্য বাবাদের গালাগাল করে এসে এখন আমি সেই রকম মেয়ের বাবা যাদের আমি গালাগাল করতাম। এগারোজন প্রাইভেট টিচার। আমার আর তার মায়ের কাছে প্রাইভেট টিচারের রুটিন আছে। বাংলার দুজন টিচার একজন ব্যাকরণ বিশারদ অন্য জন সাহিত্য। সকালে উঠেই আমাদের কাজ মেয়েকে তার রুটিন বুঝিয়ে দেওয়া। বিকেলে পরপর দুটো টিউশন থাকে। বাড়ি […]
-
নেগেটিভ
নীহার ভৌমিকের বয়স প্রায় পঞ্চাশ, ডিভোর্সী। নীহারবাবুর চোখে চশমা, মুখে স্মিত হাসি, চোখের দৃষ্টি মোলায়েম কিন্তু প্রখর। ঝকঝকে স্মার্ট ব্যক্তিত্ব, পয়সা একটু বেশী-ই আছে। নেই যেটা সেটা হচ্ছে চারিত্রিক শুদ্ধতা। বিভিন্ন রকম দোষ আছে তার। তবে কারো ক্ষতি তিনি করেন না, জোর-জবরদস্তিও না। লোকটার সবচেয়ে বড় গুণ বা দোষ হচ্ছে, যে পরিবেশে বা যে সঙ্গে […]
-
সুরের আকাশে
বিয়ের বাজারে ময়ূখ মিত্রকে অবহেলা করবে এমন বুকের পাটা কোনো মেয়ের বাপেরই হবে না। কথাটা আলোকপর্ণা ভালোভাবেই জানেন। তাই দেখাশোনার সময় নিঃসংকোচে বলেই ফেললেন- আপনাদের মেয়ের আমাদের বাড়িতে কোন অসুবিধাই হবে না । ময়ূখ আমার একমাত্র ছেলে , দিশা বৌমা নয় মেয়ের মত থাকবে। ছেলে যদিও চাকরি নিয়ে খুব ব্যাস্ত , কত নামকরা এমএনসি ওদের ,তার […]
-
একটি শরৎকালের রাত
শরৎকালের একরাতে আমাকে একবার এক অস্বস্তিকর কষ্টের সম্মুখীন হতে হয়েছিল। শহরের কাউকেই আমি চিনি না, আর পকেটে একটা পয়সাও ছিলো না যে কোনো হোটেলে গিয়ে উঠব। ঘড়ি, আংটি, কলম যা ছিল সব একে একে বেচে দিলাম , যাতে কথা দিন অন্তত চলে। তারপর একেবারে কপর্দক শূন্য অবস্থায় “ইয়েস্তে” নামক বন্দরে গিয়ে হাজির হলাম। সিজনে জায়গাটা […]
-
দিল্লিতে একটি মৃত্যু
চারপাশে কুয়াশা। এখন সকাল ন’টা তবু সমস্ত দিল্লি ঘন কুয়াশায় আচ্ছাদিত । রাস্তাঘাট, গাছপালা সব ভেজা। কিছুই ঠিকমতো চোখে পড়ে না । নানা ধরনের শব্দই এখন জীবনের স্পন্দনের প্রমাণ দিচ্ছে। বিল্ডিং এর চারপাশ থেকে প্রতিদিনের মতো আওয়াজ আসছে । বাসওয়ানির চাকরটা রোজকার মত স্টোভ ধরিয়েছে – দেওয়ালের ওপাশ থেকে তারই সাড়া শব্দ পাচ্ছি । পাশের […]
-
গল্প হলো কি না
হাত জোড় করা মানুষ। ওরা,অরা। কারো কাছে ‘এই আমরা”।কথায় কথায় মুখখানি ভীষণ- গলার সামনে হাত জড়ো মুদ্রা।মুখ ভীষণ হবার অন্য কারণ-কম্পিউটারে একইরকম মূর্তি সার বেঁধে চলছে। লোকের দরজায় কড়া নাড়ছে। আকাশ এখন সিসি টিভি। লোককে কিছু বা বলছে। কৌতুক করছে! না উপহাস। ওদের মধ্যে আমি ছিলাম। ক্ষমা চেয়েছিলাম হয়তো চেনা মানুষের কাছে। অচেনা […]
-
বৈকালী
প্রতি বছর নভেম্বর মাসে পেনশনভোগীদের একটা অসম্মানজনক প্রথার মধ্যে দিয়ে যেতে হয় । ব্যাংকে উপস্থিত হয়ে বেঁচে থাকার প্রমাণ দিতে হয় । বয়স্ক পেনশনাররা, কেউ কেউ রীতিমত বৃদ্ধ, অসুস্থ বা অথর্ব, ব্যাংকে এসে লাইন দিয়ে ডেস্ক ক্লার্ককে মুখ দেখিয়ে যান । ব্যাপারটা সকলেরই খারাপ লাগে, কিন্তু সকলেই বোঝে, এটা একটা আনএ্যাভয়েডেবল ন্যুইসেন্স । আজকাল অবশ্য […]
-
আলেকজান্দার আর একটি কাক
সামান্য মানুষের মতো জ্বরে কাবু হয়ে পড়লে সম্রাট আলেকজান্দারের মহত্ব রইল কোথায়? প্রশ্নটা নিয়ে বেশি চিন্তাভাবনার সাহস না হওয়ায় শুয়ে শুয়েই তিনি অষ্টধাতুর ঘন্টা বাজান । মুহূর্তের মধ্যে এক গ্রিক সৈন্য এসে হাজির। বর্ম আর শিরস্ত্রাণে আচ্ছাদিত সৈন্যেটির ডান হাতে তরোয়াল, বাঁ হাতে বল্লম। তিনবার কুর্নিশ করে সে আদেশের অপেক্ষায় থাকে। রুগ্ন আলেকজান্দার চোখ খুলে […]
-
দা-আ-স্তানগো
১ ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ থেকেই সন্ধ্যের মুখে মুখে জালালাবাদের ওপর দিয়ে বয়ে আসা পানশিরের ঠাণ্ডা হাওয়ার ভূমিকাটা নিয়ে নেয় মরু অঞ্চলের শুকনো ধুলোর ঝড় । কিছু সময়ের জন্য শহরময় বইতে থাকে হালকা গরম হাওয়া । তখন পেশাওয়রের সব বাড়ির জানলা দরজা বন্ধ হয়ে যায়, দোকানগুলো সামনের ঝাঁপটা ফেলে রাখে আর ছাতের ওপরে ক্ষারে কেচে শুকোতে […]
-
পেশাদারিত্ব
মিলন আমার বন্ধু। পেশায় সাংবাদিক। আমরা এক শহরেই থাকি। আমাদের দুজনের মধ্যে শুধু চারটে রেললাইনের তফাৎ। এ যেন অনেকটা পুব দিকে তুমি আর পশ্চিমে আমি। মাঝখানে রেলগাড়ি ছুটে চলে যায় । আমার চেয়ে মিলন দু-তিন বছরের বড় হলেও , আমি তাকে নাম ধরেই ডাকি। আবার আমি যাদের দাদা বলে ডাকি ও তাদের নাম ধরেই ডাকে […]
-
ইচ্ছে হয়ে ছিলি
মানুষের জীবনে অবসর কি কাঙ্ক্ষিত? যখন মানুষ কাজের মধ্যে থাকে, উদয়াস্ত পরিশ্রম করে সংসার প্রতিপালন করে, সন্তানদের মানুষ করে তাদের জীবনে প্রতিষ্ঠিত করে তখন কখনো কখনো মনে হয় বটে, ‘কবে যে অবসর পাবো’! তারপর একদিন গুটি গুটি এসে যায় অবসরের দিন। মনে হয়, “আঃ বাঁচা গেল, এবার একটু আরাম করব”। সত্যিই আরাম করার দিন এখন […]
-
খেলা হবে
লেখাটা পড়েছেন? বেরিয়ে গেছে লেখাটা কিন্তু।খুব নরম গলায় কানের কাছে মুখ নিয়ে কথাটা বললেন গল্পের আড্ডা অনলাইন পত্রিকার ছটফটে সম্পাদক তোর্সা দত্ত। না গো । আমি ওইসব মোবাইল ব্যাবহার জানি না গো- এই পঁচাশি বছর বয়সে ওসব আর শিখতেও চাই না। তুমি বললে এইটাই জানা হলো। তুমি বরং একটা কাগজে তোমাদের নম্বর , আর অন্যান্য […]
-
কুঁটিকাটা
বিবর্ণ ঘষা কাঁচের দেওয়াল পেরিয়ে যে’টুকু চোখে এসে পড়ে, সে’টুকুই দেখেন। জলের পর্দা চুঁইয়ে যে’টুকু কানের পর্দায় ধাক্কা দেয়, সে’টুকুই শোনেন। গন্ধগুলো ইদানীং যদিও কেমন বাউন্ডুলে, তবু মাংস রান্না হ’লে ঠিক বুঝতে পারেন। মাংসের স্বাদ আর আগের মত না থাকলেও পোস্ত ছড়ানো পুনকোশাক ভাজা, তারপর আলু-বড়ির পোস্ত, আর তারপর পাতে একটু মাংস পড়লে চোখ চকচক […]
-
মায়ের মাদুলি ও নবজীবনের শেকল
প্রচন্ড স্রোতে নদীতীর ভেঙ্গে কপালকুন্ডলা ডুবে গেলেন।নবকুমার নদীর জলে লাফ দিলেন। কিন্তু অনেক খোঁজাখুঁজি করে নবকুমার, কপালকুন্ডলাকে পেলেন না। স্রোতের তোড়ে দুটি দেহ দুদিকে ভেসে গেলো। তারপর নবকুমার কাটোয়া ঘাটে একটা বাঁশের ধাক্কায় অচৈতন্য হয়ে পরে রইলো।আর কপাল কুন্ডলা কুন্তিঘাটে নদীতীরে পাথরের ধাক্কায় অচৈতন্য হয়ে পড়ে রইলো। কাটোয়া ঘাটে মনা বায়েন স্নান করতে এসে দেখলো, […]
-
নিভৃত সংলাপ
অতসীপিসী আমার দূরসম্পর্কের পিসীমা ছিলেন। তাঁর ছোটভাইয়ের সংসারে তিনি প্রায় গোটা জীবনটাই কাটিয়েছিলেন । তাঁকে কোনোরকম অশ্রদ্ধা বা অসন্মান করার ক্ষমতা কারো ছিলনা। এই উচ্চাসন তিনি নিজের যোগ্যতায় অর্জন করেছিলেন। প্রখর ব্যক্তিত্বময়ী মৃদুভাষী এই মানুষটি আমার মাকে ভীষণ ভালোবাসতেন ।আমার মায়ের থেকে বয়সে অনেকটা বড়ো হলেও নিজের মনের সব কথা বলতেন। নব্বই বছর পেরিয়ে যখন […]
-
পরশুরাম ও অন্য গল্প
পরশুরাম সন্ধে থেকে ক্রমাগত গুঁড়ো গুঁড়ো বরফের বৃষ্টিতে চারিদিক সাদা হয়ে এসেছে । এখন বোধহয় রাত দশটা হবে। ডিসেম্বরের শীতের রাত, ঘোলাটে আলোয় আলোকিত রাস্তা নিঝুম । কিছুক্ষণ আগেই পলাশ ঘটনাটা ঘটিয়ে ফেলেছে। এমন নয় যে হঠাৎ উত্তেজনার বশে এমন কাজটা ও করে ফেললো । বরং উলটোটাই সত্যি। মাসের পর মাস পরম প্রিয়জনের রোগশয্যার পাশে […]
-
বিনোদন
সবে স্কুলের গণ্ডী পেরিয়েছি । সত্তর দশকের প্রথম ভাগ । বঙ্গে তখনও দূরদর্শনের পদার্পণ ঘটেনি । রেডিও ছিল অনেক বাড়িতে । সাত পড়ুয়ার পাঠে বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কায় রাহা বাড়িতে রেডিও স্থান পায়নি । সেই একান্নবর্তী বাড়ির দুই ক্ষুদেকে প্রাইভেট পড়াবার দায়িত্ব পেলাম আমি। ছাত্রদের পরিবারে ছিল তিন ভাই আর বাল্যবিধবা তাদের বড়দি। সঙ্গে তো ছিলই […]
-
মাঝরাতে রাজপথে
বলাকা বলেছিল “বন্ধুর বিয়ে, অনেকটা দূর। পৌঁছে দেবে? ফেরার সময় আসতে হবে না, বন্ধুদের সঙ্গে চলে আসব।“ সুমন ‘হ্যাঁ’ ‘না’ কিছু বলেনি। কারণ বলাকা জানত এর উত্তর ‘না’ হয় না। রিকশা থেকে নেমে বলাকা উজ্জ্বল পোশাকে আলোকিত তোরণ দিয়ে বিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করলো। একটু গিয়ে পিছন ফিরে দেখলো, সুমন তখনও দাঁড়িয়ে, টিমটিমে ল্যাম্প পোস্টের আলোয়, […]
-
বাসে আলাপ
ট্রেনে নয় লাক্সারি বাসে চলেছি পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ের দিকে। সাথী ত্রিরিশ জন। কপালগুণে বাসের পেছনে পড়েছিল আমার সিট। আমার দুটো সিট আগে বসেছিল বছর কুড়ির এক তরুণী তার বাবার সঙ্গে। চা-জলখাবারের জন্যে মাঝে একবার বিরতি দেওয়ায় অন্যান্ন সহযাত্রী সহ ওই মেয়েটির সঙ্গে আলাপ হয়। মেয়েটি সবেমাত্র কম্পুউটার সায়েন্স নিয়ে পাশ করে টিসিএসে যুক্ত হয়েছে। কথাবার্তায় […]
-
বাই ডিফল্ট
– ইন্টারভিউ তো দিলেন। এবার বলুন কেমন লাগল আমার মতন বাচ্চা আনকোরা একটা মেয়ের প্রশ্ন? – দারুণ! ও না না, এখন তো এসব বাংলা বললে চলবে না। কি যেন চলছে শব্দটা! ও হ্যাঁ হ্যাঁ মনে পড়েছে অ-সাম! ঠিক বললাম তো? – একদম। আপনি এই বয়েসেও এত আপ টু ডেট থাকেন কি করে? আপনার ঐতিহাসিক উপন্যাস […]
-
হুঁ:! ন্যাকামি!
রাত আড়াইটে। ঘরে এসে বিল্টু খবর দিল, “ঠাম্মি, এইবার শিগগির চলো! লাইট নিভে গেছে।” শুনে সবাই হৈ হৈ করে উঠল। “চলো, চলো…এখনই চলো।” বিল্টুর ঠাম্মি, অর্থাৎ ঐন্দ্রিলা দেবী হাত তুলে শান্তভাবে চোখ, মুখ নাচিয়ে বললেন, “দাঁড়া বাছা! এখনই কী?! এখনও সময় হয় নি। আরও কিছুক্ষণ যাক। রস জমুক।” তারপর বিল্টুকে তাড়া দিয়ে বললেন,”তুই শুতে যা […]
-
আগুনওয়ালাদের চোখ কান
দুপুর গড়িয়ে গেলে বিষ্টুদের পুকুরঘাটে বাসন মাজতে বসে বহ্নি। আর এইসময় নিজের কথাকে কারুকাজ করে নিতে আসে কবি কৌরব। বহ্নির কারুকাজ বলতে লেখাগুলোকে বাইরের লোকের কাছে বরাত পাইয়ে দেওয়া। বাইরের মানুষের সাথে বহ্নির অনেক যোগাযোগ। আজ ওর এঁটো পাতিলের ওপর টুপ করে কী যেন একটা পড়ল। -“দলা পাকিয়ে কী ফেলছ দেখি?” দেখল তারই দেওয়া সাদা […]
-
এমনিই
|| ১ || সাবওয়ে দিয়ে চিরকালের অভ্যাসের মতো দুটো করে সিঁড়ি টপকে টপকে প্লাটফর্মে উঠে একটা ফাঁকা জায়গা পেয়ে বসে হাঁফাতে লাগলো শুভ | রবিবার সকালে ঘুমটা যেন ভাঙতেই চায় না | অগত্যা এই তাড়াহুড়ো ! নাহ্ ! লেট হয় নি | সাড়ে দশটার গ্যালোপিং বর্ধমানটা পেয়ে যাবো | – ভাবতে ভাবতে চশমাটা খুলে নিয়ে […]
-
সিঁদুরে মেঘ
জীবনে চলার পথে আর পাঁচজনের মতো প্রতিভারও জীবন থেকে অনেক মুখ হারিয়ে গেছে বা কুয়াশাবৃত হয়েছে।তাদের মধ্যে কেউ কেউ তার হৃদয়ের টুকরোও বটে। কোভিডের ঢেউ আছড়ে পড়তেই যেমন তুমুলভাবে নাড়িয়ে দিল প্রতিভাকে, তার সন্তানের পিতা রণজয়কে ছিনিয়ে নিয়ে।পঁয়ত্রিশের চৌকাঠে দাঁড়িয়ে একমাত্র সন্তান এলিজাকে নিয়ে তার জীবন এক অজানা প্রবাহের মাঝখানে, উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তা কাটিয়ে একটু […]
-
বড়পিসির চিঠি এবং
সালটা ৭১ কি ৭২। গোটা দেশে রাজনৈতিক অর্থনৈতিক ডামাডোল। কালোবাজারির দাপটে নাভিশ্বাস। এরকম একটা সময়ে মফস্বলের এক বাড়িতে চিঠিটা এলো। বাইরের ঘর, মাঝের ঘর, ভাঁড়ার ঘর, ঠাকুর ঘর পেরিয়ে উঠোন লাগোয়া নতুন ঘরে আমার ছোটকা মানে এ বাড়ির ছোট ছেলে, সেটা এনে দিলো ঠাকুমাকে। ঠাকুমা চিঠিতে চোখ বুলিয়েই শুরু করলেন হাঁউমাঁউ। সেই চিৎকারে রান্নাঘর থেকে […]